মজনু কাকার দোকানের স্পেশাল চা।। জুলাই -০২/০৭/২০২৩।।
☬নমস্কার সবাইকে☬
হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই যেমন সখের বশে দীঘা,পুরি, মন্দারমনি ঘুরতে যায় আমিও তেমনি মাঝেমধ্যে শখের বশবর্তী হয়ে দুই এক কাপ চা খাই। এমনিতে চা খাওয়ার প্রতি আমার আকর্ষণ বা নেশা কোনটাই নেই। অবশ্য একদিক থেকে চা খেতে আমি ভয়ও পাই। তার পিছনে সব থেকে বড় কারণ হলো যে চা খেলে আমার রাতের বেলা ঘুম হয় না। এইজন্য ইচ্ছা করেই চা খাওয়া হয় না। তারপর আবার চা খেতে আমার কাছে অত বেশি ভালোও লাগে না। এই বার যারা প্রচন্ড চা খেতে পছন্দ করেন তারা হয়তো বলবে এ আবার কেমন ছেলে রে বাবা, যে চা খেতে ভালোবাসে না। আসলে ব্যাপারটা হলো যে ছোটখাটো বা যে কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য আমাকে কেন জানিনা খুব বেশি একটা কাছে টানে না বা আমারও ইচ্ছা করে না যে সেগুলো একটু ট্রাই করে দেখার জন্য। মাঝেমধ্যে সময় সুযোগ পেলে বন্ধুদের সাথে বাইরে ঘুরতে বেরোই তখন তাদের সাথে কথা বলতে বলতে বা ভদ্রতার খাতিরে দুই এক কাপ চা খেয়ে ফেলি। তবে বাড়ি আসার পরে বুঝতে পারি যে আজকে রাতে আমার আর ঘুম হবে না। আমি আসলে পরীক্ষার সময় বা পরীক্ষার মাসখানেক আগে থেকে কফি খাওয়া অভ্যাস করতাম। এতে করে আমার ঘুমটাও চলে যেত অন্যদিকে পড়ার জন্য বেশ কিছুটা এক্সট্রা সময় পেয়ে যেতাম। তবে সেই নেশা কাটাতে গিয়ে আমাকে রীতিমতো অনেক কষ্ট করতে হতো পরবর্তীতে।
যাইহোক এবার আসল কথায় ফিরে আসি, যাকে নিয়ে আসলে আজকের পোস্টটা লেখা। আসলে আমাদের মজনু কাকা থাকে হচ্ছে ছোট বাজারের ওই দিকটাতে। আমাদের বন্ধুবান্ধবরা সবাই সময় পেলে যে কোন কারণ ছাড়াই মাঝেমধ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে যাই অজানার উদ্দেশ্যে। চোষে বেড়াই বিভিন্ন অঞ্চল এবং চেষ্টা করি সেখানকার খাবার দাবার টেস্ট করার জন্য। তবে একদিন হঠাৎ করেই আমার এক বন্ধুর সাথে বাইকে করে ঘুরতে বেরিয়ে একটা জায়গায় গিয়ে হঠাৎ করে চোখ থমকে দাঁড়ালো। মাঠ ঘাট পেরিয়ে ছোট একটা বসতি এবং ঠিক তার পাশেই দুই পুকুরের মাঝখানে একটা জায়গায় ছোট একটা কুঁড়েঘর এর মত। প্রথমে তো ভেবেছিলাম হয়তো কেউ এখানে পাহারা দেওয়ার জন্য থাকে পরবর্তীতে কাছে গিয়ে দেখতে পেলাম না যে এটা একটা ছোটখাটো চায়ের দোকান তবে চায়ের দোকান হলেও পাশাপাশি আরো অনেক জিনিস পাওয়া যায় এই দোকানে। আপনাদের তো আগেই বলেছি চায়ের প্রতি আমার তেমন কোন আকর্ষণ নেই তারপরও বন্ধুর অনুরোধে দোকানে দাঁড়াতে হলো। সে আমাকে বলল যে নতুন দোকান যেহেতু পেয়েছি একবার চা টেস্ট করে দেখা যাক কেমন লাগে খেতে।
