এই ফাগুনী পূর্ণিমা রাতে চল পলায়ে যাই 🤪🥰🤗

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

নমস্কার,,

গতকাল সন্ধ্যার কথা। খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে গেছিলাম। হঠাৎ করেই আমিত দা ফোন করলো,, রিসিভ করতেই বললো, "সন্ধ্যে বেলা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে চলে আসিস। আজকে সাত বছরের প্রেমের সম্পর্ক শেষ করব বিয়ে করে।" আমি আগে থেকেই জানতাম অমিতদা এভাবেই বিয়ে করবে কিন্তু সেই দিনটা কবে আসবে এটা আর জানা ছিল না। আসলে ছেলে মেয়ের কারো বাড়ি থেকে ব্যাপারটা মানছিল না। কিন্তু তারা দুজন দুজনকে ছাড়া থাকবে না। অনেক চেষ্টা করেছে নিজেরা বাড়িতে মানানোর জন্য। কিন্তু কোন লাভ হয় নি। বলে রাখি অমিতদা আমার বন্ধুর বড় দাদা।

IMG_20220924_080633.jpg

IMG20220923203930.jpg

আমি একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম কারণ এই ধরনের বিয়েতে অনেক সময় সাক্ষীর প্রয়োজন হয়। আমাকে যদি হঠাৎ করে সাক্ষী বানিয়ে দেয় আর পরবর্তীতে যদি মেয়ের বাড়ি থেকে কোন মামলা করে তাহলে সাক্ষীকে হ্যারাসমেন্ট পোহাতে হবে। তাই ইচ্ছে করেই একটু দেরি করে রওনা দিলাম। সন্ধ্যেবেলা ওই রাস্তাতে যা জ্যাম সেটা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। প্রায় দেড় ঘন্টা লেগেছে শ্যামলী থেকে ঢাকেশ্বরী পৌঁছাতে। আমি ভেবেছিলাম বিয়েটা হয়তো হয়ে গেছে। কিন্তু পৌঁছানোর পর দেখি মেয়ে সাজগোজ করে রেডি ছেলেকে ধুতি পরানো হচ্ছে। খুব বেশি মানুষজন ছিল না, গুটিকয়েক পরিচিত মানুষজন উপস্থিত ছিল মন্দিরে। শুনতে পারলাম মেয়ে পক্ষের কেউ সেখানে উপস্থিত নেই। অমিত দার মামা-মামী অবশ্যই উপস্থিত ছিল বিয়েতে।

IMG20220923204632.jpg

IMG20220923204645.jpg

প্রথমে মনে হয়েছিল বিয়ের জন্য আলাদা কোন জায়গা হয়তো নির্ধারণ করা আছে মন্দিরে। তারপর দেখি সেরকম কোন ছায়া মন্ডপ নেই। একদম সাদামাটা ফ্লোরের মাঝেই আসন পেতে বিয়ের কাজ শুরু করলেন পুরোহিত মশাই। আমি ভীষণ এক্সাইটেড ছিলাম কারণ এই ধরনের বিয়ে এই প্রথম আমার সামনে হচ্ছে। যতটা পারি মন দিয়ে দেখছিলাম পুরো ব্যাপার স্যাপার গুলো। তবে আমার কাছে যেটা মনে হলো মন্দিরে গিয়ে এবং অনুষ্ঠান করে যে বিয়েগুলো হয় এদুইয়ের মাঝে বেশ পার্থক্য আছে। অনেক টা দায়সারা দেওয়া কাজ বলা যায়।

IMG20220923205729.jpg

IMG20220923203226.jpg

IMG20220923211416.jpg

সে যাই হোক মেনে নিতে হবে এখন। কিছু করার নেই। দাদা এবং বৌদি কে দেখলাম একটু কান্না কাটি করলো। সারা জীবনের ব্যাপার, বাবা মাকে না জানিয়ে এভাবে নিজেরা বিয়ে করছে। বিয়ে শেষ হলে সবাই এক সাথে দাড়িয়ে কিছু ফটোসেশন করলো। তারপর একটা গাড়ি নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিল। খাওয়া দাওয়ার আয়োজনটা আর কয়েকটা দিন পর করবে । আমার জন্য বেশ ভালো একটা অভিজ্ঞতা ছিল পুরো ব্যাপারটা।

