পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিয়ে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা
নমষ্কার,,
সাধারণত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটা নেয়া হয় দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য। অর্থাৎ ভিসা প্রসেসিং করার সময় কাজে লাগে। মাসখানেক আগে আমিও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করি তবে আমার উদ্দেশ্য ভিসা বা বাইরে যাওয়ার জন্য ছিল না আপাতত। সরকারি একটা স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটা দরকার হয়। আর সেজন্যই অনলাইনে আবেদন করে ফেলি। একদম শেষ মুহূর্তে এসে স্কলারশিপের আবেদন ফরম পূরণ করি এবং তাড়াহুড়ো করে অনেক কাজ শেষ করি। যাই হোক ইউটিউবে ভিডিও দেখে নিজে নিজেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলি।
বাড়িতে অপেক্ষায় ছিলাম কখন থানা থেকে ফোন আসবে আমার কাছে। মোটামুটি ৮-৯ দিন পর আমার কাছে থানা থেকে ফোন আসে। আমার পাসপোর্ট এর ফটোকপি, নাগরিকত্ব সনদ, নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং আমার বাবার জাতীয় পরিচয় পত্র সব কিছুর এক কপি করে ফটোকপি নিয়ে থানায় দেখা করতে বললেন একজন পুলিশ অফিসার। একজন মানুষের যার পাসপোর্ট হয়ে গেছে তার নাগরিকত্ব সনদ দিয়ে কি হবে এটাই আমার বোধোদয় হয় না কখনো। আমার কথা হল নাগরিকত্ব ছাড়া তো পাসপোর্টই হবে না, তাহলে কেনই বা এই হয়রানি!!
যাই হোক আমি সব ডকুমেন্টস সাথে করে নিয়ে থানায় চলে যাই। এটাই প্রথমবার আমার থানার ভেতরে প্রবেশ। পুলিশ অফিসার কে ফোন দিয়ে তার রুমে চলে গেলাম। সব কাগজপত্র দিয়ে যখন চলে আসতে নিয়েছি তখন হঠাৎ করেই আমাকে বলে বসলেন, কিছু খরচাপাতি দিয়ে যান। আমি বললাম সব খরচ তো অনলাইনে দিয়েই দিয়েছি, আবার নতুন কি! আমাকে বললেন এটা বড় স্যার নিয়ে থাকেন। আমি সোজা বলে দিলাম, ভাই আমি বেকার পুরোপুরি, এসব কাজ কখনো আমি করিনি, অতোটা আইডিয়া নেই, আর সেভাবে কোন প্রস্তুতিও নিয়ে আসি নি। এসব নানান কথাবার্তা বলে আমি চলে আসলাম। আসার আগে ওই পুলিশ অফিসার আমাকে অবশ্য বলেছিলেন, এটাতো স্যারের খরচ , তাই স্যার বাকিটা করবেন।
আমি অবশ্য এতকিছু গায়ে লাগাই নি। যা হবে তো হবে। অত চাপের কিছু নেই। তবে অনেকে বলেছিল থানায় গিয়ে পুলিশের হাতে কিছু টাকা না দিলে রিজেক্ট হয়ে যেতে পারে আমার আবেদনটা।
তো সবকিছু করার পর অনেকদিন হয়ে গেলেও দেখি আমার আবেদনের কোন আপডেট হচ্ছিল না। আমি ভাবলাম হয়তো বা রিজেক্ট করে দিয়েছে। সাধারণত এত সময় নেয় না। হঠাৎ করেই একদিন অনলাইনে চেক করতে নিয়ে দেখলাম রেডি ফর ডেলিভারি দেখাচ্ছে। তার মানে কাজটা হয়ে গেছে। এক দিক দিয়ে ভালোই লাগছিল। কাজ যখন হয়েই গেছে তখন সেটা আর ফেলে রেখে লাভ নেই। পরদিন সকাল সকাল বেরিয়ে গেলাম বগুড়ায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে।
সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকে জিজ্ঞাসা করতেই আমাকে বলে দিলেন কোথায় থেকে সার্টিফিকেট টা নিতে হবে। আমিও সোজা ওই রুমে চলে যাই এবং সেখানে দায়িত্বরত অফিসারের কাছ থেকে আমার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটা বুঝে নেই।
বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এটাই আমার প্রথমবার যাওয়া। বেশ ভালই লাগছিল চারপাশের সবকিছু। সামনে একটা সুন্দর ফুলের বাগান আছে। দু একটা ছবি তুললাম। বেশি ছবি তুলতেও ভয় করছিল কারণ কোন সময় আবার ধুম করে এসে বলে যে ছবি তোলা যাবে না ,হিহিহিহি। বলা যায় পুরো ব্যাপারটায় মোটামুটি ভালো একটা অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য।