বন্ধুর অনুরোধ কি করে ফেলি তাই দুই কাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে দিলাম। কিন্তু লোকটার সাথে প্রথমেই কথা বলে আমার কেমন জানি একটু খটকা লাগলো, যে লোকটা হয়তো একটু হলেও abnormal আছে। তবে প্রথম দেখাতে কোন মানুষকে আসলে এইভাবে জাজ করা উচিত নয় তাই ব্যাপারটা আমি মনে মনে রেখে দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে তিনি যখন চা নিয়ে আমাদের কাছে আসলেন এবং সেই চা মুখে দিতেই বুঝে গেলাম যে আসলে এটা খাওয়ার যোগ্য নয় এতটাই বিশ্রী খেতে ছিল। তবে উনি চা দেওয়ার পর থেকে আমাদের কাছে বারবার জিজ্ঞাসা করছিল যে খেতে কেমন হয়েছে টেস্ট। এখন ভদ্রতার খাতিরে অবশ্যই আমাদের বলতে হচ্ছিল যে হ্যাঁ ভাই যথেষ্ট ভালো হয়েছে খেতে। যাইহোক উনি ওখান থেকে হাসিমুখে চলে যাওয়ার পরে আমরা চা ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। তবে ওখানকার পরিবেশ অর্থাৎ আমবাগান পুকুর সব মিলিয়ে একটা দারুন ওয়েদার ছিল বিশেষ করে মিষ্টি মিষ্টি বাতাস আমাদেরকে অনেক বেশি প্রশান্তি দিচ্ছিল।
আচ্ছা এটা গেল তো কমন ব্যাপার যে চা খাওয়া নিয়ে লেখা পোস্ট। তবে এখানে স্পেশালিটি কী আছে সেটা আপনার অনেকেই জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আসলে এই লোকটার মাথায় অনেক সমস্যা ছিল। তিনি ঠিকঠাক করে ব্যালেন্স করে কথা বলতে পারেন না। অর্থাৎ এখন কি বলছেন সেটা ৫ মিনিট পরে ভুলে যায়, আবার পাঁচ মিনিট পরে কি বলতে চেয়েছিলেন সেটা তার মনে থাকে না। উনি প্রথম দেখাতেই আমাদের এত বেশি পছন্দ করে ফেলেছিল যে আমাদের থেকে চায়ের টাকাই নিতে চাইছিল না। তবে আমরা জোরজবস্তি করে তাকে টাকা দিয়ে দিলাম। আসলেই লোকটা একটানা ২৪ বছর ধরে মদ খেয়েছে। এই কারণে তার নার্ভার সিস্টেম একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। মদ খেলে মানুষের যে এরকম করুন পরিস্থিতি হয় সেটা আমি আগে কখনো সামনাসামনি উপলব্ধি করিনি। লোকটার বয়স ৪০ থেকে ৪২ হবে এবং লোকটা এখনো পর্যন্ত বিয়ে করতে পারিনি। শুনেছি উনি নাকি যুবক বয়সে একটা মেয়েকে খুব পছন্দ করত কিন্তু সেই মেয়েটা তাকে কষ্ট দিয়ে চলে যাওয়ার কারণে উনি নেশা করা ধরে। এরপরে নাকি আর কখনো নেশা ছাড়তে পারেনি। তাছাড়া কিছু বাজে সংঘ তাকে আরো বেশি নিচের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং। |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @rupaie22 |
লোকেশন | বারাসাত, কলকাতা। |
ভাইয়া মজনু কাকার দোকানের চা যেমনি হোক পরিবেশটা কিন্তু দারুণ ছিল। চায়ের কালারটা কিন্তু দারুণ ছিল কিন্তু টেস্ট ছিল না। আপনার চা খাওয়ার শকটা অভ্যাসে পরিণত হোক,হা,হা,হা।
আসলে ভাই ওখানে যাই আমি পরিবেশের জন্যই। কারণ উনি যে চা বানাই সেটা মুখে দেওয়া যায় না।
মজনু কাকার দোকানের স্পেশাল চা পর্বের কাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই। চা পর্বের শেষে মজনু কাকার বেদনার কাহিনী বড় কষ্টের।এই লেখায় বোঝা গেল আপনি চা পছন্দ করেন না! আপনার মত অনেকেই আছে চা খেলে রাতে ঘুম হয়না।আমার কিন্তু চা ভীষণ প্রিয় পানীয়। শুভ কামনা আপনার জন্য।
অনেকের কথা বলতে পারব না আপু, তবে আমার চা খেলে রাতে ঘুম হয় না। ঐদিন সারারাত জেগে থাকতে হয় এ জন্য ভয়ে চা খাই না। হা হা হা..
