আমার সব থেকে পছন্দের জায়গা।। জুলাই -১৫/০৭/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

ঘোরাঘুরি করতে আমি অনেক বেশি পছন্দ করি, তবে সেটা আমাকে যতটা না শান্তি দেয় তার থেকে বেশি প্রশান্তি পাই আমি কোন মন্দিরে গিয়ে বসে থাকলে। আমার যখন প্রচন্ড পরিমাণে মন খারাপ হয় বা কোন কারনে কষ্ট পাই তখন আমাদের বাড়ির আশেপাশে বা নিজেদের বাড়ির মন্দিরে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকি। এতে করে কিছুটা হলেও মানসিক শান্তি আমি পাই। আমার মনে হয় এই একটা জায়গায় গিয়ে আমি যদি নীরবে বসে থাকি তাহলে আমার ভেতরের যত দুঃখ কষ্ট সব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। আজকে যে জায়গাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটা হল ইসকন এর নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি কৃষ্ণ মন্দির, যেটা আমাদের মধ্যমগ্রামে অবস্থিত। মন্দিরটা খুব বেশি বড় নয় তবে এটি একটি ঘরোয়া মন্দির অর্থাৎ পুরো একটা ঘরের ভিতরে এই মন্দিরটি সুন্দরভাবে সাজানো রয়েছে এবং সেখানেই পূজা করা হয়। সন্ধ্যা হলেই এই মন্দিরের সন্ধ্যা আরতি অনুষ্ঠিত হয় তবে সেটা সপ্তাহের সাত দিনে, বিশেষ করে রবিবারে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও আমার দুই একবার সৌভাগ্য হয়েছে সেখানে গিয়ে অনুষ্ঠান দেখার। আসলে ওই সময়টুকু ওখানে থাকলে নিত্যদিনের যত টেনশন সব ক্ষণিকের জন্য নিমিষেই গায়েব হয়ে যায়।

InShot_20230715_125524986.jpg

কলেজে যখন ফার্স্ট ইয়ারে পড়তাম তখন আমার এক বন্ধু সে আমাকে এই মন্দিরের সন্ধান দিয়েছিল। তবে সত্যি কথা বলতে তখন অত যাওয়া হত না সেখানে। ওই কলেজ শেষ হওয়ার পর যদি কোনদিন সময় পেতাম তাহলে মন্দিরে যেতাম। তবে বেশিরভাগ দিন কলেজ থেকে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যেত। এজন্য আর যাওয়া হতো না। এমনও দিন গেছে যখন কলেজের ক্লাস হবে না এটা জানতে পেরে আমরা দুই তিনজন বন্ধু মিলে চলে গেছি এই মন্দিরে এবং ওখানেই অনেকটা সময় কাটিয়ে তারপর যে যার বাড়ি চলে গেছি। যাইহোক বেশ কিছুদিন আগে আমি একা একাই চলে গেলাম এই কৃষ্ণ মন্দিরে। আসলে আমার বেশ ভাল রকমের মন খারাপ ছিল, কোন কিছু কাউকে বলতে পারছিলাম না এজন্য একা একাই মন্দিরে চলে গেলাম। এই মন্দিরে কর্মরত টোটাল তিনজন, দুইজন বয়স্ক মহিলা এবং একজন গুরুদেব। তবে সমস্যা হলো গুরুদেবের দেখা সব সময় পাওয়া যায় না উনি কোন না কোন কাজে সব সময় বাইরে থাকেন। এজন্য বেশিরভাগ সময় উনার সাথে দেখা করার সৌভাগ্য আমার হয় না। দুই একবার হয়তো হয়েছে। তবে ঐদিন আমার ভাগ্য অনেকটাই ভাল ছিল এজন্য গিয়েই উনার সাথে দেখা হয়ে গেছিল। যদিও আমি যখন গিয়েছিলাম তার কিছু সময় পরে আবার তিনি বেরিয়ে যান।

20230627_184336.jpg

যাই হোক ওখানে পৌঁছাতেই আমাকে মন্দিরের প্রসাদ দেওয়া হল। যেহেতু আমাকে আগে থেকে চিনত এবং উনাদের সাথে আমার একটা বেশ ভাল রকমের সম্পর্ক ছিল তাই গেলেই দেখলাম হাসি মুখ করে আমাকে বসতে দিল। আমি ওখানে যতবারই যাই না কেন তখন কিছু না কিছু ডোনেশন করে আসি। এই জন্য আমাকে হয়তো একটু বেশি ভালোবাসে। যাইহোক ওখানে গিয়েই উনাদের সাথে বেশ কিছু সময় গল্প করলাম। সত্যি কথা বলতে ধর্মের বিষয়ে ওনাদের জ্ঞানের পরিধি এতটাই বেশি এবং বিস্তৃত ছিল যে আমার অনেক কিছু শেখা হয় উনাদের সাথে কথা বললে। একের পর এক ধর্মতত্ত্ব আমার সামনে উপস্থাপন করতে লাগলেন এবং যেটা শুনে আমার অজানা অনেক ব্যাপার জানতে পারলাম। আসলে এক এক সময় এক এক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যখনই আমি যাই তখন নতুন নতুন টপিক্স নিয়ে আলোচনা করে। যেহেতু গুরুদেব বেরিয়ে যাচ্ছিল তাই ওনাকে প্রণাম করে আবার আগের জায়গায় গিয়ে বসে পড়লাম। তারপর আমাকে বলল যে আরেকটু কিছু অপেক্ষা করো, একটু পরে সন্ধ্যা আরতি শুরু হবে তারপর অনুষ্ঠান দেখে বাড়ি চলে যেও। আমি আসলে আর না করলাম না, কারণ এটা দেখার জন্যই আমি এসেছিলাম আর যেহেতু আমার মন কিছুটা খারাপ ছিল তাই মন ভাল করার এর থেকে ভালো অপশন আমার কাছে আর ছিল না।

