জাতীয় মসজিদে নামাজ আদায়ের অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমাকে প্রায়ই বিভিন্ন কারণে ঢাকা আসতে হয়। কিন্তু ঢাকা আসলেও আমার কখনো বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের নামাজ পড়ার সৌভাগ্য হয়নি। আমি যখনই বায়তুল মোকাররম এর পাশ দিয়ে যাতায়াত করতাম। তখনই মনে হতো একদিন সময় করে এখানে আসতে হবে নামাজ পড়ার জন্য। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠছিল না। গত শুক্রবারে আমি একটি কাজে গিয়েছিলাম গুলিস্তানে। যখন আমি গুলিস্তান পৌঁছেছিলাম তখন জুম্মার নামাজের সময় খুব কাছাকাছি ছিল। তাই চিন্তা করলাম আজকে যেহেতু সময় পেয়েছি। তাই আজকেই বাইতুল মোকাররম থেকে জুম্মার নামাজটা আদায় করে যায়।

IMG_20221021_135047.jpg

যাইহোক যথারীতি আমার কাজ শেষ করে তাড়াহুড়ো করে বাইতুল মোকাররম এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। গুলিস্তান থেকে বায়তুল মোকাররম পৌঁছাতে আমার খুবই অল্প সময় লাগলো। বাইতুল মোকাররমে পৌঁছে প্রথমে যে জিনিসটি দেখতে পেলাম সেটা হচ্ছে লোকে লোকারণ্য হয়ে আছে পুরো মসজিদটা। মসজিদের সামনে থেকে শুরু করে ভেতর পর্যন্ত সব জায়গায় প্রচুর জনসমাগম হয়েছে। বাইতুল মোকাররম মসজিদের সামনের পুরোটা জায়গা হকারদের দখলে চলে গিয়েছে। আমি অনেকক্ষণ যাবত চেষ্টা করছিলাম ভালোমতো একটি ছবি তোলার। কিন্তু হকারদের কারণে আর সেটা সম্ভব ছিল না।

IMG_20221021_130833.jpg

IMG_20221021_130234.jpg

আমি মসজিদে প্রবেশ করে প্রথমে চলে গেলাম অজু করতে। সেখানে দেখি ওযু করার জন্য বেশ ভালো আয়োজন রয়েছে। অজু করে আমি মসজিদে প্রবেশ করে চিন্তা করতে লাগলাম কোথায় বসা যায়। কারণ আমি মসজিদের প্রবেশ মুখের একটু পরেই দেখতে পেলাম অনেক মানুষজন সাড়ি বেঁধে বসে আছে। তারপরে বেশ খানিকটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে। কারণ সেই ফাঁকা জায়গায় সূর্যের আলো পড়ছে সরাসরি। যার ফলে সেই জায়গাটা প্রচন্ড উত্তপ্ত হয়ে আছে। এর ফলে কেউ সেখানে নামাজ পড়তে দাঁড়াতে পারছে না।

IMG_20221021_130837.jpg

আমি বাইতুল মোকাররম মসজিদের গেট পার হয়ে বসে পড়লাম। সেখানে অনেক লোকজনকে দেখতে পেলাম যারা বিভিন্ন কাজে ঢাকার বাইরে থেকে এসেছে। এদের ভিতর অনেকেই নামাজ শেষ করে হয়তো বিকালের দিকে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাবে। তেমনি একজনের সাথে আমার পরিচয় হলো। ছেলেটির বাড়ি ছিল খুলনা। ঘটনাচক্রে জানতে পারলাম সেই ছেলেটি আর আমি কাছাকাছি এলাকাতেই ছিলাম।

IMG_20221021_131046.jpg

IMG_20221021_130922.jpg

জীবনের প্রথমবারের মতো জাতীয় মসজিদের নামাজ আদায় করার একটা উৎসাহ মনের ভেতর কাজ করছিল। এদিকে আবার স্যান্ডেল নিয়েও চিন্তা হচ্ছিল। কারণ আমি যেখানে বসেছিলাম সেখানে স্যান্ডেল রাখার কোন ব্যবস্থা ছিল না। যার ফলে স্যান্ডেল রাখতে হয়েছিল একটু পেছনদিকে। যদিও অনেকেই দেখলাম যেখানে বসেছে সেখানেই স্যান্ডেল রেখেছে। এই ব্যাপারটি আমার কাছে মোটেও ভালো লাগেনি। বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর নামাজ শুরু হলো।