চা আমার একেবারে পছন্দ না ,যাক অবশেষে কাউকে পেলাম যে চা পছন্দ করে না।লোকটার জন্য খুবই খারাপ লাগছে বেচারা সব দিক দিয়েই কষ্টতে আছে। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম হয়তো চা গুলো খেতে খুবই ভালো হয়েছে। পরে অবশ্য বুঝতে পেরেছিলাম খুব খারাপ হয়েছে চা খেতে। তবে ভালোই করেছেন ভদ্রতার খাতিলে ভালো হয়েছে বলেছেন
যাক আমার মত একজনকে পাওয়া গেল, যিনি চা খেতে পছন্দ করেন না।
আসলে আপু লোকটা ভালবেসেই আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিল যে চা খেতে কেমন হয়েছে। এই জন্য আর উনাকে কষ্ট দিতে চাইনি।
আসলে কিছু দোকানে চা খেতে খুবই ভালো লাগে। চায়ের প্রতিটি চুমুকের অনুভূতি সত্যি খুব দুর্দান্ত। রং চা খাওয়ার অনুভূতি সত্যি খুব অসাধারণ। আপনি মজনু কাকার দোকানের চা যেভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে তো খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। আমিও আপনার মতন চা কিছুটা কম খাই।মজনু কাকার জীবনের কষ্ট কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো। পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে লোকটা আমাদের সাথে এতটাই ফ্রি হয়ে গেছিল যে উনার জীবনের গল্প আমাদের সাথে অনায়াসে শেয়ার করে দিয়েছিল। তবে চা টা খেতে খুব বেশি একটা ভালো লাগেনি।
আমি খুব চা পাগল মানুষ। তাই টাইটেল পড়ে পোস্ট পড়তে লাগলাম।কিন্তু হতাশ হলাম।আসলে চা মোটেও ভালো ছিল না জেনে।কিন্তু লোকটা এতো সমস্যায় আছে জেনে খুব খারাপ লাগলো। আপনার অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
আমার চা খেতে খুব বেশি একটা ভালো লাগে না আপু। মাঝেমধ্যে শখ করে দুই এক কাপ খাই।
ভাই আপনার ভাবিতো আমাকে রীতিমতো চা খোর বলে ডাকে। কেননা প্রতিদিন প্রায় আমার ১২ থেকে ১৫ কাপ চা এর প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে আপনার ভাবীর হাতের চা না খেলে আমার একদমই ভালো লাগেনা। তবে আপনার পোস্ট পড়ে চায়ের বিশ্রী স্বাদের কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো। চা ভালো হলে আমার দিন ভালো কেটে যায়, আর চা ভালো না হলে অস্বস্তিতে দিন কাটে। যাইহোক ভাই, মজনু কাকার মানসিক পরিস্থিতি জেনে খুব কষ্ট পাচ্ছি। কেন যে মানুষ এরকম নেশায় পরে নিজের জীবন ধ্বংস করে ফেলে তা বুঝে উঠতে পারি না। তবে সঙ্গ দোষেই মানুষ নষ্ট হয়ে যায় এটা একদম বাস্তব সত্য কথা। যাইহোক ভাই, আজ আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমাদের ভাবীর হাতের চা আপনি ভালোবেসে খান এটা তো খুব ভালো কথা ভাই। তবে আস্তে আস্তে কমিয়ে ফেলেন, কারণ চা খাওয়া কিন্তু খুব ক্ষতিকর। আপনি লিকার চা খেতে পারেন দুই এক কাপ। তবে তার বেশি খাওয়া ঠিক না।
আহ.. এরকম টংএর দোকানের চা গুলা যা লাগে।
আমি এমনিতে চা খাই না সুমন দা, তবে এইসব জায়গায় গেলে মনে হয় এক কাপ চা খেয়েই আসি, এত সুন্দর পরিবেশ থাকে এখানে।
চা টা খেতে, তাহলে একেবারেই ভালো ছিল না দেখছি। তবে মজনু কাকার জীবন কাহিনী জেনে তার জন্য অনেক খারাপ লাগলো। এমনিতেই যুবক বয়সে তিনি আঘাত পেয়েছেন অনেক, তারপরে আবার এখন নার্ভের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
আসলে ওনার মাথায় একটু সমস্যা ছিল এজন্য কি চা বানিয়েছিল উনি নিজেও বুঝতে পারিনি। পরে তো আমরা খেয়ে বুঝলাম যে এটা মুখে দেওয়া মত না।
আপনার মতো আমারও ছোটবেলা থেকেই নেশা জাতীয় দ্রব্যের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। চা বিক্রেতা লোকটি দীর্ঘদিন মদ্যপান করেছে বিধায়, মাথায় সমস্যা হয়ে গিয়েছে। চা দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুব বাজে লেগেছে।যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।