ছোটবেলায় দাদুর মুখে শোনা একটা ভূতের গল্প।। জুলাই -২০/০৭/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

আগের পর্ব যেখানে শেষ করেছিলাম -

তারপরও তিনি দেখতে পারছিল যে অনেক দূরে বিলের ভিতর কি একটা আবছা আবছা দাদুর সাথে সাথে সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছে আর বলছে যে আজকে যে করেই হোক তোকে মেরে ফেলে দেবো আমি। কিন্তু দাদু কোন কিছুতেই ভয় পেল না কারণ সেই খারাপ আত্মাটা দাদুর কাছে আসতে সাহস পাচ্ছিল না মন্ত্র উচ্চারণ করার জন্য। এই জন্য দাদু অনেকটাই মনে বল পেয়েছিল।

💠 তৃতীয় পর্ব💠


ওই সময়ে আমার দাদুর একটা সাইকেল ছিল ওটাতে করেই সাধারণত সব জায়গায় যাতায়াত করতো দাদু। তবে তাড়াহুড়ার কারণে সেটাও নিয়ে যেতে ভুলে গেছিল। এজন্য এতটা সময় লাগছিল বাড়ি পৌঁছাতে। এভাবেই অন্ধকারের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করেই পেছন দিক থেকে দাদুর গায়ে কে যেন লাইট মারলো। ওই সময়ের তিন ব্যাটারির টর্চ লাইট প্রচন্ড তেজ ছিল তাই পেছনদিকে তাকাতেি দাদু কাউকে দেখতে পেল না। এভাবেই প্রায় কুড়ি ৩০ সেকেন্ড থাকার পরে একজন মাঝ বয়সি লোক দাদুর সামনে এসে উপস্থিত হল। আসলে দাদু ওই লোকটাকে চিনত, তিনি আর কেউ নয় দাদুর গ্রামেরই একজন লোক। উনি নাকি এত রাতে ঘের পাহারা দিয়ে বাড়ি আসছিল আর এই অন্ধকারে দাদুকে হাঁটতে দেখে তিনি অনেকটা কৌতুহল নিয়ে দাদুর সামনে এসে দাঁড়ায়। তিনি আবার দাদুকে হঠাৎ করে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে এত রাতে আপনি এখানে কি করছেন। তখন দাদু লোকটাকে সবকিছু খুলে বলে এবং দাদু বলে যে তাকে অন্তত লাইট নিয়ে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসার জন্য। আমার দাদু গ্রামের একজন সম্মানীয় শিক্ষক ছিলেন। তাই সবাই দাদুকে প্রচন্ড সম্মান করত এজন্য লোকটা কোন কথা ছাড়াই রাজি হয়ে গেল।

gothic-1378352_1280.webp
সোর্স
রাস্তায় চলতে চলতে লোকটার সাথে এসব ব্যাপার নিয়ে কথা হচ্ছিল যে কি কি ঘটেছে দাদুর সাথে। তবে লোকটা নাকি এই বিষয়ে তেমন কোন গুরুত্ব না দিয়ে অন্য কথা বলা আরম্ভ করে দিল। দাদুর মনে হচ্ছিল যে খুব সম্ভবত লোকটা এসব ব্যাপারে ভয় পাচ্ছে। যাই হোক পরবর্তীতে হঠাৎ করেই দাদুর মনে হল যে তিনি তো শরীর বেঁধে নেননি ওই মেয়েকে ঝাড়ফুঁক করার সময়। দাদু যখন এই ভুলটা বুঝতে পারলো তখন তার মাথায় হাত পড়ল, যে এত বড় ভুল দাদু কি করে করলো। এখন তো আর কোন উপায় নেই। এখানে তো আর শরীর বন্ধ করা যাবে না। তার জন্য যে প্রয়োজনীয় উপকরণ লাগবে। সেগুলো দাদুর সাথে নেই। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাদু বলল তাকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসার জন্য। এইভাবে আরো কিছু সময় হাঁটার পর দাদু গ্রামের ভিতর ঢুকে গেল এরপর ওই লোকটা নাকি লাইট নিয়ে আবার চলে গেছিল, গ্রামের ভিতর ঢোকেনি। এই ব্যাপারটা জানতে পেরে আসলে দাদুকে অবাক হয়েছিল যে নিজের বাড়িতে না গিয়ে সে আবার উল্টে অন্য কোথায় চলে যাচ্ছে। তবে ওই সময় দাদুর মনে অনেক কিছুই কাজ করছিল। বিশেষ করে ভয়, তাই জন্য এটা নিয়ে বেশি আর চিন্তা না করে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটা দিল। কিছুদূর এগোতেই রাস্তা পার করে দাদু ঘরের সামনে আসতে দেখল দিদিমা দরজার সামনে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে বসে রয়েছে।

