পরিবার নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার অভিজ্ঞতা। ১০% সাই-ফক্স।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে। একটা সময় ছিল যখন পরিবারের মানুষজন অবসর সময়ে অন্য আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যেতো। কিন্তু এখন মানুষের অবসর কাটে হয় টেলিভিশন দেখে, না হলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে, আর না হলে কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে। সময়ের সাথে সাথে এই পরিবর্তনগুলো আমাদের জীবনে এসেছে।
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন রেস্টুরেন্টে খাওয়ার এত প্রচলন ছিলো না। শুধু বিশেষ অকেশনে আমরা রেস্টুরেন্টে খেতে যেতাম। কিন্তু এখন সে দিন বদলে গিয়েছে। এখন মানুষ কারণে, অকারণে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। এখন আর আমাদের ঘরের খাবার ভালো লাগে না। রেস্টুরেন্টের খাবার সেটা যতো অস্বাস্থ্যকর বা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হোক না কেন। আমাদের কাছে সেটাই ভালো লাগে।
যাইহোক দুদিন আগে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম একটি রেস্টুরেন্টে দুপুরের লাঞ্চ করতে। অবশ্য শখ করে যাইনি। কয়েকদিন ধরে বাসায় কাজের বুয়া আসে না। যার ফলে রান্নার ঝক্কি ঝামেলা এড়ানোর জন্য এই বাইরে খাওয়ার সিদ্ধান্ত। আমার স্ত্রী আর মেয়েকে আগে থেকেই বলে রেখেছিলাম আমরা জোহরের নামাজের পর রেস্টুরেন্টে যাবো। যার ফলে আমি যখন নামাজ পড়তে যাবো তখন যেন তারা প্রস্তুত হয়ে থাকে। এসে দেখি তারা অনেকটাই তৈরি হয়ে আছে। তারপর অল্প কিছুক্ষণের ভেতরে আমিও তৈরি হয়ে তাদেরকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
গিয়েছিলাম একটি নতুন রেস্টুরেন্টে। নতুন রেস্টুরেন্টে সেট মেন্যুর একটি অফার চলছিলো। যেহেতু আমাদের বাইরে খেতে হবে তাই আমরা আগে থেকে খোঁজখবর নিয়ে সেই রেস্টুরেন্ট সিলেক্ট করেছিলাম। রেস্টুরেন্টটি একদমই বড়ো না। একদম ছোট্ট একটা রেস্টুরেন্ট। ভেতরে একসাথে ২০ থেকে ৩০ জন লোকের বসার ব্যবস্থা আছে। রেস্টুরেন্টে পৌঁছে দেখলাম সেখানকার বেশিরভাগ টেবিলে লোকজন বসে আছে। তারপর ও আমরা একটি ফাঁকা টেবিল দেখে সেখানে বসে পড়লাম।
বসার পর যে জিনিসটি লক্ষ্য করলাম সেটা হচ্ছে এই রেস্টুরেন্টে সার্ভিস দেয়ার লোকের সংখ্যা খুবই কম। যার ফলে লোকজন একটু বেশি হওয়াতে তারা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। যাইহোক আমরা ওয়েটারকে ডেকে খাবারের অর্ডার করলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম খাবার সার্ভ করতে কত সময় লাগবে? তারা জানালো ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে। ইতিমধ্যে দুটো বেজে গিয়েছে। পেটে ছুঁচোর নাচন শুরু হয়ে গিয়েছে। এত সময়ের কথা শুনে আমি কিছুটা হতাশ হলাম। তারপরেও যেহেতু কিছু করার নেই তাই অর্ডার দিয়ে চুপচাপ বসে থাকলাম।শুধু চুপচাপ বসেছিলাম না। নিজেদের ভেতর নানা রকম গল্প করছিলাম।
