একটি শিক্ষামূলক গল্প।। জুলাই -০৩/০৭/২০২৩।।
☬নমস্কার সবাইকে☬
হ্যালো বন্ধুরা,
আজকের গল্পটাকে আসলে শিক্ষামূলক গল্প বলবো নাকি শাস্তিমূলক গল্প বলবো সেটাই বুঝতে পারছি না। গতকাল ফেসবুকে ঠিক এই ধরনের একটা পোস্ট আমার চোখের সামনে পড়ল, যেটা দেখে আমার আজ থেকে দুই বছর আগে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা, যেটা আমার নিজের সাথে ঘটেছিল সেটা মনে পড়ে গেল। আসলে এটাকে গল্প বললে ভুল হবে, আমার বাস্তব জীবনের একটা ছোট অভিজ্ঞতা। সেটাই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। তখন আমাদের নতুন ফ্ল্যাটটা তৈরি হয়ে পারেনি, এজন্য আমরা বেশ কিছু মাস বাইরে ভাড়া ছিল। আসলে ভাড়া ছিলাম আমার এক বন্ধুর বাড়িতে। তার সাথে আমার সম্পর্ক ওই সময় খুব ভালো ছিল। যদিও একসাথে পড়াশোনা করতাম সেই জন্য আমার জন্য একটু স্পেশাল সুবিধাও ছিল। আসলে তার চেয়ে বড় সুবিধা ছিল তার বাবা মা কলকাতায় থাকত না সবাই থাকতো বেনারস। মাঝেমধ্যেই ছুটি পেলে কলকাতা আসতো তবে আমার সাথে খুব বেশি একটা দেখা হয়নি তাদের। ওই সময়টাতে ওদের বাড়ি এসে প্রথম আমি ওয়াইফাই কানেকশন নিয়েছিলাম আমার ঘরে। তবে আমি কখনোই ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখি না। ইনফ্যাক্ট এখনো আমার ঘরের ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড দেওয়া নেই। কারণ আমি কখনোই এটা মনে করি না যে সমস্ত সুবিধা স্বার্থপরের মত আমি একাই ভোগ করব। কেউ যদি আশেপাশে চায় একটু কানেক্ট করে নিজের কাজ করতে আমার তাতে কোন সমস্যা ছিলনা বা এখনো নেই।
যাইহোক আমার এই বন্ধুটা যে আমার উপরতলায় থাকতো সে আমাকে একবার বলেছিল যে আমি তোর ওয়াইফাই টা ইউজ করছি, তোর তো কোন সমস্যা নেই। আমি বললাম যে আমার কি সমস্যা থাকতে পারে আমার কোন সমস্যা নেই কারণ এমনিতেই পাসওয়ার্ড দেওয়া থাকে না আর নেট তো আনলিমিটেড ব্যবহার করলে কোন অসুবিধা নেই। আমার যতটুক দরকার অতটুকু হলেই হচ্ছে। এভাবেই প্রায় ৫-৬ মাস কেটে গেছিল আমার আসলে এই নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা ছিল না। হঠাৎ করেই দেখলাম একদিন আমার বন্ধুর বাবা-মা তাদের বাড়িতে এসেছে। এমনিতেও আমি বন্ধুবান্ধবের বাড়ি খুব বেশি একটা যাই না। তবে ওইদিন ওর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, তবে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম হঠাৎ করেই দেখতে পেলাম যে আমার সেই বন্ধুর ফোনে নেটফ্লিক্স এর সাবস্ক্রিপশন ছিল। তাই ওকে বলেছিলাম যে তোর ফোনে তো নেটফিক্স রয়েছে তো যদি সমস্যা না হয় তাহলে আমাকে কিছুদিনের জন্য তোর নেটফিক্সের পাসওয়ার্ডটা দিবি তাহলে আমার পছন্দের কিছু সিরিজ দেখব। যদিও এখন আমার ফোনে সবকিছুর সাবস্ক্রিপশন রয়েছে সুতরাং আমাকে অন্যের কাছে এখন কোন কিছুই চাইতে হয় না। তবে ওই সময়টাতে যেহেতু ছিল না তাই তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম।
আমার বন্ধু কিছু বলার আগেই দেখলাম যে তার মা ঘর থেকে চিৎকার করে উঠলো যে নেটফ্লিক্সের পাসওয়ার্ড দেওয়া যাবে না, অনেক টাকা লাগে নেটফিক্সের সাবস্ক্রিপশন এর পেছনে। কিন্তু উনাকে একটা কথা বোঝাতে পারলাম না যে উনি নেটফিলিক্সটা যে নেট দিয়ে দেখছেন সেটা আমার দেওয়া নেট এবং একদম বিনামূল্যে। যাইহোক এরপর আমি আসলে তেমন কোনো কথা বলিনি ঘরে এসেই ওয়াইফের পাসওয়ার্ডটা চেঞ্জ করে দিলাম। ঘন্টাখানেক পরেই দেখলাম যে আমার বন্ধু আর তার মা আমার বাড়ি চলে এসেছে। আর বলছে যে ওয়াইফাই এ কাজ করছে না তুমি কি পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে দিয়েছো। তখন আমি মুখের