জীবনে প্রথমবার একটু বড় করে কাঁচা বাজার করার অভিজ্ঞতা
নমষ্কার,,
আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও চলছি আমার মতই। দিনের আবহাওয়াটা বেশ ভাল ছিল। অনেকটাই মেঘলা আকাশ। রোদের তীব্রতা খুব বেশি একটা ছিল না। বলা যায় মোটামুটি স্বস্তিতেই থাকা গেছে সারাটা দিন।
সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পরেই শুনি বাজার নেই কোন। এমনকি রান্না করার চাউল পর্যন্ত নেই। বাজার যেতে হবে । সবকিছু কেনাকাটা করতে হবে। ফ্ল্যাটে দিনের বেলায় আমি ছাড়া কেউ থাকেনা। আজকে অবশ্য অন্য আরেকজন ছিল। দুজন মিলে সকাল সকাল বাজারের দিকে বেরিয়ে গেলাম। আমার আবার বাজারের অভিজ্ঞতা একদমই নেই। বাড়ি থাকতে তো কখনো বাজার করতে হয় না। ঢাকাতে বাজার করেছি কিন্তু ছোটখাট বাজার সেগুলো। তাই বলে একবারে ১০-১৫ দিনের বাজার কখনো করা হয়নি।
মোটামুটি হাটা দূরত্বে বাজারটা অবস্থিত হলেও সকালবেলা হাঁটতে ইচ্ছে করছিল না একদম। তাই রিক্সা নিয়ে চলে গেলাম। বাজারে ঢুকতেই শাক সবজির পসরা চোখে পরল। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রথমে মাছ-মাংস কিনব তারপর কাঁচা বাজার করব। মজার ব্যাপার আমি মাছের কিছুই চিনি না, বুঝিও না। পুরো মাছের বাজারটাই ঘুরে ঘুরে দেখলাম। মাছের দাম শুনে রীতিমতো চোখ কপালে উঠে গেল। যে মাছগুলো পছন্দ হচ্ছিল রুই বা কাতল সেগুলো ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি। আর তার থেকে ছোট সাইজের মাছগুলো ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কেজি। নানান রকমের মাছ উঠেছিল বাজারে। আমরা শেষ মেষ মাঝারি সাইজের রুই মাছ নেই পাঁচ কেজির মত। প্রতি কেজি ২৮০ টাকা করে রেখেছিল।
তারপর চলে গেলাম মুরগির দিকে। পাকিস্তানি মুরগিগুলো ২৫০ টাকার কম দিচ্ছিল না একদমই। ওই দামেই সাড়ে তিন কেজি মুরগি নিলাম। আসলে মাছ আর মাংসে মোটামুটি একই রকম দাম যেটা দেখলাম। আমার কাছে মনে হয় মাছ খাওয়াটাই লস। কারণ কোন মাছ খেতে স্বাদ হবে আর কোনটা হবে না সেটা বোঝাই যায় না। হাজার দাম দিয়ে কিনলেও ঠকে যেতে হয়।
তারপর চলে গেলাম কাঁচা বাজারে। কাঁচা বাজারের দাম শুনে আমার তো চোখ কপালে উঠে গেল। শুধুমাত্র ঢেঁড়সের দাম ছিল ৪০ টাকা কেজি। এছাড়া সব কিছুর দাম বেশি। আমরা ঢেঁড়স, কাঁচা মরিচ, আদা, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়ো, চাল কুমড়ো, কচুর মুখি, বেগুন, ধনিয়া পাতা, পেঁপে সবকিছু ২-৩ কেজি করে কিনলাম।
আর সবশেষে গেলাম চাউলের দোকানে। চাউলের দাম দেখেও মাথায় হাত। এতদিন কিছুই বুঝতাম না। ৭৪ টাকা ৭৬ টাকা কেজি সাধারণ চাউল কিনে খেতে হচ্ছে। কি আর করার। ওইদিকে তেলের দামও এক লিটার ১৮৫ টাকা করে নিল।
