মেয়েকে নিয়ে বাইরে ঘোরাফেরা আর হাল্কা খাওয়া দাওয়া করা।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মেয়েকে কথা দিয়েছিলাম একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হব। তবে আগের রাতে ঘুম ভালো না হওয়ায় আমার নিজেরই ভালো লাগছিল না। তাই বের হওয়ার সময় বার দুয়েক আমার মেয়েকে ডেকেছিলাম। কিন্তু সে ঘুমিয়ে থাকায় পরে আমি একা একাই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছিলাম। ঘোরাফেরা শেষ করে যখন বাড়িতে আসলাম। তখন শুনতে পেলাম আমি বের হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সে ঘুম থেকে জেগে গিয়েছিলো। আমি তাকে না নিয়ে চলে গিয়েছি এজন্য আমার উপর প্রচন্ড রাগ করেছে।

IMG_20230221_165402.jpg

বুঝতে পারলাম এখন তার রাগ ভাঙানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আমার মেয়ে বাইরে খেতে বেশ পছন্দ করে। অবশ্য আজকালকার বেশিরভাগ বাচ্চাই বাইরের খাবার খেতে পছন্দ করে। তাছাড়া কয়দিন ধরে মেয়ে বলছিল বাইরে থেকে তাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। আমিও চিন্তা করেছিলাম পরিবার নিয়ে আশেপাশে কোন একটা রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া দাওয়া করে আসবো। তবে যেহেতু মেয়ে ইতিমধ্যে রেগে গিয়েছে। তাই তাকে ঠান্ডা করার জন্য চিন্তা করলাম বিকালে তাকে নিয়ে বের হবো। আমার মেয়ে ওভেন বেকড পাস্তা খেতে খুবই পছন্দ করে। ফেসবুকের মাধ্যমে দেখতে পেলাম একটি রেস্টুরেন্টে অনেকেই পাস্তা খেয়ে ভালো রিভিউ দিচ্ছে। তাই মেয়েকে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে তোমাকে নিয়ে বিকালে ঘুরতে বের হবো। ঘোরাফেরা শেষে আমরা পাস্তা খেয়ে তারপর বাড়িতে ফিরবো। এই কথা বলার পর মেয়ের রাগ কিছুটা কমলো।

IMG_20230221_165337.jpg

অবশ্য মেয়ের মা কেও বলেছিলাম আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সে বাপের বাড়ি চলে যাওয়ায় আমাদের সাথে আর যেতে পারেনি। যাই হোক শেষ পর্যন্ত বাবা মেয়েতেই বিকালে ঘুরতে বের হলাম। আমার মেয়ে বাইরে গিয়ে খোলামেলা জায়গা পেলে সেখানে দৌড়াতে খুব পছন্দ করে। তাই তাকে বলেছিলাম বিকালের দিকে আমরা প্রথমে স্টেডিয়ামে যাব। সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে তারপর পাস্তা খেতে যাবো। তাই বাসা থেকে বের হয়ে রিক্সা নিয়ে সোজা উপস্থিত হলাম স্টেডিয়ামে। কিন্তু ভাগ্য খারাপ থাকলে যা হয় আর কি। স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখতে পেলাম সেখানকার গেটে তালা ঝুলছে। ভেতরে ঢোকার কোন ব্যবস্থা নেই। অগত্যা কি আর করা? আমরা বাপ মেয়ে মিলে আস্তে আস্তে রেস্টুরেন্টের দিকে আগাতে লাগলাম।

IMG_20230221_162110.jpg

রেস্টুরেন্টটির অবস্থান স্টেডিয়ামের কাছেই। এই জায়গায় রেস্টুরেন্ট হয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই। কিন্তু কেন জানি সেখানে কেউই ভালোমতো ব্যবসা করতে পারছে না। কিছুদিন পরপরই সেই রেস্টুরেন্টের মালিকানা পরিবর্তন হয়। অথচ রেস্টুরেন্টটির কাছেই ফরিদপুরের সবচাইতে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজেন্দ্র কলেজের একটি ক্যাম্পাস এবং কয়েকটি হোস্টেল রয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার ছেলে মেয়ে অবস্থান করে। তাছাড়া রেস্টুরেন্টের আশেপাশে সব আবাসিক এলাকা। সেখানেও অনেক মানুষ বসবাস করে। তারপরও যে কেন ওখানে কেউ ব্যবসা করতে পারছে না সেটা বুঝতে পারলাম না।

