বাঁধা আর ব্যর্থতায় চলছে জীবন।। চিরো অভাগা

নমষ্কার,,

কথায় আছে,, অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকিয়ে যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি সেই অভাগার থেকেও বেশি কিছু। জীবনে এমন কোন কাজ নেই যেখানে প্রথমবার হোচট খাই নি। বাধা ছাড়া আমার কোন কাজ হবে না এটা যেন একটা লিখিত সংবিধান এর মত হয়ে গেছে। জীবনের নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছি কয়েকটা মাস হল। সেই ধারাবাহিকতা যেন কাটছেই না।

আজকের একটা কথা বলি। আমি কিছুদিন আগে একটা পোস্ট করেছিলাম ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে একুয়া মাস্টারকার্ড নেওয়ার ব্যাপারে। যথারীতি আমি ভালোভাবে কার্ড টা পেয়ে যাই। সত্যি বলতে আমার কার্ড টা নেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সিম রোমিং করব সে উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা। ব্যক্তিগত কিছু কারণে এটা বিশেষ প্রয়োজন।

IMG20220615115909.jpg

Location

IMG20220615123007.jpg
Location

IMG_20220615_195506.jpg

Location

আজ সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে অনেক খারাপ একটা সময় কাটে আমার জীবনে। রুমে যখন থাকতে পারছিলাম না ভাবলাম আজকেই বেরিয়ে যাই সিমটা রোমিং করানোর জন্য। সকাল এগার টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রওনা দেই গুলশানের দিকে রবির প্রধান কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে। অসম্ভব যানজট উপেক্ষা করে দেড় ঘন্টা পরে সেখানে পৌঁছাই। রবি সেবায় ঢুকে আমার টোকেন টা গ্রহণ করি। মোটামুটি পনের মিনিটের মাঝেই আমার কল চলে আসে। কর্তব্যরত ভাইকে আমি আমার উদ্দেশ্যের কথা খুলে বলি। উনি খুবই আন্তরিক ভাবে আমার কথা শুনে আমার পাসপোর্ট এবং মাস্টারকার্ডটি নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করে দেন। দশ মিনিটের মাঝেই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া টা হয়ে যায়। আর সবশেষে আমাকে জানিয়ে দেন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে আমাকে নিজে থেকে ফোন করে তিনি জানিয়ে দেবেন।

IMG20220615133912.jpg
Location

মাঝে দুপুরবেলা তাই আমি আমার এক বন্ধুর সাথে দেখা করি এবং সে আমাকে আজকে কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ায়। তো সব কাজ সেরে বাড়ি ঢুকে ফ্রেশ হয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করি। এক ঘণ্টা পরেই আমার কাছে ফোন আসে রবির সার্ভিস সেন্টার থেকে। ওই ভাইটি আমাকে ফোন করে জানান আমার সিমটি রোমিং করা সম্ভব হয়নি। আমার কার্ড থেকে নাকি ডলার কাটতে পারছে না। ব্যাংকের সাথে আরেক বার যোগাযোগ করতে বলেন। আমি কার্ডটি করেছি বগুড়া থেকে। এখন তো আমি ঢাকা। উপায় না পেয়ে কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিলাম। কাস্টমার কেয়ার থেকে আমাকে জানানো হলো, ডলার এনডোর্সমেন্ট এর কিছু প্রবলেম আছে। ব্যাংকে গিয়ে ঠিক করে নিতে হবে। আমি বললাম এটা তো আমার কোন ভুল নয় এটা আপনাদের ভুল। আমি এখন ঢাকা থেকে কিভাবে কি করব। তো উনি সাথে সাথে আমার ব্যাপারে বগুড়া ব্রাঞ্চ এ হাইলি ইম্পর্টেন্স দিয়ে একটা মেইল পাঠিয়ে দেন। আমাকে বললেন খুব তাড়াতাড়ি উনারা এই ব্যাপারটা চেক করে দেখবেন। আর আমার যদি খুব তাড়া থাকে সে ক্ষেত্রে আমি ঢাকার ইস্টার্ন ব্যাংকের যে কোন ব্রাঞ্চে আমার পাসপোর্ট নিয়ে যেন দেখা করি।

IMG20220615123214.jpg
Location

সবকিছু শোনার পরে নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল। সব কাজে বাধা আসলে নিজের কনফিডেন্সটা সত্যিই অনেক হারিয়ে যায়। এর দশ মিনিটের মাঝেই বগুড়া ব্রাঞ্চ থেকে আমার কাছে ফোন আছে। উনি আমার ব্যাপারটা খতিয়ে দেখলেন আমাকে ফোনে রেখে। তারপর আমাকে জানালেন আমার নাকি কোন সমস্যাই নেই। তার পরেও কেন এমন হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না। তো উনি আমাকে বললেন আজকে আবার নতুন করে তিনি হেড অফিসে আমার ফাইল টা নিয়ে রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে দেবেন ডলার এনডোর্সমেন্ট এর পারমিশন এর জন্য। আর কালকে আরেকবার চেষ্টা করতে বললেন। যদি না হয় সেক্ষেত্রে উনার পার্সোনাল ফোন নাম্বার আমাকে দিয়ে দিলেন সাথে সাথে যেন জানিয়ে দেই ব্যাপারটা।

সত্যি বলতে অনেকের কাছে এটা ছোটখাটো একটা ইস্যু মনে হতে পারে। আমার খারাপ লাগার প্রধান কারণ হলো, যেকোনো কাজে গেলে সেখানে আমি বাধা পাবই। আমার সাথে বারবার কেন এমন হবে! এই ব্যপারগুলো আমার আত্মবিশ্বাস মাঝে মাঝে অনেক নিচে নামিয়ে দেয়। বার বার মানুষের কাছে ঠকতে হয়। জানিনা এর শেষ কোথায়। দিনশেষে একটা কথা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকি, ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্য করেন। হয়তো আমার জন্য ভালো কিছু লিখে রেখেছেন। সময়ের অপেক্ষা এখন শুধু।

Sort:  
 2 years ago 

ধৈর্য হারা হবেন না দাদা। আপনার সমস্যা খুব তাড়াতাড়িই সল্ভ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। সিম রোমিং যেন খুব শিঘ্রই করতে পারেন তার জন্য দোয়া রইল। আর আপনি ঠিক কথাই বলেছেন যা কিছু হয় আমাদের মঙ্গলের জন্যই হয়।

গতকাল সব কাজ ঠিকমতো করতে পেরেছি ভাই। মনের তৃপ্তি হয়েছে সত্যি। হয়তো আপনাদের দোয়া আছে বলেই অনেক ঝামেলা কাটিয়েও ঠিকঠাকভাবে সব কাজ মেটাতে পেরেছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60340.89
ETH 2615.66
USDT 1.00
SBD 2.56