সত্যি বলতে আমি অনেকটাই আরাম প্রিয় একটা ছেলে। আর ভীষণ অলস। এরকমভাবে কখনো বাজার আগে করিনি। অনেক বড় রকমের অভিজ্ঞতা যেমন হয়েছে তার সাথে পুরোপুরি হাপিয়ে গিয়েছিলাম আজ। তখন বাবার কথা বারবার মনে পড়ছিল। মানুষটা রোজ কত কি বুঝে শুনে বাজার করে। আর আমরা শুধু পেটপুরে খাই। কোন কিছু ভালো না হলে তাকেই দোষারোপ করি জিনিসটা ভালো না কেন! বাজার থেকে দেখে শুনে ভালো জিনিস কিনা যে কতটা কষ্টের আজকে হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। এই অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগবে অনেক আমার জীবনে।
মাছ মাংসের মধ্যে শুধু মুরগিটাই আমি কিনতে পারি। বাকি যেটাই কিনতে যাই না কেনো দারুন ভাবে ঠকে আসি। আসলেই বাবা-মা রা কি সুন্দর দেখে বুঝে ভালো ভালো বাজার নিয়ে আসে। আজকের বাজার করার অভিজ্ঞতা থেকে ভবিষ্যতেও ভালো ভাবে বাজার করতে পারবেন এই কামনাই করি। শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
সত্যিই তাই আপু বাবা মার মত করে দেখে শুনে কেউ রাখে না আমাদের। অনেক কিছু শিখেছি এক কথায় বাজার থেকে। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। অনেক ভালো থাকবেন।
যাক দাদা বড় হয়ে গেছে,এখন আর কোন সমস্যায় হবে না।মাছ, মুরগি,সবজি,চাল সব কিছুই কিনতে পারে।মাছ গুলো দেখে বেশ ভালো লাগছে।ভালো ছিলো। ধন্যবাদ
হিহিহিহি,,, বাচ্চা ছেলে আছি এখনও আপু। দোয়া রাখবেন ভাইয়ের জন্য। 🙏
ভাই রে ভাই জীবনে প্রথমবার কাঁচাবাজার করেছেন আপনি, আর আমি তো কাঁচা বাজার করতে করতেই বুড়ো হয়ে গেলাম।😔 আমার আরামপ্রিয় ও অলস দাদা বিয়ের পরে বুঝতে পারবেন কাঁচা বাজার করা কাকে বলে। যখন নিজের কাঁধে সংসারের ঘানি পড়বে তখনই বুঝবেন আসল মজা।😜
সংসারের কথা এখন মনে হলো চোখে জল চলে আসে ভাই। অনেক তো ভালো আছি এখনও। 🤪। কবে যে গলায় দড়ি পরে😉
যাক আপনার বাজার করার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সুন্দর করে সাজিয়ে আপনি বাজার করার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
ভাই কাঁচা বাজার করার অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করছি এখন আর বাজারে যেতে ইচ্ছে করে না। আপনার পোস্ট পড়ে ভালোই মজা পেলাম। আর নিজেরও কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। 😋
আসলে আগে তো মাথায় এসব ঝামেলা আসতো না তাই কিছুই বুঝতে পারতাম না। ইদানিং ভালই প্রেসার যায় এই বাজার করা নিয়ে ভাই।
হ্যাঁ ভাইয়া সব ছেলেকে একসময় না একসময় এই বিপাকে পড়তে হয়। হয়তো কেউ একদিন আগে পড়ে আর কেউ একদিন পরে। তবে বাজার করার অভিজ্ঞতাটা থাকা অতি জরুরি না হলে বড় হয়ে লজ্জা পেতে হয় মানুষের কাছে। অসাধারণ ছিল আপনার অনুভূতিগুলো এবং অনেক দিনের বাজার একসাথে করার অভিজ্ঞতাটাও আপনার ভালই হয়েছে। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
নতুন নতুন সব কিছু শিখছি ভাই। জীবনে কত কি দেখা আর শেখা যে এখনও বাকি! দোয়া করবেন ভাই। অনেক ভালো থাকবেন।