বই মেলার শেষ দিনে
নমষ্কার,,
যতদূর মনে পরছে ক্লাস এইটে পড়ার সময় আমার স্যার একদিন বারমুডা ট্রাইংগেলস এর গল্প শুনিয়েছিল। এত চমৎকার লেগেছিল যে আমি স্যারকে বললাম এই ব্যাপারে আরো ডিটেইলস আমি পড়তে চাই, বইটা কোথায় পাবো? স্যার আমাকে বলেছিলেন তিনি ঢাকা বইমেলা থেকে একবার একটা বই কিনেছিলেন এই বিষয়ে। বইমেলাতে এই ধরনের অনেক বই পাওয়া যায়। তাই কোন একবার বই মেলাতে যেতে পারলে সবথেকে বেশি লাভ হবে। ঠিক তখন থেকেই মনে একটা ইচ্ছা ছিল ঢাকার বইমেলা ঘুরে দেখার। তবে সব থেকে মজার ব্যাপার এত বছর ঢাকায় গিয়েছি এবং থেকেছি কিন্তু কোন বার বইমেলা যাওয়ার সুযোগ আমার হয়ে ওঠেনি। এই একটা আক্ষেপ এখনো আমার রয়েই গেছে। ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই কোন না কোন কারণে এদিক-ওদিক ছুটতে হয়েছে না হয় বাড়িতে আসতে হয়েছে।
বই যে খুব পড়ি আমি এমনটা না। তবে নতুন বই দেখলেই কিনতে ইচ্ছে করে এবং সাজিয়ে রাখতে খুব ভালো লাগে। গত পরশু বগুড়াতে একটা কাজে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যাবেলা ফেরার সময় দেখছি মাইকে বক্তৃতা দিচ্ছেন একজন ভদ্রলোক। কথার মাঝে একটা সময় শুনতে পেলাম বইমেলার শেষ দিন আজই। আমি আর দেরি না করে সাথে সাথে মেলার মাঝে চলে গেলাম। বইমেলা সবসময় আমাকে ভীষণ পরিমাণে টানে।
ভেতরে ঢুকতেই দেখি উপচে পড়া ভিড়। ছোট থেকে বড় সব বয়সের লোকের সমাগম হয়েছে। শেষ মুহূর্তে এসে দোকানীরাও বেশ ভালো বেচাকেনা করছে। আশেপাশে দিয়ে ঘোরাফেরা করার সময় যেটা বুঝতে পারলাম অনেকটা কম দামেই বই বিক্রি হচ্ছে। বইপ্রেমীরা ভীষণ খুশি এই ব্যাপারটায়। আমি মোটামুটি সবগুলো দোকান ঘুরে দেখলাম। বই নিতে ইচ্ছে করলেও ইচ্ছে করে নেইনি। আসলে নানান কারণে একটু ঝামেলার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি ইদানিং। আর একটু তাড়া ছিল সেদিন। এজন্য বেশি সময় না থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম বইমেলা থেকে।
আমরা দিন দিন যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়া আর মুঠোফোনের দিকে আকৃষ্ট হয়ে যাচ্ছি তাতে করে আমার কাছে অনেকটা মনে হয় যে আমরা মানসিক রোগী হয়ে যাবো একটা সময়। অবসর সময়ে বই হতে পারে আমাদের শ্রেষ্ঠ বন্ধু এবং বিনোদনের সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম। তাই আমি বলব কাউকে লাখ টাকা বা হাজার টাকা দিয়ে দামি উপহার দেওয়ার চাইতে কয়েকটা বই কিনে দিতে। সারা জীবন বন্ধু হয়ে থাকবে আপনার দেওয়া এই বইটা। মানুষ নষ্ট মোবাইল অনেক সময় বিক্রি করে বা ফেলে দেয় কিন্তু বই হাজার পুরনো হলেও কখনো ফেলে দিতে দেখিনি আমি। সেটা পড়ুক বা না পড়ুক। তাই পৃথিবীর সব থেকে দামি উপহার হলো এই বই। আসুন আমরা সকলে বেশি বেশি বই পড়ি এবং নিজের জ্ঞানের পরিধিকে আরো বিস্তৃত করি।





সত্যি বলেছেন ভাইয়া বই মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু, সবাই ঠকালে বই কখনো মানুষকে ঠকায় না। আর অনেক সময় এমন হয় কাছে থাকলেও বই মেলার সময় আর থাকা হয় না। যাইহোক মেলার শেষ দিন হলেও তো আপনি বই মেলায় যেতে পেরেছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
বিপদে এই একটা বন্ধুই সব সময় আমাদের পাশে থাকে। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। দোয়া করবেন। আর ভালো থাকবেন।
আসলে আগে মানুষ বিনোদন নেওয়ার জন্য বই পড়তো আর এখন বিনোদন নেওয়ার জন্য মুঠোফোনের ভিতরে চলে যায়। বই পড়ায় আমাদের জন্য খুবই দরকার কিন্তু আমরা পড়তে চাই না। যাইহোক আপনার বই মেলায় ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। যদিও বা আপনি সেখান থেকে বই ক্রয় করেননি তারপরে আপনি সেখানে গিয়ে কিছু সময় কাটিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বই থেকে আমরা নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছি বলেই আজ সমাজটা দিন দিন অধঃপতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যত দ্রুত এই সত্য টা উপলব্ধি করতে পারবো, ততোই আমাদের জন্য মঙ্গল।
হয়ে যাব কি বলছেন, আমরা তো অলরেডি মানসিক রোগী হয়ে গেছি। সোশ্যাল মিডিয়া, ইন্টারনেট, ফোন আমাদের এতটা খারাপ ভাবে গ্রাস করেছে যে আমরা সামনা সামান্য ব্যাপার এ ডিপ্রেশনে চলে যাই।
কিছুদিন আগে আমিও বইমেলা থেকে ঘুরে আসলাম। যদিও আপনারই মত আমারও একই অবস্থা। বই খুব বেশি একটা পড়ি না, তবে বই দেখলে কিনতে ইচ্ছা করে।
আমরা আসলে নিজেদের ওভার স্মার্ট করতে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছি। আর এভাবেই যদি চলতে থাকে তাহলে একটা সময় আমাদের বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে পেতে সামাজিক প্রাণী থেকে অসামাজিক প্রাণীতে পরিণত হতে বাধ্য করবে ।