IMG_20221021_134755_1.jpg

IMG_20221021_130914.jpg

নামাজ শেষ হওয়ার পর দেখতে পেলাম এক অদ্ভুত অবস্থা। প্রচুর মানুষ একসাথে বের হচ্ছিল। এর ভিতরে অনেক হকার মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে সেখানেই তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছে বিক্রির জন্য। নামাজ পড়তে আসে অনেক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম সেখান থেকে বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র কিনছে। সেই জিনিসগুলোর ভিতরে ছিল পাঞ্জাবি, পায়জামা, আতোর, টুপি আরো অন্যান্য জিনিস। হকারদের জন্য এই এলাকাতে পা ফেলা মুশকিল। তার পরেও জীবনের প্রথমবারের মতো দেশের জাতীয় মসজিদে নামাজ পড়তে পেরে বেশ ভালো লাগছিল। বাইতুল মোকাররম মসজিদটি দেখতে বেশ সুন্দর। ভিতরে প্রচুর মানুষের একসাথে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। নামাজ শেষ হলে আমি ধীরে সুস্থে বাসার দিকে রওনা দিলাম।

IMG_20221021_134912.jpg

IMG_20221021_134744.jpg


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানবাইতুল মোকাররম

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

বাইতুল মোকাররম জামে মসজিদে প্রথম নামাজ পড়ার অনুভূতি সত্যি অসাধারণ। এই মসজিদে নামাজ পড়ার সপ্ন আপনি আজকে পূরণ করলেন। আসলে আমারও খুব ইচ্ছা আছে বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদে নামাজ পড়বো। আপনার ইচ্ছাটা পূরণ হলো জেনে খুবই ভালো লাগলো।

 2 years ago 

বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করার অভিজ্ঞতা জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। যেহেতু এই মসজিদটি আমাদের জাতীয় মসজিদ তাই সেখানে ভিড় একটু বেশি। তবে নিজের জুতা সামলে রাখা হয়তো অনেক কঠিন একটি ব্যাপার। আসলে এত লোকের সমাগম যেখানে সেখানে হকারদের জায়গা দখল করে নেওয়া ভালো লাগেনা। তবে যারা দূর-দূরান্ত থেকে সেখানে নামাজ আদায় করার জন্য যায় তারা নিজেদের পছন্দের কিছু জিনিস গুলো হকারের কাছ থেকে কিনতে পারে।

 2 years ago 

হকারদের কারণে সেখানে এত ভিড় হয়েছিলো যে চলাফেরা করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। আর জুতা নিয়ে টেনশন বাংলাদেশের সব মসজিদেই করতে হয়। এই ব্যাপারটি আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগেনা। চোরদের টার্গেট থাকে মুসল্লিদের জুতা চুরি করা। এই জন্য তারা মুসল্লি সেজে মসজিদে ঢোকে। তারপর সময় সুযোগ বুঝে জুতা চুরি করে পালায়। আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

জাতীয় মসজিদে নামায আদায়ের সৌভাগ্য এখনো আমার হয়নি। তবে তোমার পোাস্ট পড়ে মোটামুটি বেশ ভালোই একটা ধারনা হলো। এই হকারদের উৎপাত এখন সব জায়গাতেই শুরু হয়েছে। এদেরেকে অন্তত মসজিদের ভিতরে ঢুকতে দেয়া উচিত হয়নি।

 2 years ago 

আমারও তাই মনে হয়েছে। মসজিদের ভিতরে এদেরকে ঢুকতে দেয়া উচিত হয়নি।

 2 years ago 

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের নামাযের অভিজ্ঞতা পড়ে ভালো লাগলো।আমার কাছে একটা জিনিস ভালো লাগে না,যেটা হচ্ছে নামাযের সামনে যে অনেকে জুতা রাখে চুরি হয়ে যাবার ভয়ে।আর কি বা করবে জুতা বাহিরে রাখলে সব সময়ই টেনশনে থাকা লাগে।যাই হোক বেশ ভালো একটা অনুভূতি হলো।ধন্যবাদ

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন। জুতা বাহিরে রাখলে তার টেনশনে নামাজে মন বসে না। এজন্যই মানুষ বাধ্য হয়ে জুতা পাশে বা সামনে রাখে।

 2 years ago 

বাইতুল মোকাররম মসজিদে আমি অনেকবার নামাজ পড়েছি। তবে এর মধ্যে ওক্তিয় সংখ্যাই বেশি।

এখানে নামাজের জন্য প্রতিনিয়ত অনেক মানুষের সমাগম হয় পরিবেশটাও অনেক ভালো অজুখানা খুব সুন্দর পরিপাটি খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং পড়ার জন্য নিচে লাইব্রেরিও রয়েছে।।

জুমার নামাজ পড়ার আপনার অভিজ্ঞতা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো আমিও এখানেই থাকি দেখি এ সপ্তাহে সময় পেলে জুম্মার নামাজটা বাইতুল মোকাররমের পড়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।।