forest-3737107_1280.jpg
সোর্স

এইবার যেন দাদু পুরোপুরি আশ্বাস ফিরে পেল। বাড়িতে ঢুকেই দিদিমাকে বলল গরম জল করে দেয়ার জন্য আর সাথে পাটা নোড়া দেওয়ার জন্য। এরপর নাকি দাদু স্নান সেরে এসে খাওয়া দাওয়া করে ঘরে চলে গিয়েছিল। তারপর খাটের উপর বসে দাদুর শরীরটাকে বেঁধে নিল ভালো করে। তবে দাদুর জন্য যে পরবর্তীতে এত বড় বিপদ অপেক্ষা করছিল সেটা দাদু গোনাক্ষরেও টের পায়নি। যদিও এই আশ্বাস দিদিমা কিছুটা পেয়েছিল, তবে দাদু ভয় পাবে জন্য দিদিমা কিছু বলেনি। আমার দিদিমা যখন জল আনতে কলে গিয়েছিল গরম গরম জন্য হঠাৎ করে দেখেছে কল পাড়ের থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে একটা বেত গাছের ঝাড়ের ভিতরে কি একটা বসে রয়েছে এবং দিদিমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে রয়েছে লাল লাল চোখ করে। তবে দিদিমার ক্ষতি করার মত ওরকম কোন সুযোগ ছিল না এজন্য দিদিমা তাড়াতাড়ি সেখান থেকে পালিয়ে চলে আসে জল নিয়ে। তবে দাদুকে পরবর্তীতে এই কথা জানায়নি আর।

background-914404_1280.webp
সোর্স

যাই হোক সব কাজ শেষ করে দাদু দিদিমা ঘুমিয়ে পড়ার জন্য বিছানায় গেলো। তবে দিদিমা ঘুমিয়ে পড়লেও দাদুর কেন জানি না চোখে ঘুম আসছিল না। মনে হচ্ছিল কি একটা আচমকা বিপদ দাদুর আশপাশ দিয়ে ঘোরাঘুরি করছে। অনুমান করতে পারলেও এই সমস্যার সমাধান কি হবে সেটা দাদু কোনমতেই বুঝতে পারছিল না। এইভাবে যে কত সময় কেটে গেছিল সেটা আর দাদুর মনে নেই। হঠাৎ করেই গভীর নিদ্রা দাদুর শরীরকে অবশ করে দিয়েই চারিদিক নিস্তব্ধ হয়ে গেল। অন্যদিন তো আশেপাশে ঝুঝুঁপোকা বা অন্যান্য পশু পাখির ডাক শোনা যায় তবে আজ কেন জানিনা চারিদিক খুব নিস্তব্ধ কোন কিছু শব্দ নেই। সামান্য একটা পাতাও যদি বাইরে পড়ে তাহলে তার শব্দ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে, এতটাই নীরবতা কাজ করছিলাম। অন্যদিকে আমাবস্যার রাত সব মিলিয়ে একটা ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ওই সময় আমার দাদুদের ঘর ছিল বেড়ার অর্থাৎ বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা ঘর। যাইহোক এভাবে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দাদুর শরীরে একটা স্পর্শ লাগার পর দাদুর ঘুম ভেঙে যায় এবং চোখ খুলতে দেখে দিদিমা দাদুর সামনে দাঁড়িয়ে আছে আর বলছে যে আমি একটু বাথরুমে যাব আমার প্রচন্ড পরিমাণে বাথরুম পেয়েছে।

চলবে......👉

শ্রেণীভূতের গল্প।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

একটা সময় ছিল যখন আমরা সবাই মিলে দাদার কাছে বসে থাকতাম। ওই সময় অনেক গল্প দাদা আমাদের সাথে শেয়ার করতো। যেমন আপনার দাদা ভূতের গল্প শেয়ার করেছে ঠিক তেমনি এমন অনেক ধরনের গল্প আমাদের সাথেও শেয়ার করে থাকতো। আসলে সেই সময় রাস্তায় চলার পথে অনেক কিছু দেখা যেত। এসব দেখে অনেক সময় মানুষ ভয় পেত এবং মারাও যেত। আদিকালের রাস্তার পাশে ঝোপঝার বেশি ছিল এবং এই ভূতের ভয়টাও বেশি ছিল মানুষের মধ্যে। আপনার দাদার কাছ থেকে শোনা ঘর পরিবেশ সুন্দরভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ভাই পড়ে খুব ভালো লাগবে ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আমার ক্ষেত্রেও আসলে সব সময় ব্যাপারটা এরকম হয়েছে। আমি যখনই দাদু বাড়ি যেতাম তখনই আমাকে বিভিন্ন ধরনের গল্প বলতো দাদুরা। যাই হোক গল্পটা আপনি পড়েছেন জেনে অনেক খুশি হলাম ভাই। আশাকরি পরবর্তী পর্বও অবশ্যই পড়বেন।

 last year 

ছোটবেলায় আপনার দাদুর মুখে শোনা ভূতের গল্প গুলো পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। এর আগের গল্পগুলো আমি পড়েছিলাম। আজকের গল্পটিও পড়ে আমার কাছে ভালো লেগেছে। আবার অনেক ভয় লেগেছে। যাইহোক পরবর্তীতে আপনার দাদুর সাথে কি হয়েছে তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

