মন্দিরে সন্ধ্যাকালীন প্রার্থনায় একদিন

নমস্কার,,

আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি ঈশ্বরের কৃপায় সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আর আমি তো ভালো-মন্দ মিশিয়ে চলছি সব সময়। সময় আর পরিস্থিতি যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে সেদিকেই হেঁটে চলেছি। নিজের চাওয়া পাওয়া গুলো অনেকটাই ঝেড়ে ফেলে দেওয়ার মত। তাকিয়ে দেখছি জীবন কোন দিকে নিয়ে যায়।

ধর্মীয় অনুশাসন গুলো খুব একটা পালন করতে না পারলেও ঈশ্বর বিশ্বাসী একটা ছেলে আমি সেই ছোটবেলা থেকেই। চেষ্টা করি যতটা সম্ভব ধর্মকর্মে নিজেকে নিমজ্জিত রাখতে। কয়েকদিন আগের কথাই বলি। বাড়িতে তখন আমার দিদি ছিল। আমাকে বলল ইসকন মন্দিরে গিয়ে সন্ধ্যাবেলায় প্রণাম সেরে সেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে আসতে। কেউ যদি আমাকে মন্দিরে যাওয়ার কথা বলে আমি কখনো না করি না। তো আমি পরের দিনে সেখানে যাওয়ার জন্য মনস্থির করলাম।

IMG_20221026_190018.jpg

Location

একদম সন্ধ্যেবেলা চলে গেলাম নবনির্মিত সেই ইসকন মন্দিরে। মন্দিরটার নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি দেখলাম। মেঝেতে টাইলস লাগানোর কাজ বাকি পড়ে আছে। যাই হোক, আমি আর আমার বন্ধু কৃষ্ণ সেখানে একসাথে গিয়েছিলাম ঐদিন। দেখলাম সন্ধ্যেবেলা কীর্তন আরতি শুরু হয়ে গেছে। কীর্তন শুনতে ছোটবেলা থেকে আমার ভীষণ ভালো লাগে। সত্যি বলতে আমার বেশি আকর্ষণ থাকে খোল করতাল যিনি বাজান তার দিকে। আমরা দুই বন্ধু এক কোনায় বসে গেলাম। বেশ মন দিয়ে শুনছিলাম সন্ধ্যাবেলার আরতি কীর্তন।

IMG20221022211948.jpg
Location

কিছু সময় পর দেখলাম লোকসমাগম বাড়তে শুরু করেছে। সব থেকে মজার ব্যাপার ওখানে মহিলারাই বেশি ছিলেন। আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে এই মন্দিরটা। দেখলাম আমাদের পাড়ার জেঠি, কাকিমা, বৌদি সবাই চলে এসেছে। ছেলের সংখ্যা কম হওয়ায় আমার নিজের কাছে একটু কেমন কেমন লাগছিল। সেটা অবশ্য কিছু সময় পর আপনা আপনি সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল।

IMG20221022211822.jpg
Location

IMG20221022211749.jpg
Location

IMG20221022211851.jpg
Location

কীর্তন আর গীতা পাঠ শেষ হওয়ার পরে শুরু হল প্রদীপ দেওয়ার পালা। মন্দির থেকেই প্রদীপের ব্যবস্থা করা হয়। ভক্তরা প্রদীপ হাতে নিয়ে রাধা গোবিন্দ আর শ্রী জগন্নাথ দেবের মন্দির দিয়ে আরতি করে পরে আবার নির্দিষ্ট জায়গায় সেগুলো রেখে দেন। আমি এর আগে কখনো এরকম দেখিনি। ভীষণ ভালো লাগছিল। আমি এবং আমার বন্ধু দুজন মিলে আমরাও আমাদের আরতি সেরে নিলাম এবং প্রণাম সারলাম। তারপর প্রসাদ গ্রহণ করে সেখান থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছি মন্দিরে যতক্ষণ থাকা যায় মনটা ভীষণ স্থির থাকে। আজেবাজে কোন চিন্তা যেন মাথায় ঘোরপাক খায়না। অদ্ভুত একটা তৃপ্তি কাজ করে নিজের ভেতর। সৃষ্টিকর্তার কাছে মন থেকে নিজেকে সমর্পণ করতে পারলে সর্বদাই হয়তো এই অনুভূতিটা পাওয়া সম্ভব।

আজ এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
 2 years ago 

হরে কৃষ্ণ রাধে রাধে ৷
দাদা খুব ভালো করছেন মন্দিরে গিয়েছেন ৷ আসলেই ভাই শুধু শুধু বসে না থেকে ধর্মকর্ম করতে হয় ৷ আমারও বাড়ি কাছে একটি মন্দির আছে ৷ এখন তো দামোদর মাস তাই প্রতিদিন সকাল সন্ধা নাম কীর্তন করি ৷ আমিও তো যাই আর সবচেয়ে ভালো লাগে গীতার কথা গুলো ৷ যেগুলো আমাদের ধর্ম কথা গুলো শুনি ৷
ভালো লাগলো দাদা ৷ মাঝে মাঝে যাবেন

বাহ্ আপনার কথা শুনে আমারও বেশ ভালো লাগলো ভাই। আমি চেষ্টা করি মাঝে মাঝে যাওয়ার । আমার আবার কীর্তনের দিকে উৎসাহ টা একটু বেশি। যাই হোক অনেক ভালো থাকবেন ভাই।

 2 years ago 

প্রতিটি মানুষের জীবনে ভালো-মন্দ মিলিয়ে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদেরকে চলতে হয় । সব সময় যদি পরিস্থিতি যদি ভালোই থাকে তাহলে খারাপ পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন কিভাবে। আর ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে কি আর ছেলে মেয়ে আছে। যার যখন মন যাইবে সে তখন যাবে। এতে অস্বস্তি ফিল করার কিছু নেই।

কথা গুলো সুন্দর বলেছেন আপু। ভালো লাগলো খুব। তবে জানেন তো আপু সব কিছু বুঝেও মন মাঝে মাঝে বড্ড অবুঝ হয়ে যায়। দোয়া করবেন 🙏

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64373.04
ETH 2775.53
USDT 1.00
SBD 2.66