মৌসুনি আইল্যান্ড ভ্রমণ ( প্রথম পর্ব)।। আগস্ট -০৮/০৮/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

আপনারা যারা আমার পোস্ট মাঝে মধ্যে পড়েন বা নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করেন তারা অনেকেই জানেন যে ঘুরাঘুরি করতে আমি কত বেশি ভালোবাসি। মোটামুটি সময় সুযোগ এবং হাতে কিছু টাকা হলেই বেরিয়ে পড়ি নতুনের সন্ধানে। আসলে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে আমি মাঝেমধ্যে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। তবে সেটা সমাধানও করেছি সফলতার সাথে। সব মিলিয়ে বলতে বলতে পারেন যে ঘোরাঘুরি করা আমার কাছে অনেকটাই নেশার মতো। যাহোক গত সপ্তাহে আমি গেছিলাম মৌসুনি আইল্যান্ডে। আমার একজন খুব কাছের বন্ধু এবং আমার ছোট ভাইয়ের সাথে। তবে আজ সরাসরি মৌসুনি আইল্যান্ড নিয়ে পর্ব তৈরি করছি না তার পরিবর্তে মাঝপথে অর্থাৎ রাস্তায় আমাদের কেমন সময় কেটেছে বা কি কি সমস্যা হয়েছে সেই সব নিয়ে আজকের ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট। শুধুমাত্র কোথায় ঘুরতে গেছি সেটা নিয়ে পোস্ট করব সেটা তো হতে পারে না। আমার কাছে রাস্তায় থাকা অবস্থাটাও অনেকটা ভ্রমণের মতো মনে হয় এবং ওই সময়টাকে আমি অনেক বেশি এনজয় করি।

InShot_20230808_134706164.jpg

ভ্রমণের শুরুতেই অর্থাৎ রাত সাড়ে তিনটার ট্রেন ধরে আমরা বারাসাত থেকে শিয়ালদা স্টেশনে পৌঁছাই ঠিক তার ৪৫ মিনিট পরে। সকাল পাঁচটা ১৬ তে শিয়ালদা টু নামখানা লোকাল ছিল। সাধারণত সাউথ লাইনের এই ট্রেনগুলো প্ল্যাটফর্মে একদমই দেরি করে না। মোটামুটি পারফেক্ট টাইমে স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এজন্য আমাদের অনেকটাই টেনশন হচ্ছিল কারণ বনগাঁ লোকাল বেশ দেরি করে মাঝেমধ্যে এবং সঠিক সময় প্ল্যাটফর্মে পৌঁছায় না। এজন্য ট্রেন মিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে দেখলাম ঐদিন সকালবেলা আবার পারফেক্ট টাইমে ট্রেন প্লাটফর্মে ঢুকলো এবং শিয়ালদা স্টেশনে গিয়েও ঠিক পারফেক্ট টাইমে ট্রেনটা দাঁড়ালো সুতরাং এদিক থেকে আমরা নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে ট্রেন ধরতে পারবো। মোটামুটি আমরা দশ মিনিটের মত সময় পেয়েছিলাম প্লাটফর্মে। এরপর সেখান থেকে এনাউন্সমেন্ট দেখে ১৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলে গেলাম নামখানা লোকাল ধরার জন্য। সত্যি কথা বলতে এত সকালে ওই লাইনে খুব বেশি একটা লোকজন যায় না। তাই ট্রেন পুরো ফাঁকা ছিল। মোটামুটি জালনার ধারে একটা সিট নিয়ে বসে পড়লাম।

