কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন । প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। তবে বেশ কিছুদিন ধরে আমার উপর যে ধকল গেলো সেটা বলে বোঝানো যাবে না। একেতো প্রচন্ড বৃষ্টি তার উপর আবার জ্বর সব মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর কান্ড। যাইহোক এখন কিছুটা ভালো আছি এটাই অনেক। আমাদের আজকের বিষয় হলো বিশ্বকর্মা পুজো। আপনাদের জানিয়ে রাখি , বাবা বিশ্বকর্মা হলেন দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার। এই পূজার অনুষ্ঠানটা মোটামুটি সব বাড়িতেই কমবেশি করা হয়। তবে গৃহস্থ বাড়ির থেকেও যেখানে ধুমধাম করে এই পুজোটা হয় তা হল ছোট বড় কারখানা এবং যারা নিয়মিত ইঞ্জিনের সাথে সম্পৃক্ত। আর বিশ্বকর্মা পুজো চলে আসলো মানেই বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব, দুর্গাপুজোর দিনগোনা শুরু হয়ে গেল।

আমাদের বাড়ির বিশ্বকর্মা পুজো ধুমধাম করে হয় না, ওই ঘরোয়া ভাবে একটু হয়। যেহেতু আমাদের বাড়ির পাশেই ব্রাহ্মণের বাড়ি সুতরাং পূজো নিয়ে তেমন কোন বিভ্রাট হয়নি বা হয় না কখনো। সকাল সকালে আমাদের বাড়ির পুজো হয়ে যায়। তারপর পুজোর প্রসাদ নিজেরা কিছুটা রেখে, বাড়ির আশেপাশের সমস্ত প্রতিবেশীদের দিয়ে দেওয়া হয়। এবারও তার কোন ব্যতিক্রম হয়নি, নিয়মমাফিক সবকিছুই ঠিকঠাক হয়েছিল। তবে আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, এটাই একমাত্র পুজো, যে পূজোতে আমি ঘরের বাইরে বের হই না। সারাদিন ঘরেই থাকি। কারণ পাড়ার ভিতরে এবং আশেপাশে এলাকায় এত জোরে সাউন্ড বক্স বাজায় যে, মাথা খারাপ হয়ে যায়। অতিরিক্ত সাউন্ড আমি একদমই সহ্য করতে পারিনা, মাথা যন্ত্রণা করে।

তবে এইবার কিন্তু আমি পুজো দেখতে বাইরে বেরিয়েছিলাম। যদিও বাইরে আমার একটা বিশেষ কাজ ছিল, তবে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পুজো দেখা। আমাদের পাড়ার অস্থায়ী একটা পুজো মন্ডবে বিশ্বকর্মা পূজা হয় প্রতিবছর। অর্থাৎ তারা প্যান্ডেল করে তার ভিতরে পূজা করে। যাই হোক পূজা মন্ডপে গিয়ে অনেকটা হতাশ হলাম। কারণ আমি যখন ওখানে গিয়েছি তখন অলরেডি পুজো শেষ এবং পুজোর প্রসাদ বিতরণও শেষ। যাইহোক কি আর করা যাবে নিজের পাড়ার পুজোর প্রসাদ, তাও শেষ পর্যন্ত কপালে জুটলো না। এখন শুধু বাকি আছে আমার কাকুর পাড়ার পুজো। যদিও ওখানকার পুজো একটু দেরিতে হয় এবং পূজোর প্রসাদ বেশ রাত করে দেয় সুতরাং মোটামুটি সিওরই ছিলাম যে ওখানকার প্রসাদ পাব। যেহেতু আমার সাথে গাড়ি ছিল সুতরাং এক টান দিয়ে চলে গেলাম কাকুর বাড়ি। গিয়ে দেখি সেখানে এখনো পুজোই হয়নি। কাকু বললো একটু বস এক্ষুনি পুজো হয়ে যাবে। প্রসাদ খেয়ে তারপর বাড়ি যাস। কিন্তু কেন জানিনা ওখানে মন দাড়ালো না। গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম ব্যারাকপুর রোডে চা খাওয়ার জন্য।

মাঝেমধ্যে একা একা ঘুরতে আমার বেশ ভালো লাগে। তাই বাইক নিয়ে একাই বেরিয়ে যাই গন্তব্যহীন উদ্দেশ্যে। তবে আজ একা বের হলেও রাস্তায় আমার এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গেলো। সুতরাং তাকে নিয়েই ক্যাফের দিকে রওনা হলাম। কিন্তু বাইরের পরিবেশটা আমার কাছে বেশ অস্বস্তিকর লাগছিল। কারণ এত জোরে জোরে প্রত্যেকটা পাড়ায় পাড়ায় লাউডস্পিকার এ গান বাজছে যে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। যাইহোক ক্যাফেতে গিয়ে মোটামুটি আধা ঘন্টার মত আড্ডা মেরে আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হলো কারণ এবারও যদি লেট হয়ে যায় কাকুদের বাড়ির ওখানে যেতে। তাহলে হয়তো পুজোর প্রসাদটাও খাওয়া মিস হয়ে যেতে পারে। যে কথা সেই কাজ তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে বন্ধুকে তার বাড়ির কাছে নামিয়ে দিয়ে যখন বাড়ি আসছি তখন দেখি আমাদের পাশের পাড়ার একটা পূজা মন্ডপে প্রসাদ বিতরণ হচ্ছে। সাধারণত অন্য পূজা মন্ডপে গিয়ে আমি প্রসাদ চেয়ে খেতে পারি না। কেমন একটা অস্বস্তিকর লাগে আমার কাছে। তবে এইবার কি মন হলো বাইক থামিয়ে পূজা মন্ডপে গিয়ে প্রসাদ চেয়ে খেলাম। খুব ছোট ছিলাম যখন, তখন এগুলো করতাম। এখন বড় হওয়ার পর ঠিক ভালো লাগে না ব্যাপারটা। তবে সত্যি কথা বলতে অন্য পাড়ায় গিয়ে প্রসাদ খেয়ে আসার অভিজ্ঞতাটা কিন্তু খারাপ ছিল না। তারপর কাকুর বাড়ি এসে আবার প্রসাদ খেয়েছি এবং মায়ের জন্য কিছুটা প্রসাদ নিয়ে এসেছিলাম।

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।