আনন্দময় যাত্রার মর্মান্তিক পরিসমাপ্তি।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। চাপাইনবাবগঞ্জে বর যাত্রীবাহী একটি নৌকায় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ১৬ জন নিহত। আমাদের দেশে গত কয়েক বছর থেকে বজ্রপাতে প্রচুর লোক মারা যাচ্ছে। মাঝে মাঝেই শোনা যায় বজ্রপাতে একই স্থানে দু-তিন জন নিহত হয়েছে। কিন্তু এমন মর্মান্তিক ঘটনা আমি এর আগে শুনিনি। খবরটা পড়ার পর থেকে মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে। আমি মনে কল্পনা করছিলাম যে ওই বিয়েতে যদি আমি উপস্থিত থাকতাম। অথবা আমার কোন আত্মীয়ের বিয়ে হতো। তাহলে আমার পরিস্থিতি এখন কেমন থাকতো। বজ্রপাতে বর সহ তার পরিবারের আরও কয়েকজন লোক মারা গিয়েছে। নৌকায় থাকা আরও অনেকেই গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

lightning.jpg

ছবির সোর্স-লিংক


বর্তমানে বাংলাদেশে বজ্রপাত ভয়াবহ একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যদিও আগেও বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সেটা এখনকার মত এত বেশি নয়। বর্তমানে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু হার বাংলাদেশে অনেক বেড়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে যে সমস্ত প্রাকৃতিক বিপর্যয় পৃথিবী কে গ্রাশ করবে তার ভিতরে বজ্রপাত অন্যতম। অন্য কথায় বলতে গেলে বজ্রপাতের এই অবস্থার জন্য মানুষ অনেকটা দায়ী। দেশে বেশ কিছু বছর যাবত বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু অনেকটা ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

একটা সময় ছিল বাংলাদেশে প্রচুর তাল গাছ ছিলো। যেটা বজ্রপাত থেকে মানুষকে রক্ষায় অনেক বড় ভূমিকা রাখতো। আরও ছিল ব্রিটিশদের স্থাপিত বজ্রপাত রোধী কিছু পিলার। বাংলাদেশের মানুষ গুজবের বশবর্তী হয়ে সে পিলারগুলো মহামূল্যবান মনে করে উঠিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। সেই পিলারগুলো বজ্রপাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে ভূমিকা রাখতো। তারপর মানুষের ভেতর বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য যে সতর্কতামূলক পদ্ধতি অবলম্বন করতে বলা হয় সে বিষয়েও অনেক অনীহা কাজ করে। প্রতিটা বাড়ির উপরে বজ্রপাত রোধী ধাতব দন্ড লাগানোর কথা বলা আছে। কিন্তু এটা বাংলাদেশে বর্তমানে কোন বাড়িতেই দেখা যায় না।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মানুষকে জলবায়ু ধ্বংসকারী কর্মকাণ্ড থেকে ফিরে আসতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব পৃথিবীর তাপমাত্রা কমিয়ে আনার দিকে সচেষ্ট হতে হবে। ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ কমাতে হবে। কয়লা ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের দিকে সর্বোচ্চ নজর দিতে হবে। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে। বৃক্ষরোপনে পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশকে আন্তরিকভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। যদি এই কাজগুলো আমরা করতে পারি পৃথিবীর সমস্ত দেশ এক হয়ে। তাহলে হয়তো জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমরা নিজেদেরকে আরো কিছুদিন রক্ষা করতে পারবো। না হলে অতি দ্রুত আমাদের ধ্বংস অনিবার্য।

আমার আজকের লেখার এখানেই শেষ করছি। আশাকরি আপনাদের লেখাটি ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

🌩️⛈️⚡⚡ধন্যবাদ🌩️⛈️


@rupok


আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।

Sort:  
 3 years ago 

তথ্যবহুল পোস্ট। সচেতনতা দরকার। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ শুভ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য। এতো মৃত্যু দেখতে আর ভালো লাগে না।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60270.61
ETH 2411.66
USDT 1.00
SBD 2.43