হাবড়ার বিখ্যাত লস্যি।। জুলাই -২৭/০৭/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

হাবড়ার বিখ্যাত লস্যি এই কথাটা হয়তো আপনারা অনেকেই শুনেছেন। তবে সেই বিখ্যাত লচ্চি খাওয়ার সৌভাগ্য হয়তো অনেকেরই হয়নি। সাধারণত লচ্ছি গরমকালে খাওয়া হয় তবে হাবরার লচ্ছি এতটাই বিখ্যাত যে সারা বছরই সেখানে বিক্রি চলতে থাকে এবং এত পরিমাণে সেল হয় যেটা অন্য জায়গায় গরম কালেও হয় না। সত্যি কথা বলতে এই কথা শুনে তো আর ঘরে দাঁড়ানো যায় না, মোটামুটি টেস্ট তো করতেই হয়। তখন সময়টা ছিল ২০১৭ সাল, তখনই আমি প্রথমবার হাবড়ায় গিয়ে লস্যি টেস্ট করে এসেছিলাম। সুতরাং লস্যি সম্পর্কে আমার যে ধারণা ছিল সেটা অনেকটাই পাল্টে গেছিল ওখানে গিয়ে। যদিও বলা হয়ে থাকে যে বেনারসের সন্দেশ লচ্ছি পুরো ভারতবর্ষের ভিতরে বিখ্যাত। তবে আমার তো আর সেখানে গিয়ে খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি এজন্য আশেপাশে যেটা আমার কাছে বেস্ট মনে হল সেটা নিয়েই আর কি রিভিউ করতে বসলাম। যাইহোক ২০১৭ সালে কেমন টেস্ট ছিল হাবড়ার লস্যি খেতে সেটা আমার আজকের আলোচ্য বিষয় না, ২০২৩ সালে এসে সেই টেস্ট কি অব্যাহত রয়েছে সেটা নিয়ে আমার আজকের পোস্ট।

InShot_20230727_103806123.jpg

একটা কথা তো আপনারা অনেকেই জানেন যে কোন রেস্টুরেন্ট বা কোন জায়গা একবার বিখ্যাত হয়ে গেলে তারা ধীরে ধীরে তাদের কোয়ালিটি ডাউন করতে থাকে। মানে বাঙালি বলতেই এরকম হয়ে গেছে যে একবার নামে উঠে গেলে তারা তাদের আর কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারে না। এ কথা মাথায় রেখেই আসলে গিয়েছিলাম হাবড়ায় লস্যি খেতে। আমার বাড়ি যেহেতু স্টেশনের কাছেই তাই আমাদের বারাসাত স্টেশনে অপেক্ষা করতে লাগলাম ট্রেনের জন্য। মোটামুটি আমাদের বারাসাত থেকে ট্রেনে করে যেতে আধা ঘন্টার মত সময় লাগে। যথা সময়ে ট্রেন বারাসাত স্টেশনে দাঁড়াতেই আমি এবং সাথে আমার একজন বন্ধুকে নিয়ে ট্রেনে চেপে গেলাম। তারপর সোজা হাবড়ার উদ্দেশ্যে দ্রুত গতিতে এগিয়ে গেলাম। যেহেতু ট্রেন খুব বেশি একটা লেট করে না, এজন্য যথাসময়ে আমরা হাবড়া স্টেশনে পৌছালাম। তবে একটা বিষয় বেশ অবাক লাগছিল এর আগে এসে যতগুলো লস্যির দোকান দেখেছিলাম তার কিছু কিছু দোকান অলরেডি বন্ধ হয়ে গেছে অথবা এমন হতে পারে যে ওই দিন বন্ধ ছিল।

20220903_155549.jpg

20220903_155555.jpg
যাই হোক ট্রেন থেকে নেমে আমরা আস্তে আস্তে হেঁটে গেলাম দোকানগুলোর সামনে। তবে এর আগের বার এসে যে দোকান থেকে লচ্চি খেয়েছিলাম ওই দোকানটা দেখলাম বন্ধ রয়েছে। তাই পাশে একটা দোকান থেকে দুটো নরমাল লস্যি অর্ডার করলাম। এখানে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন ফ্লেভারের লচ্ছি পাওয়া যায়। তবে নরমাল লচ্ছির টেস্ট একটু অথেন্টিক হয়, যেটা বিভিন্ন ফ্লেভার এড করে পাওয়া যায় না। যেমন pineapple, orange, lichi এইসব আর কি। তবে দই আর চিনি ফেটে যে অথেন্টিক একটা ফ্লেভার বের হয় সেটা এইসব ফ্লেভার এড করলে আবার ফিকে হয়ে যায়। এজন্য আমি ওইভাবে কখনোই খেতে চাই না। যাই হোক আমরা লস্যি অর্ডার করার এক মিনিটের ভিতরেই আমাদের সামনে এসে উপস্থিত হলো লচ্ছি। সত্যি কথা বলতে প্রথম দেখাতেই আমি বেশ খানিকটা অবাক হয়েছিলাম কারণ আগে লচ্ছির যে consistency ছিল এখন দেখছি সেটা অনেকটাই কমে গেছে এবং দাম আগের থেকে কিছুটা বেড়েছে।যদিও দাম বাড়া নিয়ে আমার তেমন কোন কমপ্লেন নেই। কারণ সময়ের সাথে সাথে সবকিছু দাম বেড়েছে সুতরাং এই জিনিসের দাম বাড়বে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

