রক্তখেকো পিশাচিনী(ভূতের গল্প)।। জানুয়ারি-১৬/০১/২০২৩

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। আজ অনেকদিন পর আপনাদের সামনে একটা ভূতের গল্প শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে
তমাল এর সাথে কথা হয় না আমার তা প্রায় মাস খানেক হয়ে গেছে। কিন্তু এরকম তো হওয়া কথা না, কারণ আমি ছাড়া তার এমন কোনো বন্ধু নেই কলকাতাতে যে আমাকে ভুলে তাকে নিয়ে পড়ে থাকবে। তাছাড়াও বিগত এক সপ্তাহ ধরে তাকে ফোনে কল করে যাচ্ছি কিন্তু ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। মনের ভিতর আমার বেশ খানিকটা টেনশন ঢুকে গেল এবং তাকে দেখার জন্য তার কলকাতার ফ্ল্যাটে গিয়ে হাজির হলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম মাস খানেক আগে সে গ্রামের বাড়ি চলে গেছে তার শরীর নাকি খুব বেশি একটা ভালো না। এদিকে আমাদের ফাইনাল পরীক্ষার ডেট এগিয়ে আসে সুতরাং তমালের ফ্ল্যাটের পাশের বাড়ি থেকে তার গ্রামের বাড়ির এড্রেস নিয়ে চলে গেলাম তার গ্রামের বাড়ি।তমাল এর বাড়ি একদমই প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে এখনো পর্যন্ত আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি। কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছালেও অধিকাংশ জায়গায় এখনো বিদ্যুতের ছিটেফোঁটাও নেই।



যাই হোক অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর তমালের বাড়ি খুঁজে পেলাম। আধা কাচা আধা পাকা টিনের চাল দেওয়া একটা দোচালা বাড়ি। বাড়ির আঙিনায় গিয়ে দেখি তমালের বাবা-মা মাথায় হাত দিয়ে উঠানে বসে আছে। তাছাড়াও বাড়িঘরের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল এখানে কোন সুস্থ মানুষ থাকতে পারে না। যাই হোক সে দিকটাতে আমি নজর না দিয়ে তমাল এর বাবা-মার কাছে তার কথা জিজ্ঞাসা করায় তমাল এর বাবা-মা হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো, আর বলল তমাল ঘরে শুয়ে আছে কিন্তু তাকে দেখার মত অবস্থায় নেই। তুমি দেখলে হয়তো ভয় পেয়ে যেতে পারো।

woman-578820_1280.jpg
Source

প্রথমে তো আমি ভেবেছিলাম হয়তো জ্বর বা অন্য কোন সাধারণ সমস্যা হয়েছে তাই কোন কিছু চিন্তা না করেই ঘরের ভেতর ঢুকে গেলাম। কিন্তু ঘরে ঢুকে আমি যে জিনিসটা দেখলাম হয়তো আমি সেটা দেখার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। আমি দেখলাম একজন কঙ্কাল সার মানুষ বিছানায় শুয়ে আছে। তাকে দেখে কোন প্রকার চেনার উপায় নেই যে এটা আমার বন্ধু। তার এমন অবস্থা হয়ে গেছে যে কথা বলার মত ক্ষমতা নেই। আসলে শরীরের অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে তার প্রত্যেকটা হাড় দেখা যাচ্ছে এবং গায়ে শুধুমাত্র একটা চামড়া ছাড়া সিটে ফোটা মাংস নেই।

gothic-1378352__480.webp
Source

একটা সাধারণ কঙ্কাল এবং আমার বন্ধুর ভিতরে যে পার্থক্যটা ছিল সেটা হল কঙ্কালের জীবন থাকে না আর আমার বন্ধুর শুধুমাত্র জীবনটাই এক্সট্রা ছিল, বাকি সবই একই রকম দেখতে লাগছিল। তার এই অবস্থা জানতে চাইলে সে কোন প্রকার জবাব আমাকে দিল না, তার বদলে দেখলাম তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে বিন্দু বিন্দু জল। আমি সেখানে দাঁড়াতে পারলাম না, রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম এবং তার বাবা মাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে তার কি হয়েছে। কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর তারা নিজেরাও জানে না। কারণ অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে, অনেক টেস্ট করা হয়েছে কিন্তু কোন প্রকার রোগই ধরা পড়ে নি তার। সব ডাক্তাররাই নাকি বলে দিয়েছে তার শরীরে কোন সমস্যা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাহলে দিনের পর দিন তার এই অবনতি কেন হচ্ছে, সেটা তার বাপ মা বুঝতে পারছিল না।

ghost-1661252_1280.jpg
Source

এইদিকে তমালের কোন সমস্যা হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে সে কোন উত্তর দেয় না তার বদলে চুপ করে থাকে। এই কথা শোনার পর তো আমি নিজেও প্রচন্ড পরিমাণে রেগে গেলাম। কারণ একে তো তার এই অবস্থা অন্যদিকে সে যদি তার সমস্যার কথা পরিবারকে খুলে না বলে তাহলে তো সে মরেই যাবে। কিন্তু কেন জানিনা তারপরেও সে কোন প্রকার কথা বলতে রাজি নয়। তার বদলে তাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করলে সে চুপ করে পড়ে থাকে। তবে বন্ধুর এই করুন পরিণত তো আমি দেখতে পারি না। তাই তার পরিবারের লোকজনকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে তাকে অনেকটা ধমকি দিয়ে তার থেকে ঘটনা জানার জন্য বসে পড়লাম। তবে সে তারপরও চাইছিল না যে তার সাথে কি হয়েছে সেটা সে খুলে বলুক।



