🧑‍🍼👶শৈশবে ফেলে আসা মধুর স্মৃতি-০১ 👶🧑‍🍼।। আগস্ট -১৪/০৮/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।


field-6558125_1280.jpg
Source

আমার জীবনে ছোটবেলায় আসলে অনেক ঘটনা রয়েছে সেটা যদি বলে শেষ করতে হয় তাহলে যে কতদিন লাগবে সেটা আমি নিজেও জানিনা। আসলে সব গল্প সবসময় মনে থাকে না, হঠাৎ হঠাৎ করেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে এবং সেই সময় চেষ্টা করি গল্পটা সামান্য একটু অংশ কোথাও লেখে রাখার জন্য। পরে যখন হঠাৎ দেখলে গল্পটা আবার পুনরায় মনে পড়ে যায়। যাইহোক দুই তিন দিন আগে আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় rme দা একটা পোস্ট করেছিল এবং সেখানে দাদা নিজে তার ছোটবেলার স্মৃতি নিয়ে একটা গল্প লিখেছিল এবং বলেছিল যে আমাদেরও ছোটবেলার স্মৃতি নিয়ে গল্প লিখতে এবং আমার বাংলা ব্লগে সেটা ট্রেন্ডিং পোস্ট হিসেবে চালু করতে। দাদার সেই উদ্দেশ্যটাকে কিছুটা বাস্তবায়ন করার জন্য আমার আজকের ছোটবেলার গল্প।

খুব সম্ভবত আমি ক্লাস ফাইভে পড়াশোনা শেষ করে শহরে চলে গেছিলাম বাবার সাথে। কারণ বাবা শহরে চাকরি করতো। তাই পুরো পরিবার নিয়ে বাবা শহরে নিয়ে গেছিল। তারপর সেখানে একটা স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিল আমায়। তবে আগে যে কয়টা বছর আমি গ্রামে ছিলাম আমার কাছে গ্রাম ছাড়া শহর কোনদিনও ভালো লাগেনি তখন থেকেও। সময় সুযোগ পেলেই আসলে গ্রামের বাড়ি চলে যেতাম বাবার যখন অফিস ছুটি থাকত এবং আমাদের স্কুল ছুটি থাকত। তারপরও আসলে মন খুব খারাপ লাগতো যখন গ্রামের বাড়ির কথা মনে পড়ত। বিশেষ করে গ্রামের বাড়ি রেখে আসা আমার সব বন্ধু-বান্ধব তাছাড়া আমার নিজের বাড়ির প্রতি একটা আলাদা রকম টান ছিল যেটা আমি শহরে এসে কোনদিনও পাইনি।

সময়টা আসলে অনেক আগের আমার বাবার অফিস ছুটি হয়েছিল ১০ দিনের মত তাই বাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে গ্রামের বাড়ি গিয়ে কয়টা দিন কটিয়ে আসবে। এদিকে আমারও স্কুল ছুটি হয়ে গেছে তাই আমি এবং বাবা চলে গেছিলাম গ্রামের বাড়ি। যদিও তার পিছনে একটা বড় কারণ ছিল। কারণ বিগত তিন চার দিন ধরে প্রচন্ড বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমাদের ঘের এবং পুকুর প্রায় ভেসে যাচ্ছিল। এজন্য বাবা বিভিন্ন ধরনের নেট কিনে নিয়ে পুকুরের চারপাশ এবং ঘেরের চারপাশে বেড়া দেওয়ার জন্য গ্রামের বাড়িতে গেছিল। আর সাথে আমিও গেছিলাম। যাইহোক শহর থেকে আমাদের বাড়ি 65 কিলোমিটারের মতো ছিল। তাই সন্ধা নামার আগেই আমরা বাড়ি গেলাম এবং দেখলাম যে আমাদের পুকুরের জল একেবারে ভরে উঠেছে আর ঘন্টাখানেক বৃষ্টি হলেই মোটামুটি পুকুরের একটা সাইড ভেসে যাবে। যাই হোক বাবা পুকুরে প্রচুর মাছ দিয়েছিল এজন্য অনেক বেশি চিন্তা হচ্ছিল যদি ভেসে যায় তাহলে কি হবে।

তবে আমার সেরকম টেনশনটা হচ্ছিল না। আমি চিন্তা করছিলাম যে যদি পুকুর ভেসে যায় তাহলে বাইরে থেকেও মাছ পুকুরের ভিতরে ঢুকবে। যাইহোক ঐদিন সন্ধ্যার দিকটাতে বৃষ্টি কিছুটা থামলেও রাতের দিকে পুনরায় আবার মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল। হঠাৎ করে দেখলাম বাবা আমাকে নিয়ে লাইট হাতে করে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসলো এবং সাথে করে একটা বালতি এবং একটা নেট নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। পুকুরের এক পাশে যেতেই দেখলাম যে সো সো করে শব্দ হচ্ছে এবং পুকুরের জল উপচে পরছে বাইরে খালে এবং খালের সাইট থেকে প্রচুর পরিমাণে মাগুর মাছ, কৈ মাছ, শিং মাছ এবং পুঁটি মাছ উল্টোদিকে সাঁতার কেটে পুকুরের জলে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে নেট দেওয়ার কারণে সেটা পারছে না। একসাথে আমি এত মাছ এবং এত বড় বড় মাছ এর আগে কোনদিন দেখিনি।