 2 years ago 

বাইতুল মোকাররমে ওযু করার জায়গা এবং মসজিদ প্রাঙ্গণ আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে আপনি সেখানে নামাজ পড়েন জেনে ভালো লাগলো। তবে একদিন সময় করে শুক্রবারে জুমার নামাজ আদায় করে আসুন। দেখবেন সেখানকার পরিস্থিতি কেমন থাকে।

 2 years ago 

আপনার অনেক দিনে মনের ভিতর বসে রাখার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগছে আসলে ভাইয়া জাতীয় মসজিদে নামাজ পড়তে পারাটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। তবে জুতার চিন্তায় পড়ে অনেকের নামাজ পড়া ও ঠিকমতো হয় না। ভাই আপনি এটাও ঠিক বলেছেন হকারদের জন্য পা বাড়ানো খুব মুশকিল তাদের রাজত্ব এখানে। তবে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো বেশ দারুন। আমাদের মাঝে এত সুন্দর করে আপনার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করার জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আসলে ভাই জাতীয় মসজিদে নামাজ পড়ার ইচ্ছা আমাদের মনে প্রত্যেকেরই রয়েছে। বিশেষ করে আমার খুব ইচ্ছা রয়েছে। আপনিও প্রথমবারের মতো বায়তুল মোকাররম মসজিদে নামাজ আদায় করলেন। আসলে জুতা রাখা নিয়ে একটু সমস্যার মধ্যে পড়েছিলেন।যাইহোক আসলে এখানে জুতা হারিয়ে যায়। যার কারণে মানুষ যেখানে বসে সেখানে জুতা নিয়ে বসে এবং নামাজ শেষে দেখতে পেলেন হকারদের সেখানেও পাঞ্জাবি টুপি এগুলো বিক্রি হচ্ছে। আসলে আমার খুব ইচ্ছা আছে বায়তুল মোকাররম মসজিদে নামাজ পড়বো। জানিনা কবে পূরণ হবে। আপনার ইচ্ছাটা পূরণ করলেন ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে।

 2 years ago 

সময় পেলে একবার বাইতুল মোকাররম থেকে ঘুরে আসবেন। বাইতুল মোকাররমের মসজিদ প্রাঙ্গণটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

বায়তুল মোকাররমে অনেক মানুষ নামাজ পড়তে চায় কিন্তু সবার সৌভাগ্য হয়না। আপনি সত্যিই সৌভাগ্যবান যে হঠাত গুলিস্তান কাজে গিয়ে নামাজ পড়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। ঢাকার অনেক জায়গাতেই হকার একটি বড় সমস্যা। আসলে ঢাকার মসজিদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জুতা চুরি হয় বায়তুল মোকাররমে৷ তাই অনেকেই জুতা সাথে নিয়ে বসে অথবা পাশে রাখে। বায়তুল মোকাররম মার্কেটের আতর খুব ফেমাস। আপনার তোলা ছবিগুলো দেখে মন ভরে গিয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

বাইতুল মোকাররমে জুতা বেশি চুরি হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রচুর লোকসমাগম হওয়া। যত বেশি লোক ততো বেশি জুতা। আর ততো বেশি চোরের আনাগোনা।

 2 years ago 

প্রথমবার জাতীয় মসজিদে সালাত আদায় করেছেন জেনে খুব ভাল লাগলো।আর আপনার উৎসাহ ছিলো চোখে পড়ার মতো।তবে আপনার মত আমারও একটি ব্যাপার খারাপ লাগে সেটা হচ্ছে নামাজ পড়ার সময় জুতা নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করা।আসলে আমি একটা জিনিস বুঝি না,যদি নামাজ পড়তে যেয়েও তারা জুতা নিয়ে এত চিন্তিত থাকে তবে তারা যুগ নিয়ে যায় কেনো।

 2 years ago 

ভাই আমিও ঈদের সময় যখন খবরে দেখি তখন এই বাইতুল মোকাররম মসজিদে খবর দেখি৷ আমার মনে হয় এটাই ঢাকার সবচেয়ে বড় মসজিদ ৷ যেখানে হাজার হাজার মুসলিম ভাইদের সমাগম নামাজ পরার জন্য ৷
আপনি শুক্রবার গুলিস্থান কাজে গিয়ে বাইতুল মোকাররম মসজিদে নামাজ পরতে গিয়েছেন ভালো করছেন ৷ আমি তো ভাবছি ঈদের সময় মানুষ বেশি এখন তো দেখি সাধারণ ভাবেও প্রচুর লোক ৷ পরিবেশটা বেশ সুন্দর ছিল ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 61098.42
ETH 2470.86
USDT 1.00
SBD 2.64