Sort:  
 3 years ago 

দাদা যাই বলেন হেট লাইনের লেখাটি দেখে মনে করেছি ৷আপনি আজ ফাটাফাটি ব্লগ শেয়ার করেছেন৷ গানটি সত্যি বলতে অনেক রোমাঞ্চকর একটি গান৷
ভালোবাসা ভালোবাসা ভালোবাসা good decision congratulation .সত্যি ভালোবাসা যে এখন মন থেকে হয় ৷তার বাস্তব প্রমান ৷আমি সত্যি আনন্দিত ৷
তবে শুধু একটা বিষয় মা বাবার আশীর্বাদ পাওয়া হলো না ৷বলতে গেলে এক দিকে ভালোবাসা আর এক দিকে প্রেম ৷
যা হোক ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা যেন দুই পরিবার মেনে নেয় ৷

দাদা আরেকটা কথা সাক্ষী হয়েছিলেন কী?????

 3 years ago 

না রে ভাই, সাক্ষী আর হতে হয় নি কাউকেই। কোট ম্যারেজ করলে তাহলে হয়তো সাক্ষীর প্রয়োজন হত। আমি চাই খুব তাড়াতাড়ি যেন দুজনের বাড়ি থেকেও বিয়ে টা মেনে নেয়। অনেক ভালো থাকবেন।

Luckily you are not late for the event. Congestion sometimes often shifts the schedule that we have prepared carefully.

Imagen2.png
CONGRATULATIONS

This post has been upvoted with @steemcurator09/ Curated by: @ridwant

 3 years ago (edited)

এভাবে বিয়ে করার আলাদা একটা মজা আছে।যদিও অনেকটা কষ্ট হয় বাবা মা কে ছাড়া কোন আনুষ্টানিকতা ছাড়া বিয়ে করতে। দুজনকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। দুজনের সুখে থাক ভাল থাক এই কামনা করি।

 3 years ago 

মজা আছে এটা ঠিক,, তবে পরবর্তিতে যদি বাড়ি থেকে ভালোভাবে মেনে নেয় তাহলে আরো বেশি ভালো লাগবে। অনেক ধন্যবাদ আপু

 3 years ago 

আসলে ভাইয়া টাইটেলটা দেখে আমি ভেবেছিলাম হয়তো আপনি টাইটেলের লেখা গানটি কভার করেছেন। কিন্তু ঘটনাটা দেখার পর মনে হচ্ছে সত্যিই গানের সাথে কিছুটা মিলে গেল। আপনার দাদার বন্ধু সাত বছর প্রেম করার পর বাড়ি থেকে না মেনে নেওয়ায় তারা নিজেরাই বিয়ে করছে এটা দেখে ভালো লাগলো। আসলে ঠিক বলেছেন এরকম বিয়েতে সাক্ষী হলে আবার পরে ঝামেলা পোহাতে হয়। অনেক দেরি তে গিয়েও বিয়ের আগেই পৌঁছে গিয়েছেন। তবে দুজনকে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো।

 3 years ago 

সাক্ষী যে শেষমেশ হতে হয় নি এটাই অনেক বড় পাওয়া ছিল 😅। একটা যে শুভ পরিণয় হয়েছে দুজনের ভালবাসার এটা সত্যিই অনেক ভালো একটা দিক। ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম যে আমার ছোড়দা মনে হয় কাউকে নিয়ে পালিয়েছে 😄 না অবশেষে আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। পুরোটা পড়ে বুঝতে পারলাম এটা আমার ছোড়দার পালানোর গল্প না। যাহোক পড়ে খুব ভালো লাগলো যে অমিত দার সাত বছরের প্রেমের অপেক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটলো।তবে ওনাদের বাবা মায়ের কথা ভেবে একটু খারাপ লাগছে তারা কষ্ট পাবে এভাবে বিয়ে করাতে। কিন্তু ওনাদের উচিত ছিল মেনে নিয়ে পারিবারিক ভাবে বিয়েটা দেওয়া। দুজনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ❤️❤️❤️

