ছোটবেলায় দাদুর মুখে শোনা একটা ভূতের গল্প।। জুলাই -৩০/০৭/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

আগের পর্ব যেখানে শেষ করেছিলাম -

ওই সময় আমার দাদুদের ঘর ছিল বেড়ার অর্থাৎ বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা ঘর। যাইহোক এভাবে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দাদুর শরীরে একটা স্পর্শ লাগার পর দাদুর ঘুম ভেঙে যায় এবং চোখ খুলতে দেখে দিদিমা দাদুর সামনে দাঁড়িয়ে আছে আর বলছে যে আমি একটু বাথরুমে যাব আমার প্রচন্ড পরিমাণে বাথরুম পেয়েছে।

💠 শেষ পর্ব💠


আমার দাদু কোন কিছু চিন্তা না করেই দিদিমাকে বাথরুমে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো। তবে দাদু একবারও আসলে পাশে ফিরে তাকিয়ে দেখেনি যে আসলেই কি দিদিমা তার পাশে ঘুমিয়ে আছে নাকি উঠে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো সামনে বিপদ ঘনিয়ে আসছে তাই দাদুরও আসলে কোন তাল ছিল না। দাদু বলল দাঁড়াও একটা হ্যারিকেন জ্বালিয়ে নেই, তারপর বেরোবো। তবে দিদিমা বলল যে আমার আসলে অত সময় দাঁড়িয়ে থাকার মত অবস্থা নেই, যত দ্রুত সম্ভব আমাকে বাথরুমে যেতে হবে। তাই তোমার হাতের টর্চ লাইট নিয়েই চলো। এ কথা বলতে বলতেই নাকি দিদিমা ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেল। আর দাদু ঠিক তার পেছনে পেছনে লাইট নিয়ে হাঁটা শুরু করল। আসলে তখনকার সময় গ্রামের বাড়িতে বাথরুমগুলো বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে হতো আর আমার দাদুদের বাথরুম ছিল বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে গিয়ে একটা খালের পাড়ে। আশেপাশে ছিল বেশ ভালো রকমের জঙ্গল এবং তার পাশ দিয়ে বয়ে গেছিলো একটি বড় খাল।

gothic-1378352_1280.webp
সোর্স

আমার দাদু আবার ওই সময়টাতে প্রচুর পরিমাণে সিগারেট খেত। তাই রাতের বেলা ঘুম ভাঙাতে একটা সিগারেট ধরিয়ে সামনের দিকে এগোতে লাগলো। কিন্তু দিদিমা সিগারেট ধরানোর পর থেকে কেন জানি না আরো বেশি ডিস্টেন্সে চলে গেল এবং হেঁটে হেঁটে কিছু সময়ের ভিতর বাথরুমে ঢুকে গেল। এদিকে দাদু প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে বাথরুমের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল কিন্তু দিদিমার আসলে বাথরুম করা হচ্ছিল না। অনেকবার ডাকার পরেও আসলে কোন ডাক শুনে নি দিদিমা বাথরুমের ভেতর থেকে। তারপর হঠাৎ করে দেখা গেল যে বাথরুম থেকে বেরিয়ে ওই খালের দিকে হাঁটা শুরু করল দিদিমা। তখন দাদু বলল যে তুমি খালের ভিতর জল আনতে যাচ্ছ কেন তুমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকো আমি নিজে জল এনে দিচ্ছি। তখন দিদিমা বলল যে না একটু ভালো করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার দরকার আছে তাই আমি খালের জলে নেমে যাব পরিষ্কার হওয়ার জন্য। তখন আসলে দাদুর মুখে সিগারেট ছিল আর ওইদিকেই নাকি দিদিমার বার বার চোখ যাচ্ছিল দাদুর মুখের সিগারেটের দিকে আর বলছিল যে এতটা সিগারেট খাচ্ছ কেন মুখ থেকে সিগারেটটা ফেলে দাও।

