আসলেই উলঙ্গ কারা....? ।। জানুয়ারি-০৭/০১/২০২৩ ।।
☬নমস্কার সবাইকে☬
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। |
---|
আসলে উলঙ্গ কারা, যাদের আমরা রাস্তাঘাটে অসহায় ভাবে উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি, নাকি যারা এগুলো দেখেও চুপচাপ মজা নিয়ে ফটো তুলে সেখান থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। এই প্রশ্নের উত্তর আমি আপনাদের সকলের কাছ থেকে জানতে চাই। যদি জানা থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আসলে আজকের পোস্টটা অনেকটাই দুঃখ ভরাক্রান্ত মন নিয়ে লিখতে হচ্ছে এবং এই ঘটনাটা যে শুধু কালকেই ঘটেছে আমার সাথে এরকম না। মাঝেমধ্যেই এরকম ঘটে, তবে কালকের ব্যাপারটা অনেকটাই লিমিট ক্রস করে গেছিল, তাই এই পোস্ট লিখতে বাধ্য হলাম এবং আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে এই পোস্ট পড়ার পর আপনারাও এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন হবেন।
শীতকাল আসলেই হতদরিদ্র এবং রাস্তার মানুষ, যাদের বসবাস রাস্তার ফুটপাতে এবং সত্যি কথা বলতে নিজেদের কষ্টের কথা বাইরের কাউকে খুলে বলতে পারে না যারা, তাদের প্রচন্ড পরিমাণ কষ্ট হয় এই সময়টাতে। খুব সম্ভবত ২০১৬ সাল থেকে আমাদের একটা টিম ছিল যে টিম শীতকাল হলেই গরীব মানুষদের বস্ত্র বিতরণের ব্যবস্থা করত এবং সেখানেও আমার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বরাবরই ছিল। কিন্তু বিগত দুই বছর হলো তারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে ফলে এই সুযোগ সুবিধা আমাদের তেমন বেশি হয় না। তবে তারপরেও আমরা এখন বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করছি ধীরে ধীরে।
যাইহোক এবার আসল কথায় ফিরে আসি, আমি বলতে গেলে নিয়মিত শিয়ালদা স্টেশনে যাতায়াত করি এবং সেখানে দেখা যায় যে অনেক পাগল যাদের নিজেদের কোন বোধ বুদ্ধি নেই, তারা অধিকাংশই উলঙ্গ অবস্থায় শুয়ে থাকে। উলঙ্গ বলতে আমি বুঝাচ্ছি পুরোপুরি উলঙ্গ। তাদের শরীরে বিন্দুমাত্র কাপড় থাকে না। যাও একটু থাকে তবে সেটা না থাকারই মত। এই ঘটনা গুলো আমি বলতে গেলে প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরেই দেখে আসছি এবং এগুলো দেখতে দেখতে অনেকটাই আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। তবে আমরা যখন এই মানুষগুলোকে সাহায্য করতাম তখন দেখেছি অনেক মানুষের সাড়া পাওয়া গেছে। তবে বর্তমান সময়ে তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো লাগছে না। হয়তো আমার এই পোস্ট যদি বিশেষ কোন ব্যক্তি পড়ে তাহলে হয়তো কিছুটা কাজে আসতে পারে।