এদিকে খেয়াল করে দেখি ২০/২৫ মিনিট পার হয়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ আগেই। কিন্তু খাবার দেয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের একজনকে ডেকে একটু তাড়া দিলাম। সে খুবই ভদ্রভাবে জানালো অল্প সময়ের ভেতরেই আপনাদেরকে খাবার সার্ভ করা হবে। যাই হোক সে তার কথা রেখেছিলো। কয়েক মিনিটের ভিতর আমাদের টেবিলে খাবার চলে এলো। প্রতিবার যেটা হয় সাধারণত খাবার আসার সাথে আর ছবি তোলার কথা মনে থাকেনা। তবে এবার আর সেটা হয়নি। এবার ছবি তুলে তারপর খাওয়া শুরু করছি।
আমরা অর্ডার করেছিলাম তিনজনের জন্য তিনটি সেট মেনু। সেই সেট মেন্যুতে ছিলো চিকেন চাওমিন, ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, মাসালা চিকেন, অন্থন এবং চাইনিজ ভেজিটেবল। সাথে তো ড্রিঙ্ক ছিলোই। প্রথমে অবশ্য আমাদেরকে চাওমিন সার্ভ করেছিলো। যেহেতু পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা তাই সাথে সাথেই চাওমিন সাবাড় করে দিলাম। চাওমিন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের ভেতরে বাদবাকি আইটেম দিয়ে গেলো। খাবার গুলো বেশ মজাদার ছিল এবং একদম ফ্রেশ ছিলো। বেশ তৃপ্তি সহকারে আমি খেলাম। কিন্তু আমার সাথের দুজন চাওমিন আর ড্রিংকস বাদে প্রায় কোনো খাবারই শেষ করতে পারেনি। যার ফলে তাদের কাছ থেকে অনেকটা আমাকে খেতে হয়েছে। খাবার নষ্ট করতে আমার কাছে সব সময় খারাপ লাগে। নিতান্ত বাধ্য না হলে আমি কখনো খাবার নষ্ট করি না। আরেকটি জিনিস তো আপনাদেরকে বলাই হয়নি। এবারের খাওয়ার বিলটা কিন্তু আমাকে দিতে হয়নি। আমার স্ত্রী তার স্টিমিটের ইনকামের টাকা থেকে বিলটা দিয়েছে। বিল না দিতে হলে রেস্টুরেন্টে খেতে খুব একটা খারাপ লাগে না। কি বলেন? হা হা হা।
এখন আসি রেস্টুরেন্টের পরিবেশ সম্বন্ধে। রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন মোটামুটি ভালোই ছিলো। তবে একটি জিনিস আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি। ভেতরে এসির ব্যবস্থা আছে কিন্তু কোনো ফ্যান নেই। আমরা যখন খেতে গিয়েছিলাম তখন বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিলো। কিন্তু তাদের জেনারেটর চালাতে বেশ দেরি হয়েছে। যার ফলে আমাদের গরমের ভেতর অনেকটা সময় কাটাতে হয়েছে। কিন্তু যদি ফ্যান থাকতো তাহলে আর এই সমস্যা হতো না। এই ব্যাপারটাতে তাদের নজর দেয়া উচিত। খাবারের মান বেশ ভালই ছিলো। সবকিছু মিলিয়ে সেখানে খেতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা ভালোই ছিলো।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ঝিলটুলি |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


ভাইয়া আপনাকে দেখে বোঝাযায় আপনি ভোজন প্রেমিক একজন মানুষ। তাই আপনারা কিছুদিন পরপরই বাইরে খেতে যান। কিছুদিন আগে ভাবিও ফুচকা খাওয়ার একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিল। খুবই ভালো লাগে আমার তো খুব খেতে ইচ্ছে করে তাদের খাবারের ছবি গুলো দেখে। আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া বাহিরে খাওয়া-দাওয়ার এবং সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
একদম ঠিক ধরেছেন । আমি আসলেই একজন ভোজন রসিক মানুষ ।
একটু আগেই নুর আপুর একটি পোস্ট দেখলাম রেস্টুরেন্ট রিভিউ। এখন দেখছি আপনিও রেস্টুরেন্টে গিয়ে পোস্ট করেছেন। চারিদিকে খাওন আর খাওন।
সত্যি বলতে আমি একটু আগে খাওয়া দাওয়া করলাম কিন্তু আপনাদের এই খাবারের ছবি দেখে আমার এখন আবারও খাবার ক্ষুধা লেগে গেল। তবে ভাই একদিন অবশ্যই আপনাদের এলাকায় যাব এবং এরকম রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবো।