20230627_183401.jpg

যথা সময়ে সন্ধ্যা আরতি শুরু হয়ে গেল। ওই সময়টা এত মধুর শব্দ এবং ধুপ ধুনোর ঘ্রাণ আমাকে আরো অনেক বেশি মোহিত করে দিলো। মোটামুটি সন্ধ্যা লাগার সাথে সাথেই সন্ধ্যা আরতি শুরু হয়ে যায় এবং সেটা চলে প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে। এই ঘন্টাখানেক আমার কাছে কেমন যেন কয়েক যুগের সমতুল্য মনে হয়। সত্যি কথা বলতে এই জায়গাটা এসে আমি অনেক ইচ্ছার কথা ভগবানের কাছে বলেছি এবং সেই ইচ্ছাগুলো অদৃশ্য শক্তিতে পূরণ হয়ে গেছে। এমন অনেক সমস্যায় পড়েছি যে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা বেশ কষ্টকর তবে এখানে এসে মাথা ঠুকে সেই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান আমি পেয়েছি। এখন আপনারা যে মন্দিরটা দেখতে পাচ্ছেন ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এটা আসলে একজনের ব্যক্তিগত ফ্লাট ছিল তবে তারা দুইজনই অর্থাৎ স্বামী স্ত্রী সেই ফ্ল্যাট ভগবানের নাম করে দিয়ে তারা বৃন্দাবন চলে গেছে। এখানে এখনো মাঝেমধ্যে ইসকন থেকে বিভিন্ন মহারাজরা এখানে আসেন। যাইহোক আরতি শেষ হওয়ার পরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে যাব এমন সময় আমাকে বলল যে তুমি সামনের সপ্তাহে যদি সময় পাও তাহলে এসো, এখানে বড় করে একটা অনুষ্ঠান হবে। যদিও আমি তখন বলেছিলাম যে যদি সময় পাই তাহলে অবশ্যই আসবো। খুব সম্ভবত সামনের সপ্তাহে আসতে পারবো না, তবে আমার যথাসাধ্য চেষ্টা থাকবে। সত্যি কথা বলতে আমি যতটা মন খারাপ নিয়ে ওখানে গেছিলাম সেটা প্রায় পুরোপুরি আমার মন থেকে হারিয়ে গেছিল ওখানে গিয়ে।

20230627_184322.jpg

20230627_174813.jpg

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীলাইফ স্টাইল।
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@rupaie22
লোকেশনমধ্যমগ্রাম, কলকাতা।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 

বাহ্ ব্যাপারটা শুনে খুব ভালো লাগলো, মন খারাপ হলেই এই মন্দিরে গিয়ে মন ভালো করে আসো ,এটা তো সত্যিই অনেক প্রশান্তির একটা বিষয়। মন্দিরটা যখন মধ্যমগ্রামে অবস্থিত ,তখন একবার গিয়ে ঘুরে আসব ।দেখি আমিও যদি সেখানে গিয়ে একটু প্রশান্তি খুঁজে পাই।

আমিতো মাঝেমধ্যেই এখানে যাই, তুমি চাইলেও ঘুরে আসতে পারো। আশা করি তোমার মন ভালো হয়ে যাবে।

 11 months ago 

আসলে আপনাদের মন্দির এবং আমাদের মসজিদ এমন একটা জায়গা, যেখানে গেলে মনটা একেবারে শীতল হয়ে যায়। যার যার ধর্ম অনুযায়ী এগুলো হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ জায়গা। যাইহোক মন্দিরে গিয়ে সময় কাটিয়ে আপনার মন ভালো হয়ে গিয়েছে, এটা জেনে সত্যিই খুব ভালো লাগলো ভাই। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলেই ভাই, এই ধর্মীয় জায়গা গুলো কেন জানি না খুব প্রশান্তি দেয়। আমি তো সময় সুযোগ পেলেই এখানে গিয়ে বসে থাকি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 70439.87
ETH 3810.76
USDT 1.00
SBD 3.44