আমার ইউনিভার্সিটিই যত নষ্টের গোড়া।। ডিসেম্বর-০১/১২/২০২২।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

ছোটবেলা থেকে অনেকেরই স্বপ্ন থাকে একটা পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়া। কিন্তু ভেতরে ভেতরে এত ঝামেলা চলে এই ইউনিভার্সিটির মধ্যে যে বলে বোঝানো যাবে না। আমার তো মনে হচ্ছে এখন কোন একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলে ভালো হতো। কারণ সেখানে অন্তত সব কাজগুলো অনেকটাই দায়িত্বের সাথে করা হয়। যদিও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়লে এই স্কলারশিপ গুলো পাওয়া যায় না। হা হা হা.. আসলে আজকে আমি আপনাদের সাথে যেটা শেয়ার করব সেটা হল, সব সময় কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে না। সেরকম একটা কেষ্ট না মেলার গল্প। আশা করছ আপনাদের ভালো লাগবে।

20221201_143428.jpg
স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

কিছুদিন আগে আমার স্কলারশিপ পাওয়া নিয়ে একটা পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম এবং সেখানে আমি বলেছিলাম যে কতটা হ্যারাসমেন্টের শিকার হতে হয় আমাকে এবং কতটা দৌড়াদৌড়ির উপর থাকতে হয়। কিন্তু আমার খুব কাছের একজন মানুষ সেখানে পেয়ে যাওয়ায় হয়তো ঝামেলা একটু কম হয়েছিল। তবে সেখানেই কি ঝামেলা শেষ, নাকি সবে তো শুরু ছিল সেটা। আমাদের কলকাতায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে একটি হল বি.টি রোডে এবং অন্যটি হলো জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে। আমার ক্যাম্পাসটা হল জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি। তবে টুকটাক অফিসিয়াল কাজবাজ করতে মাঝেমধ্যে বি.টি রোডের ক্যাম্পাসে আসতে হয়। গত পরশুদিন ইউনিভার্সিটি থেকে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি যে আজ হঠাৎ বৃহস্পতিবার স্কলারশিপের ফরম জমা নেয়া হচ্ছে সুতরাং যেভাবেই হোক আমার আজকের মধ্যে ফর্ম রেডি করে জমা দিতে হবে।

20221201_143403.jpg
স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

20221201_143257.jpg
স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

কাল দুপুরে পৌরসভা থেকে ইনকাম সার্টিফিকেটটা এনে বিকালের দিকেই ফরম ফিলাপের কাজ করতে শুরু করি। তবে এই স্কলারশিপের ফর্ম গুলোর বেশ জটিল প্রসেস রয়েছে। অনেকগুলো স্টেপ পার করতে হয়। একটাতেও যদি সামান্য পরিমাণ ভুল হয়ে যায় তাহলে স্কলারশিপ আটকে যেতে পারে। সেজন্য অনেকটা সিরিয়াস ভাবে কাজ করতে বসেছিলাম। কিন্তু কাজ করতে করতে মাঝ পথেই সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। আমি জানিনা আমার সাথে এরকম হয় নাকি সবার সাথে এরকম হয়। আমি যখনই অনলাইনে ফরম ফিলাপ করতে বসি, সব সময়ই সার্ভার ডাউন থাকে। যাইহোক কি আর করা যাবে সার্ভার ডাউন থাকলে তোর কাজ করা যাবে না। তাই চিন্তা করলাম একটু রাত করে ফরম ফিলাপ করবো, তখন অনেকটাই ফাঁকা থাকে ওয়েবসাইট। মোটামুটি রাত এগারোটা নাগাদ আবার বসলাম ফরম ফিলাপের জন্য, কিন্তু আবারও সেই একই সমস্যা, সার্ভার ডাউন। এবার অনেকটাই রাগ হয়ে গেল সুতরাং রাত দুটো নাগাদ আর একবার বসলাম তখন দেখি সার্ভার ঠিক হয়ে গেছে। তবে মাঝপথে গিয়ে আবার আটকে গেল। এদিকে আমাকে আজ সকালেই আবার ফর্ম জমা দিতে হবে ইউনিভার্সিটিতে। তাই অনেকটাই ধৈর্য নিয়ে তিন চারবার ফরম ফিলাপ করলাম। সবশেষে রাত সাড়ে চারটা নাগাদ আমার ফরম ফিলাপ শেষ হয়।

