চায়না টাউনের চিকেন ওয়ালটন নুডুলস স্যুপ।। জুলাই -১৭/০৭/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

আজকের ফুড ব্লগিংটা একটু অন্যরকম হতে চলেছে। গতানুগতিক ফুড ব্লগিং থেকে বেরিয়ে কিছুটা অন্যভাবে আজকের ফুড ব্লগিং উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। আসলে গত দুটো পর্বে চায়না টাউন নিয়ে যেটুকু ইনফরমেশন আমার দেওয়ার ছিল সেটুকু আমি অলরেডি দিয়ে ফেলেছি সুতরাং নতুন করে আবার সেটা রিপিট করার দরকার বলে আমার মনে হয় না। এইজন্য সরাসরি শুরু করে দিলাম আজকের মেইন টপিকস নিয়ে। আসলে চায়না টাউনে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা আমার বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই তৈরি হয়েছিল। যখন দেখতাম যে বিভিন্ন সেলিব্রেটিরা সেখানে গিয়ে খাবার খায় এবং সেই খাবারের রিভিউ দেয়। তবে সেখানে যাওয়ার মত পরিস্থিতি আসলে কখনোই আমি তৈরি করতে পারিনি। বেশ কয়েক বছর হল যাব যাব করে যাওয়া হচ্ছিল না। তারপর আবার মাঝখানে কিছু কাল করোনা এসে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেল সব। যাই হোক আমরা চাইনা টাউনে ঢুকে প্রথমেই ভালো রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম। যেহেতু আমাদের টার্গেটে ছিল ওই রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার খাওয়া, তবে সত্যি কথা বলতে সেখানকার খাবার খেয়ে আমরা এতটাই তৃপ্তি পেয়েছিলাম যে সেটা বলে বোঝানো যাবে না।

InShot_20230717_164152986.jpg

যদিও সেখান থেকে খাবার দাবার খেয়ে আমাদের মোটামুটি পেট ভরেছিল। এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমরা আরো দুই একটা রেস্টুরেন্টের খাবার খাব তবে তার আগে পুরো চায়না টাউন টা একটু ভালো করে ঘুরে দেখি। এতে করে আমাদের খিদেটাও কিছুটা পরিমাণ বাড়বে। আমরা যেদিন গিয়েছিলাম আসলে ওইদিন বেশ ভালো রকমের এক পসরা বৃষ্টি হয়ে গেছিল। এজন্য অনেক জায়গায় কাদা কাদা হয়ে গেছিল। তবে আমরা যেরকম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মন করি চায়না টাউন, আদৌ তারা অতটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নয়। যথেষ্ট নোংরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল চারদিকে। এজন্য প্রথম দিকে ঘোরার মানসিকতা তৈরি হলেও আস্তে আস্তে সেটা কিছুটা হলেও হ্রাস পেতে থাকে। আসলে আমরা যেদিন গেছিলাম ঐদিন বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে বন্ধ ছিল। খুব সম্ভবত ঐদিন তাদের কোন একটা অনুষ্ঠান বা ছুটি কিছু একটা ছিল। তারপরও কিছু কিছু রেস্টুরেন্ট ছিল যেগুলোতে মানুষ নিয়মিত খায় বা ওখানকার লোক খায় সেগুলোই খোলা ছিল। হঠাৎ করেই আমাদের ভিতর একজন বন্ধু বলল চল চায়না টাউনের যে নরমাল রেস্টুরেন্ট গুলো আছে অর্থাৎ সাধারণ মানুষ যেখানে খাওয়া-দাওয়া করে নিয়মিত সেখানে গিয়ে একবার খাবার খাওয়া যাক। দামেও সস্তা হবে আর খাবারের কোয়ালিটি কেমন সেটাও দেখে নেওয়া যাবে।
20230625_143535.jpg

