ঘাটশিলা ভ্রমণ (পর্ব -১৩)।। মে -১০/০৬/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

দেখতে দেখতে ঘাটশিলা ভ্রমণের ১৩ তম পর্বে এসে আমরা উপস্থিত হয়েছি। আর খুব সম্ভবত দুই একটা পর্ব হবে তারপর আমার এই জায়গা নিয়ে লেখা সমস্ত পর্ব শেষ হয়ে যাবে। তবে আমি আসলে আশাই করিনি যে এতগুলো পর্ব তৈরি করতে পারব। ভেবেছিলাম ৫ থেকে ৬ টা পর্ব তৈরি করব তবে পরে আবার চিন্তা করে দেখলাম যে প্রত্যেকটা বিষয় আপনাদের সাথে বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপন করতে পারলে হয়তো আপনারাও খুব সুন্দর করে জায়গা সম্পর্কে একটা আইডিয়া তৈরি করতে পারবেন, আর আমারও অতিরিক্ত কয়েকটা পর্ব হয়ে যাবে।তবে সত্যি কথা বলতে আপনাদের ভালোবাসা এবং উৎসাহ আমাকে প্রত্যেকটা পোস্ট আরো সুন্দর করে উপস্থাপন করতে সাহায্য করেছে, এই দিক থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন। আজকে যে পর্বটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটা ঘাটশিলা ত্যাগ করার আগের দিন বিকেলের ঘুরাঘুরি নিয়ে। ঘাটশিলা যতগুলো ঘোরার এবং দেখার জায়গা ছিল তার প্রত্যেকটা স্পট আমরা খুব সুন্দর করে ঘুরে দেখার চেষ্টা করেছি। তবে এই জায়গাটা কোন কারণে বাদ পড়ে গেছিল।

InShot_20230610_170734064.jpg

একটা কথা আছে না যে স্টেশনের কাছের মানুষই সবার আগে ট্রেন মিস করে ঘটনাটা অনেকটা ওরকম হয়ে গেছিল। আমরা আসলে দূরের জায়গাগুলো ঘোরাঘুরি করতে করতে বাড়ির কাছে যে এত সুন্দর একটা মন্দির যেটা এখানকার নাম করা শিব মন্দির দেখতে ভুলে গেছিলাম, সেটাই আসলে বুঝতে পারিনি। তবে আমি মনে করি এটা আমাদের ভুল ছিল না কারণ এই জায়গা সম্পর্কে আমাদের আইডিয়াই ছিল না তবে আমরা যে গাড়ি ভাড়া করেছিলাম সেই লোকটা হঠাৎ করেই বিকালের দিকে আমাদের বলল যে আপনারা কি এখানকার শিব মন্দিরটা দেখেছেন যেটা পাহাড়ের উপর অবস্থিত। এই কথা শুনে আমরা তো অবাক হয়ে গেলাম যে আমাদের আশেপাশেও শিব মন্দির রয়েছে যেটা পাহাড়ের উপর আর আমরা সেটাই দেখতে মিস করে গেলাম। যাইহোক পরবর্তীতে তিনি বললেন যে ঠিক আছে আপনারা যেহেতু দুই দিন ধরে আমাকে ভাড়া করেছিলেন তাই এই জায়গাটুকু আপনাদের ফ্রিতেই দেখিয়ে নিয়ে আসবো। এই কথা শুনে তো আমরা অবাক হয়ে গেলাম তারপর বিকালের দিকে হালকা পাতলা খেয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম গাড়ি নিয়ে সেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

20230223_171655.jpg

20230223_171442.jpg

আমরা যে হোটেলে উঠেছিলাম সেখান থেকে এই জায়গাটা খুব বেশি দূরে ছিল না মোটামুটি ১০ মিনিট গাড়িতে করে সেখানে গিয়ে পৌঁছে গেলাম। তবে পাহাড়টা যতটা বড় আশা করেছিলাম ততটা আরো বড় ছিল না। মোটামুটি সাইজের একটা পাহাড় তবে উপরে থাকা শিব মন্দিরটা তখনো দেখা যাচ্ছিল না। তাই আমাদের সিঁড়ি বেয়ে প্রথমে ১০ মিনিট উঠতে হলো যেহেতু পাহাড় তাই যথেষ্ট ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। তাই মাঝপথে কিছু সময় দাঁড়িয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম সবাই মিলে। একটুখানি এগিয়ে গিয়ে বেশ খানিকটা অবাক হলাম যে মন্দিরের পাশে বসেই কিছু লোক গাঁজা খাচ্ছে। আসলে আমরা যে হঠাৎ করে এখানে উপস্থিত হয়ে যাব এটা কেউ এক্সপেক্ট করেনি। তারপর দেখলাম লোকগুলো আমাদের দেখে ভয় পেয়ে সেখান থেকে হেঁটে চলে গেল। আসলে আমরা ওদের দেখে ভয় পেয়েছিলাম এ কথা সত্যি তবে তারাও আমাদের সবাইকে দেখে যথেষ্ট ভয় পেয়ে গেছিল। যাইহোক একেবারেই পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত শিব মন্দিরটা অনেকটাই ছোট তবে দেখতে অনেক বেশি আকর্ষণীয় লাগছিল, বিশেষ করে পাহাড়ের উপরে যে ছোট ছোট পাথরগুলো ছিল, সেগুলো রং করে তাদের বিভিন্ন ধরনের আর্ট করা হয়েছিল যেটা আপনারা ফটো দেখেই হয়তো বুঝতে পারছেন।

