পরিবারে একের পর এক চলছেই ধাক্কা
নমস্কার,,
আজ সকাল আট টা। বাবার ডাক কয়েকবার কানে আসলো। তখনও এদিক ওদিক ঘুরছি শুয়ে থেকে। চোখ খুলে ওঠার আর নাম নেই। হঠাৎ করেই কানে আসলো বাবা বলছে, "আর দেরি করিস না, মাকে নিয়ে চক্ষু হাসপাতাল যেতে হবে"। সাথে সাথে একটা ঝটকা লেগে গেল। হঠাৎ কি হলো সকাল সকাল!! বিছানা থেকেই বললাম কি হয়েছে। বাবা বলল,"মায়ের চোখে রড দিয়ে ঘুতো লেগেছে ছাদে ঝাড়ু দিতে গিয়ে।" আমার আর বুঝতে কিছু বাকি রইলো না।
সাথে সাথে উঠে কোন রকমে চোখে জল দিয়ে মায়ের ঘরে গিয়ে দেখি মা বিছানায় শুয়ে ব্যাথা তে কেমন একটা করছে। সবটা শুনলাম আর চোখটা দেখার চেষ্টা করলাম। দেখি অনবরত জল পরেই যাচ্ছে। চোখ লাল। চোখ খুলতেই পারছে না। মাকে বললাম একটু ঠিক হয়ে নাও। এখনই যাব ডাক্তারের কাছে। মা একটু রেডি হয়ে নিল। বলা যায় ঘুম থেকে ওঠার ৪০ মিনিটের মাঝেই হাসপাতালের দিকে রওনা দিলাম।
সবচেয়ে ভালো দিক আমাদের উপজেলা তে একটা চক্ষু হাসপাতাল আছে যেটা সকাল ৮ টা থেকে খোলা থাকে। আর সেবার মনটাও বেশ ভালো। অত সকালে প্রাইভেট কোন ক্লিনিকে চোখের ডাক্তার পাওয়া সম্ভব নয় আমাদের এখানে। তাই ওখানেই নিয়ে যাই। সকাল সকাল গিয়েছিলাম বলে ভিড় তেমন ছিল না। চার জনের পরেই সিরিয়াল পেয়ে গেছিলাম। তারপর ডাক্তার দেখে মায়ের চোখে ড্রপ দিল। আর বললো এটা এখনই কমে যাবে। ভেতরে আঘাত আছে। চোখটা ব্যান্ডেজ করে দিতে হবে।
মোটামুটি তিন রুম ধরে পাকিয়ে এটা ওটা চেক করে তারপর মায়ের চোখ টা ব্যান্ডেজ করে দিল। সাথে কাল থেকে চারটা ড্রপ দিতে বললো। আর আজ থেকে খাওয়ার ওষুধ দিল দুইটা। প্রথমে মা একটু আরাম পেলেও কিছুক্ষণ পর থেকে আবার যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেল। আমি শুধু বললাম কষ্ট করে বাড়িতে চলো, তারপর ওষুধ খেলে একটু আরাম পাবে।
মায়ের চোখের সমস্যা আগে থেকেই। লাস্ট ৪,৫ বছর হলো বেশি হয়েছে। গ্লুকোমা রুগী মা। মায়ের জন্য অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কোলকাতা, চেন্নাই সব খানে গিয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হয় নি। দিন যত যাবে চোখের জ্যোতি কমতে থাকবে। কিছু করার নেই। তাই আজ যখন এক চোখে ব্যান্ডেজ করে নিয়ে আসছিলাম মায়ের হেঁটে আসতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। আমি ধরে ধরে সব করে দেই।
আসলে আমার বলার কোন ভাষা নেই। আজকে যে অ্যাকসিডেন্ট টা হলো এটার সাথে আমরা মোটামুটি পরিচিত। মা এমন অনেক বার চোখে আঘাত পেয়েছে। অনেক বার ব্যান্ডেজ করতে হয়েছে। একবার তো চোখের মণির পাশে কেটে গিয়েছিল। প্রতি বার অল্পের জন্য চোখটা বেচেঁ যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় ঈশ্বর এমন কেন করেন মায়ের সাথে!! মানুষটার চোখ তো এমনিতেই শেষ। তারপরেও বারবার কেন ওখানেই আঘাত দিতে হবে!!! মুখ বুজে যা হচ্ছে শুধু সহ্য করে চলেছি একের পর এক। যা হয় সেটা নাকি ভালোর জন্যই হয়। আমি এখনও বুঝে পাই না এখানে আসলে ভালো টা কই!!!
ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে আমার একটুও ভালো লাগলো না। এইতো কদিন আগে আপনি অসুস্থ ছিলেন, আবার বাবাও অসুস্থ হয়েছিল। এখন আবার মায়ের চোখে সমস্যা হলো। সব মিলিয়ে খুবই অস্বস্তিকর সময় পার হচ্ছে আপনার পরিবারে। একের পর এক বিপর্যয় সত্যিই মেনে নেওয়া খুব কঠিন। আপনার পরিবারের লোকজনের সাথে আর যেন এরকম কোন বিপদ না হয়, সৃষ্টিকর্তার কাছে সেই প্রার্থনাটুকুই করছি। আপনার পুরো পরিবারের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাই।
কি আর বলবো ভাই, বিপদ যখন আসতে থাকে তো আসতেই থাকে। দোয়া করবেন খারাপ সময়গুলো যেন দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারি। অনেক ভালো থাকবেন ভাই এবং এভাবেই পাশে থাকবেন সব সময়।
পোস্টটি পড়ে খুব খারাপ লাগছে ভাইয়া। আপনার আম্মু এমনিতেই গ্লুকোমা রোগী তার উপর আবার এখন একটা আঘাত পেয়েছে। দোয়া করি যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। কয়েকদিন আগে শুনেছিলাম পরিবারের সবাই খুব অসুস্থ এখন আবার আপনার আম্মু অসুস্থ। আশা করি খুব শীঘ্রই সব ধাক্কা গুলো সামলিয়ে উঠতে পারবেন। তবে আমি বিশ্বাস করি যে যা হয় ভালোর জন্যই হয়। হয়তো কিছু সময় সেই ভালোটা আমাদের চোখে পড়ে না যার কারণে আমরা বিরক্ত হয়ে যাই এসব কিছুর উপর।
যাই হোক আপনার জন্য অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল ভাইয়া।
আমি নিজেও জানি না আপু আসলে ভালো টা কোন দিক দিয়ে হচ্ছে। চেষ্টা করছি সবকিছু সামলে নিতে। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন আপু।
আপনার পোস্টটি পড়ার পরে অনেক খারাপ লাগলো ভাইয়া। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তা আপনার মায়ের চোখ দ্রুত ঠিক করে দিবেন। আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছি পরিবারের মধ্যে বিপদ আসতে শুরু করলে যেন কোন ভাবেই বন্ধ হওয়ার নাম নেয় না। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যেন আপনারা সকল বিপদ ঘাটিয়ে আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন।
হ্যাঁ ভাই,, বিপদ যখন আসে তখন সব দিক দিয়ে আসে। এখন আসলে সব কিছুকে জীবনের একটা অংশ মনে হয়। মানিয়ে নিতে চেষ্টা করি। অসংখ্য ধন্যবাদ সবসময় সুন্দর মন্তব্য করে আমার পাশে থাকার জন্য।
ভাইয়া আপনাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই। আসলে সৃষ্টিকর্তা যখন আমাদেরকে বিপদ দেন হয়তো সব পাশ থেকেই দেন। কিন্তু সবকিছু মেনে নেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। এমনিতেই মাসিমা চোখের সমস্যায় ভুগছেন এবং চোখের জ্যোতি কমে এসেছে তার মধ্যে চোখে আঘাত পাওয়া সত্যিই অনেক বাজে একটি ব্যাপার হয়েছে। আসলে একজন মা সন্তানের মুখ দেখতে পাবে না এই কথাগুলো ভাবতেই অনেক খারাপ লাগছে। তবে দোয়া করি তিনি যেন সুস্থ হয়ে উঠেন। 🤲🤲
মা এসব ভেবে মাঝে মাঝেই কাদে আর বলবে " কয়দিন পর আর কিছু দেখতে পাব না",, নিজেকে অনেকটা ক্ষীণ করে দেখে। তবু আমরা চেষ্টা করি মাকে সাহস দেওয়ার। এভাবেই চলছে। ভালো লাগলো আপু আপনার মন্তব্য পেয়ে। ভালো থাকবেন।
