দুই বন্ধুর উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি অতঃপর বিকালের হালকা নাস্তা।
গত কয়েকদিন ধরে ভালোই ঘোরাফেরা চলছে। বিকাল হলেই আমি আর ফেরদৌস দুজন বেরিয়ে পড়ছি ঘুরতে। বছরের এই সময়টাতে আবহাওয়া থাকে চমৎকার। না গরম না শীত। তবে এই চমৎকার আবহাওয়ার ভিতরেও একটি সমস্যায় আমাদের ভুগতে হচ্ছে। সেটা হচ্ছে রাস্তাঘাটে বের হলেই প্রচুর ধুলাবালি। আর বিশেষ করে যদি পাশ দিয়ে কোন ট্রাক চলে যায় তাহলে তো রীতিমতো ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায় রাস্তা। গত কয়েকদিন আমরা ঘোরাঘুরি করার সময় এই সমস্যাটার সম্মুখীন হচ্ছি। ট্রাক নামের এই যন্ত্র দানবগুলি শুধু শহরের অবস্থা নয় গ্রামের অবস্থাও খারাপ করে ফেলেছে। যদিও যেকোনো উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে ট্রাকের সংযোগ অতি ঘনিষ্ঠ। তাই খারাপ লাগলেও কিছু বলার নেই।
যাই হোক যথারীতি সেদিন দুপুরে ফেরদৌসকে ফোন দিয়েছিলাম যে বাইরে বের হবে কিনা। ফেরদৌস সাথে সাথে বলল বিকালে চলে এসো । ফেরদৌস আগে সময় মত কোথাও আসতে পারতো না। তবে এখন তার সময় জ্ঞান অনেক ভালো হয়েছে। এখন মোটামুটি নির্ধারিত সময়ে এসে উপস্থিত হয়ে যায়। নির্ধারিত জায়গায় আমি পৌঁছানোর কিছুক্ষণের ভেতরেই ফেরদৌস সেখানে চলে এলো। আজকে আমরা কোন দিকে ঘুরতে যাব সেটা আগে থেকে ঠিক করিনি। যার ফলে দুই বন্ধু এক জায়গায় হওয়ার পরে দুজনে পরিকল্পনা করতে লাগলাম কোথায় যাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত ফেরদৌস বলল চলো খলিল মন্ডলের হাটের ওইদিকে যায়। সেখানে একজন হালিম বিক্রেতা আছেন। যার হালিম খেতে বেশ ভালোই। আমরা দুই বন্ধু এর আগে একবার তার হালিম খেয়েছিলাম। পরিকল্পনা টা আমার পছন্দ হওয়াতে সাথে সাথে দুজনের রওনা দিলাম।
সেই দোকানটির অবস্থান আমাদের শহর থেকে ৮-১০ কিলোমিটার দূরে। তবে সেখানে যাওয়ার রাস্তাটি বেশ ভালো। যদিও অনেকদিন সেদিকে যাওয়া হয় না। তো আমরা দু'বন্ধু গল্প করতে করতে আস্তে আস্তে এগোচ্ছিলাম সেদিকে। আগেই বলেছি বছরের এই সময়টার আবহাওয়া আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আমরা আস্তে আস্তে গল্প করতে করতে সেদিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু যখন আমরা মেইন রোড থেকে গ্রামের ভেতরে রাস্তায় ঢুকতে ঢুকেছি। তখন দেখতে পেলাম রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পুরো রাস্তাটা বাজে ভাবে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। রাস্তার এই অবস্থা দেখে সেদিকে আমার আর যেতে ইচ্ছা করছিল না। যদিও ফেরদৌসের যথেষ্ট গরজ ছিলো। তাই আমি আর নিষেধ করিনি।
শেষ পর্যন্ত আস্তে আস্তে করে চালাতে চালাতে আমরা সেই বাজারে পৌঁছলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমাদের হতাশ হতে হলো। কারণ সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম সেই হালিম বিক্রেতা আর এখন সেখানে থাকেন না। তার দোকানটি নাকি বেশ কিছুদিন আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতদূর হালিম খেতে এসে যদি দেখি দোকান বন্ধ। তখন মনটা কেমন লাগছিলো আশাকরি সেটা আপনারা ভালই বুঝতে পারছেন।
যাইহোক কি আর করা যেহেতু হালিম পেলাম না। তাই আমরা উদ্দেশ্যহীনভাবে এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করতে লাগলাম। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে ঘোরাফেরা করার পর আমি ফেরদৌসকে বললাম শহরের দিকে চলো। সেখানে একটি নতুন ফাস্টফুডের দোকান উদ্বোধন হয়েছে। সেখানে গিয়ে হালকা কিছু খেয়ে নেই। ফেরদৌস আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেল। তারপর দুজনে মিলে শহরের দিকে আগাতে থাকলাম। শহরে পৌঁছাতে পৌঁছতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। সেই ফাস্টফুডের দোকানে পৌঁছে ফেরদৌস আমাকে বলল তুমি খাবারের অর্ডার করো। আমি একটা কাজ সেরে আসছি। আমি একা কী খাবার অর্ডার করবো সেটাই চিন্তা করছিলাম।