তবে এটাও তো অন্তত সহ্য করার মতো ছিল কিন্তু গতকাল আমি চোখের সামনে যেটা দেখলাম হয়তো সেটা একজন সুস্থ মানুষের পক্ষে সহ্য করা অনেকটাই কষ্টসাধ্য হবে। গতকাল আমার মানিব্যাগ হারিয়ে যাওয়ার কারণে শিয়ালদা স্টেশনে প্রচুর পরিমাণে দৌড়াদৌড়ি এবং তারপর পুলিশ স্টেশনে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছিল এবং এটা না হলে হয়তো এ ব্যাপারটা আমার চোখ এড়িয়ে যেতে পারতো। শিয়ালদা স্টেশনের মেন গেট থেকে বেরিয়ে নীলরতন হসপিটাল এর ঠিক অপজিটে যে ব্যস্ত রোড টা ছিল, ঠিক তার ফুটপাতের উপর দেখলাম একজন উলঙ্গ মহিলা মানুষ খুব সম্ভবত ৪৫ থেকে ৫০ বছরের ভিতরে হবে। রাস্তার মাঝখানে শুয়ে আছে এবং তার শরীরের শুধু মাত্র কিছু জায়গায় কাপড় দিয়ে ঢাকা বাকি পুরো জায়গাটায় কোন কাপড় নেই। অতি লজ্জার সাথে বলতে হচ্ছে যে জায়গাটায় কাপড়ের নিতান্তই প্রয়োজন ছিল সেখানেই কোনরকম কাপড় ছিল না।
এখন কথা হচ্ছে এই জিনিসটা তো আমি একমাত্র না যে প্রথমবার দেখছি। আমার আগেও হয়তো অনেকে দেখে ব্যাপারটা এভয়েড করে চলে গেছে। তাহলে যে মানুষগুলো চলে গেছে তারা কি আসলেই সভ্য সমাজের মানুষ, নাকি এদের থেকেও উলঙ্গ। যাই হোক আমি আর ফটো তুলিনি সেই ভদ্র মহিলার। হয়তো তিনি পাগল বলে তার এই সেন্স টুকু নেই যে, এই সমাজে থাকতে হলে কাপড় পরাটা অত্যন্ত জরুরি। এরপর আমি সেখান থেকে ট্রাফিক পুলিশের কাছে গিয়ে তাদের ব্যাপারটা ইনফর্ম করি এবং দেখলাম একজন মহিলা কনস্টেবল এসে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়ে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে কোথায় নিয়ে গেল। এরপর আমি কোন রকম খোঁজ খবর লাগাইনি। তবে ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছিল। পুরুষ মানুষ হলে হয়তো এই ব্যাপারটা অতটা সিরিয়াসলি আমি চিন্তা করতাম না, তবে সেটাও অত্যন্ত জরুরী কিন্তু যখন একজন মহিলা মানুষ এরকম অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়, তখন সেটা আমাদের এবং আমাদের ভদ্র সমাজের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক বলে আমি মনে করি।
আপনি খুব বাস্তব একটি বিষয় নিয়ে লিখলেন। সত্যি এমন বিষয়ে আসলে বলার কিছুই থাকে না। সভ্য এই সমাজে আমরা বাস করি কিন্তু সভ্য কি আমরা সত্যি হতে পেরেছি?? আমার মনে হয় না। আপনার খারাপ লাগা থেকে লিখলেন, সবার মধ্যে এমন খারাপ লাগা জাগ্রত হোক এমনটাই আশাকরি। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমরা সভ্য সমাজের মানুষ হয়েও কিন্তু আমরা আজ অব্দি সভ্য হতে পারলাম না। মাঝে মধ্যে এই ব্যাপার গুলো দেখলে সত্যিই মন খারাপ হয়ে যায়।
দাদা আসলে আমরা নিজেদের নিয়েই এত বিজি যে পাশে কি হয়ে যাচ্ছে দেখার সুযোগ পাইনা খুব একটা। আমি একবার এমন অবস্থায় গেঞ্জি খুজে দিয়ে খালি গায়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। তখন আমাকেই মানুষ বোকা ভাবছিল।তবে দাদা আপনার মত ভাল মানুষ ও কিন্তু আছে।এরাই নগ্ন সমাজের লজ্জা নিরবারণ করছে।পুলিশ কে জানিয়ে ভাল একটি কাজ করেছেন দাদা।ধন্যবাদ দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
কমেন্ট পড়ে মন খুশি হয়ে গেলো ভাই।😍