যাই হোক শেষ পর্যন্ত সে এমন কিছু কথা বলল যেটা আমাকে অনেক অবাক করেছিল। ছয় মাস আগের কথা সে যখন সেমিস্টার দিয়ে তার গ্রামের বাড়ি বেড়াতে এসেছিল তখন একদিন সন্ধ্যার সময় তার গ্রামের বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে মারতে একটা ছেলে বলে ফেলেছিল যে আমাদের গ্রামের শ্মশানের ঠিক পূর্ব পাশে একটা কুয়া রয়েছে। সেটা নাকি শত বছর ধরে পরিত্যক্ত এবং সেখানে কেউ যায় না। কিছুদিন ধরে সেখানে নাকি লোকজন হাসি এবং মাঝেমধ্যে কান্নার আওয়াজ শুনছে। তাই আমাদের মধ্যে কার বেশি সাহস রয়েছে এটা পরীক্ষা করার জন্য সেই কুয়ো থেকে এক বালতি জল আনতে হবে। আর এটা যে করতে পারবে তাকে গ্রামের সবথেকে সাহসী বালক বলে আখ্যায়িত করা হবে। যেহেতু তমাল এর রক্ত গরম এবং এইসব বিষয়ে খ্যাতি অর্জন করতে তার বেশ ভালো লাগে, তাই সে কোন প্রকার চিন্তা ছাড়াই রাজি হয়ে গেল।

👉চলবে..........

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🕉️ধন্যবাদ সবাইকে🕉️

Sort:  
 2 years ago 

তমালের সাথে কী ঘটেছিল সেটা জানার ইচ্ছা জেগেছে।আর শ্মশান ঘাটের কুয়ার মধ্যে কি এমন ছিল সেটাও জানতে ইচ্ছে করছে যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

আগামীকাল চেষ্টা করব পরবর্তী পর্ব দিয়ে দেয়ার জন্য। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

যদিও জানি ভূত বলতে কিছু হয়না তারপরেও ভূতের কথা শুনলেই ভয় লাগে। আবার ভূতের কাহিনি পড়তেও মজা লাগে। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

ভূতের গল্প পড়তে আমারও এক সময় খুব মজা লাগতো। তবে এখন ভয় কেটে গেছে জন্য খুব বেশি একটা মজা লাগে না কিন্তু লিখতে খুব ভালো লাগে। যাইহোক আগামীকাল পরবর্তী পর্ব দিয়ে দেব, আশা করছি পড়বেন।

 2 years ago 

আপনার বন্ধু তমালের জন্য অনেক খারাপ লাগল। তমালের কি এমন হলো যে সে একেবারে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।যদিও আমি ভুত বলে কোন কিছু আছে বলে মনে করি না।তবে শ্মশান ঘাটের নাম শুনলে অনেক ভয় লাগে। যাইহোক দেখা যাক পরবর্তী পর্বে তমালের কি হয়েছে ও শ্মশান ঘাটে কি আছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটা পড়ার জন্য।

 2 years ago 

আপনার বন্ধু তমালের সাথে এমন কি হলো ওই শ্মশানের পাশে কুয়ার মধ্যে এক বালতি পানি আনতে গিয়ে। শুনেছি ভূত বলতে নাকি কিছু নেই। তাহলে আপনার বন্ধু তমাল এর কি হলো। জানতে খুব ইচ্ছে করছে। অধীর আগ্রহে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

আসলে তমাল হল আমার কাল্পনিক চরিত্রের একটা নাম। যাইহোক খুব ভালো লাগলো আপনি আমার লেখা গল্পটা পড়েছেন।

 2 years ago 

সন্তানের কিছু হলে মা-বাবা অনেক বেশি দুঃখ পায় সেই দুঃখ থেকেই তমালের বাবা হয়তো বা আপনাকে দেখেই কান্না করে দিয়েছে। আসলে আমি মনে করি কোন কিছুতেই বেশি সাহস দেখানো উচিত নয় কিন্তু আপনার বন্ধু অনেক বেশি সাহস দেখাতে গিয়েছিল যার কারণেই হয়তোবা আজকে তার এমন পরিস্থিতি। লোকের মুখে শুনেছি শ্মশান ঘাটে নাকি অনেক রকম জিনের আনাগোনা থাকে। যাই হোক আপনার গল্পটি আমার খুবই ভালো লেগেছে শ্মশান ঘাটে সে এমন কি দেখেছিল সেটাই জানার ইচ্ছা। ‌

আগামীকাল পরবর্তী পর্ব দিয়ে দেবো ভাই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার লেখা গল্পটা পড়ে এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76530.78
ETH 3054.36
USDT 1.00
SBD 2.63