আমার কাছেও আসলে এই গল্পগুলো আপু অনেক বেশি ভালো লাগে শুনতে। সেজন্য আসলে অনেকদিন পর মনে পড়ায় আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেললাম।

 last year 

আপনার দাদুর মুখে ভূতের গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগল। সত্যি ভাইয়া আগের দিনের মানুষ এমন অনেক কিছু মেনে চলত।যাইহোক সব বিপদ পেরিয়ে আপনার দাদুর বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে। তবে আপনার দাদী ও ভয় পেয়েছে।সব কাটিয়ে রাতে যখন বাথরুম চাপলো তখন কি ঘটতে যাবে, জানার অপেক্ষায় থাকলাম।

বিপদ পেরিয়ে বাড়ি পর্যন্ত আসলেও বিপদ কিন্তু এখনো কাটেনি আপু। পরবর্তী পর্বে সেই বিষয়টা অবশ্যই উল্লেখ করব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ গল্পটা পড়ার জন্য।

 last year 

ভূতের গল্প শুনরে আমার কাছে খুবই ভয় লাগে। ছোটকাল নানু দাদুর মুখে অনেক ধরনের ভূতের গল্প শুনতাম। আপনার দাদু কিন্তু বেশ বিপদের মধ্যে পড়েছে যাই হোক অবশেষে বাড়ি আসতে পেরেছে।আপনার দাদুর সাথে পরবর্তীতে কি হয়েছে জানতে খুব ইচ্ছে জাগছে। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম, ধন্যবাদ।

আমার দাদুর মুখে আসলে এই গল্পটা অনেকবারই শুনেছিলাম আমি। যতবারই শুনেছি ততবারই ভয় পেয়েছি। তবে গল্পের আসল মোড় কিন্তু সামনের পর্বে রয়েছে। আশা করি আগামী পর্বটা পড়বেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই গল্পটা মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।

 last year 

চমৎকার একটি ছোটবেলায় দাদুর মুখে শোনা ভূতের গল্প শেয়ার করলেন। আমার কাছে পড়ে বেশ ভালো লাগলো পুরো গল্পটি যদিও পড়ি নাই কিন্তু আজকের গল্পটি পড়ে বেশ মজা পেয়েছিলাম এবং ভয়ও পাচ্ছিলাম। তবে রীতিমত আমি ভয় পেয়ে গেছি। কিন্তু পুরো গল্পটা তো পড়লাম দিদিমা যখন বাথরুমে গেল এরপরের বিষয়টি কি হলো তা জানতে খুবই কৌতহলী। পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলে পুরো গল্পটার বিষয় দিদিমার বাথরুমে যাওয়া নিয়ে। পরবর্তী পর্বে আসল মজা রয়েছে আপু, আশা করি গল্পটি পড়বেন। আর এই পর্বটিও মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

ভাই, ছোটবেলায় দাদুর মুখে শুনা গল্পটি পড়তে পড়তে আমার গা যেন কেমন ছমছম করে উঠছে। কেননা আমি এই মাঝ রাতে আপনার দাদুর বলা গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়ছিলাম। আর যতই পড়ছি ততই যেন আমার গা শিউরে উঠছিল। যদিও বা এই গল্পের আগের পর্বগুলো আমি পড়িনি, তবে গল্পের তৃতীয় পর্ব পড়ে গল্পটি শেষ পর্যন্ত যেতে ইচ্ছে করছে। যাইহোক ভাই, দিদিমা দাদুকে নিয়ে বাথরুমে যাওয়ার পর দাদুর সাথে কি কি হল সে বিষয়ে জানার ভীষণ আগ্রহ রইল।তাই পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

এই গল্পটা আমি দাদুর মুখে শুনেছিলাম বেশ কয়েক বছর আগে। তবে আগের পর্বগুলোতে তেমন বিশেষ কোন ভয় ছিল না। পরবর্তী যে পর্বটা লিখব ওটাই আসলে গল্পের মেইন বিষয়।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56688.84
ETH 2388.88
USDT 1.00
SBD 2.28