IMG_20230221_164115.jpg

যাইহোক প্রথমে চিন্তা করেছিলাম হেঁটেই রেস্টুরেন্টে যাবো। কিন্তু মেয়ে আমার হাঁটতে রাজি নয়। তাই একটি রিকশা নিয়ে অল্প সময়ে রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেলাম। এই রেস্টুরেন্টে আমি এর আগে কখনো খেতে আসিনি। ছোট্ট একটি রেস্টুরেন্ট মোটামুটি সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা। ভেতরে অল্প কিছু লোকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা রেস্টুরেন্টে ঢুকে মেনু কার্ডের দিকে না তাকিয়ে ওভেন বেকড পাস্তা অর্ডার করলাম। তারপর আমি আর আমার মেয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। অবশ্য এর ভেতরে আমার মেয়ে আমার মোবাইল নিয়ে গেম খেলা শুরু করে দিয়েছে। সে গেম খেলছিল আর আমার সাথে গল্প করছিল। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে কেটে যাওয়ার পর আমাদের সামনে হাজির হয়ে গেল ওভেন বেকড পাস্তা।

IMG_20230221_162106.jpg

পাস্তার চেহারা দেখেই মনে হচ্ছিল খেতে বেশ ভালো হয়েছে। তবে মুখে দেয়ার পর বুঝতে পারলাম দেখতে যতটা ভালো হয়েছিল খেতে তার থেকেও ভালো লাগছে। যাইহোক অল্প সময়ে আমার খাওয়া শেষ হয়ে গেলো। অবশ্য আমার মেয়ে আস্তে আস্তে করে একাই খাচ্ছিল। একবার চিন্তা করেছিলাম তাকে খাইয়ে দিতে হবে কিনা। তবে দেখতে পারলাম সে নিজেই আগ্রহ নিয়ে নিজ হাতে খাচ্ছে। এর ভেতরে তার জন্য আমি একটি কোল্ড ড্রিংকস অর্ডার করেছিলাম। সে পাস্তা খাওয়া শেষ করে কোলড্রিংসের গ্লাসে চুমুক দিতে লাগলো। তারপর আমাদের খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে বিল মিটিয়ে আমরা রওনা দিলাম মার্কেটের উদ্দেশ্যে। কারণ বাবার সাথে বাইরে এলেই তার কিছু না কিছু কেনার ইচ্ছা জাগে। সে কেনাকাটার গল্প অন্য আরেকদিন হবে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঝিলটুলী

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 last year 

একটি সত্নান বাবা মায়ের কাছ থেকে অনেক কিছু পেতে চায় ৷ আর জানি না সেটা সম্পুর্ন পূর্ন করতে পারে কি না ৷ তবে চেষ্টা করে প্রতিনিয়ত এটা সত্য ৷

যা হোক ভাই মেয়ে কে ঘুমিয়ে রেখে ঘোরাঘুরি ৷ আর এসে আবার নিয়ে যেতে হলো ৷ হাহাহা!!!
দুই বাবা মেয়ে বেশ ভালোই সময় পার করেছেন ৷ অনেক ভালো লাগলো ভাই ৷

 last year 

মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে গিয়ে খুব ভাল সময় পার করেছেন আশাকরি। খুব ভাল লাগলো। খাওয়া দাওয়া ও হলো। বাইরে গেলে না খেয়ে কি পারা যায়। খুব ভাল করেছেন।বেকড পাস্তা সব বাচ্চারাই খুব পছন্দ করে। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য। এত সুন্দর ঘোরাঘুরি আর খাওয়া দাওয়ায় মেয়ে এবার খুব খুশি।

 last year 

মেয়েকে নিয়ে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন ভাইয়া। আসলে প্রতিটি মা বাবা চায় নিজের সন্তানদেরকে সবসময় খুশি রাখতে। তবে অনেক বাবা হয়তোবা প্রচন্ড ব্যস্ততার জন্য সন্তানদেরকে তেমন সময় দিতে পারে না। তবে আপনার মেয়ে খুব ভাগ্যবতী, যে আপনার মতো বাবা পেয়েছে। স্টেডিয়ামের গেইট খোলা থাকলে, আপনার মেয়ে দৌড়াদৌড়ি করে আরও বেশি আনন্দ পেত। যাইহোক রেস্টুরেন্টে গিয়ে পাস্তা খেয়ে মার্কেটে গিয়েছেন,সেই গল্প পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। আপনারা সবাই সবসময় খুব ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন সেই কামনা করছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65702.61
ETH 3485.24
USDT 1.00
SBD 2.51