প্রাণবন্ত আড্ডায় কাটানো কিছু সময়। 10% shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


একটা সময় আড্ডা ছিল জীবনের অন্যতম প্রধান একটি অনুষঙ্গ। কিন্তু সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে আড্ডাটা জীবন থেকে প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। তারপরও এখনো মাঝে মাঝে সময় পেলে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কোন জায়গায় আড্ডায় বসে যায়। আমার এক পরিচিত বড় ভাই আছে। যিনি অনেকটা বন্ধুর মতন। একসময় তার সঙ্গেও প্রচুর আড্ডা দিয়েছি। কিন্তু এখন ব্যস্ততার কারণে আর হয়ে ওঠে না।

IMG_20220409_115840.jpg

IMG_20220409_115810.jpg

বেশ কিছুদিন থেকেই চিন্তা করছিলাম তার সাথে দেখা করে কিছুক্ষণ গল্প গুজব করি। এইজন্যই কয়েকদিন আগে ফোন দিয়েছিলাম যে উনি ফ্রি আছেন কিনা? উনি জানালো ফ্রি আছেন। তারপর আমরা দুজন সাধারণত যেখানে দেখা করি পূর্বপরিকল্পনা মতো সেখানে উপস্থিত হলাম। আমরা সাধারণত ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ফরিদপুর নিউ মার্কেটের কাছাকাছি একটি জায়গায় আড্ডা দিই। আমি মুলত বাসা থেকে বের হয়েছিলাম কিছু ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে। এজন্য উনাকে কিছুক্ষণ পরে আসতে বলেছিলাম।

IMG_20220409_113025.jpg

IMG_20220409_110847.jpg

তো আমার কাজ শেষ হতে হতে উনি সেখানে চলে এলো। তারপর দুজনে বসে গল্প গুজব করতে লাগলাম। এর ভেতরে বন্ধু ফেরদৌস এর সাথে কথা হলো ফোনে। সে জানালো সেও নিউ মার্কেটের দিকে আসছে। আমি চিন্তা করলাম ভালই হল তিনজনে মিলে একটা জম্পেশ আড্ডা হবে। যদিও রোজার দিন আড্ডাটা খুব একটা ভালো যমে না। কারণ আড্ডার সঙ্গে যদি হালকা খাওয়া-দাওয়া না হয় তাহলে সেই আড্ডাটা আসলে পরিপূর্ণ হয় না। কিছুক্ষণ পর বন্ধু ফেরদৌস সেখানে উপস্থিত হল।

IMG_20220409_110841.jpg

IMG_20220409_110819.jpg

আমরা যেখানে বসে কথা বলছিলাম সে জায়গাটা খুবই কোলাহলপূর্ণ। প্রচুর লোকজন যাতায়াত সেখানে। আমাদের সেই বড় ভাই আমাদেরকে প্রস্তাব দিলো চলেন নিরিবিলি কোথাও গিয়ে বসে আড্ডা দিই। সাথে সাথে আমরা রাজি হয়ে গেলাম। চিন্তা করছিলাম কোথায় যাওয়া যায়। উনি বলল চলেন আমরা পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বাড়ির ওইখানে গিয়ে আড্ডা দিই। জায়গাটা বেশ নিরিবিলি এবং আড্ডা দেয়ার জন্য চমৎকার। প্রস্তাবটা আমাদের সবারই মনে ধরল। সাথে সাথে আমরা রওনা দিলাম পল্লীকবির বাড়ির উদ্দেশ্যে।

IMG_20220409_110744.jpg

IMG_20220409_110647.jpg

জায়গাটা নিউমার্কেট থেকে খুব একটা দূরে নয়। মিনিটদশেক মত লাগে সেখানে পৌছতে। অল্প সময়ে আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম। পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বাড়ির সামনে একটি নদী বয়ে গিয়েছে। নদীর পাড়ে একটি লম্বা মাঠ আছে। যেখানে একটি সময় প্রতিবছর একটি মেলা অনুষ্ঠিত হতো। এই মেলাটি জসিম মেলা নামে পরিচিত। খুবই জমজমাট একটি মেলা ছিল সেটি। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক সমস্যার কারণে গত কয়েক বছর যাবৎ মেলাটি বন্ধ আছে। তবে বর্তমানে শুনতে পাচ্ছি রোজার পরে নাকি সেই মালাটি আবার শুরু হবে।

