ঘাটশিলা ভ্রমন (দ্বিতীয় পর্ব)।। মার্চ-২১/০৩/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

রুঙ্কিনি দেবীর মন্দির


ঘাটশিলা আমরা সর্বমোট দুই দিন ছিলাম। এই দুই দিনে মোটামুটি পুরো জায়গাটা ঘোরার চেষ্টা করেছি। আগের পর্বে হয়তো কিছুটা বর্ণনা করার চেষ্টা করেছিলাম সেটা আপনারা অনেকেই জানেন। আজকে আবার নতুন টপিক্স এবং নতুন জায়গার বর্ণনা নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হলাম। আজ আমি যে জায়গা নিয়ে কথা বলবো সেটা হল ঘাটশিলার রুঙ্কিনি দেবীর মন্দির। এই জায়গাটা বেশ বিখ্যাত এবং বলতে গেলে ভালো রকমের একটা টুরিস্ট প্লেস। পাহাড়ের পাদদেশে দেশে অবস্থিত এই মন্দিরটির ইতিহাস বেশ বিখ্যাত। কথিত আছে এই পাহাড় কাটার সময় শ্রমিকেরা যখন এই মন্দিরের কাছে এসে পাহাড় কাটা শুরু করে তখন নাকি সেখান দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে থাকে, প্রথমে তারা ব্যাপারটাকে গুরুত্ব না দিয়ে আবার অন্য জায়গা থেকে পাহাড় কাটা শুরু করে এবং দেখা যায় সেখান থেকেও গলগল করে তাজা রক্ত বেরোচ্ছে। সেখান থেকেই এই জায়গাটা মন্দিরের রূপ নিয়েছে। এখানে যারা আসে তাদের মনস্কামনা নাকি পূর্ণ হয়ে যায় এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটা পবিত্র স্থান ও বলা যেতে পারে।

InShot_20230320_202736714.jpg

20230224_114240.jpg

ঘাটশিলা ভ্রমণের প্রথম দিন সকালেই গিয়েছিলাম আমরা ব্রুডি লেক এবং সেখান থেকে ওই সাইডের যাবতীয় যা ছিল সব জায়গা ভালো করে ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরে সেইদিন আবার সামান্য একটু রেস্ট নিয়ে খুব ভোরে বেরিয়ে পড়লাম এই মন্দির দেখার উদ্দেশ্যে। যদিও শুধু এই মন্দির দেখা আমার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল না, আশেপাশে আরও অনেক বড় বড় মন্দির ছিল এবং একটা মন্দির ছিল পাহাড়ের উপর। আমাদের সকলের অনেক কষ্ট হয়েছিল সেই পাহাড়ের উপর উঠে মন্দির দেখতে। সেটারও একটা বর্ণনা কোন এক সময় দেব। যাইহোক আমরা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে পড়লাম আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে, যেহেতু আগে থেকে গাড়ি বুক করা ছিল তাই গাড়ির সমস্যা নিয়ে তেমন কোনো অসুবিধা পোহাতে হয়নি। মোটামুটি আমরা যে হোটেলে উঠেছিলাম সেখান থেকে মন্দিরে যেতে দেড় ঘন্টার মত সময় লেগেছিল। কারণ মাঝপথে আমরা আরো অনেক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলাম এবং সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলাম।

20230224_114228.jpg

20230224_114207.jpg

মোটামুটি সকাল ১১ টা নাগাদ আমরা মন্দিরে এসে পৌছালাম এবং সেখানে গিয়েই দেখি অসংখ্য লোকেরা আগমন এবং প্রত্যেকটা মানুষই বাইরে থেকে এসেছে এই মায়ের মন্দির দর্শন করতে। জায়গাটা এত সুন্দর এবং নিরিবিলি ছিল যে সেখানে গিয়েই মন প্রাণ শান্তিতে ভরে গেল। প্রথমেই মায়ের মন্দির দর্শন করে প্রণাম করলাম, তারপর আশপাশটা ঘুরে দেখলাম। তবে ওখানে গিয়ে একটা সমস্যা হচ্ছিল, সেটা হলো জলের সমস্যা। যেহেতু পাহাড়ি এলাকা তাই জল পাওয়া বেশ মুশকিল হয়ে গেছিল। তবে ওখানে জলের ব্যবস্থা থাকলেও সে জল আমি খেতে পারিনি। পরবর্তীতে অনেক দূরে গিয়ে একটা দোকান থেকে জল কিনে নিয়ে তারপর খেতে হয়েছিল। যাইহোক হাত মুখ ধুয়ে মন্দিরে পুজো দিয়ে দিলাম। তারপর সেখান থেকে প্রসাদ গ্রহণ করে আবার বসে পড়লাম মন্দিরের পূজো দেখার জন্য।

20230224_114159.jpg

20230224_114020.jpg

ওখানে গিয়ে ভাষাগত একটু সমস্যা হচ্ছিল, কারণ অনেক স্টেট এর লোক ওখানে এসে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলছিল। এক্ষেত্রে আমি তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিলাম না, তাই যতটা পারছিলাম কম কথা বলছিলাম। এ মন্দিরে একটা ভালো জিনিস খেয়াল করলাম এখানে দুই ধরনের লোক আছে। এক ধরনের লোক যারা নিজেদের মনস্কামনা নিয়ে এখানে পূজা দিতে আসে আর এক শ্রেণীর লোক তারা তাদের মনস্কামনা পূর্ণ হয়ে গেলে আবার এখানে আসে পুজো দিতে। প্রায় ঘন্টাখানেক মন্দিরের কাছে বসে ছিলাম তবে কখন যে এক ঘন্টা পার হয়ে গেছিল ঠিক বুঝতে পারিনি। এ দিকে আমাদের আরো অনেকগুলো স্পট ঘোরার কথা ছিল তাই সেখান থেকে আবার প্রণাম করে সবাই মিলে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম পাহাড়ের উপরে যে মন্দিরটা ছিল সেটা দেখার উদ্দেশ্যে।

20230224_113953.jpg

20230224_113938.jpg

7YHZyBadGPMGPpmSAvnvPWhbR1Eo9nKWN6xzUJNzgxziWYsEWCR6bYh1aZuTzpz3ghQjguRvgwkgU141gxCDYqJKWGngWVJK8hWhSqVE4G...7sbaJHB3K2pueNZ5iECMSjof2GmVhLHGx8rpeqk7MP98CgSzgMKX1ZzPRETkcV3XVxRaV9LEPPAxNWqqRtBRNPBvPQhuyT4mw2Xep1WPAdvMFjDGCxjMniyUYe.png

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনঝাড়খন্ড, ঘাটশিলা,ইন্ডিয়া।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Sort:  
 2 years ago 

ঘাটশিলায় আপনারা সর্বমোট দুদিন থেকে ছিলেন এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। আপনার ঘাটশিলায় ভ্রমণ করার দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। যেহেতু মন্দিরটি পাহাড়ের উপরে ছিল তাই বুঝতে পারছি অনেক কষ্ট করে মন্দিরটি দেখার জন্য গিয়েছিলেন। মন্দিরে পূজা বেশ ভালোভাবেই দেখেছেন তাহলে। খুবই সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফিও করেছেন আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

পুরো পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আসলে আপনাদের জন্যই লেখার আগ্রহটা অনেকগুনে বেড়ে যায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 63283.09
ETH 2463.49
USDT 1.00
SBD 2.54