মনে কি পরে রিচার্জ কার্ডের সেই দিনগুলো?

নমস্কার,,

আচ্ছা আপনাদের মাঝে কতজন আছে এখনও কার্ড ইউজ করেন? অথবা মনে পরে শেষ কবে ফোনে রিচার্জ করার সময় রিচার্জ কার্ড ইউজ করেছেন? আমার মনে হয় অনেকেরই হয়তো এই ব্যাপারটা মনে পরছে না। কারণ মোটামুটি বেশ কয়েক বছর হয়ে যাচ্ছে আমরা ফোনে রিচার্জ করার জন্য আর কেউ কার্ড ইউজ করিই না বলা যায়। গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ লোকজন দোকানে গিয়ে ফ্লেক্সিলোড দিয়ে থাকেন। আর বাকি যারা আছেন তারা ফোনের বিভিন্ন অ্যাপস দিয়ে নিজের একাউন্ট থেকে নিজের নাম্বারে টাকা লোড দিয়ে থাকেন।

IMG20221015171641.jpg

Location

কিন্তু আজ থেকে ১০ বছর আগেও কার্ডের প্রচলন ছিল ব্যাপক হারে। দোকান থেকে ১০ টাকা ২০ টাকা ৫০ টাকা বা ১০০ টাকার রিচার্জ কার্ড কিনতাম আমরা। সেই দিনগুলো একটু অন্যরকম ছিল আমাদের সবার কাছেই। বিশেষ করে আমার কাছে তো আরো বটেই। ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ার সময় থেকে ফোনটা বেশি ব্যবহার করা শুরু করি। তখন ছিল আমার বাটন ফোন। নোকিয়া ৩১১০ মডেল। ওই ফোনটা দিয়েই লুকিয়ে লুকিয়ে ফেসবুক ইউজ করা শুরু হয়। বয়সটা ছিল তখন পুরো দুষ্টুমির। কত জায়গায় দুষ্টুমি করে ফোন করতাম তার কোন ঠিক নেই। প্রাইভেট পড়তে গিয়ে এসবই যেন বেশি হতো। এসব করতে গেলে মোবাইলে ব্যালেন্স থাকা প্রয়োজন। তাই রিচার্জ করার প্রয়োজন পড়তো। ওই সময় একবারে বেশি টাকা ফোনে রিচার্জ করার সামর্থ্য ছিল না। ১০ থেকে ২০ টাকাই যেন অনেক। আমার বড় দিদি আবার মাঝে মধ্যে এসে ফোনের ব্যালেন্স চেক করতো। তাই কোথাও দুষ্টুমি করে টাকা ফুরালেও সেটা পুষিয়ে রাখারও একটা ব্যাপার ছিল।

IMG20221015171551.jpg

Location

ওই বয়সটাতে যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু টাকা বাবা রিচার্জ করে দিত ফোনে। কিন্তু দুষ্টুমি করার টাকা কোথায় আর পাই। সেগুলো আসতো মায়ের ব্যাগ থেকে 😅। মায়ের ব্যাগে টাকা হিসাব করা থাকতো না। মোটামুটি রোজ অফিস থেকে আসার পর সন্ধ্যাবেলা প্রদীপ দিতে যখন মা যেত, আমি মায়ের ব্যাগ থেকে ১৫ অথবা ২০ টাকা করে বের করে নিতাম 🤪। ওটা ছিল আমার মোবাইল রিচার্জ করার একমাত্র উৎস। মাঝেমধ্যে ধরাও খেতাম। তখন আবার দুই এক দিন গ্যাপ দিয়ে পুরনো টেকনিক অ্যাপ্লাই করতাম 😊।

IMG20221015170727.jpg

Location

তো সেই ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার থেকেই আমার একটা অভ্যাস ছিল, যে কার্ডগুলো ফোনে রিচার্জ করতাম সেগুলো পড়ার টেবিলের ড্রয়ারে জমিয়ে রাখতাম। ভার্সিটি লাইফের শুরুতে যখন সেখানে হাত দেই দেখি অনেকগুলো কার্ড জমা হয়ে গেছে। আমার কখনোই এই কার্ডগুলো ফেলে দিতে ইচ্ছা করেনি। আজও পড়ার টেবিলেই জমিয়ে রেখেছি। আজ অনেকদিন পরে ড্রয়ারটা খুলতেই হাতের সামনে এসে পরলো এই জমানো কার্ড গুলো। সাথে সাথে মেঝেতে ঢেলে ফেললাম। কতসব দুষ্টুমির স্মৃতি যে মনে পড়ে গেল বলে বোঝাতে পারবো না। সন্ধ্যাবেলায় একা একাই হাসলাম খানিকক্ষণ। হয়তো আপনাদেরও এমন অনেক মজার স্মৃতি মনে পড়বে আমার এই কার্ডগুলো দেখে। নিজের অনুভূতিগুলো অবশ্যই কমেন্টে শেয়ার করবেন।

সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ❤️❤️।

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি বলেছেন ভাইয়া মোটামুটি বেশ কয়েক বছর হয়ে গেছে আমরা ফোনে রিচার্জ করার জন্য আর কেউ কার্ড ইউজ করি না। জি ভাইয়া ইন্টারনেটের বয়সটা ছিল সবারই জন্য পুরো দুষ্টুমির।আপনার জমানো কার্ডগুলো অনেক দিন পরে দেখে, অনেক দুষ্ঠমি মনে পড়বে স্বাভাবিক। আপনার পোস্ট পড়ে আমার ও সেই রিচার্ড কার্ডের কথা মনে পড়ে গেল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago (edited)