আমাদের সবারই উচিত এই মানুষ গুলোর পাশে দাঁড়ানোর।
রেল স্টেশনে গেলে এ দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠে! অথচ মানুষ শুধু দেখছে, কারো যেন কিছু করার নেই! আমিও পথশিশুদের নিয়ে কাজ করেছি! আমি জানি ব্যাপারগুলো! আসলে ওরা উলঙ্গ না, উলঙ্গ তো আমরা, আমাদের মানসিকতা! যেদিন পর্যন্ত পরিবর্তন না হবে ততদিন পর্যন্ত সমাজ এমনই থেকে যাবে! আশা করি সমাজের মানুষগুলোর মানসিকতার পরিবর্তন হবে।
শুনে খুব খুশি হলাম।😊
আসলে আমরা দিন আমাদের মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছি।
আপনি একেবারে ঠিক বলেছেন এই সমাজে যেসব মানুষগুলো বসবাস করে তারা পাগল মানুষগুলোর থেকেও নিকৃষ্ট মানুষ হয়ে থাকে। সেই মহিলাটি হয়তো পাগল বলে কিছু বুঝতে পারতেছেনা। কিন্তু যেই মানুষগুলো তাকে দেখে অপরদিকে ফিরে আবার চলে যাচ্ছে তারাই তো আসল উলঙ্গ মানুষ। কারণ তাদের মধ্যেই মনুষত্ব বলে কিছুই নেই আমার মনে হয়। যদি মনুষত্ব বলে তাদের মধ্যে কিছু থাকতো তাহলে তারাও আপনার মত কোন একটি প্রদক্ষেপ নিতো। এই সমাজে ওই মহিলার মত অনেক মানুষ এই পথে ঘাটে শুয়ে থাকে। আমাদের সবারই উচিত তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো। কিন্তু একজন দুজনে মিলেই এসব কঠিন কাজগুলো করা কখনো সম্ভব হবে না। হয়তোবা তারা চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয় প্রত্যেক মানুষেরই একজোড় হয়ে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো উচিত। কারণ তারাও কারোর না কারোর মা অথবা বোন হবে। আপনার পোস্টটি পড়ে ভীষণ খারাপ লাগলো প্রথমত। কিন্তু যেই মানুষগুলো মহিলাটিকে দেখে চলে যাচ্ছে তাদেরকে তো মানুষ বলার কাতারেই পড়ে না। তারাই আসল প্রকৃত উলঙ্গ মানুষ বলে আমার মনে হয়।
আপনার লেখা প্রত্যেকটা কথা খুব ভালো লাগলো আমার।😊 আসলে আমাদের সবারই উচিত আমাদের মনুষ্যত্বটাকে আরো বেশি উজ্জীবিত করা।
অনেক খারাপ লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। এই শীতে আমরা ঘরে থেকে লেপ কম্বল গায়ে দিয়ে তাই কত ঠান্ডায় মরে যাচ্ছি আর ওই মানুষগুলো তাদের পোশাক টাও জুটছে না। কতটা কষ্ট হচ্ছে এই ঠান্ডায় তার শরীরের সব অংশ ঢাকার জন্য নূন্যতম পোশাক টুকু নেই। সত্যিই শিয়ালদহ এর মতো এত বড় প্ল্যাটফর্ম এ গেলে এরকম মানুষ প্রতিনিয়ত অনেক বেশি পরিমাণে দেখা যায়।
বর্তমানে তো শিয়ালদা স্টেশনের অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেছে। আপনি যদি কখনো যান তাহলে দেখতে পাবেন যে কি অবস্থা সেখানকার অসহায় মানুষদের।
হ্যাঁ খুবই খারাপ অবস্থা দেখলাম এখন থেকে ১৫ দিন আগে গেছিলাম তখন।
এই ঠাণ্ডায় তো এখন আরো খারাপ অবস্থা।
হ্যাঁ 😓।
