আপনি মশায় কেন বললেন...? ।। ডিসেম্বর-১৫/১২/২০২২।।
☬নমস্কার সবাইকে☬
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। |
---|
আসলে আজকের বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে এত পরিমাণে হাসি পাচ্ছে যেটা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। সামান্য একটা ইস্যু কিভাবে এত বড় প্রবলেম তৈরি করতে পারে সেটা আমি আজ ভালকরে টের পেয়েছি। আসলে এই ক্ষেত্রে আমি দোষটা যে কার উপর দেব সেটাই ঠিক করে বুঝে উঠতে পারছি না। দিনদিন আমরা এতটাই ডিপ্রেশনের দিকে চলে যাচ্ছি, যে খুব অল্পতেই আমাদের অত্যাধিক রাগ হয় এবং সেই রাগ কন্ট্রোল করা অনেক সময় মুশকিল হয়ে পড়ে। আমার মনে হয় মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের রাগও দিন দিন বাড়তে থাকে। আমাদের প্রত্যেকের লাইফ এ কম বেশি ডিপ্রেশন থাকে, তবে সেটাকে কন্ট্রোল যদি না করা যায় তাহলে আর কিসের মানুষ হলাম আমরা। যাই হোক মেইন গল্পে ফিরে আসা যাক।
ঘটনা ঘটেছে এই পোস্ট লেখার ঘন্টাখানেক আগে। অর্থাৎ আমি কারেন্ট ঘটনাই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি এখন। আজ আমার ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরতে ফিরতে অনেকটাই সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ট্রেনে থাকা অবস্থায় বাবা আমাকে ফোন করে বলল যে, অশেষ সুইটস থেকে কেজি খানেক দই নিয়ে আসতে। আমার বাবার টক টক দই খুব পছন্দের। যাই হোক যথারীতি আমাদের স্টেশনে নেমে অশেষ সুইটস এর দিকে এগিয়ে গেলাম। প্রচন্ড ভিড় ছিল তাই অপেক্ষা করতে লাগল আমার সিরিয়ালের জন্য। এরমধ্যে হঠাৎ করেই দেখলাম একজন বৃদ্ধ বয়সের লোক, আসলে বৃদ্ধ বলবা না ঠিক, মাঝারি বয়স বলাই ভালো। বাইকটা রাস্তার উপর রেখে সেও মিষ্টি কিনতে আসলো দোকানে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, যে কলকাতায় পাঁচ মিনিট অন্তর অন্তর ট্রেন চলে। তাই বলতে গেলে ৫ মিনিট পরপরই রেল লাইনের গেট পড়ে। এতে করে কি হয় রাস্তার দুই পাশে গাড়ির জ্যাম লেগে যায়।
যাইহোক মিনিট খানেকের ভেতর ঘটনা ঘটল। হঠাৎ করে রেলগেট পড়ল এবং রাস্তার দুই সাইডে গাড়ি দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। এদিকে যে লোক রাস্তার সাইডে মোটরসাইকেল রেখে মিষ্টির দোকানে এসেছিল, তাকে ওখানকার সিকিউরিটি গার্ড খুঁজতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত তারা মিষ্টির দোকানে এসে লোকটাকে খুঁজে পেল এবং সেই লোকটা আমার পাশেই দাঁড়িয়েছিল। সিকিউরিটি গার্ড লোকটাকে বলল মশাই আপনি রাস্তার মাঝখানে গাড়ি রেখেছেন কেন..? এই যে এত লোকের সমস্যা হচ্ছে এগুলো কি আপনি বোঝেন না। এই কথা শোনার পর সাথে সাথেই সেই মাঝ বয়সী লোকটা অনেকটাই রেগে গেল এবং বলল আপনি আমাকে মশাই বললেন কেন....? আমি আসলে লোকটার কথা কোন যুক্তি খুঁজে পেলাম না, কারণ মশাই বলার ভিতরে আমি তো কোন অযৌক্তিক কিছু খুজে পেলাম না। বরঞ্চ ওই লোকটা অন্যায় করেছে রাস্তার মাঝখানে গাড়ি রেখে।
