ওয়াটার বাসে ভ্রমন সাথে মেজবানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা।
কয়েকদিন আগে হাতির ঝিলে গিয়েছিলাম ঘুরতে। কিন্তু সেখানে ঘুরতে গেলে ও আমার ওয়াটার বাসে করে ঘোরা হয়নি। বছরের এই সময়টাতে হাতিরঝিলে প্রচুর পানি থাকে। আবহাওয়া ভালো থাকলে এই সময় ওয়াটার বাসে ঘুরতে খুবই ভালো লাগে। আমার কাছে এমনিতেও ওয়াটার বাস বাহন হিসেবে খুবই পছন্দ। তাই আমি যখনই হাতিরঝিলে ঘুরতে আসি সুযোগ পেলেই ওয়াটার বাসে করে ঘুরে বেড়াই।
এর আগে যখন হাতিরঝিলে এসেছিলাম সেদিন সময় না পাওয়ায় আর ওয়াটার বাসে করে ঘোরা হয়নি। তাই ঠিক করে রেখেছিলাম দুই-একদিনের ভিতরে আবার হাতিরঝিল যাবো ওয়াটার বাসে করে ঘোরার জন্য। দুদিন আগে আমি গুলশান গিয়েছিলাম। গুলশান গিয়েছিলাম মূলত একটি রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়ার জন্য। আমার দীর্ঘ দিনের ইচ্ছা ছিল চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবান খাওয়ার। কিন্তু সেটা তো আর ঢাকায় বসে সম্ভব না। তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাতে আমি গিয়েছিলাম মেজ্জান হাইলে আইয়ুন নামের রেস্টুরেন্টে যেখানে মেজবানি মাংস বিক্রি করে। শুনেছি তাদের মাংসের স্বাদ নাকি একেবারে ট্রেডিশনাল মেজবানের মতো।
যখন চিন্তা করলাম যে গুলশান যাবো তখনই মাথায় বুদ্ধিটা আসলো। ঠিক করলাম যে প্রথমে বনশ্রী থেকে হাতিরঝিল যাবো। তারপর সেখান থেকে ওয়াটার বাসে করে গুলশান যাবো। এতে সময় অনেক কম লাগবে আবার বেশ আরামে যাওয়া যাবে। যাইহোক বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বাসা থেকে রওনা দিলাম হাতিরঝিলের উদ্দেশ্যে। হাতিরঝিল পৌঁছতে বেশি সময় লাগেনি। সেখানে পৌঁছে টিকিট কেটে ওয়াটার বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষণের ভেতরে সেখানে একটি ওয়াটার বাস এসে থামলো। আমি মনে করেছিলাম এটা করেই গুলশানে যেতে পারবো। কিন্তু যারা টিকিট চেক করছিল তারা জানালো এটা অন্য দিকে যাবে। যার ফলে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো।
যদিও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। অল্প কিছুক্ষনের ভিতরেই আরেকটি ওয়াটার বাস এসেছিল যেটি গুলশান যাবে। সেটা আসতেই আমরা টিকেট ধারি যাত্রীরা এক এক করে সেই ওয়াটার বাসে উঠে বসলাম। ওঠার কিছুক্ষণ পরই সেটি চলতে শুরু করলো। যদিও বাইরে বেশ রোদ তার পরেও ওয়াটার বাস চলতে শুরু করার সাথে মৃদু বাতাস অনুভব করতে পারলাম। ওয়াটার বাসে বসে চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখছিলাম। হাতিরঝিলের চারপাশে বিভিন্ন রকমের স্থাপনা রয়েছে। হাতিরঝিল লাগোয়া বাড়ী গুলো দেখছিলাম আর মনে হচ্ছিল যদি এই বাড়িগুলোতো থাকতে পারতাম তাহলে কতোই না ভালো হোতো। সবসময় এই চমৎকার দৃশ্য দেখতে পারতাম।
যাইহোক এভাবে অল্পক্ষণের ভেতরেই আমরা গুলশান পৌঁছে গেলাম। তারপর ওয়াটার বাস থেকে নেমে আমি সেই রেস্টুরেন্টে গেলাম খেতে। যদিও সেখানকার খাবার আমার কাছে তেমন আহামরি মনে হয়নি। সেই রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে আমি কিছুটা হতাশ। কারণ এই রেস্টুরেন্টের খাবার নিয়ে অনেক প্রশংসা শুনেছিলাম। যার ফলে আমার প্রত্যাশা ছিলো অনেক বেশি। যাইহোক খাবারটা যে খুব একটা খারাপ ছিলো তাও নয়।
খাওয়া শেষ করে আবার চলে আসলাম ওয়াটার বাস যেখান থেকে ছাড়ে সেই জেটিতে। টিকিট কেটে অপেক্ষা করছিলাম। অল্প কিছুক্ষণের ভেতরে একটি ওয়াটার বাস এলে আমরা তাতে উঠে বসলাম। আবার শুরু হল চমৎকার ছোট্ট একটি জার্নি। ওয়াটার বাসে যাতায়াত এর পুরো সময়টা আমি বেশ উপভোগ করেছি। আমার মনে হচ্ছিল কর্তৃপক্ষ যদি আরো কিছু ওয়াটার বাস ছাড়তো শুধু ঘোরাফেরার জন্য তাহলে ভালো হতো। এই ওয়াটার বাস গুলো এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাতায়াত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পুরো হাতিরঝিল ঘুরে দেখার জন্য যদি কয়েকটি ওয়াটার বাসের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে মন্দ হতো না। যাইহোক কিছুক্ষনের ভিতরেই ওয়াটার বাসটি রামপুরা জেটিতে এসে থামলো। সেখান থেকে নেমে আমি বাড়ির পথ ধরলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | হাতিরঝিল, গুলশান |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
হাতির ঝিলের আগের সেই অবস্থা আমার চোখের সামনে এখনো মাঝে মাঝে ভেসে ওঠে। যেখানে সম্পূর্ণ ঝওলটাই ছিল কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি। আর নৌকায় করে তার মধ্য দিয়েই এপার-ওপার করতে হতো। মানুষ চেষ্টা করলে কি না পারে এটা তার একটা উদাহরণ। যাই হোক তুমি তো আর কথা শুনবে না। খাওয়া-দাওয়া চলতেই থাকবে। তোমার জন্য অন্য ট্রিটমেন্ট লাগবে এটা বেশ বুঝতে পেরেছি।
হাতির ঝিল এর ওয়াটার বাস সেই লাগে আমার কাছে। তবে শুনেছি এটা নাকি বন্ধ করে দিবে। রেস্টুরেন্ট এর দেওয়াল দেখে আমি তো অবাক । খাবার এর নাম লিখে রেখেছে দেখি তারা।