রক্তখেকো পিশাচিনী(ভূতের গল্প)।। জানুয়ারি-১৮/০১/২০২৩

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলাম👉

কিছুদিন ধরে সেখানে নাকি লোকজন হাসি এবং মাঝেমধ্যে কান্নার আওয়াজ শুনছে। তাই আমাদের মধ্যে কার বেশি সাহস রয়েছে এটা পরীক্ষা করার জন্য সেই কুয়ো থেকে এক বালতি জল আনতে হবে। আর এটা যে করতে পারবে তাকে গ্রামের সবথেকে সাহসী বালক বলে আখ্যায়িত করা হবে। যেহেতু তমাল এর রক্ত গরম এবং এইসব বিষয়ে খ্যাতি অর্জন করতে তার বেশ ভালো লাগে, তাই সে কোন প্রকার চিন্তা ছাড়াই রাজি হয়ে গেল।

witch-3202467_1280.jpg
সোর্স

👉গল্পের পরবর্তী অংশ-

দুইদিন পরেই ছিল ঘোর আমাবস্যার রাত এবং বছরের এই দিনটা গ্রামের ভিতর একটা হইচই পড়ে যায় পড়ে। প্রতিবছর এই দিনটাতে কোনো না কোনো ক্ষতি হবেই গ্রামের। যাই হোক তমাল যেহেতু কথা দিয়ে ফেলেছিল, তাই বন্ধুদের কাছে অপমানিত হওয়ার ভয়ে সেই কথা ফিরিয়ে নিতে পারেনি আর। মোটামুটি আমাবস্যার রাতে একটা টর্চ লাইট নিয়ে বেরিয়ে পড়ল সেই শ্মশানের ধারের কুয়োর উদ্দেশ্যে। গ্রামের সুনসান রাস্তা আর চারিদিকে শুধু ভয়ংকর শিয়ালের ডাক এমন একটা পরিবেশ তৈরি করছিল যে কোন সুস্থ মানুষের পক্ষে এইভাবে এত রাতে ঘর থেকে বেরোনো সম্ভব ছিল না। যেহেতু গ্রাম থেকে শ্মশানটা বেশ কিছুটা দূরে ছিল তাই সেখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত একটা বেজে যায় তমাল এর। কিন্তু তমাল একটা ববিষয়ে বেশ অবাক হয়, সেটা হলো গ্রামের অন্যান্য জায়গায় বিভিন্ন জীবজন্তুর ডাক শোনা গেলেও এই জায়গাটাতে কোন প্রকার শব্দ নেই শুধু রয়েছে এক হিম শীতল নীরবতা।

যাইহোক কুয়োর কাছে যেতেই সে দেখতে পেল সেখানে একটা বালতি পড়ে আছে। খুব সম্ভবত তার বন্ধুরাই আগের দিন সকালে এসে রেখে গেছে, এটা প্রমাণ করার জন্য যে সে সেখানে গিয়েছিল এবং ওই বালতিটাতে করেই জল এনেছিল। যাইহোক তমাল এবার বেশ ভয় পাচ্ছিল কারণ জায়গাটা এত নিশ্চুপ এবং মনে হচ্ছিল পিছন থেকে কে যেন তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে আস্তে আস্তে অনুধাবন করতে থাকে যে বন্ধুদের সামনে নিজেকে এতটা সাহসী প্রমাণ না করলেই হয়তো ভালো হতো। প্রথমে সে কুয়োর জলের গভীরতা মাপার জন্য টর্চ লাইট টা কুয়ার ভিতরে ধরল কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে তার হাত থেকে টর্চ লাইট টা কুয়োর ভিতর পড়ে গেল। এবার তো সে পড়ে গেল ভয়ংকর বিপদে। কারণ এমনিতেও আমাবস্যার রাত তারপরে আবার হাতে যাও একটা লাইট ছিল কাজ চালানোর মতো, সেটাও জলের ভেতর পড়ে গেল। যাই হোক সে ভয়ে ভয়ে বালতিটা কে ওর ভিতরে নামাতে লাগলো এইবার শুরু হলো আসল কাহিনী, দূর থেকে ভেসে আসছে এক নারী কন্ঠের কান্নার আওয়াজ। আর কাঁদতে কাঁদতে তমালকে বলছে তুই কুয়োর জলে হাত দিস না তোর অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে।

