কালী পুজো পরিক্রমন।। পর্ব-০৪।। নভেম্বর-০৯/১১/২০২২।।

খুব ইচ্ছা ছিল কালীপুজো নিয়ে তৈরি করা পর্বগুলো একের পর এক শেয়ার করব। কিন্তু পোস্টের ভেরিয়েশন তৈরি করার জন্য, সেটা আর করা হলো কোথায়। তারপরও মোটামুটি চেষ্টা করছি সপ্তাহে অন্তত দুটি পোস্ট শেয়ার করার, পূজো পরিক্রমণ নিয়ে। আজকে আমরা বারাসাতের ভেতরেই থাকবো এবং বারাসাতের খুব নামকরা একটা পূজা মন্ডপ এর কালীপুজো তুলে ধরবো আপনাদের সামনে। গত বছরও কালী পূজাতে তারা বেশ কিছু চমক রেখেছিল তাদের পূজা মন্ডপে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি, এবারও খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল বারাসাতের এই বিখ্যাত পুজো মন্ডপটি। চলুন তাহলে আর বেশি কথা না বলে আজকের টপিক্সে ফিরে যাওয়া যাক।

গত বছর বারাসাত এর ব্যায়াম সমিতি তাদের পুজোর থিমের জন্য বারাসাতের সবথেকে বেস্ট প্রাইস আর বেস্ট উপাধি পেয়েছিল। তবে এবার তারা কিছুটা পিছিয়ে গেলেও তাদের এবারের পুজোর থিমও ছিল দেখার মতো। মোটামুটি অনেকটা রাত হবে, ওই ধরে নেওয়া যায় 12 টা থেকে একটা। এই সময় আমরা ব্যায়াম সমিতির উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলাম পুজো দেখার জন্য। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল এই ক্লাবের পুজো দেখার জন্য মানুষের ভিড় কখনোই কমে না। প্রতি বছরই সমান পরিমাণ ভিড় থাকে। সে থিম ছোট হোক বা বড়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু আমরা চিন্তা করলাম যে এত বড় লাইনে দাড়িয়ে তো পুজো দেখা সম্ভব নয়। আমাদের অন্য কিছু ভাবতে হবে। যেহেতু আমি বারাসাতের ছেলে সুতরাং বারাসাত এর অলিগলি সবই আমার চেনা। তাই অন্য উপায় বের করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

বারাসাত ব্যায়াম সমিতি ক্লাবে ঢোকার জন্য সর্বমোট দুটি রাস্তা রয়েছে। এর ভিতর একটা রাস্তা সাধারণ জনগণের জন্য এবং অন্য একটা রাস্তা যেটা পুজোর সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ক্লাবে ঢোকার জন্য আরও একটা রাস্তা রয়েছে, সেটা খুব কম লোকই জানে। সুতরাং আমরা যারা ঘুরতে গিয়েছিলাম, তারা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা ওই রাস্তা দিয়ে ঢুকবো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সেখানে গিয়ে দেখলাম, যে গেটে বড় একটা তালা মারা রয়েছে। সুতরাং আমাদের প্ল্যান বলতে গেলে ব্যর্থই হতে যাচ্ছিল। হঠাৎ করেই একজন সিকিউরিটি গার্ড যিনি কিনা তালা খুলে হয়তো কোন কাজে বের হচ্ছিলেন। আর আমরা সেই সুযোগটাই নিলাম, মোটামুটি তাকে বলে কয়ে গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলাম। সত্যি কথা বলতে ভেতরে ঢুকে এতটাই হাসি পাচ্ছিল যে বলে বোঝাতে পারবো না। কারণ যারা ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল পুজো দেখার জন্য, তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে অনেকটা অখুশি হচ্ছিল। কারণ আমরা এক মিনিটের ভিতরে ঢুকে গেছি ভেতরে আর তারা ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েও এখনো মায়ের মুখ দর্শন করতে পারেনি।

যাইহোক সেখান থেকে ঠেলে ঠুলে ভিতরে ঢুকে পূজা মন্ডপে হলো আরেক কেলেঙ্কারি। এত ভিড় যে সামনে থেকে একবার ঠেলছে,আবার পিছন থেকে একবার ঠেলছে। ঠিকঠাক করে ফটো তুলতে পারছিলাম না এদিকে সিকিউরিটি গার্ডগুলো বাঁশি বাজিয়ে যাচ্ছে কানের কাছে। যাই হোক মোটামুটি সামনে পেছন থেকে দুই একজনকে ঠেলাঠুলা দিয়ে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়লাম এবং সেখান থেকে যতটা সম্ভব ফটো তুলে নিলাম। যেহেতু প্রচন্ড পরিমাণে ভিড় ছিল সুতরাং মায়ের মুখ খুব বেশি সময় দেখতে পারিনি মোটামুটি ত্রিশ সেকেন্ডের ভিতরেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল। তারপরও যতটা পেরেছি ফটো তুলেছি। ব্যায়াম সমিতি ক্লাবের এবারের মায়ের মূর্তিটা খুব বড় ছিল এবং তাদের ডেকোরেশন এবং লাইটিং ছিল অসম্ভব সুন্দর। যেটা আপনারা ফটোগুলো দেখলেই হয়তো বুঝতে পারবেন।

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।