হঠাৎ আসা কিছু মজার স্মৃতি
নমস্কার,,
রাখি পূর্ণিমার দিন রাতের বেলা শ্রদ্ধেয় দাদা আগে থেকেই বলে রেখেছিল পরদিন সকাল সকাল বেরোবে। সকাল সকাল না বেরোলে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ঠিকঠাক পুজো দেওয়া যাবে না। আমি অবশ্য বারবার বারণ করছিলাম দাদাকে এত সকাল সকাল বের না হওয়ার জন্য। ছোটাছুটি করতে করতে শরীরের হাল একদম নাজেহাল হয়ে গিয়েছিল। তাই একটু দেরি করে বের হলে খুব ভালো হয়। তার আগের দিন রাতেও দাদা ঠিকমত ঘুমায়নি। আমি মনে মনে ভাবছিলাম দাদা হয়তো সকাল-সকাল উঠতে পারবে না। আমার অত চাপ নেই। আস্তে ধীরে বাড়ি থেকে বের হব।
ঘুম ভাঙার পরে মনে হল দাদা এখনো ঘুম থেকে ওঠেনি। সকাল ৯ টার দিকে আমি নিজেই দাদাকে ফোন দিলাম। আর ফোন দিয়ে রীতিমতো আমি চমকে গেলাম। দাদা আমাকে বলছে গাড়ি নিয়ে ড্রাইভার অলরেডি রওনা দিয়ে দিয়েছে। আধা ঘন্টার ভেতরেই পৌছে যাবে। আমি ভাবতেই পারিনি, দাদা এত সকাল সকাল উঠে যাবে। যাইহোক দাদার গাড়ির ড্রাইভার এর নাম্বার আগে থেকে আমার কাছে ছিল। উনার নাম সুব্রত। সুব্রত দা কে আমি ফোন দিয়ে শুনলাম কতক্ষণ লাগবে আসতে। সুব্রত দা আমাকে বলল ৪০ মিনিটের ভেতর পৌঁছে যাব। আমি বললাম একটু আস্তে ধীরেই আসো, অত তাড়াহুড়ো নেই। আসলে আমি নিজেই রেডি হইনি তখনও।
সব কাজ সেরে আমি আর দেবাশিস দা যখন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মেইন রাস্তায় আসলাম, আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। মোটামুটি পাঁচ ছয়টা প্যান্ডেল করে অনেক লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। মাইক দিয়ে সুন্দর গান বাজছে। আমি ভাবছি হচ্ছেটা কি আসলে! দেবাশীষ দা আমাকে শুধু বলল চুপচাপ সামনে এগিয়ে যা। আর তখনই আসল ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম। প্রতিটা প্যান্ডেল করা হয়েছে রাখি উৎসবের জন্য। রাস্তার সকল পথচারীকে রাখি পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তারপর মিষ্টিমুখ করানোর সুব্যবস্থা রয়েছে। বয়সের কোন ভেদাভেদ নেই সেখানে। সবাই সবাইকে রাখি পরিয়ে দিচ্ছে। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে দৃঢ় করতে এ যেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আমি মোটামুটি ওই রাস্তাটুকু পার হওয়ার সময় চারজনের কাছ থেকে রাখি পরেছি। সবাই আমাকে চকলেট আর মিষ্টি দিয়েছে। আর যখন শুনেছে আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি সবাই যেন আরো বেশি আপন করে নিয়েছে। এত ভালো লেগেছে পুরো ব্যাপারটা বলে বোঝাতে পারবো না। জীবনে প্রথমবার এমন ধারার একটা অনুষ্ঠান দেখলাম। দেবাশীষ দা আমাকে বলছিল তুই আরো রাখি পড়বি,! তাহলে সামনে এগিয়ে চল। আমি বললাম চারটা মিষ্টি খেয়ে পেটে আর জায়গা নেই। আর পারবোনা।
এর মধ্যেই দাদার পাঠানো গাড়ি নিয়ে সুব্রত দা চলে আসে। আমি রওনা হয়ে যাই গাড়িতে করে। মজার এই কান্ডগুলো সুব্রত দার সাথে গল্প করছিলাম গাড়িতে বসে। সুব্রতদা বেশ গল্প প্রিয় মানুষ। মোটামুটি এক ঘন্টা লেগে ছিল দাদার কাছে পৌঁছতে। ভীষণ মজার মজার গল্প করে আমরা পৌঁছে যাই। যাই হোক দাদাকে নিয়ে যেখানে যেখানে ঘুরেছি সেগুলো পরবর্তী পোস্টগুলোতে লিখব।
সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
তাহলে আপনি রাখি বন্ধনের দিন মজার কিছু মুহূর্তই কাটিয়েছিলেন। ইন্ডিয়াতে ঘুরে ভাল কিছু মুহূর্তই আমাদের সাথে সেয়ার করেছেন। চকলেট পেয়েছেন,মিষ্টি খেয়েছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া পড়ে ভালই লাগলো।
আমার জীবনের স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত এবার ইন্ডিয়াতে কাটিয়ে এসছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।