তারপর ঠিক করলাম ফেরদৌস আসুক তখন ওর মতামত নিয়ে খাবার অর্ডার করবো। এদিকে ফেরদৌসের কোন দেখা পাচ্ছিলাম না। বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে তারপর ফেরদৌস ফিরলো। তারপর দুই বন্ধু সে ফাস্টফুড এর দোকানে বসে দেখতে লাগলাম কি খাওয়া যায়। আমি ফেরদৌসকে বললাম তুমি দেখো কি খাবে? ফেরদৌস মেনু টা চেক করে বলল পাস্তা খাওয়া যেতে পারে। তারপর দুজনের জন্য পাত্তা অর্ডার করলাম। আর ফেরদৌস সাথে নিল একটি চা। অল্প কিছুক্ষণের ভিতরে আমাদের সামনে খাবার পরিবেশন করলো। যদিও খাবারের মান খুব একটা ভালো ছিল না। ফেরদৌসের কাছে তো একেবারেই পছন্দ হয়নি। আমার কাছে মোটামুটি লেগেছে। তাই আমি আর দেরি না করে দ্রুত ফেরদৌসের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। ফেরদৌস ও তার বাড়ির দিকে চলে গেল।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | নর্থ চ্যানেল |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
মোটামুটি আগের পোস্টগুলো পড়ে জানতে পারলাম যে আপনি আর ফেরদৌস ভাই প্রায় সময় ঘুরতে বের হয়ে যান। তবে আজকে খুব ব্যথিত হলাম যখন শুনতে পারলাম এতদূর যাওয়ার পরও আপনারা হালিম খেতে পারেননি। তাছাড়া ফাস্টফুডের যে দোকানটাতে গিয়ে পাস্তা অর্ডার করেছেন সেটাও আপনাদের কাছে ভালো লাগেনি খেতে সেটা শুনে তো আরো খারাপ লাগছে। কারণ দুটো জায়গায় গিয়েই মন মত খাওয়া হলো না। আর ভাই এটা ঠিক বলেছেন এখনকার পরিবেশ কিন্তু বেশ মজার তবে রাস্তাঘাটে ধুলাবালি সেই আমেজটা নষ্ট করে দেয়।
বছরের এই সময়টাতে মোটরসাইকেলে করে ঘুরে বেড়াতে আসলেই ভালো লাগে। সেদিনের খাওয়া-দাওয়া টা বাদে বাদবাকি সবই ভালো ছিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এই সময়কার আবহাওয়াটা বেশ ভালো। কিন্তু রাস্তাঘাটে ধুলাবালির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। হয়তো বৃষ্টি হলে ধুলাবালি কমে যাবে। যাই হোক আপনার বন্ধু ফেরদৌস ভাইয়া আগের থেকে এখন টাইম মেইনটেইন করা শিখেছে জেনে ভালো লাগলো। আসলে সময় মানুষকে পরিবর্তন করে দেয়। অনেক সময় আমরা আমাদের পছন্দের খাবারের খোঁজে দূরদূরান্তে চলে যাই। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর যখন দেখি সেই পছন্দের খাবারের দোকানটি বন্ধ তখন সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগে। যাইহোক এবার অন্য জায়গায় গিয়ে পাস্তা খেয়েছেন যেনে ভালো লাগলো।
ঠিকই বলেছেন আপু। এতটা দূরে যাওয়ার পর যদি পছন্দের খাবার না পাওয়া যায় তখন আসলেই খারাপ লাগে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখন শহরে রাস্তার পাশাপাশি গ্রামের রাস্তাগুলোর অবস্থা একদম বাজে হয়ে গিয়েছে। চতুর্দিকে শুধু ধুলাবালি। যাইহোক আপনি আর আপনার বন্ধু ঘোরাফেরার পর পাস্তা খেয়েছেন। পাস্তাটা আমারও ভীষণ ভালো লাগে বিশেষ করে ক্রিমি পাস্তাটা আমার ভীষণ পছন্দের। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার বন্ধুর সাথে ঘোরাঘুরি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু আপনাকে। পাস্তা আমারও বেশ পছন্দের খাবার। তবে আমি পছন্দ করি ওভেন বেকড পাস্তা।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখন শহরে রাস্তার পাশাপাশি গ্রামের রাস্তাগুলোর অবস্থা একদম বাজে হয়ে গিয়েছে। চতুর্দিকে শুধু ধুলাবালি। যাইহোক আপনি আর আপনার বন্ধু ঘোরাফেরার পর পাস্তা খেয়েছেন। পাস্তাটা আমারও ভীষণ ভালো লাগে বিশেষ করে ক্রিমি পাস্তাটা আমার ভীষণ পছন্দের। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার বন্ধুর সাথে ঘোরাঘুরি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন। রাস্তা ঘাটে ধুলাবালির জন্য আমি তেমন বের হতেই চাই না। বিশেষ করে ট্রাক নামক দানবটা রাস্তা দিয়ে আসলে ভয়ও লাগে। যায়হোক আপনারা অনেক ঘরাঘুরি করে অবশেষে রেস্টুরেন্টে গিয়ে পাস্তা খেলেন। দুই বন্ধুর উদ্দেশহীন ঘুরাঘুরি করার অনুভূতি পড়ে অনেক ভাল লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ট্রাকের জন্যই সমস্যাটা আসলে বেশি হয়। অন্যান্য যানবাহন এতটা ধুলাবালি উড়ায় না।
জি ভাই ঠিক বলেছেন এই সময়ে রাস্তা পুরো ধুলাবালি ৷ আর ট্রাক যাওয়ার যা অবস্থা তাতে পোশাক নষ্ট হয়ে যায় ৷ আসলে এই বসন্ত কালে এমন হয় ৷ বন্ধু ফেরদৌস সহ ভাঙ্গা রাস্তা থাকা সত্ত্বেও হালিম খেতে গেছেন ৷ কিন্তু দুঃখের বিষয় হালিম খাওয়া হলো না ৷
হালিম না খেতে পেয়ে মেজাজটা আসলেই খারাপ হয়েছিলো।