প্রাচ্যের অক্সফোর্ড থেকে নিউমার্কেট
নমষ্কার,,
আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি সবাই ঈশ্বরের আশীর্বাদে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও চলছি মোটামুটি। শরীরটা খুব একটা ভালো না। আসলে কয়েকটা দিন ধরে প্রচন্ড পরিমানে দৌড়াদৌড়ি হচ্ছে। রেস্ট পাচ্ছিনা সেইভাবে। সেজন্য হাত-পা কেমন ব্যথা হয়ে আছে। আজ বিকালের দিকে বেশ ঘুমিয়েছি। অনেক কয়েকদিন পর বিকালে এমন ঘুমিয়ে বেশ আরাম লাগছে।
আমার পোস্টে লিখেছি এর আগেই যে ছোট বোনরা বেড়াতে এসেছে ঢাকাতে। দিনের বেশিরভাগ সময় ওদের সাথেই ঘোরাঘুরি করতে শেষ। আজকে গিয়েছিলাম ঢাকা ইউনিভার্সিটি ঘুরতে। আসলে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল নিউমার্কেট যাবে ওরা। ঘোরাঘুরি করবে সব জায়গা। কোন কিছু পছন্দ হলে কিনবে। যেহেতু দুটো এরিয়া পাশাপাশি। তাই কিছুটা সময় ঢাকা ভার্সিটির চারপাশের এরিয়া ঘুরিয়ে নিয়ে আসলাম। বোন শুরুতেই বলেছিল কার্জন হল দেখতে যাবে। বাঙালির গৌরবজ্জ্বল অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই কার্জন হল। আমিও তাই না করলাম না। প্রথমেই গিয়েছিলাম কার্জন হলে। অনেকদিন পর আমি এই সাইডে ঘুরে আসলাম। আমারও ভালই লাগছিল।
আমি আর আমার এক ছোট ভাই সুন্দর বাতাসে নিরিবিলিতে বসে থাকলাম। আর বোনদের বললাম চারদিক ঘুরে দেখতে। যত মন চায় তত ছবি তুলতে। মজার ব্যাপার হলো ছবি তোলার জন্যই মনে হয় ওদের এদিকে ঘুরতে আসা। সে যাই হোক। ভালোই সময় কাটানোর পর রিক্সা করে রওনা দিলাম নিউমার্কেটের দিকে। মাঝে দোয়েল চত্বর টিএসসি সবকিছুই ঘোরা হয়ে গেল। আমি আসলে তখনো বুঝিনি নিউমার্কেটে যাওয়ার পর আমার কপালে কতখানি দুঃখ অপেক্ষা করে আছে।
নিউমার্কেটের এরিয়া টা আমার ভীষণ অপছন্দের। এত কোলাহল আর এত মানুষ। তীব্র গরমে নাজেহাল হওয়ার অবস্থা পুরোপুরি। কিচ্ছু করার নেই বোনদের ইচ্ছে তারা ঘুরবে সবকিছু। আমি ও পেছন পেছন হাঁটতে থাকলাম। দুপুর ২ টা পার হয়ে গেছে তখন। পেটে খিদে চুচু করছে। দিদি বাড়িতে রান্না করে নিয়ে বসে আছে। আর এদিকে আমার বোনদের ঘোরাফেরা যেন শেষ হচ্ছে না। মনে হয় প্রতিটা দোকানে গিয়ে একটু একটু করে দেখেছে। পাগল হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। জামা ব্যাগ জুতো অরনামেন্টস যেখানে যেটা পেয়েছে সবকিছু দেখেছে এবং কিনেছে। আমি আর আমার মামাতো ভাইয়ের সেসব জিনিস টানতে টানতে পুরো বারোটা বেজে গেছে।
ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকাল পাঁচটা। তবু যেন ওদের শেষ হয় না। অবশেষে আমি জোর করেই বাড়ির দিকে নিয়ে আসলাম। তারপর হাত মুখ ধুয়ে খাওয়া দাওয়া করে যেন একটু শান্তি পেলাম। আমার নিজের কোন ভাষা নেই আর শপিং করার এই অভিজ্ঞতা নিয়ে। মনে মনে ভাবছি এদের জামাই যখন হবে ওই বেচারাদের জীবনে কত যে দুঃখ আছে । হিহিহিহি। আজ এখানেই শেষ করলাম। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।