আসলে অনেক খারাপ লাগলো আপনার আজকে এই পোস্টটি পড়ে ৷ আমরা কেবল নাম-ই সভ্য সমাজে বসবাস করি ৷ কিন্তু আমরা কখনোই সভ্য হতে পারি নি ৷ রেল স্টেশনে কত সভ্য সমাজের মানুষ চলাচল করে , কিন্তু একজন পাগল মহিলার এমন অবস্থা দেখেও কেউ সভ্যতার পরিচয় দিতে পারলো নাহ ৷ যাই হোক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে , বিষয়টা পুলিশকে জানিয়ে ভালোই করেছেন ৷ ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ৷
আমরা আসলে নামেই সভ্য। আমাদের ব্যবহার আচার এ সেরকম কোন লক্ষণ দেখা যায় না। ধন্যবাদ ভাই, পোস্ট পড়ে এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
আসলে ভাই আমাদের দিন দিন মানবিকতা এবং মনুষত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা পথে-ঘাটে অসহায় মানুষদের সহায়তা করতে চায় না। তাদের দিকে দেখে না দেখার ভান করি। কিন্তু নানা কারণে অনেক টাকা ব্যয় করি। আসলে আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই কষ্ট পেলাম। এই ধরনের ঘটনা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করা উচিত। পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমরা আসলেই অনেক অপ্রয়োজনীয় জায়গায় অর্থ ব্যয় করি। যেটার আসলে কোন দরকারই ছিল না হয়তো। তবে সেই অর্থগুলো যদি এই মানুষগুলোর পেছনে খরচ করা যায় তাহলে হয়তো তাদেরও কিছুটা উপকার হয় এবং আমাদের মনের দিক থেকেও কিছুটা শান্তি ফিরে আসে। ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।
আসলে দাদা আমরা বরাবরই বলে থাকি বা শুনে থাকি ৷ যে মানব জীব অর্থাৎ মানুষ জীব সৃষ্টির সেরা জীব ৷ কিন্তু আমার কী আসল মানুষের পরিচয় দিতে পারছি কি না ৷ সেটাই ভাপার বিষয় ৷
আর আপনি বাস্তবিক একটা টপিক তুলে ধরেছেন ৷ আমরা রাস্তা ঘাটে অনেক পাগল দেখে থাকি ৷ কিন্তু আমাদের আশে পাশের মানুষ গুলো কে এ বিষয়ে এগিয়ে উচিত ৷ কিন্তু বদলে কি করে যানেন অশ্লিন কিছু ঘটনা ঘটনায় ৷ এই হলো মানব জাতি ৷ তাই বলে সবাই নয় ৷
আমাদের কি উচিত ছিল না যে সে তো পাগল তার সেন্চ নেই ৷ যদি আমরা তাদের পাশে এসে একটু সেভ রাখার চেষ্টা করি তাহলে কি কোনো দোষের কিছু হবে ৷
আমরা সব জানি কিন্তু তা প্রয়োগ করবো না ৷ যা হোক দাদা আপনি সুন্দর একটি মানুষের পরিচয় দিয়েছেন ৷ তাই আপনাকে জানাই হাজার নমস্কার
আপনার মন্তব্য পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। যাইহোক যদি কখনো সুযোগ পান এবং সামনে এরকম কোন ঘটনা দেখেন তাহলে আশা করব অবশ্যই একটু সাহায্য করবেন তাদেরকে। আসলে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে এই অসহায় মানুষগুলোর পাশে থাকার মত মানসিকতা খুব কম লোকেরই আছে।
আমার মনে হয় আমরা ভাইয়া চোখ থাকতেও অন্ধ। সমাজের অনেক কিছু দেখেও আমরা এড়িয়ে যাই। আপনি সচেতন বিধায় আপনার চোখে পড়েছে। তবে আমি এতোটুকুই বলবো যে আপনাদের সাহস করে তাও পুলিশ হাতে তুলে দিতে পেরেছেন। এই সাহসটুকু সমাজে অনেকেরই নেই।
আসলে এখানে সাহসের থেকে যে ব্যাপারটা বেশি কাজ করছিল সেটা হচ্ছে লজ্জার। এভাবে একজন মানুষকে রাস্তায় দেখাটা বেশ লজ্জাজনক এবং আমাদের জন্য অপমানজনকও বটে।