20230625_143049.jpg

যদিও এই ব্যাপারটাতে আমাদের কোন সমস্যা ছিল না কারণ টাকা যদি একটু বেঁচে যায় আর তার ফলে যদি খাবারের মান একই রকম থাকে তাহলে তো সমস্যা নেই। যাইহোক আমরা মোটামুটি তিনটা চারটে এরকম নরমাল রেস্টুরেন্ট খুঁজলাম তবে সেখানকার ভিতরের পরিবেশ এতটাই নোংরা ছিল যে ওখানে ঢুকতেই পারছিলাম না। আসলে চাইনিজ লোকরা যে খাবার দাবার গুলো খায় সেগুলো তো অনেকটা সেদ্ধ করে খায় তাছাড়া ওদের রেস্টুরেন্টের ভেতর দিয়েও কেমন একটা আলাদা গন্ধ বেরোয়। যেটা আমাদের বাঙালি রেস্টুরেন্টে গিয়ে ওরকম অনুভূতি হয় না। মোটামুটি তিনটা চারটা রেস্টুরেন্টে দেখার পর আমাদের একটা রেস্টুরেন্ট পছন্দ হলো এবং দেখলাম খাবারের দামও সেখানে সাধ্যের মধ্যে। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো যে চায়না টাউনের যেকোন রেস্টুরেন্টে এয়ারকন্ডিশন সিস্টেম ছিল, যেটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিলো। যাই হোক ওখানের একটা নরমাল রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে আমরা বেশ কিছু খাবারের আইটেম অর্ডার দিয়েছিলাম। তার ভিতর ছিল চিকেন ওয়ালটন নুডুলস স্যুপ,pork ওয়ালটন নুডুলস স্যুপ(যেটা আমি খাইনি) আমার এক বন্ধু খেয়েছিল।

20230625_152608.jpg

20230625_152618.jpg
যাইহোক খাবার অর্ডার করার প্রায় ৪৫ মিনিট পর আমাদের খাবার এসে উপস্থিত হল আমি জানিনা এতটা সময় কেন লেগেছিল। আসলে নুডুলস স্যুপ খাওয়ার ইচ্ছা আমার অনেক আগে থেকেই ছিল। সেই ইচ্ছা পূরণ করার জন্য খাবার মুখে দিতেই কেমন যেন একটা বিচ্ছিরি টেস্ট আমার মুখের চারিদিকে ছড়িয়ে গেল। প্রথমত চিকেনের কোন টেস্ট নেই অর্থাৎ সেখানে না আছে নুন আর না আছে ঝাল। তারপর সেখানে যে সুপটা ব্যবহার করা হয়েছে সেটা অতিমাত্রায় জঘন্য খেতে। আমার মনে হয় ওর থেকে ভাতের ফ্যান অনেক বেশি টেস্টি। তারপর তার ভিতরে যে নুডুলস গুলো দেয়া হয়েছিল সেগুলো নিতান্তই সিদ্ধ করে ওর ভিতরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে না ছিল নুন বা কোন প্রকার টেস্ট। আচ্ছা আমি আপনাদের টেষ্ট এর কথা বলিয়ে দিচ্ছি কেমন লাগছিল। ধরেন আপনি চাওমিন সেদ্ধ করে গরম জলের ভেতর দিয়ে তার ভিতরে কয়েকটা সবজি সিদ্ধ ছেড়ে দিলেন আর দিলেন হালকা নুন, তাহলে যে রকম টেস্ট লাগবে এটা খেতে ঠিক এরকম ছিল। আমি তো মুখে দিয়েই ৫-৬ বার খুব জোর করে খেয়েছি এরপর সেটা মুখে দেয়ার মত অবস্থা ছিল না, কেমন যেন বমি আসছিল। তবে ওর ভেতর যে চিকেন ওয়ালটন গুলো ছিল ওগুলো ছিল অসম্ভব সুন্দর খেতে। আমি শুধু ওগুলো খেয়েই বাকিটা ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম।

20230625_152705.jpg

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীফুড ব্লগিং।
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনচায়না টাউন,কলকাতা।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

