ঢাকা ইসকন মন্দিরে প্রার্থনায় একদিন
নমস্কার,,
সময় সুযোগ পেলেই মন্দিরে গিয়ে নিজেকে সমর্পণ করার অভ্যেসটা আমার ছোট বেলা থেকেই। ভালো লাগে আমার তীর্থস্থান গুলোতে যেতে। আমার ব্লগ যারা মাঝে মধ্যে পড়েন তারা হয়তো অনেকেই এই ব্যাপারে জানেন।
এই তো কদিন আগের কথা । ইসকন মন্দিরে গিয়েছিলাম। ঢাকা ইসকন মন্দিরে এটা দিয়ে আমার দ্বিতীয় বার যাওয়া হলো। ভার্সিটির কোচিং করতে এসে একবার গিয়েছিলাম। এবার তো বেশ দীর্ঘ সময় পর আসলাম। আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছে চারপাশে। নতুন দশ তলা একটা বিল্ডিং নির্মাণাধীন আছে। বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে সেখানে। কাজ শেষ হয়ে গেলে দারুন লাগবে দেখতে মন্দিরটা।
মন্দিরে পৌঁছাতে আমার দুপুর হয়ে গিয়েছিল। যাওয়ার সাথে সাথেই দেখি ভোগ নিবেদন করে কীর্তন আরতি শুরু হয়ে গেছে। আমিও সবার সাথে কীর্তনের তালে তাল দিয়ে যুক্ত হয়ে গেলাম। আরতি আমার সবসময়ই ভীষণ প্রিয়। কীর্তনের তালে নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলি একদম। সে দিন ভাগ্য টাও বোধ হয় প্রসন্ন ছিল। কারণ আরতির পর পরই মন্দির বন্ধ হয়ে যেত। আমি সময় মত না পৌঁছলে হয়তো ভগবানের দর্শন টা আর পেতাম না।
আরতির পর চারদিকটা ঘুরে দেখলাম। মায়ের মন্দির, ভোলানাথের মন্দির সব দর্শন করলাম। প্রণাম করে আশির্বাদ চাইলাম। ছুটির দিন হওয়ায় বেশ ভালো রকমের লোক সমাগম হয়েছিল। তারপর বাইরের স্টলের দিকে গেলাম। সত্যি বলতে আমার নতুন বই দেখলেই কিনতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পড়া আর হয়ে ওঠে না কখনো। তাই এবারে নিজেকে খুব কষ্ট করে কন্ট্রোল করলাম। এদিক সেদিক একটু হাঁটাহাঁটি করার সময় হঠাৎ করেই কানে আসলো সাউন্ড বক্স দিয়ে ডাকছে। ভাগবত গীতা পাঠ হবে। সাথে একটু নাম কীর্তনও হবে। আমাকে আর পায় কে। দৌড়ে চলে গেলাম। সবার মাঝে বসে গেলাম।
বেশ লম্বা সময় ধরেই কীর্তন করার পর শুরু হলো গীতাপাঠ। মন দিয়েই শুনলাম সবটা। আসলে প্রভু এত সুন্দর করে কথা গুলো বর্ণনা করছিলেন যে, মনে হচ্ছিল কানে যেন কেউ মধু ঢেলে দিচ্ছে। অন্য একটা জগতে যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম। সব শেষ করে নিরিবিলি তে কিছুক্ষণ একা একা বসে থাকলাম। তারপর প্রণাম সেরে চলে আসলাম।
ভক্তি আর মুক্তির কথা শুনতে সব সময় ভালো লাগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, আমরা কথাগুলো শুনে কানেই রেখে দেই। বাস্তবিক জীবনে তার প্রয়োগ কখনো করিনা। প্রয়োগ করার চেষ্টাও করি না। ঈশ্বরের দেখানো পথে যদি নিজেদের একটু হলেও পরিচালনা করতে পারতাম তাহলে হয়তো জীবনের মানে টা কিছুটা হলেও বুঝতে পারতাম। তবুও চেষ্টা করি পাপী এই মন টাকে যদি একটু হলেও সৎ পথে নিয়ে চলতে পারি। ঈশ্বরের কাছে এটাই প্রার্থনা।