woman-2375822_1280.jpg
সোর্স

কিন্তু তমাল কোন কথায় কান না দিয়ে কুয়োর জলে বালতিটা ফেলে দিল। এরপর তো আরো জটিল হয়ে গেল ব্যাপারটা এত সময় তো অনেক দূর থেকে মহিলা কন্ঠে ভেসে আসলো এইবার রীতিমতো কুয়োর ভেতর থেকে এক মহিলার করুন কণ্ঠস্বর ভেসে আসছিল আর চিৎকার করে বলছিল আমি তোর অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলে দেবো, তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না আমার হাত থেকে। তত সময় তমাল অলরেডি কুয়োর জলে বালতি ফেলে দিয়েছে। আর তাড়াতাড়ি জলসহ বালতিটাকে উপরে টেনে আনতেই সে হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল বালতির জল দেখে। এই আমাবস্যার রাতেও স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছিল বালতির ভিতর আসলে কোন জলই নেই তার বদলে রয়েছে এক বালতি তাজা রক্ত। যেটা দেখে তমাল ছিটকে দূরে সরে গেল কয়েক হাত আর সবকিছু রেখেই সে দৌড়ে পালাতে শুরু করল।

অন্ধকারে দিক বিদিক শূন্য হয়ে সে শুধু দৌড়েই যাচ্ছে কিন্তু কোথায় যাচ্ছে ঠিক বুঝতে পারছিল না। আর পেছন থেকে এক মহিলার করুন এবং ভয়ংকর চিৎকার, যে তোকে আমি দেখে ছেড়ে দেবো। আমি মানা করা সত্ত্বেও তুই আমার কথা শুনিস নি। যাইহোক তমাল এভাবে দৌড়াতে দৌড়াতে কখন যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল সে নিজেও বুঝতে পারেনি। পরেরদিন সকালে যখন তার জ্ঞান ফিরে তখন দেখে তার বাবা-মা এবং বন্ধুরা তার পাশে বসে আছে। যদিও তার বাবা-মা এইসব কেন হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে সে কোন উত্তর দেয়নি। তার বদলে গতকাল রাতে কি হয়েছিল সেগুলো তার বন্ধুদের খুলে বলে এবং তারা সেখানে আরো একবার যায় দুপুর বেলাতে আর সেখানে গিয়ে দেখে সেই বালতিটা ঠিকই পড়ে আছে কিন্তু কোথায় রক্ত, তার বদলে রয়েছে কুয়োর ভিতরে অনেক দিনের পুরনো জল।

witch-7487743_1280.jpg
সোর্স

হয়তো গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো তবে আসল ঘটনা শুরু হয় ঠিক তারপর থেকেই। সেদিন বাড়ি ফেরার পর থেকেই তমালের গায়ে প্রচন্ড পরিমাণে জ্বর..

চলবে.....🏃

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🕉️ধন্যবাদ সবাইকে🕉️

Sort:  
 2 years ago 

আসলে ভাইয়া আপনার গল্পটা মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলাম। সত্যি বলতে গল্পটা পড়ে আমার অনেক ভয় লাগছিল। আর তমাল এমন কাজ না করলেও পারতো। যেহেতু বালতি পড়ে গিয়েছিল, তমালকে পানি আনতে নিষেধ করেছিল, তমাল তখন চলে আসলে অনেক ভালো হতো।সত্যি বলতে এমন জীবন মরণের ভাজি না ধরাই ভালো। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনি একাই পড়লেন। যারা বলেছিল পড়বে তারা কেউ পড়েনি। হা হা হা... ধন্যবাদ আপু আপনাকে, একজন তো পড়লো।

 2 years ago 

আমি গত পুরশোই পড়েছিলাম, তারপর ভাবছিলাম কি কমেন্ট করবো,কমেন্ট যদি মজার না লিখতে পারি তাহলে কেমনে হয়।

আপনি পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে যারা বলে যে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম তাদের জন্যই গল্পটা লিখি। পরে দেখা যায় তারা কেউ পড়েনি। "পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম" কথাটা আসলে কমেন্টের একটা অংশ। ওটা আসলে অপেক্ষায় থাকা না। 🤣

 2 years ago (edited)

দাড়ান ঐ মেয়ে কন্ঠের পেত্নীর সাথে বিয়ে দিব তারপর আপনার ঘাড় মটকিয়ে রক্ত খাবে😉😉।আচ্ছা তমাল জায়গায় আপনি থাকলে কি করতেন😉😉পরের পর্ব পাওয়ার অপেক্ষায় থাকলাম

তমালের জায়গায় আমি নিজেকে কখনোই রাখতাম না। কারণ এটা একটা কাল্পনিক গল্প এবং পুরোটাই আমার নিজের কল্পনায় লেখা। সুতরাং ওরকম একটা ভয়ংকর জায়গা আমি কেন থাকতে যাব। আপনি পড়েছেন দেখে ভালো লাগলো।😊

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62720.27
ETH 2447.07
USDT 1.00
SBD 2.64