ঘাটশিলা ভ্রমণ (শেষ পর্ব)।। জুলাই -১২/০৭/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

বিগত দুই মাসে ঘাটশিলা ভ্রমণের বেশ কিছু পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করে ফেলেছি। তবে আজকের পর্বের মধ্য দিয়ে ঘাটশিলা ভ্রমণের যাবতীয় পর্ব শেষ হতে চলেছে। আসলে এই দিনগুলোতে আপনাদের উৎসাহ পেয়ে ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট লেখার প্রতি আমার আগ্রহ অনেক বেশি বেড়ে গেছিল। তবে যারা আমার ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট পড়েন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই এখানেই কিন্তু আমার ভ্রমণ বিষয়ক পোষ্টের সমাপ্তি ঘটছে না। এরপর হয়তো নতুন কোন জায়গা নিয়ে ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমাদের আজকের ভ্রমণ বিষয়ক পোষ্টের আলোচ্য বিষয় হলো বিভূতিভূষণ স্মৃতি সমিতি সংসদ। এটা সাধারণত একটা ক্লাব তবে তার আগে এটা বাচ্চাদের স্কুল হিসেবেও কিছু তার ব্যবহার করা হয়েছে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তার একমাত্র পুত্র তারাদাস বন্দোপাধ্যায় সহযোগে এই ক্লাব রচিত হয়। তবে এই মুহূর্তে সেটা অনেকটাই পরিত্যক্ত। আমরা যখন ওখানে ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন সবগুলো ঘরে তালা বন্ধ করা ছিল এজন্য বাইরে থেকেই দেখে ফিরে আসতে হয়েছিল। তারপরও চেষ্টা করেছি যতটা কাভার করা যায় আর কি।

InShot_20230712_154839935.jpg

এটা ছিল ঘাটশিলা ভ্রমণের দ্বিতীয় দিনের কথা যখন আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে গিয়েছিলাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি দেখার জন্য। সেটা নিয়ে অলরেডি বেশ কিছুদিন আগে একটা পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি এবং আপনারা অনেকেই সুন্দর রেসপন্স করেছেন। যাই হোক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘোরাঘুরি করে আসার পর ওখান থেকেই অর্থাৎ যারা ওখানে রক্ষণাবেক্ষণ করে তাদের ভিতরে একজন আমাদের বলল যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি সংসদ ক্লাবটা একবার ঘুরে দেখে আসার জন্য। কারণ ওখানেই নাকি তার সুযোগ্য পুত্র তারাদাশ বন্দোপাধ্যায় অপুর পাঠশালা নামক একটি অবৈতনিক স্কুল খুলেন। অপুর পাঠশালা নাম তো আপনারা অনেকেই শুনেছেন। সুতরাং আমাদের এই ব্যাপারটাতে যথেষ্ট ইন্টারেস্ট ছিল তাই সেখান থেকে টোটো নিয়ে বেরিয়ে চলে গেলাম গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। তবে আমাদের খুব বেশি দূর যেতে হয়নি, মোটামুটি কাছাকাছিই ছিল। টোটো করে ২-৩ মিনিট এগোতেই চলে আসলাম সেই স্মৃতি ক্লাবে। সেখানে গিয়ে দেখি যে লোকজন একেবারেই নেই এবং পুরো ক্লাব তালা বন্ধ করা রয়েছে। আমাদের যদি দেখতে হয় তাহলে রীতিমতো বাইরে থেকে দেখতে হবে।

