ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরা। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
সাজেক এবং রাঙ্গামাটি ভ্রমণ পর্ব শেষ হওয়ার পর বাড়ি ফেরার তাড়া ছিল।কারণ বেশ কয়েকদিন কমিউনিটি থেকে দূরে ছিলাম। তাছাড়া ঘোরাঘুরি করার পরে কিছুটা শারীরিক ক্লান্তি বোধ করছিলাম। প্রথমে পরিকল্পনা করেছিলাম রাঙ্গামাটি থেকে চট্টগ্রাম যাব। তারপর সেখান থেকে ট্রেনে করে ঢাকা। কিন্তু বন্ধু ফেরদৌস বলল অকারণে বেশি ঝামেলা হয়ে যাবে। তার থেকে আমরা সরাসরি রাঙ্গামাটি থেকেই ঢাকা চলে যাই। তার প্রস্তাবটাও আমার কাছে খারাপ মনে হলো না।
সিদ্ধান্ত হলো আমরা রাঙামাটি থেকে সরাসরি ঢাকাতেই যাব। তারপর গেলাম বাসের টিকিট কাটতে। সেখানে গিয়ে আরেক বিপত্তি। বেশিরভাগ বাসের টিকেট ইতিমধ্যে অগ্রিম বুকিং হয়ে গিয়েছে। শুধু বাসের শেষের দিকের কয়েকটি সিট খালি আছে। এই আসল গুলিতে আমি কখনোই জার্নি করতে চাই না। কারণ এই সিটগুলোতে বসলে ঝাঁকি বেশি লাগে। শেষ পর্যন্ত অনেক খোঁজাখুঁজির পর শ্যামলী পরিবহনের টিকিট পেলাম। দেরি না করে সাথে সাথে টিকেট নিয়ে নিলাম। তারপর আমরা হোটেল রুমে অপেক্ষা করছিলাম।
বাস ছাড়ার একঘন্টা আগে আমরা নির্ধারিত স্থানে এসে পৌঁছলাম। তারপর সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া করে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমাদেরকে যে সময়ের কথা বলেছিল তার থেকে অনেকক্ষণ পরে বাস এসে পৌঁছল। ঘাড়ে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে খুবই বিরক্ত লাগছিল। কিন্তু কিছুই করার নেই। পরে যখন বাস এসে পৌঁছল তখন ব্যাগগুলি লাগেজ বক্সে দিয়ে আমরা বাসে উঠে বসলাম। বাসে ওঠার কিছুক্ষণ পরেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।
ঘুম ভাঙলো একবারে যখন যাত্রাবিরতিতে কুমিল্লার মায়ামি রিসোর্টে এসে বাস পৌঁছলো। আমাদেরকে ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল ফ্রেশ হওয়ার জন্য এবং খাওয়া-দাওয়া করার জন্য। আমরা ধীরেসুস্থে বাস থেকে নেমে গেলাম রেস্টুরেন্টে কি কি খাবার পাওয়া যায় সেটা দেখতে। আমরা বাসে ওঠার আগেই বিরিয়ানি খেয়ে উঠেছিলাম। যার ফলে খুব একটা খাবার চাহিদা আমাদের ছিল না। তারপরও আমরা দুজন হালকা কিছু খাবার খেলাম। আমরা নিয়েছিলাম স্যান্ডউইচ আর চিকেন সাসলিক। তারপর বাসে ওঠার আগে একটি রঙ চা খেয়েছিলাম।
যাত্রাবিরতিতে রিসোর্ট আর রেস্টুরেন্ট গুলি যাত্রীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি জায়গা। এই রিসোর্টে দেখলাম আপনি ইচ্ছা করলে থেকে যেতে পারবেন। এখানে উপরতলায় রুম রয়েছে। যেগুলো আপনি ভাড়া নিয়ে থাকতে পারবেন। এই রিসোর্টের রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন রকমের খাবার পাওয়া যায়। বিরিয়ানি চাইনিজ মেনু থেকে শুরু করে আচার মিষ্টি সব ধরনের খাবারই আপনি পাবেন। সাথে ফাস্টফুড তো থাকছেই। যদিও আমরা আসার সময় পরিকল্পনা করেছিলাম যদি বাস জমজম রেস্টুরেন্টে থামে তাহলে সেখান থেকে আমরা চিকেন চাপ খাব। কিন্তু এই রেস্টুরেন্টে দেখলাম সে ব্যবস্থা নেই। যার ফলে আমাদের স্যান্ডউইচ আর সাসলিক খেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল।
খাওয়া দাওয়া করে আমরা বাসে উঠে বসলাম। ওঠার কিছুক্ষণ পর আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙলো একবারে ঢাকায় পৌঁছানোর পর। আমরা প্রথমে জানতাম যে সকালবেলায় ঢাকা পৌছব। কিন্তু আমারা ঢাকা পৌঁছলাম রাত সাড়ে চারটায়। এত রাতে ঢাকায় পৌঁছে আর এক সমস্যায় পড়লাম। এখন বাসা পর্যন্ত যাব কিভাবে? যদিও অনেক সিএনজি ড্রাইভার ছিল আশেপাশে যারা জিজ্ঞেস করছিল কোথায় যাবেন? কিন্তু এই শহরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটেও ভালো না। যার ফলে এই সিএনজি ওয়ালাদের বিশ্বাস করা খুবই মুস্কিল। সেজন্য আমি একটি উবার কল করলাম।
