আমার গহীনে
নমষ্কার,,
পরিচিত সেই জায়গা। মাস তিনেক আগেও ঠিক এখানেই এসেছিলাম। একই জয়াগায় বসে বসে নিজের উন্মাদ রূপ দেখেছি নিজেই। আজ আবার সেই সোডিয়াম লাইটের নিচে। আলোর তীব্রতা আগের মতই আছে। চারদিক বেশ নির্জন। রাতের নিস্তব্ধতার সাথে সাথে আমিও কেমন যেন চুপ হয়ে গেছি। এই আধার সেদিন আমার সাথে গল্প করে নি। উথাল পাতাল ঢেও টা কমে নি আর তাই। তবে আজ খুব আপন করে নিয়েছে নির্জনতা। আমার সাথে হরেক রকমের গল্প। মন খারাপের কোন উপায় নেই।
চেনা রাস্তা সেই আগের জায়গাতেই এসে থেমে আছে। সোডিয়াম লাইট কখনো জ্বলছে আবার কখনো নিভছে। সময় টাও থেমে নেই। থেমে নেই আমরা কেউ। থেমে গেছে অতীত।
কালো আঁধার আমাকে হঠাৎ করেই জিজ্ঞাসা করল, "তুই কি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র?"
- আমি বললাম হ্যাঁ।
"তাহলে বহুরূপী মৌল পড়েছিস? কয়েকটা নাম বলতে পারবি?"
-আমি বললাম কার্বন সালফার ফসফরাস এমন অনেক আছে।
"বেশ তো নাম জানিস দেখি। এদের সামনে থেকে আলাদা করে দেখেছিস?"
- না তো সেটা হয় নি কখনো দেখা।
"বয়স তো তোর কম হলো না। কত জনের সাথে ওঠাবসা মেলামেশা। তবু চিনতে পারলি না!"
- মুচকি হেসে উঠলাম। মাটির দিকে তাকিয়ে রইলাম।
"একই মৌল যখন এক এক সময় এক এক রূপ প্রদর্শন করে তখন হল সেটা বহুরূপী মৌল। জানিস এরা খুব চালাক। কাউকেই কষ্ট দিতে চায় না। যখন যাকে পাবে তাকেই ধরবে। অপরকে আকৃষ্ট করার জন্য সব শেষ কক্ষপথে সবসময় একটা করে হাত বাড়িয়ে রাখবে। আয়নিক বন্ধন অথবা সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ করে ফেলবে। মজার ব্যাপার হলো যাকে আটকে ফেলবে সে বেচারা নিজেও আর বুঝে না যে কোন ফাঁদে পরে গেছে। চাইলেও আর মুক্তি নেই।"
আমার আর বুঝতে কিছুই বাকি রইলো না। জিজ্ঞেস করলাম, এত কিছু জানলে কি করে?
"তোর মত পথিক রোজ আমার আধারে এসে নিজেকে লুকাতে চায়। নিজের অজান্তেই নিজের কথা গুলো বলতে থাকে চুপি চুপি। আমার জন্মই তো নীরবে কেদে যাওয়া পথিকের সঙ্গী হওয়া। সেখান থেকেই এত কিছু জানা। না জানতে চাইলেও জেনে ফেলি।"
- জীবনকে অনেক ভাবে অনেক দিক দিয়ে দর্শন করেছো তাহলে। অনেক চোরা কান্নার সাক্ষী দেখা যায় তুমি।
রাতের আঁধার বেশ একটা অট্টহাসি দিল। তারপর অল্প কথায় বললো,
"জীবনকে জারণ বিজারণ হিসেবে দেখবি। কখনো ইলেকট্রন যদি দিতে হয় আবার কখনো কখনো ইলেকট্রন গ্রহণ করতে হয়। আমরা সবাই কেমিক্যাল রিয়েকশনের মধ্যেই বেড়ে উঠছি। এই রাসায়নিক বিক্রিয়া যেদিন সাম্যবস্থায় পৌঁছে যাবে সেদিন ভালো আর মন্দের তফাত কি দিয়ে করবি শুনি?"
- এত সহজ করে বলে দিলে!
"হ্যাঁ, সহজ। যা বলেছি দ্বিতীয়বার আর ভাবার চেষ্টাও করিস না। একবারে যেটুকু নিয়েছিস ওটুকুই তোর প্রাপ্তি।"
- চমৎকার কথা বলো তো তুমি।
" ঐ টুকু গুণ আছে বলেই সবাই আধারের এই নির্জনতাটাকে এত ভালবাসে। এত আপন করে চায়।
আর থাকিস না। আধারে বেশিক্ষণ থাকতে নেই। গহীনে হারিয়ে যাবি। নিজের আধারে ডুব দে। নিজের গহীনে হারিয়ে যা"।
কথা আর বাড়ালাম না। উঠে গা টা ঝারা দিয়ে নিলাম। দুই পকেটে হাত দিয়ে শিষ দিতে দিতে বাড়ির পথে রওনা হলাম। দূর থেকে যেন ভেসে আসলো কানে একবার,,,
"সময় করে আবার আসিস একদিন।"
ওয়াও খুব মজা লাগলো আপনার আর আধারের কথোপকথন শুনতে। আধারও আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে সব ভুলে সামনে এগিয়ে যাও। আশা করি আধারের কথা ফেলবেন না। শুভকামনা রইলো।
একদম আপু। দোয়া রাখবেন আর পাশে থাকবেন 🙏
হতে হবে ১৮ নম্বর গ্রুপের মৌল গুলোর মতো।কারো সাথেই কোনো দেনা,পাওনা ও রইবে আর ছেড়ে যাওয়ার,কাছে আসার যন্ত্রণাও রইবেনা।
আমি তো ঐ গ্রুপের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম 😉। বেস্ট কমেন্ট এভার