মহাপীঠ মা ভবানীর মন্দিরে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমষ্কার,,

গতকাল বিকাল বেলা হঠাৎ করেই পাড়ার এক কাকী এসে নিমন্ত্রণ দিয়ে যায় তার মেয়ের মুখে ভাত দেওয়ার অনুষ্ঠান হবে আজ শুক্রবার। আর অনুষ্ঠানটা হবে মা ভবানী মন্দিরে। শুনেই তো আমি ভীষণ খুশি হয়ে গেলাম। কারণ মায়ের মন্দিরে যেতে আমার সব সময় অনেক ভালো লাগে। আমাদের বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে। ঘন্টাখানেক সময় লাগে যেতে। মোটামুটি বছর খানেক হয়ে যাবে সেখানে যাইনি। তাই এই সুযোগটা হাতছাড়া করার ইচ্ছে একদমই ছিল না আমার। অন্যদিকে আজকে মাকে নিয়ে বাবা দিদির বাড়ি যাবে। তাই নিমন্ত্রণ রক্ষাটা আমাকেই করতে হবে।

IMG20221125145914.jpg
Location

IMG20221125132244.jpg
Location

গতকাল রাতে ব্রাজিল আর সার্বিয়ার পুরো খেলাটা দেখেছি । তাই ঘুম থেকে উঠতে বেশ দেরি হয়ে গেল। অনুষ্ঠানের জন্য যে গাড়িটা রাখা হয়েছিল সেটা চলে যায় আমাকে রেখেই। কোন উপায় ছিল না, আমার দেরি হচ্ছিল একটু বেশি। পরবর্তীতে আস্তে ধীরে নিজের মত সময় নিয়ে স্নান করে আমি রওনা দিয়ে দিলাম মা ভবানী মন্দিরের উদ্দেশ্যে। অন্নপ্রাশনটা বড় কথা না, মন্দিরে গিয়ে মায়ের দর্শন টাই মুখ্য ছিল আমার। পৌঁছানোর সাথে সাথে দেখি বেশ ভিড় জমে গেছে। মোটামুটি ১০ থেকে ১২ টা গাড়ি এসে দাঁড়িয়ে আছে। বেশির ভাগই ছোট বাবুদের মুখে ভাত দেওয়ার জন্য। মন্দিরের চারপাশটায় লোকজন ভরে গেছে পুরো।

IMG20221125130733.jpg
Location

IMG20221125125934.jpg
Location

IMG20221125153854.jpg
Location

মা ভবানী মন্দির নিয়ে একটু বলি। আমাদের সনাতন ধর্ম মতে কালিকা পুরানে বলা হয়েছে দক্ষযজ্ঞে দেবী সতী স্বামীনিন্দা সহ্য করতে না পেরে দেহত্যাগ করেন। সতীর প্রাণহীন দেহ স্কন্ধে নিয়ে দেবাদিদেব মহাদেব প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। সেই মহাপ্রলয় নৃত্য থেকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড রক্ষাকল্পে স্বয়ম্ভু বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দ্বারা সতীর প্রাণহীন দেহ ৫১টি খণ্ডে বিভক্ত করেন। আর সেটা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় পতিত হয়। তারই এক দেহখন্ড পরে বাংলাদেশের ভবানীপুরে। তারপর এখানে গড়ে ওঠে এই পীঠস্থান। প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য ভক্তবৃন্দের সমাগম হয় মায়ের এই মন্দিরে।

IMG_20221125_224716.jpg
Location

IMG20221125130811.jpg
Location

IMG_20221125_225035.jpg
Location

যাইহোক আজ একে তো ছিল ছোট বাবুদের অনুষ্ঠান তার ওপর আবার শুক্রবার। তাই ভীরটা অনেক বেশি ছিল। বাইরে থেকে ভোগ কিনে বেশ সময় ধরে ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে তারপর মায়ের পুজো দিলাম। প্রসাদ গ্রহণ করলাম। অদ্ভুত একটা শান্তি পেলাম মনের মাঝে। অনেকদিন ধরে আসার ইচ্ছে ছিল এখানে। কিছুতেই যেন হয়ে উঠছিল না সুযোগটা। আজ বোধহয় মা নিজে আমাকে নিয়ে এসেছেন এখানে।

সারাটা দিন চারপাশে ঘুরে সময় কাটাই। পরিচিত লোকজনদের সাথে আড্ডাও হয় বেশ। তারপর দুপুরের ভোগ হয়ে গেলে সবাই মিলে প্রসাদ গ্রহণ করে বিকালের দিকে বাড়ির দিকে রওনা দেই।

Sort:  
 2 years ago 

হ্যাঁ, যেদিন আপনি গিয়েছিলেন সেদিনই বোধহয় আপনার সাথে আমার কথা হয়েছিল এই ব্যাপারে। পোস্টা পড়ে সেটা মনে পড়ল। বেশ সুন্দর মনোরম পরিবেশ। এরকম মন্দিরে মুখে ভাত আমাদের এখানেও অনেক বাড়িতেই দেওয়া হয়। এতে সন্তানের নাকি আরো বেশি মঙ্গল হয়।এটা সকলে বিশ্বাস করে।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 68156.06
ETH 3517.56
USDT 1.00
SBD 2.81