তখনও সূর্য ওঠেনি।। আগস্ট -০৩/০৮/২০২৩।।
☬নমস্কার সবাইকে☬
হ্যালো বন্ধুরা,
যাইহোক মৌসুনি আইল্যান্ডে এটা ছিল আমাদের দ্বিতীয় দিন। আগের দিন রাত্রিবেলা বেশ আড্ডা, গান এবং ডিজে পার্টি সহযোগে আমাদের পার্টি সম্পন্ন হয়। মোটামুটি ঘুমাতে দুটোর কাছাকাছি বেজে যায়। এদিকে পরের দিন ঘুম থেকে উঠে আবার সূর্য উদয় দেখতে হবে। এজন্য তাড়াহুড়ো করে আমরা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আসলে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে সূর্যোদয়টা না দেখলে কেমন যেন ভালো লাগেনা। তাই আমি যতবারই সমুদ্র সৈকতে যাই না কেন ভোরের সূর্যটা আমি দেখবোই। যাইহোক ঐদিন সূর্যোদয় ছিল ভোর পাঁচটা বেজে ১১ মিনিটে। আমি জানিনা কখন গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেছি। হঠাৎ করেই দেখি আমার ছোট ভাইয়ের ডাকে আমার ঘুমের ভান কিছুটা কাটলো। তবে আমি তখনও কিন্তু ঘুম থেকে উঠিনি। এরপর দেখলাম ছোট ভাই রীতিমতো আমাকে ঠেলাঠেলি শুরু করে দিল। এইবার আমার ঘুম ভালোমতোই ভেঙে গেছে। তবে আমি তাদেরকে বলে দিলাম যে আমি আজকে সূর্যোদয় দেখবো না, তোরা গিয়ে দেখে আয়। যদিও এটা আমার মনের কথা ছিল না ঘুমের ঘরে আবোল তাবোল বকছিলাম। এরপর দেখি ছোট ভাই বাথরুম থেকে জল এনে আমার মুখে মেরে দিল।
প্রথম দিকে কিছুটা রাগ হলেও পরে বুঝতে পারলাম যে এটা আমার ভালোর জন্যই করেছে আর কি। যাইহোক এরপর আমরা সূর্যোদয় দেখার জন্য বেরিয়ে গেলাম। তবে বেরিয়েই অনেকটা হতাশ হলাম, কারণ তখন ছিল মেঘলা আকাশ, সূর্য হয়তো উঠেছে কিন্তু আমরা দেখতে পারছি না। সত্যি কথা বলতে ওই মুহূর্তের জন্য মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছিল। তবে সমুদ্র সৈকতের উপর সূর্যের একটা লালচে আভা যেটা পরিবেশটাকে অনেক বেশি মিষ্টি এবং সুন্দর করে তুলেছিল। আমরা একটা প্রাইভেট বীচ ভাড়া করেছিলাম, সেখানে শুধুমাত্র আমরা তিনজন ছিলাম। সুতরাং ছিল না কোন ঝুট ঝামেলা, আমাদের রাজত্ব ছিল সর্বদা। যাইহোক এভাবে আরো কিছু সময় বসে থাকার পরেও সরাসরি সূর্যের মুখ আমরা চোখে দেখতে পারিনি। ওই মুহূর্তের জন্য আসলে মনে হচ্ছিল যে হয়তো আরেকটু ঘুমিয়ে নিলে ভালো হতো। তবে এরপর দাঁত ব্রাশ করে আমরা চলে গেলাম টঙের উপর বসতে। আসলেই বসার জায়গাটা অনেকটা সমুদ্রের ভিতরেই ছিল তাই সমুদ্র কে ঠিক মত উপলব্ধি করতে পারছিলাম এবং সমুদ্রের ঢেউ খেলানো জল এসে পড়ছিল আমাদের কাছে। এদিকে মেঘলা আকাশ এবং সমুদ্রের উপর দিয়ে বয়ে আসা মিষ্টি বাতাস সবমিলিয়ে একটা অনুভূতি মাখা পরিবেশ তৈরি করছিল। ভোরের সূর্য উদয় হয়তো আমরা দেখতে পারিনি তবে ওই মুহূর্তটা মনে হচ্ছিল যে স্বর্গীয় অনুভূতি। এর আগে আমি যতবার সমুদ্র সৈকতে গেছি এত সুন্দর অনুভূতি আমার হয়নি।
এরপর সেই অনুভূতিটাকে আরো কিছুটা মিষ্টতা দিতে হঠাৎ করেই চা নিয়ে হাজির হলো ওই রিসোর্ট এর একজন কর্মচারী মহিলা। তবে তিনি আমাদের এক কাপ করে চা দেয়ার পরিবর্তে পুরো একটা ফ্লাক্স ভর্তি করে চা দিয়ে গেল আর সাথে দিয়ে গেল কিছু বিস্কুট এবং চায়ের কাপ। এমন কিছু হবে আসলে আমরা এক্সপেক্ট করিনি। ভেবেছিলাম বাইরে গিয়ে চা খেয়ে আসতে হবে, তবে সেটা আমাদের আর করতে হয়নি। আমরা তো চায়ের কাপে আদা দেওয়া গরম রঙ চা ঢেলে ঠোঁটের সাথে লাগিয়ে চুমুক দিতে সমুদ্র সৈকতের যে পূর্বের ভাললাগা অনুভূতি ছিল সেটা আরও খানিকটা চাঙ্গা দিয়ে উঠলো। ওই মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিল যে এখানে এসে যত টাকায় খরচ হয়েছে সেটা উসুল হয়ে গেছে, এত সুন্দর সকালের জন্য। এরপর দেখলাম ঢেউয়ের তীব্রতা আরো বেশি বাড়তে লাগলো আর সাথে সাথে প্রচুর মাছ ধরার নৌকা বেশ খানিকটা সামনে দিয়ে সমুদ্রের বুকে বিলীন হতে লাগলো। অনেক দূরে জাহাজ দেখা যাচ্ছিল তবে সেটা এতটাই দূরে ছিল যে খুব বেশি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। আমরা সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তিন-চার ঘন্টা ওখানে বসে ছিলাম। আমাদের একটুও বোরিং লাগেনি। এবং ওই সময়টুকু মনে হয় আমার জীবনে ভালো মুহূর্ত গুলোর ভিতর একটা অন্যতম সুন্দর মুহূর্ত ছিল।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | লাইফ স্টাইল। |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @rupaie22 |
লোকেশন | মৌসুনি আইল্যান্ড। |
আমিও আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত।টাকা আয় করা হয় ভোগের জন্য।সেই ভোগ না করে ব্যাংকে রেখে কোন লাভ নেই। তার থেকে এমন ট্যুর দেওয়া ঢের ভাল। আপনার কপাল আমার কপাল সেম, যে কাজের জন্য যাওয়া সেটাই হয়না। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে গিয়ে এমন হয়েছিল আমাদের। আর যেভাবে বর্ণনা করেছেন মনে হচ্ছিল আমিই মৌসুমি বিচে বসে চা খাচ্ছি। ধন্যবাদ দাদা আপনার ভ্রমনের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আমি ভাই টাকা আয় করি ভোগ করার জন্য। জমিয়ে রাখি কিছু কিছু তবে অধিকাংশ টাকা বিলাসিতার পেছনে খরচ করি। জীবনটাই যদি উপভোগ করতে না পারলাম তাহলে আর কি করে হলো।
সমুদ্র সৈকতে বসে এইভাবে ভোরের সূর্য দেখার মজাই আসলে আলাদা। তবে তোমাদের আসলেই কপাল খারাপ এই জন্য হয়তো সূর্য উদয় দেখতে পাওনি। তবে টং এর উপর বসে সকালের চা টা যে ভাবে উপভোগ করেছো সেটা অনেক কম মানুষের কপালে জোটে।
সমুদ্র সৈকতে বসে ভোরের সূর্য দেখার মজাই আলাদা এটা তো ঠিক কথা। তবে সূর্য তো উঠেই নি ওই দিন মেঘের কারণে। হা হা হা... পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার কাছে পাহাড়ের চেয়েও সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে বেশি ভালো লাগে। আসলেই সমুদ্র সৈকতে সূর্যোদয় দেখতে দারুণ লাগে। সূর্যাস্ত দেখতেও চমৎকার লাগে। আপনার পোস্ট পড়ার সময় মনে হচ্ছিল, আমিও আপনাদের সাথে এতো সুন্দর সময় কাটিয়েছি। টঙের উপর বসে এককথায় দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন আপনারা। আসলে এমন মুহূর্ত যেকোনো কষ্ট ভুলিয়ে দিতে পারে। প্রকৃতি যে কতো সুন্দর, সেটা সবারই উপভোগ করা উচিত। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এবং দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার কাছে ভাই পাহাড়ও ভালো লাগে আবার সমুদ্রও ভালো লাগে। এক এক সময় এক এক রকম আর কি। তবে সমুদ্রের ভিতরে একটা আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
সমুদ্র সৈকতে এমন একটি জায়গাতে গিয়ে সমুদ্র উপভোগ করেছেন। যেটা দেখে আমার নিজের কাছে অনেক ভাল লেগেছে। সেই জায়গায় আবার চা আর বিস্কিট ও পেলেন। এ যেন এক স্বর্গীয় সুখ। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমরা আসলে ভাবতেই পারিনি যে আমাদের এরকম ফ্যাসিলিটি দেবে। আসলে ব্যাপারটা ওই প্যাকেজের ভিতরেই ছিল। তবে সত্যি কথা বলতে অনেক এনজয় করেছিলাম ঐদিন ভাই।