মনে হচ্ছিল খালের সমস্ত মাছ পুকুরের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করছে। এটা দেখে তো আমি যতটা আনন্দ পেয়েছিলাম তার থেকে বেশি ভয় পেয়েছিলাম। কারণ এত মাছ একসাথে দেখে যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে। যাইহোক বাবা দেখলাম আস্তে আস্তে খালের জলে নেমে গেল এবং নেট দিয়ে খালের তলা দিয়ে নিয়ে পুকুরের সাইডের সাথে আটকে দিল এবং সমস্ত মাছ এসে তার ভেতর পড়তে লাগলো। এভাবে প্রায় ঘন্টা দুয়েক সেখানে মাছের আনাগোনা ছিল এবং এত পরিমাণে মাছ হয়েছিল ওইদিন যে আমাদের দুটো মাটির বড় বড় পাত্র ছিল তার ভিতরে রেখেও জায়গা করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে মাগুর মাছ এবং কই মাছ প্রচুর পরিমাণে ছিল। যাইহোক পরদিন সকালে সবাই মাছ দেখতে এসে রীতিমত অবাক হয়ে গেছিল এবং অনেকেই দেখলাম হিংসে করছে যে তারা এরকম একটা সুযোগ মিস করে গেছে। মোটামুটি গ্রামের সমস্ত আত্মীয়-স্বজনদের মাছ বিলি করেও আমাদের প্রায় এক মাস লেগেছিল ওই মাছ খেয়ে শেষ করতে।

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীগল্প।
যাইহোক আজকের গল্প এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং আরো ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

ছোটবেলার মজার স্মৃতি আমিও খুব শীঘ্রই শেয়ার করার চেষ্টা করবো। আসলেই গ্রামে থাকার মজা শহরে একেবারেই নেই। যাইহোক এতো মাছ একসাথে দেখলে তো আনন্দ হবেই। একসাথে অনেক মাছ দেখলে আমারও খুব ভালো লাগে। যদিও এখন আর এসব দেখা যায় না। সবই অতীতে পরিণত হয়েছে। সবাইকে দেওয়ার পরও তাহলে একমাস লেগেছে সবগুলো মাছ খেতে। বুঝাই যাচ্ছে অনেক মাছ ধরেছিল আপনার বাবা। গল্পটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আসলে আমাদের প্রত্যেকের জীবনের ছোটবেলার অনেক মজার মজার স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আর আপনি প্রথম পর্বের মাধ্যমে একটা মজার স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে এতগুলো মাছ যদি দেখা হয় তখন আনন্দ এবং ভয় দুটোই হওয়া স্বাভাবিক। সবাইকে বিলিয়ে দেওয়ার পরেও আপনারা এক মাস পর্যন্ত এগুলো খেয়ে শেষ করেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। আসলে গ্রামের দিকে এরকম ঘটনাগুলো বেশি দেখা যেত। বৃষ্টি হলে তো সবাই মাছ ধরার জন্য নেমে পড়তো রাত্রিবেলা।

 last year 

আমিও লেখা শুরু করব। তবে আমার স্মৃতি খালি দুষ্টামির,ভাল কাজ মোটেই করিনি ছোট বেলায়। আপনার মত আমার শৈশবেও গ্রাম ছেড়ে শহরে আসতে হয়েছে।তবে পুকুর ভেসে গেলে যে বাইরে থেকে মাছ ঢোকে এটা এবারই প্রথম শুনলাম। এরকম বর্ষার সময় আমরা জাল নিয়ে রেডি থাকতাম খালের পাড়ে। যে শুনতাম পুকুর ভেসে গেছে আর শুরু হত জাল ফেলা। ধন্যবাদ দাদা আপনার শৈশব স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনার এই পোস্টটা পড়ে আমার তো শৈশবের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গিয়েছে দাদা। আসলে শৈশবটা আমাদের সবারই অনেক বেশি স্পেশাল ছিল। অনেকেই রয়েছে যারা চায় এখনো সেই শৈশবে ফিরে যেতে যদিও এটা কখনো সম্ভব না। তবে যারা গ্রামের বসবাস করত তাদের একটু বেশি স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে সেসবের। কারণ গ্রাম বাংলার অনেক মজার মজার স্মৃতি রয়েছে। আপনার শৈশবের স্মৃতির প্রথম পর্ব পোস্টটা খুব ভালো লেগেছে।

 last year 

ভাই আপনার শৈশবে মাছ ধরা এবং একসাথে অনেকগুলো মাছ দেখতে পাওয়ার স্মৃতিটুকু সত্যিই মধুর ছিল। কেননা আমিও বুঝতে পারছি একসাথে এতগুলো মাছ দেখলে কতটা আনন্দ পাওয়া যায়। আমার ছোটবেলাতেও ঠিক এরকমই একটি ঘটনা রয়েছে যা আপনার ঘটনা পড়তে গিয়ে মনে পড়ে গেল। আমার তো মনে হয় আমাদের মত অনেকের জীবনে এরকম ছোটবেলার মধুর স্মৃতি আছে। আর এই স্মৃতিগুলো বেশিরভাগই গ্রামীণ জীবনে দেখা যায়। যাইহোক ভাই আপনার শৈশবে ফেলে আসা মধুর স্মৃতিটুকু শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

আসলেই শহরের থেকে গ্রাম অনেক ভালো ।শহরে সবসময় ঘরের মধ্যে বন্দী জীবন কাটাতে হয়, কিন্তু গ্রামের খোলামেলা পরিবেশে সকলের সাথে মিলে মিশে খুব সুন্দর দিন কেটে যায়। শেষ পর্যন্ত তাহলে তোমার মনে মনে যে কল্পনাটা হয়েছিল সেটাই দেখছি ঠিক হয়ে গেল ,খালের মাছ তোমাদের পুকুরে জলের মধ্যেই আসার চেষ্টা করছিল দেখছি। যদিও নেট থাকার কারণে তারা সেখানে ঢুকতে পারছিল না। তবে তোমার বাবা দেখলাম পরবর্তীতে তার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিল।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58544.56
ETH 2629.02
USDT 1.00
SBD 2.44