অনেকের মনে এই প্রশ্ন উঠতে পারে যে, পুজো তো শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই, তাহলে এখন কেন দুর্গা পুজো নিয়ে পোস্ট তৈরি করছি আমি। আসলে আমি কিছু কিছু মানুষকে কথা দিয়েছিলাম যে কলকাতার সব ভালো ভালো প্যান্ডেল গুলো তাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। যদিও আমি এই ব্যাপারে অনেকটাই সফলতা অর্জন করেছি, যখন দাদা শারদীয়া কনটেস্টের আয়োজন করে। সেই কনটেস্টে আমি সর্বমোট তিনটি পোস্ট দিয়েছিলাম এবং সেখানে নর্থ কলকাতা এবং সাউথ কলকাতার অনেক বিখ্যাত বিখ্যাত পুজো মণ্ডপ তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তিনটি পোষ্টের মধ্য দিয়েতো আর কলকাতার সব ঠাকুর দেখানো সম্ভব না। তার জন্য আস্তে আস্তে অনেকগুলা পোস্ট তৈরি করে দেখাতে হবে। কিন্তু সেটা আর হলো কোথায়, পুজোর সময় এতটাই ঘোরাঘুরি করেছিলাম যে পরবর্তী কিছু সময় আমি রীতিমতো অসুস্থ ছিলাম। এজন্য দুর্গাপুজো নিয়ে যে পোস্টগুলো আমি তৈরি করে রেখেছিলাম সেগুলো শেয়ার করতে পারেনি। টুকটাক যা পেরেছি তাই পোস্ট করেছি। তবে দু একদিন হলো শরীর টা বেশ ভালো লাগছে। তাই মনে হল যে পুরনো পোস্টগুলো আবার নতুন করে শেয়ার করা যাক আপনাদের সাথে।

দাদার কন্টেস্টের জন্য আমার যত পোস্ট রেডি করার দরকার ছিল তা মোটামুটি নবমীর দিনে রেডি করে রেখে দিয়েছিলাম। এরপর আমি একদমই ফ্রি ভাবে ঘোরাঘুরি করার জন্য দশমীর দিনটাই বেছে নিলাম। তবে একটা সমস্যা হচ্ছে দশমীর দিনে অনেক পূজা মন্ডপেই তাদের প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে দেয়। এই দিক থেকে একটা সমস্যা হয়ে যায়, আমরা দশমীর দিন দিন ঘুরতে বেরিয়ে অনেক পূজা মন্ডপ এ গিয়ে অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরে আসি। কারণ আমরা অনেক মন্ডপে গিয়ে দেখি সেখানে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়ে গেছে। পরবর্তীতে লোকের কাছে শুনে শুনে তারপর বিভিন্ন পূজা মন্ডপে যেতে থাকি, যেখানে এখনো ঠাকুর বিসর্জন দেওয়া হয়নি।

ও আরেকজনের পরিচয় দিতে তো ভুলেই গেছি আমি গিয়েছিলাম আমার কাকুর সাথে, সে এখন বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্ট তৃতীয় বর্ষের। পুজোর অনেক আগের থেকেই তার সাথে আমার কথা হয় যে, পুজোর সময় একদিন অন্তত ঘুরতে যাব একসাথে। কারণ সারা বছর তারও সময় হয় না, আর আমার তো সময় হয়ই না। এই পুজোর সময়টা একটু দেখা হয় তার সাথে। যাইহোক আমরা দুজনে মিলে সাউথ কলকাতার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ঘুরতে লাগলাম, যেগুলো আমরা আগে দেখিনি। মেট্রোতে করে কালিঘাট স্টেশনে নেমে তারপর লোকের মুখে শুনতে লাগলাম যে, এখানে সব থেকে কোন প্রতিমাটা ভালো হয়েছে সবাই আমাদের যেটা রেকমেন্ড করলো সেটা হলো চেতলা অগ্রণী ক্লাবের পুজো নাকি বেশ ভালো করেছে এবং তাদের এবার এর থিম ভুতের বাংলো। ভূতের কথা যেহেতু উঠে গেছে সুতরাং আমাদের আর তর সইলো না। আমরা তাড়াহুড়ো করে চলে গেলাম মন্ডপের উদ্দেশ্যে। তবে সত্যি কথা বলতে কালীঘাট স্টেশন থেকে যথেষ্ট দূর ছিল অগ্রণী ক্লাব।

যাইহোক অনেক কষ্ট, অনেক পরিশ্রম করে ক্লাবে পৌঁছে তো অবাক হলাম আমি। ভূতের থিম দেখতে এসে তো রীতিমতো ভুতুড়ে ভিড় দেখলাম। এর আগে পূজা মন্ডপে অনেক ভিড় দেখেছি তবে এরকম ভুতুড়ে ভিড় আগে কখনো দেখিনি। যেহেতু জায়গাটা অনেক ছোট এজন্য ভীড় মনে হয় একটু বেশি মনে হচ্ছিল আমার কাছে। তবে নিতান্তই লোকজন একেবারে কম ছিল না। পুরো থিম টাই শুকনো কলার পাতা, বাঁশ এবং কাগজ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যেটা দেখে আমার কাছে অসম্ভব সুন্দর লেগেছিল। এবং মোটামুটি পুরো মন্দির ঘুরে বেরোতে আমাদের আধা ঘন্টারও বেশি সময় লেগে যায় ভিড়ের কারণে।

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।