এত রাতে উবার পাব কিনা সেটা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু কল করার কিছুক্ষণ পরেই দেখলাম একজন ড্রাইভার আমাকে ফোন দিয়েছে। কিন্তু সে ড্রাইভার ছিল আমার থেকে অনেক দূরে। তার আমার কাছে আসার কোন ইচ্ছা ছিল না। তাই আমি তাকে বললাম আপনি ট্রিপ ক্যানসেল করে দিন। কিন্তু সে সেটা করতেও রাজী নয়। সে আমাকে বলে আপনি ক্যানসেল করুন। আমি বললাম সমস্যা তো আমার না। সমস্যা আপনার অতএব আপনাকে ক্যানসেল করতে হবে। সে কিছুক্ষণ পর ফোন দিয়ে আমাকে জানালো সে আসছে। ২০ মিনিট পরে সেই উবারের গাড়ি এসে পৌঁছল। উপরে উঠে আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। কারণ এখন আর কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। অল্প সময়ে আমি আমার বোনের বাসায় পৌছে গেলাম। এভাবেই আমার এবারের যাত্রা শেষ হলো।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র | হুয়াই নোভা ২আই |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি
ভাই আপনি অসম্ভব সুন্দর জার্নিং শেষ করে আসার গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। অনেক বিরম্বনা পর আপনি টিকিট পেলেন শ্যামলীর। যাই হোক অবশেষে আসার মাঝখানে যাত্রাবিরতি দিলেন মিয়ামি রেস্টুরেন্টে। তবে কুমিল্লার মধ্যে মিয়ামি রেস্টুরেন্ট খুবই নামকরা এবং খাওয়ার গুণগতমান অসম্ভব ভালো। আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি এবং আমার বাড়ি যেহেতু কুমিল্লাতে আসা যাওয়ার মাঝে প্রায় সময় আমার যাওয়া হয়। তো আপনি যে উপভোগ করতে পেরেছেন এবং আমার এলাকার প্রশংসা করছেন তার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবং অবশেষে আপনার শরীর সুস্থ ভাবে গন্তব্যস্থলে পৌঁছেছেন তার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
ভাই আমরা সবাই ভালো আছি। তবে আপনার ভ্রমণ দেখে তো নিজেকে ঠিক রালহতে পারছলাম না। ভ্রমণ শেষে ফেরার সময় নিয়ম অনুযায়ী অনেক কিছু কিনেছেন। আপনার জন্য আর্শীবাদ রইল প্রতিটি মুহূর্ত অনেক সুন্দর কাটুক।
এমন মারাত্মক জায়গায় গিয়ে নিরাপদে যে ফিরে এসেছেন এটাই সবচেয়ে ভালো বিষয়। আপনার পরিবারের সকলের জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি মুহুর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। বিরম্বনার সাথে আপনার অভিজ্ঞতা আমাকে বেশ কিছু ধারনা দিয়েছে।নিরাপদ হোক আপনার বাড়ি ফেরা।
ধন্যবাদ আপনাকে
আপনার বাড়ি ফেরার অভিজ্ঞতা পড়ছিলাম আর নিজের মধ্যে ফিল করছিলাম। খুব ভালো লেগেছে। অনেক গুছিয়ে কথাগুলো লিখেছেন।
এই কাজ খুব ভালো করছেন যে, সি এন জি তে উঠেন নাই। আসলেই গভীর রাতে ১০০ টাকার জন্যও মানুষ খুন হয় এমন ঘটনাও আছে। যাক ভালোভাবেই বাড়ি ফিরেছেন জেনে খুশি হলাম। আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
সুন্দর একটা জার্নির কথা তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে।তবে আপনি যেভাবে টিকিট পেয়েছেন তার জন্যে সত্যিই কপাল দরকার 😅।
ভালো লাগলো আপনার ভ্রমণ কাহিনী পরে,আর খাওয়ার-দাওয়ার এর ছবি দেখতে দেখতে জিভে জল চলে এলো😁।
ভালো থাকবেন।
ভাইয়া অনেক বিরম্বনা মোকাবেলা করে শেষ পর্যন্ত শ্যামলী বাসের টিকিট পেলেন এটা জানতে পেরে অবশ্য আমার একটু খারাপই লেগেছে ভাইয়া। তবে আপনার জার্নির গল্পটি খুবই ভালো লাগলো। আর কুমিল্লার মিয়ামি রেস্টুরেন্টের বিষয়টি জানতে পেরে অবাক হলাম এবং উক্ত রেস্টুরেন্টের বিভিন্ন খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে অতি চমৎকার লাগছে। যাইহোক ভাইয়া শেষ পর্যন্ত আপনি সুস্থ শরীরে নিজের বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন এটাই বড় কথা। ভাইয়া আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।