মাঝে মাঝে মন্দিরে গেলে মন ভালো হয়। আমাদের মায়াপুর ইস্কন মন্দিরের সন্ধ্যা আরতি দেখার মতো। অনেক সময় ধরে হয় আর ঐ সময়ে এমন সুন্দর গান হয় যে না নেচে থাকা যায় না। ধন্যবাদ।
আমি দুইবার গিয়েছি মায়াপুরে দাদা। আর শেষ বার আরতি দেখেই ফিরেছি। কি যে ভালো লেগেছে বলে বোঝাতে পারবো না একদম। পুরো অন্য জগতে যেন নিয়ে যায় ভক্তির দ্বারা । ভালো থাকবেন দাদা।
সত্যি অসাধারণ লাগে। আমি তারকেশ্বর মন্দিরের আরতি, দক্ষিণেশ্বর ও আদ্যাপীঠ মন্দিরের আরতিও দেখেছি। তারকেশ্বরে আরতির সময় ঢাক ঢোলের সাথে শিঙা ও বড়ো বড়ো ডমরু বাজে। সে এই স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আর আদ্যাপীঠে আরতির সময় আদ্যাস্তোত্র পাঠ হয়। এই সব অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ধন্যবাদ ভাই।
Steem Sri Lanka Discord Channel
✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵✵
জয় বা ভোলানাথ ৷
সজিব দা খুব ভালো লাগলো আপনি ইস্কন মন্দিরে গিয়েছেন ৷আর তীর্থস্থান যাওয়া তো পূর্নের কাজ ৷আর গীতা পাঠের কথা বলছেন ৷ আসলে আমাদের সনাতন ধর্মীয় মানুষের তো প্রতিদিন গীতা পাঠ করা উচিত ৷ কিন্তু আমরা অলসতা করে কেটে দেই ৷
যা হোক আপনি গুরুদেবের মুখে কিছু ধর্মকথা শুনেছেন খুব ভালো ৷
আমি না গিয়ে আপনার লেখা কথা গুলো শুনেই অনেকটা তৃপ্তি পাচ্ছি ৷ ঈশ্বর ভগবান আমাদের সবাইকে ভালো রাখুক সুস্থ রাখুক এমনটাই কামনা করি ৷
হ্যাঁ ভাই আমাদের উচিত যতটা সম্ভব ঈশ্বরের আরাধনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা। সবদিকেই কল্যাণ হবে তাহলে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাদের সকলের মঙ্গল করুক 🙏। ভালো থাকবেন।
আমাদের ওয়েস্ট বেঙ্গলের ইসকন মন্দিরে আমি কয়েকবার গেছি একটা আলাদা শান্তি অনুভব হয় সেখানে গেলে। গীতার মধ্যে মানুষের জীবনের সমস্যার সমাধান গুলো খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যায় ,গীতা পাঠ শুনলে সমস্যা থেকে উত্তরণের একটা উপায় পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে এরকম সুমধুর গীতা পাঠ শোনার সুযোগ হলে জীবন ধন্য হয়ে যায়।
ভক্তির মধ্যে মুক্তি লুকিয়ে রয়েছে ভাই ।
বাহ্ খুব সুন্দর করে গুছিয়ে কথা গুলো বলেছেন ভাই। অনেক ভালো লাগলো সত্যি। ভালো থাকবেন সবসময়।
ইসকনের পরিবেশ সব সময় মন মাতানো হয়। আপনি মায়াপুর ইসকনে এসেছেন কিনা জানি না তবে মায়াপুর ঈসকন তো অনেকটা জায়গা জুড়ে আর ২৪*৭ হরিনাম সংকীর্তন হয় একটা ঘরে। সে পরিবেশ ভীষণ মনোরম। আপনি এই পোস্টটা শেয়ার করছেন দেখে বাংলাদেশের ইসকনটাও দেখা হয়ে গেলো।
আমি মায়াপুরে দুইবার গিয়েছি এবং বছর তিনেক আগে যখন গিয়েছিলাম তখন সন্ধ্যা আরতি করেই ফিরেছিলাম। মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম এক কথায় ঐ দিন।