সব মিলিয়ে আপনার রিভিউটি অনেক ভালোই ছিল আর এই রেস্টুরেন্ট গুলোতে মূলত সব সময় ভির থাকে, ফাঁকা পাওয়া খুবই মুশকিল।
বিশেষ করে কোন অফার থাকলে তখন ভিড় বেড়ে যায় । এদিন সেটাই হয়েছিল । আপনার জন্য তো দাওয়াত রয়েছেই । যেকোনো সময় চলে আসতে পারেন ।
ভাইয়া,আপনি একদম ঠিক কথা লিখেছেন রেস্টুরেন্টের খাবার গুলো কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেটা আমরা জানি না। তবুও আমরা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার জন্য খেতে চলে যায়। রেস্টুরেন্টের খাবার থেকে ঘরে তৈরি করে খাবার অনেকটাই স্বাস্থ্যসম্মত হয়ে থাকে।যাইহোক ভাইয়া, পরিবার নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাবারের অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আর এই অনুভূতি গুলো পড়ে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। ভাইয়া, খাবার গুলো দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু এবং তরতাজা। ভাইয়া। ভাবির স্টিমের ইনকাম করার টাকা দিয়ে খাইয়েছে শুনে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে।ভাইয়া, আমি স্টিমের ইনকাম করা টাকা দিয়ে এবার ঈদে আমার মাকে কাপড় কিনে দিয়েছে এটা যেনো অন্যরকম ভাললাগা। তবে ভাইয়া, খাবারের অর্ডার দিয়ে যদি বসে থাকতে হয় খুবই বিরক্ত লাগে,যাইহোক ভাইয়া ভালো লেগেছে আপনার পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ।।
ভাইয়া পরিবার নিয়ে রেস্টুরেন্টে খুব সুন্দর একটি মূহর্ত পার করেছেন। আর ভাইয়া এমন অনেক রেস্টুরেন্টে আছে খাবার অর্ডার করার পর তারা খাবার তৈরী করে দেয়। তখন বসে বসে কিছুক্ষন গল্প করার সময় দেয়। যাক সুন্দর একটি অবিজ্ঞতা আমাদের সাথে সেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই আমাদের বাসার খাবার থেকে রেস্টুরেন্টের খাবার ভালো লাগে। যদিও রেস্টুরেন্টের খাবার ক্ষতিকর। আরেকটি কথা রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে যদি খাবারের মান ভাল হয় তাহলে খেতেও ভালো লাগে। খাবার মান খুব ভাল ছিল এটা শুনে খুব ভালো লাগলো আর পরিবারের সাথে এভাবে একসাথে খাওয়ার আনন্দই থাকে আলাদা। আপনি আনন্দঘন মুহূর্তে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন খুবই ভালো লাগছে।
যাক,শেষমেশ আপনি খাবারের ছবি তুলতে পারলেন খাবার খাওয়ার।আসলে রেস্তোরা তো বাদ ই দেই,অনেক ঘরেও আজকাল বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ফ্যান রাখেনা যা বিরক্তি লাগে।
আজকে সাথে ছবি তোলার কথা মনে করিয়ে দেয়ার লোক ছিলো তাই ছবি তুলতে পেরেছি। ঠিকই বলেছেন ফ্যান না থাকলে আসলেই খুব বিরক্তিকর লাগে।
আসলে হাজারো ব্যস্ততার মধ্যে নিজের পরিবারকে সময় দেওয়া টা খুব জরুরী। পরিবার নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়ার মজাই আলাদা। বিশেষ করে এমন রেস্টুরেন্ট হলে তো কোন কথায় নাই। খাবারগুলো প্রচুর লোভনীয় লাগছে ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। পরিবার নিয়ে ভালো থাকবেন ভাইয়া এবং অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ঠিকই বলেছেন পরিবারকে সময় দেয়াটা খুবই জরুরী।