IMG_20220409_110616.jpg

IMG_20220409_115941.jpg

এই মেলাটি ছিল শহরের মানুষের বিনোদনের একটি মাধ্যম। মেলাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরের মানুষের মন খুবই খারাপ ছিলো। যাই হোক আমরা সেই মেলার মাঠে বসে আড্ডা দিতে লাগলাম। মাঠের পাশেই বড় বড় গাছ। সেই গাছের ছায়ায় আমরা বসে ছিলাম। অবশ্য সেখানে শুধু আমরা ছিলাম না। বেশ কয়েক জোড়া প্রেমিক প্রেমিকা যুগল ও বসেছিল। তারাও এসেছিল কিছুটা নির্জনতার খোঁজে। তবে এই মাঠের একটি জিনিস আমার কাছে খুবই খারাপ লাগলো। সেটি হচ্ছে মাঠের প্রচুর নোংরা আবর্জনা। বিশেষ করে প্লাস্টিকের প্যাকেট দিয়ে মাঠ ভরা। আমাদের দেশের এই জিনিসটা আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে। আমরা আসলে এই ব্যাপারে চরম অসচেতন।

IMG_20220409_115900.jpg

IMG_20220409_110557.jpg

আমরা সেখানে বসে বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। এর ভেতরে যোহরের আযান দিয়ে দিলো। আমার বাজারে আরো কিছু কাজ বাকি ছিলো। যার ফলে সেদিনের মত আড্ডা শেষ করে বাজারের দিকে রওনা দিলাম। জীবনে এমন একটা সময় ছিল যখন প্রতিদিন অনেক সময় ব্যয় করেছি এই আড্ডাবাজিতে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এখন সে আড্ডার সঙ্গী গুলো আর কেউ কাছে নেই। যার ফলে সেই প্রাণবন্ত আড্ডাগুলো আর এখন হয় না। যাইহোক তারপরও মাঝে মাঝে চেষ্টা করি আশে পাশে যারা আছে তাদের সাথেই আড্ডা দিতে।

IMG_20220409_110526.jpg

IMG_20220409_110511.jpg

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলিংক

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আপনি আপনার বড় ভাইয়ের মত বন্ধুর সাথে খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে ভাইয়া গাছের ছবি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মুহূর্ত টুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমরা আসলে ভাই আমরা কর্ম ব্যস্ততার জন্যই এই আড্ডা দেওয়া ভুলে গেছি। কিন্তু মাঝে মাঝে আমাদেরকে আসলে একটু বন্ধুদের সাথে বের হতেই হয়। আপনি আজকে আপনার বন্ধুর সাথে খুবই ভালো সময় কাটিয়েছেন। আমাদের জন্য কিছু সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন ধন্যবাদ আপনাক

 2 years ago 

মানুষের জীবনটা এরকম, যখন কর্ম ব্যস্ততার মধ্যে পড়ে যায় তখন আপনজনকেও টাইম দেওয়ার মতো সময়টা হাতে থাকে না। তাই প্রতিনিয়ত পাশে থাকা মানুষের কাছে পুনরায় বসতে হলে সময় জানার প্রয়োজন হয় বা সময় নেওয়া লাগে। কারণ মানুষের জীবন সংগ্রামের। যে যখন সংগ্রামী জীবনের পদার্পণ করে, তখন গল্পগুজবের সময়টা হয়ে ওঠে না।

 2 years ago 

ভাই আপনি এবং আপনার বন্ধুরা মিলে সুন্দর একটি আড্ডা দিয়েছেন। এছাড়া ফরিদপুর শহরের নিউমার্কেট থেকে একটু দূরে পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বাড়ির সামনে যে দৃশ্যগুলো দেখিয়েছেন তাও ভাল লেগেছে। বিশেষ করে জসিম মেলা বন্ধ হওয়ার বিষয়টা আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। কিন্তু ভাই ওনার নামটা জানা হলো না ।উনিটা কে??হাহা!!

 2 years ago 

সত্যি বলতে বড় ভাই অর বন্ধু যাই ভাবি আপনি চমৎকার একটি ভালো সময় অঅতিবাহিত করেছেন সাথে করে আপনার শেয়ার করা প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি ছিলো অতুলনীয়।

ভাইয়া বন্ধুর সাথে দেখা মানেই আড্ডা। আর ভাইয়া ফরিদপুর এর লোক অনেক ভালো আমি নিজে বেশ কিছু দিন ঘুরে আসছিলাম। কবি জসিম উদ্দিন তার বাড়ি ভ্রমণ করেছিলাম খুব সুন্দর একটি যায়গা। আপনার বন্ধুর সাথে ঘুরাঘুরি করে সময় কাটানো আবার খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি যা দেখার মত ছিল সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটি দিন আপনার জন্য ছিল। দোয়া করি ভাইয়া আপনি সব সময় সুস্থতার সাথে সহপরিবার মিলে মিশে দিন কাটুক।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74