forest-3737107_1280.jpg
সোর্স

যাইহোক দিদিমার কথায় দাদু তখন মুখ থেকে সিগারেটটা ফেলে দিয়ে আবার দিদিমার পিছনে পিছনে খালের পাড়ে চলে গেল। এত রাতে অনেকটাই অবাক হচ্ছিল যে বাথরুম করার জন্য তাকে জলে নেমে যেতে হবে কেন। দাদু খেয়াল করছিল যে দিদিমা আস্তে আস্তে খালের জলে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছিল আর দাদুকে বলছিল যে আমাকে একটু টেনে তোলো। আমি আস্তে আস্তে জলের তলে ঢুকে চলে যাচ্ছি কি করে বুঝতে পারছি না। কিন্তু দাদু আসলে কোন কিছুই বুঝতে পারছিল না যে আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে কি। তাই হঠাৎ করেই নাকি দাদু জলে নেমে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল আর সাথে সাথে পেছন থেকে একটা ডাক আসলো যে এত রাতে তুমি এখানে কি করছ। দাদু পিছনে ঘুরে দেখল যে দিদিমা তার থেকে অনেকটা পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে হারিকেন হাতে নিয়ে। আর সামনে যে দাদুকে জলে নামার জন্য বলছিল সে নিমিষ এর ভিতরেই গায়েব হয়ে গেছে। এইবার তো দাদুর প্রচণ্ড ভয় লাগলো। তাহলে এত সময় সে যার সাথে বাইরে ছিল, এটা কে ছিল তাহলে।

background-914404_1280.webp
সোর্স

আসলে দাদু কখনোই রাতের বেলা বাথরুম করতে যেত না। তাই দিদিমা হঠাৎ করে দাদুকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে বেশ খানিকটা অবাক হলো এবং একটা হ্যারিকেন জ্বালিয়ে দাদুর পিছনে পিছনে নাকি দিদিমা এসেছিল। কিন্তু দাদু নাকি বাথরুমের সামনে দাঁড়িয়ে একা একা কার সাথে কথা বলছিল এটা দেখে অবাক হয়ে যায় এবং তারপর দেখে বেশ কিছু সময় পর নাকি দাদু আবার একা একা হাঁটতে হাঁটতে খালের পাড়ে চলে গেল এবং একা একাই কার সাথে কথা বলতে বলতে খালের জলে নেমে যেতে লাগলো। এটা দেখে দিদিমা ভয় পেয়ে পেছন থেকে চিৎকার করে ডাক দিয়েছিল। আসলে পেছনে দাদু দিদিমাকে দেখি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তারপর নাকি দিদিমা নাকে মুখে জল দিয়ে জ্ঞান ফেরায়। আসলে ঐদিন রাতে যাকে ঝাড়ফুঁক করেছিল তার শরীরে যে খারাপ আত্মাটা ছিল সেটা নাকি দাদুর উপর অনেক রেগে গেছিল। তাই ঐদিন রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে দাদুকে যে করেই হোক জলে চুবিয়ে মেরে ফেলে দেবে। আর সেজন্যই এই ফন্দি করেছিল। কিন্তু দিদিমার জন্য দাদু ওই দিনের মতো বেঁচে বাড়ি ফিরেছিল। এরপর থেকে নাকি দাদু ঝাড়ফুঁক করা ছেড়ে দেয়। কারণ দিদিমা অনেক কান্নাকাটি করেছিল এবং অনেক দিব্যি দিয়েছিল এসব কাজ আর না করার জন্য।

শ্রেণীভূতের গল্প।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

এর আগে পর্ব পড়েছিলাম অনেক ভালো লেগেছিল। তবে আজকের পর্বের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম বেশ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করলে পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপনার দাদি মা যদি হারিকেল নিয়ে না দাঁড়াতো তাহলে নিশ্চিত সে দিন মেরে ফেলতো।

হয়তো এরকমই হতো, হারিকেন নিয়ে যদি আমার দিদিমা না দাঁড়িয়ে থাকতো তাহলে হয়তো দাদুর ঐদিন বড় কোন বিপদে পড়তে পারতো। যাই হোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গল্পটা শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য।

 last year 

এর আগে এই গল্পের একটি পর্ব পড়েছিলাম। আমার কাছে ভূতের গল্প পড়তে খুব ভালো লাগে। আগের দিনে এসমস্ত ভয়ংকর ঘটনা প্রায়ই ঘটতো। শুনলেই তো ভীষণ ভয় লাগে আমার। তবে আপনার দাদী সেদিন পিছন থেকে ডাক দিয়েছিল বিধায়, আপনার দাদা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল। নয়তো খালে চুবিয়ে ঠিকই মেরে ফেলতো। গল্পটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

এটা অবশ্য ঠিক, যদি ওই সময় আমার দিদিমা পেছন থেকে ডাক না দিত তাহলে হয়তো দাদুর বড় কোন বিপদ হতে পারতো। গল্পটা মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 67163.45
ETH 2666.94
USDT 1.00
SBD 2.70