রাতের ঢাকা দর্শন এবং আমার ভোজন অভিজ্ঞতা। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
ঢাকায় যখন আমি থাকি তখন ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগেনা। সময় পেলেই আমি কোথাও ঘুরতে যাই। কয়েকদিন আগে আমি ইউটিউবে আমার একজন প্রিয় ফুড ব্লগারের ভিডিও দেখছিলাম। যেহেতু আমি একজন খাদ্য রসিক মানুষ তাই আমি বিভিন্ন ব্লগারের ফুড রিভিউ দেখি। তার সেই ভিডিও থেকে জানতে পারলাম গুলশান এক এ একটি রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে খুবই মজার নেহারি পাওয়া যায়। নেহারী আবার আমার খুবই পছন্দ। ভালো স্বাদের কথা শুনে আমার খাওয়ার প্রচন্ড আগ্রহ তৈরি হলো। তার ভিডিওতে দেখেই মনে হল নেহারিটা খেতে খুবই মজা হবে। ভিডিও এটা দেখার পর থেকেই চিন্তা করছিলাম গুলশানে যাব নেহারি খেতে।
যেই ভাবা সেই কাজ। সেদিন সন্ধায় আমি বাসা থেকে বের হলাম গুলশানের উদ্দেশ্যে। প্রথমে চিন্তা করেছিলাম মোটরসাইকেলে করে গুলশান চলে যাই। পরে আবার ভেবে দেখলাম আমার তো খুব একটা তাড়া নেই। ধীরেসুস্থে গেলেই হবে। তাই আমি প্রথমে গেলাম হাতির ঝিলে। কারণ সেখান থেকে ওয়াটার বাসে করে গুলশানে যাওয়া যায়। আর এই রাইডটা আমার খুবই পছন্দের। কারণ রাতের এই আলো ঝলমলে ঢাকা শহরে ওয়াটার বাসে ঘুরতে ভালোই লাগে। আর এটা সম্ভব হয়েছে হাতিরঝিল নামক এই প্রকল্পটির জন্য।
যদিও একটা সময় শীতকালে ওয়াটার বাসে চড়া যেত না হাতিরঝিলের পানিতে প্রচন্ড দুর্গন্ধের জন্য। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যাটা নেই। কিভাবে এই সমস্যা সমাধান হয়েছে সেটা আমি জানি না। তবে যেভাবেই করুক কাজটা খুবই ভাল হয়েছে। আমি আগে প্রতিনিয়ত হাঁটাহাঁটি করতাম। কিন্তু বিগত মাসখানেক যাবত আমার হাঁটাহাঁটি বন্ধ আছে। তাই চিন্তা করলাম বনশ্রী থেকে হাতিরঝিল পর্যন্ত হেটে যাই। তারপর সেখান থেকে বাসে করে গুলশান যাব। এতে আমার হাঁটা ও হবে আবার ওয়াটার বাসে ঘোরা ও হবে। বাসা থেকে রওনা দেয়ার ২০ মিনিটের ভেতরে হাতিরঝিল পৌঁছে গেলাম। তারপর সেখান থেকে টিকিট কেটে ওয়াটার বাসে উঠে বসলাম।
সন্ধ্যা হয়ে গেলেও তখনও ওয়াটার বাসে বেশ ভালই যাত্রী ছিল। ওয়াটার বাসে চড়ে আমি রাতের ঢাকার সৌন্দর্য অবলোকন করছিলাম। এভাবে একসময় গুলশান ১ এ পৌঁছে গেলাম। তারপর ওয়াটার বাস থেকে নেমে আমি রেষ্টুরেন্টটি খোঁজার জন্য গুগল ম্যাপের শরণাপন্ন হলাম। যেহেতু এই রেষ্টুরেন্টটি আমি আগে থেকে চিনি না। তাই ওই ভিডিও ডিসক্রিপশন বক্স থেকে আমি গুগল ম্যাপের লিংকটি পেলাম। সেই লিঙ্ক দিয়ে আমি রেস্টুরেন্ট খুঁজে বের করলাম। প্রযুক্তির কল্যাণে সবকিছু এখন কত সহজ হয়ে গিয়েছে। ভাবতে অবাক লাগে। রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে আমার মিনিট বিশেক সময় লাগলো।