20230223_165422.jpg

20230223_165249.jpg

কি আর করা যাবে কোন উপায় ছিল না তাই বাইরে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু সময় ফটো তুললাম এবং ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম তবে বিশেষ কোনো সুবিধা করতে পারিনি। যাইহোক ওখানে একটা মাত্র রুম খোলা ছিল যেখানে একজন কেয়ারটেকার থাকে এবং ওই জায়গার দেখাশোনা করে। তবে তিনিও নাকি একটু আগে খেতে বেরিয়ে গেছে এজন্য সেই সুযোগও মিস হয়ে গেল যে ওখানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলবে এবং টুকটাক ইনফরমেশন জোগাড় করার চেষ্টা করব। আসলে ক্লাবটা খুব বেশি একটা বড় ছিল না এবং ক্লাবের মাঠে শুধুমাত্র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি স্মরণে একটা স্ট্যাচু, আর কিছু গাছপালা ছিল। তবে কোন কিছু বুঝতে না পারলেও এইটুকু অন্তত বুঝতে পারছিলাম যে এই ক্লাবটা একেবারেই অনাদরে রেখে দেয়া হয়েছে কোন প্রকার যত্ন নেওয়া হয় না বা সরকার থেকেও কোন প্রকার আর্থিক সহযোগিতা করা হয় না।

20230223_165054.jpg

20230223_165348.jpg

প্রথমদিকে তো খুব বেশি একটা ইন্টারেস্টিং কোনো কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না, তারপরে পরবর্তীতে কিছু কিছু পেইন্টিং সেই ক্লাবের দেয়ালে ছিল এবং তার নিচে এমন কিছু কিছু লেখা ছিল যেটা দেখে আসলে অনেক কিছু জানতে পেরেছিলাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে এবং তার লাইফ সম্পর্কে। যদিও বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব বড় রকমের ফ্যান আমি। তার সম্পর্কে মোটামুটি একটু ইনফরমেশন রাখি কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এমন এমন কাজ করেছেন সেখানে, যেটা তিনি বইতে লেখেন নি। সেরকম কিছু জিনিস দেয়ালে আঁকা ছিল এবং তার নিচে স্পষ্ট করে লেখা ছিল ব্যাপার গুলো। যেমন ধরেন সুবর্ণরেখা নদীর উপর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ছেলে গরুর গাড়িতে করে ছুটে চলেছে। অথবা ধরেন বাসাডাড়া পাহাড়ের উপর থেকে ঘাটশিলা ফেরার পথে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ট্রাকের উপর বসে এসেছিলেন কোন এক সময়। সেটার একটা দৃশ্য ওখানে একা ছিল। তাছাড়া পাহাড়ি মহিলাদের জঙ্গলে কাঠ কুড়ানো, পাহাড়ি আদিবাসীদের জীবনযাত্রা এই সবকিছু ক্লাবের দেয়ালের গায়ে সুন্দর করে আঁকা ছিল। আসলে এই ব্যাপার গুলো ওখানে না গেলে সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় না। যাইহোক এরপর আর দেখার মতো সেখানে তেমন কিছু ছিল না এজন্য সেখান থেকে টোটো ধরে আমরা আবার নতুন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেছিলাম।

20230223_165327.jpg

20230223_165311.jpg

20230223_165244.jpg

20230223_165234.jpg

20230223_165229.jpg

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট।
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনঘাটশিলা, ঝাড়খন্ড।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

Thank you for your support. Stay connected.

 last year 

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বা তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমি খুব বেশি বড় ফ্যান নই।তারপরও এসব ঐতিহাসিক জায়গা গুলো দেখতে বেশ ভালো লাগে। যদিও তোমরা ঘুরে ঘুরে তেমন বিশেষ কিছু দেখতে পারোনি, ঘর তালা বন্ধ থাকার কারণে। তারপরও যতটা ইনফরমেশন দিয়েছো মোটামুটি বেশ ভালই লাগলো পোস্ট পড়তে।

আসলে জায়গাটা বেশ নামকরা ছিল, তবে ওই সময়টাতে তালা বন্ধ থাকার কারণে আমরা তেমন বিশেষ কিছু দেখতে পারিনি। তবে আমাদের বলেছিল একটু অপেক্ষা করার জন্য। কিন্তু যেহেতু হাতে সময় ছিল না তাই সেখানে আর বেশি সময় দাঁড়াতে পারিনি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62427.05
ETH 2464.11
USDT 1.00
SBD 2.65