 3 years ago 

আমি তো কখনো বিয়ে করব না বড়দি 😅,, সন্ন্যাস নিয়ে নেব 🤪। সত্যি বলতে আমার নিজেরও কষ্ট হচ্ছিল ওদের বাবামার কথা ভেবে। কি আর করা,, এখন যত তাড়াতাড়ি সবকিছু মেনে নেবে ততই ভালো 🙏

 3 years ago 

যত যাই হোক না কেন ভালোবাসার মানুষগুলো যদি সারাটা জীবন একসাথে থাকে সেটাই অনেক। আর তাদের এত বছরের ভালোবাসা বিয়েতে রূপান্তরিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন অতিবাহিত করার পথে এগিয়ে গিয়েছে সেটাই তো বড় কথা। আপনার দাদা বৌদির জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল। তাদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক এবং দুই পরিবারই যেন তাদেরকে মেনে নেয় এটাই প্রত্যাশা করি।

 3 years ago 

একদম যথার্থ বলেছেন আপু। আমিও চাই খুব তাড়াতাড়ি যেন পারিবারিকভাবে তাদের বিয়েটা স্বীকৃতি দেয়। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য

 3 years ago 

এই ধরনের বিয়ের অনুভূতিটি আমার নাই কারণ এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন কোন সময় হয়নি। তারপরও আপনার শেয়ার করা লেখাগুলো পড়ে মনে হচ্ছে যদি এই ধরনের একটা বিয়ের সাক্ষী হতে পারতাম তাহলে কতই না ভালো লাগতো। তারপরও আমি বলতে চাই আপনার দাদা বৌদি অনেক ভালো কাজ করেছে কেননা ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকলে সারা জীবনটা হাসিমুখে কাটিয়ে দেয়া যায়। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি তাদের পরিবার খুব তাড়াতাড়ি বিষয়টি মেনে নেবে।

 3 years ago 

আমিও সারা জীবন শুধু অন্যের গল্প শুনেছি পালিয়ে বিয়ে করার,, এই প্রথম নিজে এমন কোন ঘটনা সামনে থেকে দেখলাম। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

 3 years ago 

মন্দিরে গিয়ে এবং অনুষ্ঠান করে যে বিয়েগুলো হয় এদুইয়ের মাঝে বেশ পার্থক্য আছে।

একদম ঠিক বলছেন দাদা। মন্দির হল পবিত্র জায়গা। মন্দির সাধারণত একটু সাদা মাটা হয়।যাক অবশেষে পূর্ণতা পেল ৭বছরের ভালোবাসা। দেখে ভালো লাগল। অন্য দিকে মা বাবা কে না জানিয়ে বিয়ে করছে। মা বাবা কস্ট পাবে আর মা বাবা আশীর্বাদ নেয়া হল না।উনাদের জন্য অনেক শুভকামনা রইল। বাড়ি লোক যেন তাড়াতাড়ি মেনে নেয় ভগবান কাছে এই প্রাথর্না করি।

 3 years ago 

হ্যাঁ দিদি অনেকটা সাদামাটা ভাবেই বিয়ের অনুষ্ঠানটা সম্পন্ন হয়েছে। অতি দ্রুত যেন পারিবারিকভাবে মেনে নেয় এই বিয়ের সম্পর্ক টা ঈশ্বরের কাছে এমনটাই প্রার্থনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.034
BTC 111081.32
ETH 4326.18
USDT 1.00
SBD 0.83