সেখানে পৌছে দেখি আমি ছাড়া আর মাত্র একজন কাস্টোমার ছিলো। আমি সেখানে বসার পর ওয়েটার এল অর্ডার নেয়ার জন্য। আমি যখন তাকে নেহারির অর্ডার করলাম তখন সে জানালো নেহারি শেষ হয়ে গিয়েছে। শুনে আমার মেজাজটা চরম খারাপ হয়ে গেল। এতদুর থেকে এসেছি শুধু নেহারি খাওয়ার জন্য। এখন আসার পর যদি শুনি যে সেই খাবারটি নেই তখন কেমন লাগে সেটা তো আপনারা বুঝতেই পারছেন। কি আর করা। যেহেতু এতদূর এসেছি তাই চিন্তা করলাম কিছু একটা খেয়ে যাই এখান থেকে।
আমি মেনু থেকে চিকেন বটি কাবাব অর্ডার করলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমার সামনে খাবার চলে এল। কিন্তু খাবারের চেহারা দেখে আমি খুবই হতাশ হলাম। আমি আশা করেছিলাম এই খাবারে কিছুটা গ্রেভি থাকবে। কিন্তু এখন দেখি পুরোই শুকনা খাবার। আবার পরিমাণ অনুযায়ী দামও বেশি। কিন্তু যদি খাবারের স্বাদ ভালো হয় তাহলে বেশী দাম দিতেও খারাপ লাগে না। কিন্তু স্বাদটা ও এমন আহামরি কিছু না। মেজাজ আরো খারাপ হয়ে গেলো। শেষ পর্যন্ত তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। জীবনে মানুষ প্রতিটি পর্যায়ে কিছু না কিছু শিক্ষা লাভ করে। আজকে আমি একটা শিক্ষা লাভ করেছি। সেটা হচ্ছে কোন রেস্টুরেন্টে কোন বিশেষ কিছু খেতে যাওয়ার আগে অবশ্যই তাদের সাথে যোগাযোগ করে যাওয়া ভালো যে সেই খাবারটি এভেলেবেল আছে কিনা। না হলে এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংকলিংক |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
রাতের ঢাকা চাকচিক্কে বাতি আর কালো আধারের চাদরে ঢাকা।আসলে সত্যি বলতে অনেক সুন্দর হয়েছে ছবিগুলো। রাতের ঢাকার খাবারের দোকান গুলো সুযোগে সৎ ব্যবহার করে, যাকে বলা যায় দিন ডাকাতি, যাই হোক ।শুভ কামনা রইল ভাইয়া
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই। বানানের দিকে একটু নজর দিতে হবে আপনাকে।
এখানে আপনি সম্ভবত আলো-আঁধারের বলতে চেয়েছেন।
জ্বি ভাইয়া ,খেয়াল রাখবো
নেহারি আমারো অনেক পছন্দের খাবার। আগে বললে আমিও যেতাম। যাই হোক না যেয়ে ভালই করেছি। তাহলে তোমার মত ঠক খেতে হতো। পরেরবার গেলে জানিও, চলে আসব।
তুমি ঢাকা আসো দুজনে একসাথে ঘুরাঘুরি করা যাবে।
রাতের আঁধারে ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর লাগছে ভাই। হাতিরঝিল আগে মাঝে মাঝেই যাওয়া হতো। কিন্তু এখন সময় হয়ে ওঠে না। কিন্তু এ জায়গাটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আসলে ভাই আপনার সাথে আমি একমত যে কোনো স্থানে যাওয়ার আগে তার সম্পর্কে যোগাযোগ করে জেনে নিতে হয়।
তবে আপনার পোস্ট পড়ে উপকৃত হলাম সবসময় এ বিষয়ে সর্তক থাকতে পারবো।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
অসাধারণ কিছু রাতের দৃশ্য দেখতে পেলাম। রাতের দৃশ্য দেখতে এমনিতেই ভালো লাগে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে রাতের ফটোগ্রাফি গুলো ক্যাপচার করেছেন। অনেক সুন্দরভাবে খাওয়া-দাওয়া ইনজয় করলেন দেখতে পেলাম। এত সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
নেহারি আমার ও খুব প্রিয়,নেহারিটা টেস্ট করলে অবশ্যই তার রিভিউ শেয়ার করিয়েন কিন্তু ভাইয়া।
ঠিক আছে আপু। অবশ্যই নেহারির রিভিউ শেয়ার করবো।