কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন । প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন।সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমিও অনেক অনেক ভালো আছি সুস্থ আছি। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। "আমার বাংলা ব্লগে" ভেরিফাইড মেম্বার হওয়ার পর এটা আমার প্রথম পোস্ট। যাইহোক আজ থেকে যেহেতু আমার বাংলা ব্লগের নতুন করে জার্নি শুরু হল সুতরাং চেষ্টা করব অবশ্যই নিয়মিত পোস্ট করার। তবে আর বেশি কথা না বলে আজকের টপিকসে ফিরে আসা যাক।

আমার স্কুল লাইফের খুব কাছের একজন বন্ধু , মানবেন্দ্র মৃধা। তবে স্কুল লাইফ শেষ হতে না হতেই পড়াশুনার সাবজেক্ট আলাদা হওয়ায় আমরা দুইজন অনেকটা দুই প্রান্তে চলে যাই। তবে কখনোই আমাদের বন্ধুত্বের কমতি ছিল না। কিছুদিন আগে অব্দিও নিয়মিত কথা হত, তবে এখন প্রচন্ড পড়ার চাপ থাকার কারণে সে আর ফোন করতে পারে না। আর আমারও সুযোগ হয়ে ওঠেনা তার সাথে কথা বলার। যাইহোক সপ্তাহখানেক আগে তার একটা ফোন আসে আমার মোবাইলে। প্রথম কিছু মিনিটতো ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসা করতে করতেই কেটে যায়। তারপর আসে আসল টপিক্স এ। সে জানায় আজ থেকে সাত দিন পর তার দিদির বিয়ে এবং আমাকে অবশ্যই সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে। এবং আরো জানায় শুধু ফোন করবে না, সে বাড়ি এসে বিয়ের কার্ডও দিয়ে যাবে দুদিন পর। সাধারণত দূরের বিয়ে বাড়ি গুলো আমি প্রচন্ড রকম এভয়েড করার চেষ্টা করি কারণ থাকার ঝামেলা, খাওয়ার ঝামেলা। তবে এই ক্ষেত্রে নিজেকে কিছুটা কনসিডার করতে হলো। আমাকে বিয়ের সাত দিন আগে যাওয়ার কথা বললেও বিয়ের একদিন আগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কারণ আমার হাতে এতটা সময় ছিল না যে বিয়ের সাত দিন আগে ওখানে যাব।

যাই হোক বন্ধু বাড়ি এসে বিয়ের কার্ড দিয়ে গেল। এবং মোটামুটি সবকিছু গুছিয়ে নিলাম এবং ঠিক বিয়ের একদিন আগে খুব সকালে বেরিয়ে পড়লাম বৈঁচিগ্রামের উদ্দেশ্যে। বৈঁচিগ্রামে যাওয়ার জন্য সাধারণত দুটি রাস্তা ছিল। এক তো বাস ধরে ফিশারি গেট এবং সেখান থেকে নদী পার হয়ে, শেওড়াফুলি থেকে ট্রেন ধরে বৈঁচিগ্রাম। তবে এক্ষেত্রে বেশ খানিকটা ঝামেলা রয়েছে তা হল আমাকে অনেকগুলো যানবাহন চেঞ্জ করতে হবে, যেটা আমার জন্য খুবই কষ্টের। কারণ আমি সাধারণত বাসে খুব বেশি ট্রাভেল করতে পারি না। আর একটা ছিল দমদম থেকে ডিরেক্ট শিয়ালদা-বৈচিগ্রাম লোকাল যেটা আমার জন্য সুবিধা জনক ছিল। তবে সমস্যা হচ্ছে একটা মাত্রই ট্রেন ওই লাইনে যায় সুতরাং মিস করে গেলে আজকের মতো আর যাওয়া হবে না। তাই খুব সাবধানতা অবলম্বন করে যত দ্রুত সম্ভব গুছিয়ে গাছিয়ে বেরিয়ে পড়লাম খুব সকালে। ট্রেন ছিল ১০:৫০ এ। তবে আমি যথাসময়ে স্টেশনে পৌঁছে যাই। মোটামুটি আধা ঘন্টা আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম।

স্টেশনে পৌঁছে তো আর একটা ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ালো আমার জন্য। যেহেতু বিয়ে ছিল সুতরাং প্রচুর পরিমাণে বাজি নিয়ে যাচ্ছিলাম আমি। কিন্তু ট্রেনে সাধারণত এই ধরনের জিনিস নেওয়া নিষিদ্ধ। সেই অব্দিও ঠিক ছিল কারণ অনেক সময় অনেকেই নিয়ে যায় কিন্তু টের পায় না রেল পুলিশে। তবে আমি দেখলাম ঐদিন স্টেশনের প্রচুর পরিমাণে পুলিশ চেকআপ করছিল। যেটা দেখে আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। চিন্তা করতে থাকি কখন ট্রেন আসবে আর কখন তাড়াতাড়ি চড়ে রওনা দেব গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। মোটামুটি পাঁচ থেকে সাত মিনিট লেট হল ট্রেন আসতে নির্দিষ্ট সময়ের। যাইহোক ঝটপট করে ট্রেনে উঠে পড়লাম এই লাইনে সাধারণত ট্রেন ফাঁকা থাকে সুতরাং সিট পেতে খুব বেশি একটা সমস্যা হলো না। জানালার পাশে একটা সিট নিয়ে বসে পড়লাম।

খুব দ্রুতগতিতে ট্রেন চলতে থাকলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে এবং যেহেতু ট্রেনে উঠে গেছি সুতরাং ভয় কিছুটা কমে গেল বাজিকে নিয়ে। সাধারণত ট্রেনে একবার উঠে গেলেই ভয়টা আর থাকে না। তবে জানিনা কি কপাল খারাপ আমার প্রত্যেকটা জংশনে দেখলাম পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে এবং চেকআপ করছে। তবে আমাকে দেখে মনে হয় ভদ্র মনে হয়েছিল খুব তাই আমার দিকে আর কেউ আসেনি। যাইহোক মোটামুটি টানা চার ঘন্টা ট্রেন চলার পর পৌঁছে গেলাম গন্তব্য স্থানে। বৈচি গ্রাম স্টেশনটা বরাবরই খুব ফাঁকা থাকে। এর আগেও যখন দুইবার এসেছিলাম তখন ও এরকম ফাঁকা ছিল। এই গ্রামটার নতুন হয়েছে এবং স্টেশনটাও নতুন। সুতরাং লোকের ভিড় কম থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে বৃষ্টি হওয়ার কারণে স্টেশন থেকে তার বাড়ি অব্দি যেতে পারছিলাম না তাই বন্ধুকে ফোন করলাম ছাতা নিয়ে আসার জন্য। ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর বন্ধু চলে আসলো ছাতা নিয়ে এবং আমাকে দেখে অনেকটা স্বস্তির হাসি হেসে নিল। বাকি কথা আগামী পর্বে হবে থাকবে নতুন চমক।

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।