20230731_080143.jpg

20230731_075806.jpg

যথাসময়ে ট্রেন নামখানা স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। মোটামুটি আমাদের যেতে তিন ঘন্টার মত সময় লাগবে আর এই সময়টুকু কি করবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। তাই বন্ধু-বান্ধবের সাথে গল্পে মেতে উঠলাম। এর ভিতরেই দেখলাম ট্রেনের ভিতর প্রচুর খাবার দাবার নিয়ে উঠেছে লোকজন। আমার কাছে ভ্রমণের সব থেকে বেশি মজার বিষয় হলো ট্রেনের ভিতরে বসে খাওয়া দাওয়া, যেটা আমি অনেক বেশি এনজয় করি তাই ট্রেনে যত খাবার ছিল মোটামুটি সব কিছুই কেনার চেষ্টা করছিলাম। আমার কাছে সব থেকে ভালো লাগে চিপস গুলো। অনেক সময় ধরে আস্তে আস্তে খাওয়া যায় আর ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আশেপাশের পরিবেশটা অনেক সুন্দর করে উপভোগ করা যায়। এভাবেই আসলে আমরা গল্প করতে করতে কখন যে দুই ঘন্টা পেরিয়ে গেল বুঝতে পারিনি। তবে এবার সবাই ক্লান্ত তাই একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম তবে ঘুম আসছিল না। এর মধ্যে আবার শুরু হলো হঠাৎ করে বৃষ্টি সুতরাং জালনার পাশে আর বসা গেল না। যাইহোক যতই সাউথের লাইনে যাচ্ছিলাম বাতাস কেন জানি না অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল। সাধারণত গ্রামের দিকগুলোতে এরকমই হয়, বাতাসটা এত ঠান্ডা এবং ফ্রেশ থাকে যে মন ভালো হয়ে যায়।

20230731_080008.jpg

20230731_075948.jpg

মোটামুটি সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আমরা নামখানা স্টেশনে এসে পৌঁছালাম। তবে ট্রেন থেকে নেমে দেখলাম যে শুধু ঘোরার জন্য আমরা আসেনি, আমাদের সাথে ট্রেনে করে আরো অনেক লোক এসেছে যারা সমুদ্র দেখতে চায়। সত্যি কথা বলতে বেশ ভালোই লাগছিল। এরপর নামখানা স্টেশনে নেমে বেশ কিছু ফটো তুলে নিলাম। তারপর চলে গেলাম টোটো ভাড়া করার জন্য। তবে আমরা নতুন মানুষ দেখে আমাদের কাছে অনেক বেশি ভাড়া চাচ্ছিল। তবে আমরা তো পাকা খেলোয়াড় তাই আগে থেকেই দেখে এসেছিলাম কোথায় কত ভাড়া। তারপরও মোটামুটি ৩০০ টাকা দিয়ে একটা টোটো ভাড়া করলাম নদীর ঘাট অবধি যাওয়ার জন্য। নামখানা স্টেশন থেকে নদীর ঘাট মোটামুটি ছাব্বিশ কিলোমিটার ছিল। এরপর আবার সেখান থেকে নৌকায় করে উঠে চলে যেতে হবে নদীর ওপার এবং তারপর সেখান থেকে আবার অটো ধরে যেতে হবে সেই আইল্যান্ডে। আমরা তো নদীর মাঝখানে এসেই বেশ ভালো লাগছিল। নদীর জল এত পরিষ্কার এবং নদীটা এত বড় যে ভেতরটা কেমন যেন একটু ভয়ঙ্কর আনন্দে মেতে উঠল। যাইহোক নদী পার হতে আমাদের অনেক সময় লেগেছিল। তারপর আবার সেখান থেকে ওই পাড়ে যেতে দেখলাম টোটো দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখান থেকে আবার প্রত্যেকের কাছ থেকে ভাড়া বাবদ ৩০ টাকা করে নিল এবং গন্তব্য স্থানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আমরা। মোটামুটি আধা ঘন্টা লেগেছিল আমাদের পৌঁছাতে।

20230731_084656.jpg

20230731_081020.jpg

20230731_091015.jpg

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট।
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনলক্ষীকান্তপুর, নামখানা।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

মৌসুনি আইল্যান্ড ভ্রমণের অনুভূতি সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাই। আপনার পুরো পোষ্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। বেশ সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি অনেক অসাধারণ । দেখে বুঝা যাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুবই দুর্দান্ত। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা রইলাম। ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

জায়গাটা আসলেই অনেক সুন্দর ছিল। যাই হোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটা গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।

 last year 

মৌসুনি আইল্যান্ড দেখছি বেশ অনেকটাই দূর । ভোর সাড়ে তিনটায় বারাসাত থেকে ট্রেন ধরতে হয়েছে মানে তো খুব ধকল হয়ে গেছে , তবে ভোর ভোর গিয়েছে বলেই হয়তো ভিড়ের প্রকোপে পড়তে হয়নি।

ওরে বাবা... ঐ সময় আরো বেশি ভিড় ছিল। তবে নামখানা যাওয়ার পথে তেমন একটা ভিড় পাইনি। বসে বসেই গিয়েছিলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58729.26
ETH 2640.67
USDT 1.00
SBD 2.47