এখন আর কেউ এমন কার্ড ইউজ করে বলে মনে হয় না আপু। সময় অনেক এগিয়ে গেছে। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে ।

 2 years ago 

অনেক পুরোনো দিনের কথা মনে পড় গেল আপনার পোস্ট দেখে। এর আগে কার্ডের প্রচলন ছিল অনেক বেশি। অল্প টাকাতে অনেক মিনিটের কার্ড পাওয়া যেত। এখন আর আগের মতো কার্ডের প্রচলন খুব বেশি নেই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আমারও অনেক পুরনো স্মৃতি মনে পরে গিয়েছিল। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

বাপরে!! এতো রিচার্জ কার্ড জমা হলো কেমনে কি! এতো কথা কার সাথে বলতেন শুনি 🤭🤭। পুরো ড্রয়ার ভরে গেছে। কি দুষ্টুমিটা করতেন তখন 😁। একেকটা রিচার্জ কার্ডে একেকটা স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

ওরে ভাই কি যে ছিল দিন গুলো!!! এখন ভাবলেই হাসি পায় 😀। বেশ ভালো বলেছেন,, এক একটা কার্ড এক একটা স্মৃতির ভান্ডার 🤪

 2 years ago 

হাহাহা দাদা! এতো কথা বলতেন 🤭

এগুলো গোপন কথা ভাই,, সবার সামনে বলতে নেই 😉😉

 2 years ago 

😁😁

 2 years ago (edited)

দাদা ভালো জিনিস মনে করালেন। ধন্যবাদ আপনাকে। আমরা প্রায় ভুলে যেতে বসেছি রিচার্ড কার্ড গুলোর কথা। আজকালকার অনলাইন রিচার্জের সময়ে অনেকেরই আর মনে নেই। আগে এমন কার্ড ঘসে সেই কোড দিয়ে রিচার্জ করতাম। আমার প্রিয় কার্ড ছিল পাঁচ টাকার নেট কার্ড। যা দিয়ে তখন একদিন নেট সার্ফ করা যেত।

অনেক দিন পর এই কার্ড গুলো দেখে আমার নিজেরও দারুন লেগেছে পুরোনো কথা গুলো ভাবতে। কত কি না করতাম সেই সময় 😅। সব সোনালী অতীত এখন।

 2 years ago 

সত্যিই বিগত ১০ বছর আগে কার্ডের প্রচলন ছিল অনেক বেশি। ১০ টাকা ২০ টাকা এবং ১০০ টাকা কার্ড সবাই কম বেশি নিতেন। তবে এখন আর মোবাইল কার্ড মানুষ তেমন ব্যবহার করে না। আর আপনি আপনার মায়ের ব্যাগ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিতেন। সত্যি আপনি অনেক সুন্দর করে মোবাইল কার্ড ব্যবহারের কাহিনী আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

অনেক দুষ্টু ছিলাম আপু,, মায়ের ব্যাগ টাই ছিল আমার আসল অস্ত্র। হিহিহিহি।

 2 years ago 

জী ভাইয়া বর্তমানে অনেকেই কার্ড ব্যবহার করে না। কারন এখন ঘরে ঘরে ওয়াইফাই চলে আসছে। আমি অনেক মানুষকে দেখেছি কার্ড রিচার্য করে তুষকের নিচে কার্ড গুলিকে জমিয়ে রাখতে। তাদের মাঝে আপনাকেও পেলাম। বেশি অংশ ছেলে পেলে বাবার ম্যানি ব্যাগ থেকে টাকা চুরি করতো আর আপনি চুরি করলেন আপনার মায়ের ব্যাগ থেকে। ধন্যবাদ ভাইয়া স্মৃতি গুলো পড়ে ভালই লাগলো।

বাবার কাছে থেকে চুরি করে ধরা খেতাম ভাই বেশি,, তাই তো মায়ের দিকে ছুটে যেতাম 😉।

 2 years ago 

জমিয়ে রাখেন এক সময় এর জন্য অ্যাওয়ার্ড দিবে আপনাকে😜😜।আর আন্টির ব্যগ থেকে যে টাকা চুড়ি করতেন সেটা কি আন্টি জানে,তা না হলে আমি বলে দিতাম😜😜।যাই হো ক আসলে পুরানো স্মৃতি মনে করে দিলেন।১০ টাকা জমলেই কার্ড কিনতাম মাঝে মাঝে বাড়তি কার্ড কিনে রাখতাম।আর মোবাইলে ডিজিটগুলো তুলতে কি যে সাবধানতা অবলম্বন করতাম।বার বার চেক করতাম।মাঝে মাঝে দুই একটা ডিজিট ভুল দিয়ে চেক করতাম যদি মিলে যায়,তাহলে তো বোনাস হা হা।ধন্যবাদ

আর কেউ না দিলেও আপনি যে অ্যাওয়ার্ড দেবেন এটা আমি নিশ্চিত 🤪। আর সব সময় ভাইকে ধরা খাইয়ে দেওয়ার বুদ্ধি আপনার মাথায় ঘোরে তাই না? আপনার ভাই ও তেমনই সিয়ানা চোর ছিল 😀😀

 2 years ago 

আমি আগে অ্যাওয়ার্ড টা বানিয়ে নেই,তারপর দিব😜😜।অপেক্ষায় থাকেন।আমি জানি তো,সিয়ানা চোর না হলে কি আর সেই ইন্টার থেকে বাঁদরামো করে🤪🤪

ভাইটা কার দেখতে হবে না 😀,,! বাদর কি আর এমনি এমনি হইছি? 🤪🤪

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65