ভবঘুরে ছেলেটা || আবৃত্তির ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র
নমষ্কার,,
সকালে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া করার পর বেশ লম্বা সময় ধরে একা ছিলাম বাড়িতে। ভাবছিলাম একা আছি, কিছু একটা করতে পারলে খুব ভালো হতো তাহলে। উকুলেলে টা নেই সাথে । তাই গানটাও করার ইচ্ছে নেই। কাশি টা সবে মাত্র একটু কমেছে। এখনো গলা টা হালকা ভাঙ্গা ভাঙ্গা। ইচ্ছে করছিল একটা আবৃত্তি করি। কয়েক বার চেষ্টা করার সময় কাশি উঠলো বেশ। ভাবলাম হবে না। অতোটা ভালোও লাগছে না গলার স্বর টা। এমনিতেই বেশ ভারী গলা আমার। হালকা ভেঙ্গে থাকায় আরো কর্কশ লাগছে যেন। তবু ছাড়তে ইচ্ছে করলো না। ভাবলাম এভাবেই কিছু একটা তো করি।
চিন্তা করলাম এমন অবস্থায় অন্যের লেখা আবৃত্তি না করে বরং নিজের লেখা থেকেই কিছু একটা করি। নিজের লেখায় খারাপ কাজ হলেও অতটা আক্ষেপ থাকবে না। হিহিহিহি। তখন মনে হলো @tania69 আপুর কথা। বেশ কয়েকদিন আগে আমার একটা লেখা পড়ে আপু বলেছিল ওটা আবৃত্তি করতে। লেখাটার নাম ছিল "ভবঘুরে ছেলেটা"। তাই আজ ঐ লেখাটাই আবৃত্তি করে সবার মাঝে উপস্থাপন করছি।
ভবঘুরে ছেলেটা এখনো পিচ ঢালা রাস্তায় একা একা হেঁটে যায়
পরনে সেই ছেঁড়া জিন্স আর কুচকে ধরা একটা টিশার্ট
চটি জোড়া ক্ষয় হয়ে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছে গেছে
কে কি বলল, কে কি ভাবল , কোন ভ্রুক্ষেপ নেই
সে তো ভবঘুরেই
দশ টাকায় এক কাপ চা আর একটা সিগারেট
এই দিয়েই সকাল থেকে দুপুর
আর তারপর!!
তারপর দুই গ্লাস জলে গলা ভিজিয়ে ক্ষুধার্ত পেটটাকে ভালবেসে আলিঙ্গন করা
অগোছালো চুলের বাবরি আর মুখ ভরা দাড়িতে হাসিটাও ফুটে বের হতে চায় না
সবাই ওকে ভবঘুরে বলে
তাই কালো চাদরে নিজেকে গুটিয়ে ফেলেছে নিজের মতো করে
অথচ এই ভবঘুরে ছেলেটাও আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতো
সবাইকে আপন করে নিত
রংধনু দিয়ে ঘর সাজাতো
জোনাকির সাথে গল্প করতো
রূপকথার রাজা হত
কিন্তু আজ প্রবল দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছে তার রাজ্যে
তাই রাক্ষসপুরীর দৈত্যের কাছে সে আজ ভীত
অসহায়ের মত বরণ করে নিয়েছে নিজের পঙ্গুত্ব
পাশার দানে বারবার পরাজিত
তবে, ভবঘুরে ছেলেটারও দু চোখে ক্লান্তি আসে
শুকনো ওই দুটি চোখের পাতাও এক হয়ে যায়
সেও চায় কেউ একজন তো আসুক
কাঁধে বিশ্বাসের হাতটা রাখুক
তাকে আবার একটু গুছিয়ে নিক
শাসন বারনে আবদ্ধ করুক
কিন্তু কতক্ষণ আর সেই মধুচন্দ্রিমা!
সে তো ভবঘুরে
সময় কোথায় ওদিকে তাকানোর
যাক না চলে উচ্ছন্যে
কার কি আসে যায় তাতে!