20221201_143328.jpg
স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

20221201_143124.jpg
স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

যাই হোক অনেকটাই স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলতে পারি তখন। এরপর আবার কিছুটা ঘুম দিয়ে সকালে খেয়ে দেয়ে বেরিয়ে পড়লাম ইউনিভার্সিটি উদ্দেশ্যে। টুকটাক যে জেরক্স গুলো করার দরকার ছিল সেগুলো করে ক্যাম্পাসে ঢুকতেই দেখলাম ক্যাম্পাসের ভিতরে মিছিল মিটিং শুরু হয়ে গেছে। গতকাল নাকি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে কি নিয়ে বড় ধরনের একটা ঝামেলা হয়েছে। সেজন্য অনেক স্টাফই স্ট্রাইক করেছে। তবে সেদিকে আমি নজর না দিয়ে চলে গেলাম ইউনিভার্সিটি ভি.সি বিল্ডিং এ। কিন্তু সেখানে গিয়ে রীতিমতো আমি অবাক, যিনি ফরম জমা নেবেন তিনি নাকি এখন অব্দি অফিসে এসে পৌঁছাননি। কি আর করা যাবে কনফারেন্স রুমে ঘন্টাখানেক বসে বসে নিজের কাজ করতে লাগলাম। ঠিক ঘন্টা খানেক পর অফিস থেকে একজন এসে আমাকে বললেন যে, তিনি আজ অফিসে আসবেন না এই ঝামেলার জন্য। অনেকটাই বোকা সেজে গেলাম এবং নিজেকে বোকা বোকা মনে হচ্ছিল তখন। কাল সারারাত ধরে ফরম ফিলাপ করলাম, তার আগের দিন সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করলাম এবং সকালে ঘুম হয়েছে কি হয়নি সেটা না দেখেই ইউনিভার্সিটিতে ফরম জমা দিতে চলে আসলাম। আর এখানে এসে শুনছি আজ ফরম জমা নেবে না, আগামীকাল আসতে হবে।

20221201_142936.jpg
স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

20221201_143433.jpg
স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

কি আর করা যাবে সেখান থেকে অনেকটাই মাথা গরম করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আমি এর আগেও দেখেছি ইউনিভার্সিটি'র কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোতে এই স্টপ গুলো খুব বেশি একটা সিরিয়াসনেস দেখায় না। আমার তো মনে হচ্ছে এবার এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের আন্দোলন করতে হবে। যদিও আমি এগুলোর পক্ষপাতিত্ব করিনা। তবে নিজেদের জায়গাগুলোকে ঠিক রাখার জন্য আমার মনে হয় বিষয়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

20221201_143603.jpg

স্থান: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🕉️ধন্যবাদ সবাইকে🕉️

Sort:  
 last year 

আপনি সত্যি বলেছেন ভাইয়া প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়লে তে আর স্কলারশিপ পাওয়া যায় না উল্টো আবার দিতে হয়। আসলে সরকারি কেনো যে কোনো জায়গায় এমনি ঘুরতে হয়।আপনি সার্ভার ডাউন বলে রাত ১২ বার পরে হলে ও ফরম পূরণ করছেন।অবশেষ সকালে না ঘুমিয়ে চলে গেলেন ইউনিভার্সিটিতে।সেখানে গিয়ে কি আর করা কিছু ক্ষণ অপেক্ষার পরে জানতে পারলেন, আজ আর জমা দেওয়া সম্ভব নয়। যাইহোক আবার গিয়ে জমা দিতে হবে কিছুই করার নেই।

ধন্যবাদ আপু, পোস্ট পড়ে এত সুন্দর একটা গঠনমূলক সমালোচনা করার জন্য।

 last year 

যেখানেই যাবেন সমস্যা আছে।প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতেও একগাদা অংকের টাকার সমস্যা।আর সরকারি জায়গা হলে তাদের কাজ করতে ইচ্ছে করেনা।এটাই ব্যাপার। ইউনিভার্সিটি বা কলেজের নন টিচিং স্টাফরা নিজেদের একেক জন প্রধানমন্ত্রী,মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন। তাদের এক দিক থেকে আরেক দিকে ঘুরতেই ৭ মিনিট টাইম নেবেন। যাইহোক আপনার অনেকটা ভোগান্তি হয়েছে ঠিকই।তবে আশা করব আপনার কাজটা মিটে যাবে তাড়াতাড়ি।

ইউনিভার্সিটি বা কলেজের নন টিচিং স্টাফরা নিজেদের একেক জন প্রধানমন্ত্রী,মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন।

হা হা হা... ব্যাপারটা একদমই তাই। বেশ ঝামেলা পোহাতে হয় সব সময়। মাঝে মাঝে তো মনে হয় কেলিয়ে দেই।

 last year 

ভাইয়া আপনার মত আমার কপালটাও ঠিক এরকমই। যেদিন আমার ছুটির দরকার হবে ঐদিন ম্যানাজার আসবে না,আসলেও লেইট করে আসবে। যেদিন বাড়ি যাবো অফিস থেকে তারাতারি বের হলে ট্রেন লেইট করবে। আর দেরি করে বের হলে রাস্তায় জ্যাম পড়বে। আমার সাথেও এমন হয়। আপনাদের ইউনিভার্সিটিটা অনেক সুন্দর, ধন্যবাদ ভাইয়া।

রবীন্দ্রভারতী ইউনিভার্সিটি এর অনেকগুলো ক্যাম্পাস আছে। এটা তো একটা ক্যাম্পাসের সামান্য একটা অংশ। তবে আমার কপাল বরাবরই খারাপ, সবকিছুতেই আমার কেন জানি না সফলতা আসতে অনেক বেশি সময় লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 59585.77
ETH 3002.01
USDT 1.00
SBD 3.78