20230223_171421.jpg

বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি সহ আরো কিছু ছবি আঁকা ছিল সেই জায়গায়। এরপর আমরা সেখান থেকে টুকটাক ফটো তুলে মন্দিরটা দর্শন করে চলে গেলাম একেবারে পাহাড়ের চূড়ায় যেখান থেকে সূর্যাস্ত খুব সুন্দর করে দেখা যায়। আসলে পাহাড়ের মাঝখান থেকে যতটা সুন্দর লাগছিল পরিবেশ, পাহাড়ের উপরে উঠে তার থেকে অনেক গুণে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। হঠাৎ করেই দেখলাম আমার এক বন্ধু পাহাড়ের উপর উঠে ধ্যানে বসে গেছে। এরপর আশেপাশের কিছু প্রকৃতির ফটোগ্রাফি তুললাম। আসলে জায়গাটা আমার কাছে অনেক ভয় করছিল কারণ পাহাড়টা কেমন যেন একটা আর এখানকার যে আর্ট গুলো ছিল পাথরের গায়ে করা সেগুলো দেখে আমার খানিকটা ভয়ও করছিল। আমাদের বলা হয়েছিল পাহাড়ের উপরে বেশি সময় না থাকতে তবে আমাদের কাছে এতটাই ভালো লেগেছিল প্রায় দুই ঘণ্টার মতো আমরা সেই জায়গায় ছিলাম। এরপর সূর্যাস্ত দেখে সেখান থেকে আমরা নিচে নেমে আসি। যদিও নিচে নামার সময় সেই লোকগুলোকে আর আমরা দেখিনি, তবে এই মন্দিরে নাকি বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় মানসী পূজো করা হয়, তাছাড়া তেমন কেউ এখানে আসে না।

20230223_171518.jpg

20230223_171526.jpg

20230223_171600.jpg

20230223_171604.jpg

20230223_171633.jpg

20230223_171646.jpg

20230223_171512.jpg

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট।
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনঘাটশিলা, ঝাড়খণ্ড।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Sort:  
 last year 

ভাল লাগল আপনার ট্রাভেল ব্লগটি দাদা। ভিডিও হলে আরো সুন্দর হত।মন্দিরটি ছোট হলেও অনেক সুন্দর। গাজাখোর গুলো তো ভয় পাবেই,চোরের মন পুলিশ পুলিশ। হাহাহাহা। তবে পাথরের পেইন্টিং গুলো অসাধারণ লেগেছে। শিল্পীকে হ্যাটস অফ জানাতে হয়। আর আপনাকেও ধন্যবাদ আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।

আসলে ভিডিও করার মতো ওরকম কোনো পরিস্থিতি থাকে না ঘুরতে গেলে। কারণ এত ঝামেলা এত দৌড়াদৌড়ি যে ভিডিও করতে সময় নিয়ে যেতে হয়। সেটা আমার কাছে ওই মুহূর্তে ছিল না। তবে দেখি পরবর্তীতে চেষ্টা করব ভিডিও ব্লগ করার জন্য, যদি কোথাও ঘুরতে যাই।

 last year 

যাহ বাবা! ভোলে বাবার ভক্ত গুলো এভাবে পালিয়ে গেল! 🙄হিহিহিহি। কি আর বলবো। সব খানেই এমন। তবে পাহাড়ের পাশে এমন নির্জন জায়গাতে কিছুটা হলেও ভয় কাজ করতো মনে আমার। সে যাই হোক, আপনার জন্য দূর থেকে হলেও দর্শন হয়ে গেল মন্দিরটা। বেশ ভালো লেগেছে চারপাশ টা। বিশেষ করে পাথরের গায়ের আঁকা ছবি গুলো।

ওইসব জায়গা গুলোতে আসলে গাঁজাখোর গুলো বেশি থাকে। এজন্য আমার নির্জন জায়গায় যে মন্দিরগুলো থাকে ওখানে যেতে ভয় লাগে। হা হা হা...

 last year 

খুব কাছাকাছি শিব মন্দিরটা রেখে ,তোমরা দূরের জায়গাগুলো ঘোরাঘুরি করলেও ,শেষ পর্যন্ত ফেরার আগের দিন বিকেলে শিব মন্দির টা দেখে আসতে পারলে, জেনে ভালো লাগলো। একটা বিষয় খুবই মজার লাগলো, যে মানুষগুলো শিব মন্দিরের পাশে বসে গাঁজা খাচ্ছিল , তারাও তোমাদের দেখে ভয় পেয়েছে আবার তোমরাও তাদের দেখে ভয় পেয়েছ, হা হা হা। পাথরের গায়ে বিভিন্ন রকম আর্ট গুলো দেখতে, খুবই ভালো লাগছে।

আসল শিব মন্দিরটা গোনার বাইরে ছিল এজন্য অতটা আর গুরুত্ব দেয়া হয়নি। তবে দেখে আসতে পেরে যথেষ্ট ভালো লাগছিল।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 88619.11
ETH 3331.99
USDT 1.00
SBD 2.95