হর্টিকালচার সেন্টার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা (শেষ পর্ব)। ১০%সাইফক্স।
গতকাল হর্টিকালচার সেন্টারে গিয়ে একটা নতুন জিনিস দেখতে পেলাম। যেটা আগে কখনো আমি দেখিনি। সেটা হচ্ছে তিন রঙের জবা ফুল। এখানে সাদা রঙের জবা ফুল, হলুদ রঙের জবা ফুল এবং লাল রঙের জবা ফুল। তিন রঙের জবা ফুলের গাছই ছিলো। আমি আগে কখনো সাদা রংয়ের জবাফুল সামনাসামনি দেখিনি। যদিও এই সময় বেশি একটা ফুল দেখা যায় না। তারপরও যে অল্প কয়টা ফুল গাছ দেখতে পেলাম তার ভেতর এই জবাফুল ছিল অন্যতম। যেকোনো ধরনের জিনিস প্রথম দেখার একটা অন্যরকম আনন্দ কাজ করে। আমার ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছিলো।
তারপর গতকালকে হর্টিকালচার সেন্টারে গিয়ে আমার একটা ভুল ভাঙলো। আমি চিন্তা করছিলাম এখানে গাছের ফল ইচ্ছা করলেই কেনা যায়। কিন্তু সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানালো এখানকার গাছের ফল এভাবে বিক্রি হয় না। তারা টেন্ডারের মাধ্যমে সব গাছের ফল বিক্রি করে। এটা শুনে খুবই হতাশ হলাম। তখন আমার বন্ধু ফেরদৌস আমাকে এর পেছনের ঘটনা জানালো।
সে বলল এক সময় এই হর্টিকালচার সেন্টারের চারপাশে দেয়াল ছিল না। যার ফলে আশেপাশের এলাকার লোকজন যখন ইচ্ছা এসে গাছের ফল পেড়ে নিয়ে যেতো। শুধু যে খাওয়ার জন্যই নিতো তা নয়। অনেকে আবার এই ফল পেড়ে বিক্রি পর্যন্ত করতো। কর্তৃপক্ষ নিষেধ করলেও সেটা তারা গায়ে লাগতো না। শেষ পর্যন্ত এখানকার কর্তৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে হর্টিকালচার সেন্টার এর চারপাশে দেয়াল দিতে বাধ্য হয়। এখন আর সেখানে অবাধ প্রবেশাধিকার নেই। এখন তারা ফল বিক্রির অন্য মাধ্যমে নিয়েছে।
হর্টিকালচার সেন্টার এর ভিতরে দেখলাম বেশ কিছু লোক নানা রকম কাজে ব্যস্ত। কিছু লোকজন দেখলাম আমের চারা তৈরিতে ব্যস্ত। আবার কিছু লোকজনকে দেখলাম লিচু বাগানের ভেতরে আগাছা পরিষ্কার করছে। আবার কিছু লোককে দেখলাম সফেদা বাগানের ভেতরে মাঠে যেমন ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দেয়া হয় সেভাবে চাষ দিচ্ছে। এটাও মনে হয় আগাছা তাড়ানোর একটা উপায়। এখানে কর্মরত লোকজনের সাথে কথাবার্তা বলে বেশ কিছু তথ্য জানতে পারলাম।
যখন সফেদা বাগানের কাছে গিয়েছি তখন দেখি রসালো সফেদায় প্রতিটি গাছ ভরে আছে। দেখেই খেতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু ইচ্ছে করলেও কোন উপায় নেই। কারণ এখান থেকে আপনি ইচ্ছা করলেই ফল কিনে খেতে পারবেন না। এই হর্টিকালচার সেন্টারে আরও একটি জিনিস দেখতে পেলাম যেটা আমার জন্য নতুন। সেটা হচ্ছে ড্রাগন ফলের বাগান। ড্রাগন ফল দেখতে অত্যন্ত সুন্দর।
কিন্তু আমি আমার বন্ধু ফেরদৌসের ড্রাগন ফল খাওয়ার অভিজ্ঞতা শোনার পর এই ফল খাওয়ার ইচ্ছা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছি। তার ভাষায় এই ফলটি শুধু দেখতে সুন্দর খেতে মোটেই ভালো না। বাজারে মাঝে মাঝে যখন ড্রাগন ফল দেখি। তখন কিনতে ইচ্ছা করে। কিন্তু ফেরদৌস এর কথা মনে পড়ে যাওয়ায় আর কেনা হয় না। শুনলাম এক সময় এখানকার ড্রাগন ফলের বাগানটি আরো বড় ছিলো। কিন্তু এখন সেটা বেশ ছোট হয়ে গিয়েছে। গাছের সংখ্যা কমে গিয়েছে।