20220903_155414.jpg

20220903_155351.jpg

যাই হোক অনেক এক্সপেক্টেশন নিয়ে মুখে দিতেই যেটা ফিল হলো যে টেস্ট ওই আগের মতই রয়েছে। কোন ধরনের কোন পরিবর্তন নেই টেস্টে। ব্যাপারটা আমাকে সত্যিই অনেক বেশি অবাক করেছিল। বিশেষ করে এখানকার লস্যিতে শুধুমাত্র দই এবং চিনি দেয়া হয় তার ভিতরে কোন প্রকার জল ব্যবহার করা হয় না এজন্য দই ফাটার ফলে যে অথেন্টিক টেস্ট পাওয়া যায় সেটা সত্যিই অসাধারণ। অনেকে রয়েছে যারা আবার গাঢ় দই খেতে পছন্দ করে না তাদের জন্য এটা একটু সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। এই লস্যিতে চিনির পরিমাণ খুবই কম দেয়া হয় এবং এরা যে দই টা ব্যবহার করে সেটা তাদের নিজেদের বাড়িতে তৈরি করা টক দই। তাছাড়াও বাইরে যে দই কিনতে পাওয়া যায় তার ভেতর পাউডার ইউজ করে তবে এটা অরজিনাল গরুর দুধের দই বানায়, তাই ফ্লেভারটাও সেরকম সুন্দর হয়। যদিও বাইরে যে লচ্ছি ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয় এখানে সেটা কুড়ি থেকে ত্রিশ টাকার ভিতরে পাওয়া যায়। এই কথা জিজ্ঞাসা করায় ওখানকার একজন বলেছিল যে তারা নিজেরাই যেহেতু বাড়িতে সবকিছু তৈরি করে তাই খরচ কম। এজন্য তারা কম দামে সবকিছু দিতে পারে। যাই হোক সর্বোপরি একটা কথা বলতে চাই সেটা হল কলকাতার ভিতর যদি কম দামে ভালো লচ্ছি খেতে হয় কোয়ালিটি সম্পন্ন, তাহলে হাবড়ায় আসতে হবে। এর বিকল্প কিছু নেই।

20220903_155344.jpg

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীরিভিউ পোস্ট।
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনমধ্যমগ্রাম, কলকাতা।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

হাবড়ার এই বিখ্যাত লস্যির কথা আসলে আমিও শুনেছি, তবে কখনো যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। অনেকদিন পর আবার ব্যাপারটা চোখের সামনে রিপিট হওয়ার কারণে খুব যেতে ইচ্ছা করছে। দেখি যদি কখনো সময় সুযোগ পাই তাহলে অবশ্যই গিয়ে খেয়ে আসবো এই বিখ্যাত লস্যি।

তোমার তো হাবড়ায় পরীক্ষার সিট পড়েছে। যদি সময় সুযোগ পাও তাহলে আসার সময় খেয়ে এসো। আশা করি ভালো লাগবে।

 last year 

ভাইয়া হাবড়ায় গিয়ে আপনার বিখ্যাত লস্যি খাওয়ার অনুভূতি পড়ে অনেক ভাল লাগলো। আসলে অন্যান্য রেস্টুরেন্ট থেকে বিভিন্ন স্টেশনে সব কিছুর দাম কিছুটা কম থাকে। আমাদের দিকে ভাল একটি লস্যি ১২০+ থাকে। সেখানে আপনাদের দিকে অনেক কম। ধন্যবাদ ভাইয়া।

লোকাল জায়গা গুলোতে দাম খুব বেশি একটা বেশি নেয় না। তবে খেতে কিন্তু টেস্ট খারাপ না, যথেষ্ট ভালো। পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56784.71
ETH 2392.67
USDT 1.00
SBD 2.27