মাঝরাতে হঠাৎ করেই Emergency|| জুন -০৮/০৬/২০২৩||

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

কাল রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ কমিউনিটিতে কয়েকটা কমেন্ট এবং নিজের কিছু কাজ শেষ করে খেয়ে দেয়ে সবে বিছানায় একটু গা ঠেকিয়েছি, সাথে সাথেই আমার ফোনে একটা ফোন আসলো একটা আননোন নাম্বার থেকে। এত রাতে আননোন নাম্বার থেকে ফোন করা দেখে আমি অনেকটাই অবাক হয়েছিলাম, তাই ফোনটা রিসিভ করতেই ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে একজন মহিলা ভারী কন্ঠে কেঁদে উঠলো। বললো বাবা তোমরা কোথায় আছো তাড়াতাড়ি আমাদের বাড়ি চলে আসো তোমার দাদারা তো বাড়ি নেই তাই তোমাদের একটু হসপিটালে যেতে হবে আমার ছোট মেয়েকে নিয়ে। বেশ কিছু সময় আসলে হতভাম্ব হয়ে গেছিলাম পরে বুঝতে পারলাম যে এই মহিলা আর কেউ নন, তিনি আমার মায়ের বান্ধবী। বেশ কিছুটা কৌতুহল নিয়ে আন্টিকে জিজ্ঞাসা করলাম যে কি হয়েছে। তখন তিনি জানালেন যে তোমার ছোট বোন প্রচন্ড রকম অসুস্থ সকাল থেকে ১৯ বার বাথরুমে গিয়েছে এখন শরীর এতটাই দুর্বল যে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না। বিগত চারদিন ধরে নাকি তার এরকম অসুস্থতা। এমনি টুকটাক ওষুধ খেয়েছে তবে তাতে কোন কাজ হয়নি এখন খুব খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে হঠাৎ হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে।

InShot_20230608_164751481.jpg

এই কথা শুনে তো আর ঘরে দাঁড়ানো যায় না তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়লাম আন্টির বাড়ির উদ্দেশ্যে। আমাদের বাড়ি থেকে আসলে আন্টির বাড়ি খুব বেশি দূরে না, হেঁটে ১০ মিনিটের মত সময় লাগে। আর এত রাতে গাড়ি কোথায় পাবো তাই চিন্তা করতে করতে হঠাৎ দেখি যে রাস্তা দিয়ে একটা টোটো যাচ্ছে উনার সাথে কথা বলে উনাকে সাথে নিয়েই আন্টির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। গিয়ে দেখি ছোট বোন অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে। তাড়াতাড়ি তাকে তুলে নিয়ে কোন কথা না বলে হসপিটালে চলে গেলাম। আমাদের বারাসাত গভমেন্ট হসপিটাল সুযোগ সুবিধার দিক থেকে মোটামুটি ভালো তবে সরকারি হসপিটাল আমি কোনদিন পছন্দ করি না। আর আমি নিজেও কখনো সরকারি হসপিটালে যাই না। তবে এই মুহূর্তে আমাদের হাতে কোন উপায় ছিল না তাই প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হলেও প্রথমে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে বারাসাত গভমেন্ট হসপিটালে ভর্তি করে দেবো কিছু সময়ের জন্য। আসলে হসপিটালে যাওয়ার অভ্যাস বা হসপিটালের যত নিয়ম কানুন আছে সেগুলো আমি একেবারেই জানতাম না তারপরও অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে চলে গেলাম। যাইহোক হসপিটালে গিয়ে দেখি প্রচন্ড পরিমাণে সিরিয়াল আর ভিড় এত রাতেও। প্রায় দশ মিনিট আমাদের সেখানে অপেক্ষা করতে হলো তারপর আমাদের সিরিয়াল আসলো।