উপর বলে দিয়েছিলাম যে আন্টি ওয়াইফাই নিতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে আমার এবং প্রতি মাসে আমাকে প্রচুর টাকা এই ওয়াইফের পিছনে দিতে হয়। সুতরাং আমি ফ্রি ফ্রি কাউকেই আর ওয়াইফাই দেব না। পরে দেখলাম, আমি যতটা লজ্জা পেয়েছিলাম আন্টি তার থেকে অনেক বেশি লজ্জা পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। আমি কখনোই কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করি না। তবে কেউ যদি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করার চেষ্টা করে আমি তাকে ছেড়ে কথা বলি না, সে যেই হোক না কেন।
আসলে এই গল্পটা কেন বললাম যে আমরা সমাজের প্রত্যেকটা মানুষ একে অন্যের সহযোগিতা ছাড়া বেঁচে থাকতে পারি না। তাই স্বার্থপরের মত অন্যের থেকে সুবিধা ভোগ করে নিজে স্বতন্ত্র থাকার চেষ্টা করা এক ধরনের খারাপ অভ্যাস। আসলে এই মানুষগুলোকে শিক্ষা দেওয়ার দরকার আছে। না হলে তারা কখনোই তাদের নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে না। এরপরে দেখতাম যে ওই আন্টিটা আমার সাথে আর কখনোই কথা বলতো না। তবে আমারও তেমন কোনো ইন্টারেস্ট ছিল না তার সাথে কথা বলার। ওই ধরনের মহিলাদের সাথে আসলে আমি নিজেও কথা বলি না। পরবর্তীতে বন্ধুটা আমার বাড়ি এসেছিল বলেছিল যে মায়ের কথাই তো কিছু মনে করিস না। তবে আমি তাতেও ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড তাদের আর কোনদিনই দেইনি। এরপর আমি নিজেই নেটফ্লিক্সের সাবস্ক্রিপশন নিয়ে নিয়েছিলাম এবং এখনো পর্যন্ত সেটা চলছে।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | গল্প। |
---|
আসলে ভাইয়া এমন লোক আমাদের সমাজে অনেক আছে। শুধু সুবিধা নেবে কিন্তু তারা সুবিধা দেবে না।এটা শুধু ওয়াইফাই এর ক্ষেত্রে নয় আরো অনেক ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। তবে এই সকল লোকদের এভাবে মাঝে মাঝে শিক্ষা দেওয়ার দরকার,তা না হলে এরা কখনো বুঝবে না।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।
সুবিধা দেওয়া নেওয়া তো পরের কথা আপু, মানুষের মুখের কথা বন্দুকের গুলির মত। একবার বেরিয়ে গেলে সেটা আর ভিতরে নেওয়া যায় না। সেজন্য কথাবার্তা হিসেব করে বলা উচিত আমাদের প্রত্যেকেরই। উনি যে কথা বলেছিলেন তার জবাব এভাবেই দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
ভাই আপনার গল্পটা পড়ে সত্যিই আমার চমৎকার লেগেছে । প্রথম দিকে যখন আপনাকে না করে দিল তখন আমার নিজেরই মনে হচ্ছিল মহিলাটাকে কিছু একটা শুনিয়ে দেই। পরবর্তীতে একদম উচিত জবাব দিয়েছেন।এ ধরনের লোকদেরকে এ ধরনের জবাব দেওয়া উচিত । তা না হলে নিজেদের ভুল এরা বুঝতে পারে না । সত্যি চমৎকার ছিল ।ধন্যবাদ ।
আমি আসলে বড়দের উপর কখনো কথা বলি না আপু। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ রয়েছে এদের আসলে শিক্ষা না দিলে এরা ঠিক নিজেদের জায়গাটা বুঝতে পারে না।
আমিও আমার মধ্যে এই পরিবর্তন টা প্রতিনিয়তই চাইছি। এরকম কিছু মানুষ স্বার্থপর হতে হতে কোন পর্যায়ে তারা পৌঁছে গেছে নিজেরাও জানেনা। তাই মাঝে মাঝে তাদের সাথে এমন কিছু ব্যবহার করে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত, আমারও চাইলে তাদের মতো ব্যবহার করতে পারি, শুধু মাত্র ভদ্রতার খাতিরে কিছু কিছু সময় চুপ করে থাকি মাত্র। যাইহোক ঠিক ই করেছো তোমার বন্ধুর মা কে বুঝিয়ে দিয়ে, যে তিনি সেটা ঠিক করেননি।
মানুষের ব্যবহার আসলে দিন দিন খুবই জঘন্য হয়ে যাচ্ছে। এজন্য তাদেরকে সঠিক শিক্ষা দেয়া উচিত, না হলে তারা নিজেদের দোষ গুলো ধরতে পারবেনা।