আপনার অনেক দিনের ইচ্ছে তাহলে পূরণ হলো।চায়না টাউনের চিকেন ওয়ালটন নুডুলস স্যুপ খেতে যেমনি হোক না কেনো ইচ্ছে তো পূরণ হলো।যাইহোক চিকেন ওয়ালটন গুলো তো অনেক ভালো আছি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে এটা সত্যি কথা, তবে খাবার এর টেস্টটা যদি একটু ভালো হতো তাহলে আরো ভালো লাগতো। যদিও আগে যে দুটো খাবার খেয়েছিলাম ওগুলো বেশ ভালো ছিল আপু।

 last year 

বেশ ভালো লাগলো চায়না টাউন সম্পর্কে আপনি খুব সুন্দর বর্ণনা দিলেন। যদিও আমি আগের পর্ব গুলো পড়ি নাই। কিন্তু আজকে যতটুকু বুঝতে পারলাম বেশ ভালো মানের একটি মার্কেট মনে হচ্ছে। তবে নুডুলসের কালার দেখে বেশ ভালো লাগলো অনেক হেলদি ফুড খেয়েছেন বুঝা যাচ্ছে। যতটুকু বুঝতে পারলাম খাবার দাবার কিন্তু অনেক ভালো। যদিও বৃষ্টির কারণে একটু কাঁদা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিন্তু যতটুকু দেখলাম ভালো লাগলো।

এই খাবারগুলো খুবই হেলদি এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই আপু। তবে টেস্টের ব্যাপারে একেবারেই জিরো। হয়তো প্রথমবার খেয়ে ছিলাম এজন্য এরকম হতে পারে।

 last year 

ভাই সেলিব্রেটিরা যেহেতু এই রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার খায় সেহেতু খাবারের মান অনেকটাই ভালো হবে ভেবেছিলাম। তবে খাবারের বিষয়ে আপনার রিভিউ পড়ে বুঝতে পারলাম খাবার কতটা বিচ্ছিরি।ভাই, আপনারতো চিকেন নুডুলস স্যুপ খাওয়ার শখ মিটে গেছে দেখছি।চায়না টাউনের চিকেন ওয়ালটন নুডুলস স্যুপ নিয়ে আপনার অনুভূতি টুকু প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

এখানকার সব খাবার যে খারাপ সেটা বলছি না। কিছু কিছু খাবার খুবই ভালো। তবে আমরা যেটা অর্ডার করেছিলাম শখ করে সেটা একেবারেই খেতে ভালো ছিল না। তবে তার আগে যে দুটো খাবার খেয়েছিলাম ওগুলো আবার খুব ভালো ছিল।

 last year 

আমি চায়না বেশ কয়েকবার গিয়েছিলাম। ওদের খাবার একেবারেই স্বাদ না। পেটে ক্ষুধা ছিলো বিধায় খেতে হয়েছিল। তবে সাউথ কোরিয়াতে নুডলস স্যুপ অসংখ্য বার খেয়েছিলাম। সেগুলো খেতে খুব সুস্বাদু লেগেছিল। আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বেশিরভাগ চাইনিজরা একটু নোংরা ই বটে। যাইহোক সেখানে গিয়ে এক ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন ভাই। হয়তো অনেকের যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও, আপনার পোস্ট পড়ে আর যাবে না। যাইহোক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

চায়না টাউনে যেহেতু এসেছেন তার মানে আপনার এখানকার খাবার সম্পর্কে যথেষ্ট আইডিয়া আছে। আসলে এখানে কিছু বাঙালি চায়না রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেগুলোর খাবার অনেক সুস্বাদু। তবে তাদের অথেন্টিক খাবার যেগুলো, ওগুলো বাঙালির আবার খেতে পারে না।

 last year 

ভাই চাইনিজরা কি খাবার যে খায়,দেখে অবাক লাগে। খাবারের কোনো স্বাদ নেই। যাইহোক সুন্দর ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

দাদা জানিনা কতটা সুস্বাদু হয়েছিল তবে দেখতে যেন একদম কাচাকাচা। আপনার এই দারুণ রেসিপি খাওয়ার অনুভূতিটা কিন্তু অনেক তথ্য বহন করলো। একবার খেয়ে দেখা দরকার। তবে এই চায়না টাউন রেস্টুরেন্টগুলোতে কিভাবে যাব! এ কথা সঠিক করনার সময় অনেক কিছুই লন্ডভন্ড করে থুয়ে গেছিল

এই জিনিস খেতে একদমই ভালো ছিল না ভাই। আমরা যে এক্সপেক্টেশন নিয়ে অর্ডার করেছিলাম তার ধারে কাছেও ছিল না।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56949.15
ETH 2401.26
USDT 1.00
SBD 2.33