এই হর্টিকালচার সেন্টারের সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি এখান থেকে তুলনামূলক অনেক কম দামে বিভিন্ন গাছের চারা কিনতে পারবেন। বাইরে যে গাছের চারা ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দাম। সেটা আপনি এখান থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকার ভেতরে কিনতে পারবেন। এর আগে আমি আমার পরিবার নিয়ে যখন এখানে এসেছিলাম। তখন আমার স্ত্রী এখান থেকে বেশ কিছু গাছ কিনেছিলো। সেগুলোর দাম নিয়েছিল খুবই কম।
এখানে আরো একটি জিনিস পাওয়া যায়। যেটা শহরে আমাদের জন্য পাওয়া খুব মুশকিল। সেটা হচ্ছে কম্পোস্ট সার। যারা বাগান করে তাদের জন্য এই জিনিসটি খুবই প্রয়োজনীয়। কিন্তু শহরে সেটা সহজে পাওয়া যায় না। তাই শহরের বাগানিদের জন্য এই হর্টিকালচার সেন্টারের কম্পোস্ট সার খুবই কাজের জিনিস এবং সহজপ্রাপ্য।
এখানকার আরও একটি জিনিস আমার খুব ভালো লেগেছে। সেটা হচ্ছে দেখলাম ডালিম গাছে ডালিম ধরে আছে। যদিও এখনো বড় হয়নি। আবার গাছে বেশ কিছু ডালিমের ফুলও দেখলাম। কিছুটা সামনে যাওয়ার পর আবার দেখতে পেলাম খাটো জাতের নারিকেল বাগান। আমি পুরোপুরি নিশ্চিত নই তারপরও মনে হল এগুলি ভিয়েতনামের নারিকেলের জাত। শুনেছি এই গাছগুলি নাকি আকারে ছোট হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে নারকেল ধরে। চারদিক ঘুরে ফিরে দেখে বেশ ভালো লাগলো। অনেক কিছু দেখতে পেলাম অনেক কিছু জানতে পারলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
ভাইয়া,হর্টিকালচার সেন্টার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পোষ্টের প্রথম পর্ব গুলো আমি দেখিনি।তবে শেষ পর্বের প্রতিটা ফটোগ্রাফি এবং লেখা পড়ে খুবই ভালো লেগেছে।হর্টিকালচার সেন্টার সেখানে ফল টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয় সেটি শুনে সত্যি আশ্চর্য লেগেছে। তারপরও ভাইয়া তরতাজা এবং ফরমালিন মুক্ত ফল এখানে পাওয়া যায় শুনে খুবই ভাল লেগেছে।ভাইয়া,ড্রাগন ফল সত্যি কথা বলতে কি দেখতে সুন্দর বাস্তবে খেতে একদম স্বাদ নয়।কারণ ড্রাগন ফল আমি খেয়েছি প্রথমে মনে করেছিলাম অনেক সুস্বাদু হবে।পরে এই ফলটির খেয়ে আর কি বলবো বলার মত ভাষা নেই😔 ভাইয়া, হর্টিকালচার সেন্টার বিভিন্ন চারার দাম খুবই কম খুব ভালো লেগেছে পড়ে। যদি আমার বাড়ির পাশে থাকতো তাহলে ওখান থেকে বিভিন্ন ফলের চারা কিনে আনতাম কারন আমার ফল অথবা ফুলের বাগান করতে খুবই ভালো লাগে।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া,এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।।
ড্রাগন ফল দেখতে যতোটা সুন্দর আসলে খেতে তেমন মজা নেই।আমার বিশেষ একটা মজা লাগেনা এই আরকি।অনেকের আবার খুব প্রিয়।জায়গাটি আসলেই সুন্দর।
জায়গাটি অনেক সুন্দর ভাইয়া। কিন্তু আমি হলুদ জবা ফুলটি কখনো দেখিনি এইবার প্রথম দেখলাম। আমি কখনো হর্টিকালচারের নাম শুনিনি। কিন্তু আপনার ফটোগ্রাফি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুন্দর একটি জায়গা। আপনার ফটোগ্রাফি আর জায়গায়টির বর্ননা আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।