যাক শুনে ভালো লাগলো যে বাড়তি কোন খরচ ছাড়াই শেষ পর্যন্ত কাজটা করতে পেরেছেন জেনে। আসলে আমাদের দেশে পুলিশেরে কোন কাজ ঘুষ ছাড়া করা সম্ভব হয়না বললেই চলে। সবাই যদি আপনার মত সাহস করে ঘুষ না দিয়ে চলে আসত তাহলে হয়তো একদিন এই প্রবনতা থেকে আমরা মুক্তি পেতাম। ধন্যবাদ ভাই অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
ভাই সত্যি বলতে আমি মনে মনে বেশ ভয়ে ছিলাম কাজ টা হবে কি হবে না এই ভেবে 😉, টাকা না দিলে তো এরা কাজই করতে চায় না। অবশেষে হওয়ার পর আমার নিজেরও বেশ ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ ভাই।
যাক পুলিশ ক্লিয়ারেন্স খুব সহজভাবেই পেয়ে গিয়েছেন জেনে ভাল লাগল। আমার পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের যাওয়ার ভাড়া ছিল না (হি হি হি) তাই সেটা দিতে হয়েছিল। তবে পোস্টের শুরুর দিকে পড়ে ভেবেছিলাম সহজে পাননি। এভাবে যদি হয়রানি ছাড়া সবার গুলো দিয়ে দিত তাহলে নাকে তেল দিয়ে সবাই ঘুমিয়ে থাকতে পারতাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আরে ভাই আপনাকে তো মনে মনে কয়দিন হলো খুঁজছি। পেয়েই গেলাম অবশেষে 😊। অনেকদিন দেখা পাই না আপনার। অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। আর বাংলাদেশে পুলিশের ভাড়া থেকে শুরু করে জামা কাপড় কোন কিছুই নেই হয়তো 😉। হিহিহিহি। ভালো থাকবেন ভাই।
বর্তমান পুলিশের যে অবস্থা, কাজ করলেই তাদের হাত খরচ দিতে হবে। তবে আপনি নানান বাহনায় চলে এসেছেন।আর আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সহজভাবেই পেয়েছেন জেনে ভাল লাগল। পুলিশ সুপার এর কার্যালয় ছবি গুলো চমৎকার ছিল।
পুলিশ এখন সবচেয়ে বড় ত্রাস হয়ে গেছে আপু 😅। তবে সবাই একরকম নয়। অনেক ধন্যবাদ আপু। শুভেচ্ছা রইলো।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট হাতে পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। তবে বলা যায় যে আপনার ভাগ্য খুবই ভালো। আমাদের দেশে তো কোন কাজ এত তাড়াতাড়ি হয় না। আপনি খুবই সুন্দরভাবে তাড়াতাড়ি ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেয়েছে। বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। পুলিশ কার্যালয় বাগানের কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন । দেখে খুব ভালো লাগলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাই।
তারাতারি আর কই হলো ভাই,, প্রায় এক মাস পর হাতে পেয়েছি 🤪। এক্সট্রা টাকা দিতে হয় নি এটাই কপাল। অনেক ধন্যবাদ ভাই।
অবশেষে তাহলে সমস্ত জল্পনা কল্পনার অবসাদ ঘটিয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সটা হাতে পেয়েছেন। আসলেই বাহিরে যাওয়ার জন্য অথবা লেখাপড়া হোক বা কাজ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সবসময় জরুরি করে তবে আমারও মাঝে মাঝে বুঝে আসে না যার স্মার্ট কার্ড হয়ে গিয়েছে সেখানে নাগরিক সনদপত্র দিয়ে কি কাজ..!! আর বর্তমান সময়ে ভাইয়া কি বলবো পুলিশ রা যেন টাকা ছাড়া কোন কাজ করতেই চায় না তবে আপনার ভাগ্যটা খুবই ভালো যে আপনি নানা রকম অজুহাত দিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে এসেছেন। তবে আমার মনে হয় সকল পুলিশ এক নয় এখনো এমন অনেক পুলিশ আছে যাদের মন অনেক ভালো তারা সবসময়ই মানুষের উপকারে আসে। যাইহোক শুভকামনা রইল আপনার জন্য যার জন্য আপনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করেছেন আপনার সেই কাজটা যেন সফলভাবে হয় এই কামনা করি।
এটা ঠিক ভাই সবাই এক রকম নয়। তবে বর্তমানে সবার মুখে মুখে যেমন টা শুনি তাতে মনে হয় যে বেশির ভাগই এমন। দোয়া করবেন ভাই। আর এভাবেই পাশে থাকবেন সবসময়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা রইলো।