20230608_014809.jpg

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় ডাক্তারকে সবকিছু খুলে বলার আগেই দেখলাম তিনি ওষুধ লিখে দিয়েছেন এটা আমার কাছে বেশি আশ্চর্যজনক লাগলো। এরপর রোগীর অবস্থা দেখে তিনি বললেন যে ভর্তি করতে হবে, না হলে কোন উপায় নেই। কারণ শরীর এতটা দুর্বল হয়ে গেছে যে এখন সারা রাত ধরে তাকে স্যালাইন দিতে হবে। যাইহোক ভর্তির সমস্ত নিয়মকানুন মেনে তাকে বেড়ে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে গিয়েও তার রীতিমতো দুইবার বাথরুম হয়েছে আর অবিরত মুখ দিয়ে ফেনা বেরিয়ে যাচ্ছে। কি আর করব কিছু বুঝতে পারছি না। অন্যদিকে সাথে আন্টি থাকা সত্ত্বেও তিনি কোন কিছুই ঠিকঠাক করে বুঝতে পারছিল না। তাই সমস্ত কিছু আমাকেই সামাল দিতে হচ্ছিল। যেহেতু মহিলাদের সাইট ছিল তাই আমাকে দুইবার ওখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে তারপরও আমি কয়েকবার গিয়ে স্যালাইন দেওয়া এবং যাবতীয় সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। আসলেই প্রচন্ড গরমেও থাকার জায়গার অবস্থা দেখে আমার এতটাই কান্না এসেছিল যে বলে বোঝাতে পারবো না।

20230608_014703.jpg

যাইহোক এরপর আমাদের সেখানে আর বেশি সময় দাঁড়াতে দেয়নি আমাদের বলল বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে এই অসুস্থ মানুষকে কি করে একা রেখে আসবো সেটাই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এরপর আমরা রাতের জন্য একজন আয়া ঠিক করে আসলাম এবং তাকে কিছু টাকা দিয়ে আসলাম বোনের দেখাশোনা করার জন্য। আমাদের বলা হয়েছিল বাইরে অপেক্ষা করার জন্য যদি কোন দরকার পড়ে তাহলে ফোন করে ডাকবে। প্রায় তিন চার ঘন্টা ওই রাতের বেলা আমরা সবাই খোলা আকাশের নিচে দাড়ি অপেক্ষা করছিলাম কোন সমস্যা হয় কিনা। তবে ভগবানের ইচ্ছায় তেমন কোন সমস্যা হয়নি। কারণ রাতের বেলায় প্রায় সারা রাত ধরে তাকে স্যালাইন দেয়া হয়েছিল। এরপর সকালবেলা ডাক্তার এসে বলে যে আর কোন সমস্যা নেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে আজকে যদি হসপিটালে না আনা হতো তাহলে একটা বড় ধরনের কোন সমস্যা হতে পারতো। সত্যি কথা বলতে গত কাল রাতে আমার এক ফোঁটাও ঘুম হয়নি, এরপর বাড়ি এসে বিকাল পর্যন্ত ঘুমিয়েছি। এই গরমে সবার প্রচন্ড শরীর খারাপ হচ্ছে, তাই সবাইকেই বলব যে এই দিকটাতে একটু সচেতন থাকার জন্য। না হলে কখন কি সমস্যা হতে পারে কেউ সেটা বলতে পারবে না।

20230608_014613.jpg

20230608_014603.jpg

20230608_014559.jpg

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীলাইফ স্টাইল।
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনবারাসাত।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Sort:  
 last year 

২/৩ দিন আগে আমারও ফুড পয়জেনিং এর সমস্যা হয়েছিল। তবে মেডিসিন খাওয়ার পর ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এই গরমে কমবেশি অনেকেরই পেটের সমস্যা সহ নানান ধরনের সমস্যা হচ্ছে। তাই সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আপনি এতো রাতেও একজনের বিপদে এগিয়ে গিয়েছেন। এই ব্যাপারটা খুব ভালো লেগেছে আমার। আসলে আমাদের সবার এমনটা করা উচিত। কারণ মানুষ মানুষের জন্য। যাইহোক সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

এই গরমে আসলে আমাদের প্রত্যেকেরই কম বেশি সমস্যা হচ্ছে সুতরাং এই সময়টাতে সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী। পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 70568.35
ETH 3813.09
USDT 1.00
SBD 3.50