রেলের সিকিউরিটি গার্ড এতে করে অনেকটাই ইতস্ত বোধ করতে লাগলো। কারণ তিনি তেমন কোনো খারাপ কথা বলেননি বরং ওই লোকটাই অন্যায় করেছেন। পরবর্তীতে দুই এক কথায় ভালই তর্ক বিতর্ক বেঁধে গেল দুইজনের ভিতরে। মাঝ বয়সী লোকটি বলতে লাগলো আপনি আমাকে চেনেন, আপনি আমাকে মশাই বললেন কেন, আপনার এত সাহস কি করে হলো। আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না, এই সামান্য কথায় এত রেগে যাওয়ার কারণ কি ছিল ওই লোকটির। একপর্যায়ে তো মারতে যাবে সিকিউরিটি গার্ডকে। সবাই মোটামুটি বলে কয়ে লোকটাকে থামালো। তবে তাতেও শান্ত না হয়ে বিচ্ছিরি ভাষায় গালিগালাজ করতে লাগলো সিকিউরিটি গার্ড কে। এবার সিকিউরিটি গার্ড আর সহ্য করতে পারল না, রীতিমতো বাইকটা ঠেলে রাস্তার পাশে ড্রেনের ভেতর ফেলে দিল। এদিকে তাদের দুজনের ঝগড়া দেখে রীতিমত স্টেশনে ভিড় লেগে গেছে। একমাত্র আমি এবং দু-একজন ছাড়া ঝগড়ার কারণ কেউ জানে না। সবাই শুধু হা করে তাকিয়ে দেখছিল। ঝগড়ার এক পর্যায় সেখানে কিছু পুলিশ চলে আসে।
তারপর কি হয়েছিল আমি আসলে বলতে পারব না, কারণ ঝগড়া আমার খুব বেশি একটা পছন্দ হয় না। আর এই বেকার কারণে ঝগড়া করা দেখা আমার খুব ইরিটেটিং লাগছিল। আপনারা জানিনা আমাকে খারাপ বলবেন কিনা, তবে আমার খুব ইচ্ছা করছিল ওই লোকটাকে তুলে আছাড় দেই। আমার জীবনে আমি এত ছোট কারণে কাউকে এত বড় রকমের ঝগড়া করতে দেখিনি। ঠিক আছে হয়তো আপনি ডিপ্রেশনে ভুগছেন বা আপনার পারিবারিক কোন সমস্যা রয়েছে তাই বলে তো সেই রাগ আপনি একজন নিরীহ ব্যক্তির উপর করতে পারেন না। আপনার একবার চিন্তা করে দেখেন শুধু কথাটা বলেছিল যে, মশায় আপনি বাইকটা একটু সরান। এটা কি কোনো খারাপ কথা বা এই সামান্য কথায় এত পরিমানে রাগ হওয়া কি আদৌ শোভা পায়...?
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।
এখনকার সময়ে আমি মানুষ কম দেখি। মাঝে মাঝেই মনে হয় কিছু ডিপ্রেসনে থাকা এলিয়েনের মধ্যে বসবাস করি। যাদের মানসিক রোগী বললে খুব বেশি ভুল হবেনা। আমার তো মনে হয় কিছু মানুষ আছে ঝগড়া করার জন্য শুধু ওৎ পেতে থাকে। তাকে কেউ যদি ফুলের টোকাও দেয় তবুও সে খুন খারাপি করতে ছাড়বেনা। কিছু বলার নেই, আমি মাঝে মাঝেই এগুলোর মধ্যে বিনোদন খুঁজে পাই। কারন মনে হয় আমরাও দিনদিন ভিনগ্রহের প্রাণী হয়ে যাচ্ছি।
খুব ভালো একটি বিষয় নিয়ে লিখছেন ভাই।
প্রথম ছবিটি কিন্তু দারুন নির্বাচন করেছেন 👌
ধন্যবাদ ভাই আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
সত্যি হাস্যকর একটা ব্যাপার ঘটেছিল সেদিন । আমি এই স্থানে উপস্থিত ছিলাম ।দুই লোকের মধ্যে এই ঝগড়া দেখে আমি হাসতে হাসতে প্রায় পড়ে যাচ্ছিলাম। অদ্ভুত একটা টপিক্স নিয়ে তারা ঝগড়া লাগিয়ে দিয়েছিল। লাইভ বিনোদন দেখার সুযোগ হয়েছিল তাদের এই ঝগড়া শুনে। শুধুমাত্র মশাই বলার কারণে ঝগড়া লেগে গেছিল যা আমি আগে কোনদিনও দেখিনি।
হা হা হা... এখনো হাসি পাচ্ছে। ধন্যবাদ পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য।