খুব খারাপ লাগলো আপনার মায়ের এই দুর্ঘটনার কথা শুনে। আসলে সবার সাথে প্রতিনিয়ত একটা না একটা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে এক্সিডেন্ট ঘটে যাচ্ছে। ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখন দিন যত যাবে এবং বয়স যত হবে ততই চোখের জ্যোতি কমতেই থাকবে। ব্যান্ডেস করাতে ভালোই হয়েছে। আপনার মায়ের জন্য দোয়া করি খুব তাড়াতাড়ি আপনার মা সুস্থ হয়ে যাবে।
আসলে গ্লুকোমা এমন একটা অসুখ যার কোন চিকিৎসা এখন পর্যন্ত নেই। যত বয়স বাড়ে চোখের দৃষ্টি তত কমে আসে। এটার জন্যই মাকে এত ভুগতে হচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
মানুষের অঙ্গের মধ্যে চোখ খুব সেনসিটিভ একটা অংশ। বেশি দরকার হয় না সামনা আঘাতেই বৃহৎ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অতো সকালে যে হাসপাতাল খোলা পেয়েছেন এবং ডাক্তার পেয়েছেন এটা দেখে ভালো লাগল। যাইহোক ভাই দোয়াকরি আপনার মা যেন দ্রুতই সুস্থ হয়ে যায়।।
হ্যাঁ এই চক্ষু হাসপাতাল টা বেশ সকাল থেকে খোলা থাকে যেটা সত্যিই অনেক ভালো দিক। আর অনেক মানুষের উপকার হয়। চিকিৎসা সেবার খরচ টাও বেশ কম। ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভাইয়া আন্টি কি কম দেখতে পায় জন্য চোখে এই আঘাত গুলো পায়? চশমা পরেও কি কোন কাজ হয় না। রড চোখের মধ্যে লেগেছে তার মানে ভালো ব্যথা পেয়েছে। তাও ভালো অল্পের মধ্যে দিয়ে গেছে। না হলে অনেক বড় এক্সিডেন্ট হতে পারতো। আশা করি ওষুধ খেয়ে কিছুটা আরাম পেয়েছে। আর ধৈর্য ধরেন ভাইয়া এক সময় সব ঠিক হয়ে যাবে। দোয়া রইল আপনাদের জন্য।
আসলে আপু আমার মায়ের চোখের এখন এমন অবস্থা যে মা শুধু সোজা তাকিয়ে যা সামনে আসে ওটুকু দেখতে পান। সাইডে কিছু দেখতে পান না। তাই জন্যই পাশ থেকে হঠাৎ করে আঘাত গুলো পান। আর মায়ের চোখের আর কোন চশমা নেই, একদম শেষ পাওয়ার পর্যন্ত দেওয়া। ইভেন কোন ওষুধ ও আর ডাক্তার দিতে চান না। দিন যত যাবে চোখের জ্যোতি কমতে থাকবে। কোন অপারেশন করেও আর কোন কাজ হবে না। বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার ডাক্তাররা সব এমন টাই বলে এখন।
দোয়া করবেন আপু। 🙏। ভালো থাকবেন।
আসলে শরীরের অনেক মূল্যবান একটি অঙ্গ হচ্ছে আমাদের চোখ।পুরো লেখাটা পড়ে তো আমি অনেক কষ্ট পেয়ে গেলাম।আন্টি যখন চোখে কম দেখে তাহলে উনাকে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। কাজ করতে গেলে এরকম অঘটন ঘটে যাবে।তাই নজরে নজরে রাখতে হবে।আশা করি ডাক্তারের ওষুধে ভাল কাজ করবে।আন্টির জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।
আসলে কাজ করতে বারণ করলেও কি আর শোনে!! এটা ওটা করতেই যায় সবসময়। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য। দোয়া করবেন। আর ভালো থাকবেন।
ভাইয়া আপনার পোস্টটা পড়ে সত্যি ভীষণ খারাপ লাগলো। আসলেই আপনাদের পরিবারে একের পর এক দুর্যোগ লেগেই আছে। তারপরেও মাকে অনেক সাবধানে রাখবেন ।যেহেতু বারবার চোখে আঘাত পায়। চোখে আঘাত পাওয়াটা ততটা ভালো নয়।এমনিতেই চোখের সমস্যা আছে এভাবে বার বার আঘাত পেলে তো খুবই সমস্যা হতে পারে। আর আপনি ঠিকই বলেছেন মানুষের জীবনে অনেক খারাপ কিছু হয়ে যায়, তবু সবাই বলে যা হয় ভালোর জন্যই হয়, কিন্তু আমরা ভালোটা খুঁজে পাই না। কষ্ট তখনই হয়।
যতটা পারি দেখেশুনে রাখার চেষ্টা করি আপু। আর মাকে সব সময় বারণ করি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে, কিন্তু মা মানতেই চায় না । এটা ওটা করতেই থাকে। তখনই বিপত্তি টা বাঁধে। দোয়া করবেন আপু। আর অনেক ভালো থাকবেন।