ছেলেটা তো ভবঘুরেই
সত্যি বলতে গেলে আজ আবৃত্তি টা করে আমি শতভাগ সন্তুষ্ট হতে পারি নি। আমি যে ঘরে রেকর্ড করছিলাম কেমন যেন একটা এক্সট্রা ইকো আসছিল। যেটা আমার একদমই পছন্দ নয়। আবার রেকর্ড করার সময় মিনিমাম দশ বারের বেশি আমি আটকে গিয়েছি। ধুম করে কখনো কাশি চলে এসেছে। আবার কখনো কাশির জন্য কোথাও কোথাও ভয়েসটা একদম অন্যরকম হয়ে যাচ্ছিল। তার মধ্যে দুইবার পুরোটা রেকর্ড করতে পারি। সেখান থেকেই একটা বেছে নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করলাম। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।
নোট প্যাড টা যখন খুললাম আজ, দেখি অনেক কবিতা পরে আছে। যেগুলো আবৃত্তি করবো বলে ফেলে রেখেছি। কবে এসব হবে ঈশ্বর জানেন। তবে সব কিছুতে যখন বড্ড একঘেয়েমি চলে আসে তখন চেষ্টা করি নিজেকে নিয়ে অন্য কোথাও হারিয়ে যেতে কোন কাজের মাধ্যমে। আজকের ব্যাপারটাও তাই। এই কাজ গুলো যখন আমি করি কিছুটা সময়ের জন্য হলেও যেন অন্য কিছুতে ডুবে যাই। আমার এই অভ্যেস টা মন্দ লাগে না আমার কাছে। নিজেই নিজেকে আনন্দ দেই। হিহিহিহি।
অনেক ভাল লাগলো কবিতা আবৃত্তি। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন।
সজিব দাদা সর্দি কাশি হওয়া সত্ত্বেও অনেক চমৎকার ছিল আবৃত্তি টা৷ আমি তো মন দিয়ে শুনলাম ৷ কারন ইদানিং আপনার মতো আমারাও কবিতা আবৃত্তি করতে ভালো লাগে ৷
অনেক ভালো লাগলো সজিব দাদা ভবঘুরে ছেলেটার জীবনে একটা ভালো মনের মানুষ আসুক ৷
ধন্যবাদ ভাই সব সময় সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। অনেক ভালো থাকবেন সবসময়।
আপনার নিঃসঙ্গতা আমাদের কে উপহার দিয়েছে দারুন একটি কবিতা আবৃত্তি। তানিয়া আপু মোটেই খারাপ বলেনি, আপনার কণ্ঠস্বরটা যদিও বারি হয়েছে কিন্তু কবিতাটা এতটা মিষ্টি লেগেছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমাদেরকে আপনার নিজের লেখা কবিতাটি এত সুন্দর করে আবৃত্তি করে শোনানোর জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম দাদা।
আমি চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব ভালো করতে পারি। এতটুকুও যদি আপনাদের ভালো লাগে এটাই আমার অনেক বড় প্রাপ্তি ভাই। অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবসময়।
দারুণ লেগেছে ভাইয়া। মন ছুয়ে গেলো। কবিতাটিও দারুণ ছিলো। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন এই কামনা করি।
আপনার যে ভালো লেগেছে এটা আমাকে অনেক তৃপ্তি দিয়েছে আপু। দোয়া করবেন আর এভাবেই এই ভাইয়ের পাশে থাকবেন।
যদিও অনেকবার রেকর্ডিং করতে হয়েছে কিন্তু আবৃত্তি অসাধারণ লাগছে আমার কাছে।নিজের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করে সেটা আপলোড করে আবার আমাদের সাথে শেয়ার করা অনেক কষ্টের ব্যাপার।ভাইয়া এককথায় অসাধারণ👌👌👌।আপনার আবৃত্তি বারবার শুনতে চাই।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো এগিয়ে যান।
আপু আপনার এই পাগল ভাই যতদিন আছে ততদিন মাঝে মাঝেই এমন পাগলামো করে আবৃত্তি করবেই। দোয়া করবেন । আর এভাবেই পাশে থাকবেন সবসময়। শুভেচ্ছা রইলো।
দাদা অসুস্থ শরীর নিয়েও ভবঘুরে ছেলেটা কবিতাটি অনেক সুন্দর ভাবে আবৃত্তি করেছেন। আপনার কন্ঠ অত্যন্ত বলিষ্ঠ।
সুন্দর মন্তব্য পেলে সবসময় অনেক ভালো লাগে আপু 😊। ভালো থাকবেন।
আসলে এখন যেন সবার সর্দি-কাশি লেগেই আছে। তবে এই সময়টা যে আপনি কবিতা আবৃত্তি করেছেন এটাও অনেক। হ্যাঁ তবে নিজের লেখা যেরকমই হোক না কেন আমি মনে করি বেশ ভালো। আরেকটা কথা ভালো লাগলো যে আপনি তানিয়া আপুর কথায় এই কবিতাটি পছন্দ করেছেন। আপনার কন্ঠে শুনতে কিন্তু বেশ ভালই লেগেছে। যার কন্ঠে গান শুনতে ভালো লাগে তার তো কবিতা ভালো লাগবেই।
বাহ্ বেশ মিষ্টি করে প্রসংশা করেছেন তো আপু। খুব ভালো লাগলো সত্যি। আপনাদের এই প্রশংসাই আমাকে আরো ভালো কাজ করতে উৎসাহিত করবে। অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার মনে আছে? খুব ভালো লাগলো আমার অনুরোধ রাখার জন্য। যেদিন কবিতাটি পড়েছিলাম সেদিনই খুব ভালো লেগেছিলো। আজকে আবৃত্তি করাতে আরো ভালো লাগলো। ঠান্ডা লাগার কারণে কন্ঠটা অন্যরকম লাগছে। তারপরও বেশ ভালো লাগে আপনার কবিতা এবং কবিতা আবৃত্তি। এই কবিতা আবৃত্তিগুলো করা খুবই কষ্টকর। একবারে করতে না পারলে বারবার করতে হয়।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপু একটা কথা বলছে, সেটা ভুলে যেতে পারি!! সত্যি বলতে আমার নিজেরও ভালো লাগে এই কাজগুলো করে। অনেক ধন্যবাদ আপু। পাশে থাকবেন সবসময়।
আপনার কন্ঠ যেমন দৃপ্ত তেমন একটা নেশা রয়েছে কন্ঠে।অনেকদিন ধরেই আপনার লেখা পড়তে পারিনি। আসলে ব্যক্তিগত কারণে অনেকটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। যে কারণে কারো লেখাই সেভাবে পড়তে পারিনি। আজ তাই আস্তে আস্তে সবগুলোই শুনবো,পড়বো এবং দেখব। আপনার কন্ঠে যে দৃঢ়তা আছে, তাতে যে কেউ বিভোর হয়ে শুনতে পারে।
এত চমৎকার করে আমার মনে হয় না কেউ কখনো আমাকে কিছু বলেছে। হয়তো আজকের এই মন্তব্যটা সামনের দিনের কাজের উৎসাহ দিয়ে যাবে ভীষন করে।