সময় তখন ভোর পাঁচটা
নমস্কার,,
রোজ ঘুম থেকে উঠতে মোটামুটি সাড়ে সাতটা বা আটটা বেজেই যায় আমার। তবে অ্যালার্ম দেয়া থাকে সকাল সাতটা থেকে। ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস অনেকটা ভুলেই গেছি। কিন্তু সেদিন বেশ ভোরেই ঘুম থেকে উঠেছিলাম। তার পেছনেও অবশ্য একটা কারণ ছিল। আমাদের এখানে পুরো কার্তিক মাস জুড়ে ভোরবেলা করে সব মন্দিরে নাম কীর্তন অনুষ্ঠান হয়। আমার বাবা তো সেই ভোর সাড়ে চারটায় বেরিয়ে যায় একমাস ধরেই। মা আমাকে অনেক বলেও ঘুম থেকে উঠাতে পারেনা। তবে অন্তত একদিন হলেও আমি সেখানে যাই। আর সেজন্যই সেদিন প্রায় সাড়ে চারটার দিকে ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম। মজার ব্যাপার অন্যান্য দিন অ্যালার্ম বাজলেও ঘুম থেকে উঠতে পারি না কিন্তু সেদিন একবার অ্যালার্ম বাজতেই ধুম করে উঠে পড়লাম।
আমাদের এদিকে ভোরের দিকে বেশ ভালো রকমের ঠান্ডা পড়ছে আজকাল। তাই কম্বলের ভেতর থেকে বেরোতে মন চায় না একদমই। কিন্তু যেতে যেহেতু চেয়েছি সেহেতু যেতেই হবে। কিছুক্ষণ পর হাত-মুখ ধুয়ে বেরিয়ে গেলাম বাড়ি থেকে। অনেকদিন পর এমন একটা ভোর দেখলাম। রাস্তায় বেশ কিছু মানুষজনকে পেলাম যারা মন্দিরের দিকেই যাচ্ছিল। কেউ কেউ আবার সকালবেলা হাঁটাহাঁটি করার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন। ও হ্যাঁ, আমি আমার এক বন্ধু কৃষ্ণকেউ ঘুম থেকে সকালবেলা ডেকে তুলেছিলাম। দুজন একসাথেই মন্দিরে বসলাম। ভোরবেলা এত লোকের যে সমাগম হয় এটা আমার একদমই জানা ছিল না। সত্যি বলতে সকাল-সকাল এমন কীর্তন শুনতে সত্যি অনেক ভালো লাগছিল। মনটাও বেশ ফ্রেশ লাগছিল।
প্রায় সাড়ে ছটা অবদি গান কীর্তন হলো। তারপর সবাইকে খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ করল মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে। মন্দির থেকে বেরিয়ে আমি আমাদের মাঠে এসে বন্ধুকে নিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটলাম। সেখানে দেখলাম ছোট ছোট কিছু বাচ্চাকে নিয়ে কেরাতির প্র্যাকটিস করা হচ্ছে। ছোট ছোট এই বাচ্চাগুলো এত সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেছে, এটা দেখেই আমি বেশ অবাক হয়ে গেলাম। সবাই খুব এক্টিভ তাদের কাজে। সব থেকে বেশি ভালো লাগলো মাঠের ঘাসে ভোরের শিশির বিন্দু দেখে। সকালের রোদটা যখন পড়ছিল সেখানে, কি চমৎকার চক চক করছিল ! এটা এক অন্যরকম ভালোলাগা এক কথায়।
আসলে ঘুম থেকে ওঠাটা অনেকটা মানসিক একটা বিষয়। আপনি মানসিক দিয়ে দিক দিয়ে শক্ত থাকলে এলার্ম ছাড়াই টাইমলি ঘুম থেকে উঠতে পারবেন। আবার মানসিক দিক দিয়ে দুর্বল থাকলে বারবার এলার্ম বাজার পরেও উঠতে পারবেন না। যাইহোক আপনি সেদিন একবার এলার্ম বাজার সঙ্গেই উঠে যেতে পেরেছিলেন জেনে ভালো লাগলো। তাছাড়া ছোটবেলায় সবাই সকাল-সকাল স্কুল যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠতে পারে। একটু বড় হওয়ার পর থেকেই এই দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি হয়। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট দেখে।
এটা একদম খাঁটি কথা বলেছেন আপু। খুব প্রয়োজনীয় দিন গুলোতে একাই জাগা পেয়ে যাই অ্যালার্ম ছাড়াই। আফসোস যদি রোজ উঠতে পারতাম এভাবে অ্যালার্ম ছাড়াই!! হাহাহাহা,, দোয়া করবেন আপু। আর ভালো থাকবেন সবসময়।
এটা আমিও খেয়াল করেছি আমি যখন কোন কিছু নিয়ে খুব এক্সাইটেড থাকি। সকালে এমনিতেই আমার ঘুম ভেঙে যায়। যেমন টা আপনার ক্ষেত্রে হয়েছে। আমাদের দিকেও সকালে বেশ ভালো শীত পড়ে ভাই। আর বাচ্চাগুলো বেশ ভালো কাজ করছে। আর অবাক হওয়ার কী আছে ভাই ভেবে দেখেন আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমরাও সকালে ঘুম থেকে উঠতাম হা হা।
ছোট এই ছেলেগুলো যখন বড় হবে, তখন আমাদের মতই ফাঁকিবাজ হবে আবার। হিহিহিহি। আর আপনাদের এলাকায় যাব হয়তো খুব তাড়াতাড়িই একদিন, শীত টা দেখে আসবো নিজ চোখেই। ভালো থাকবেন ভাই।