বাড়ি ফেরার গপ্প 😉🥰

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

নমষ্কার,,
প্রয়োজনীয় কাজ শেষ তাই ফেরার পালা এবার। বাড়িতে দিদি এসেছে ভাগ্নেকে নিয়ে। তাই মাও বার বার বলছে সরাসরি বাড়ি আসতে। দুই তিন দিন থেকে যেতে বলছে বার বার। চিন্তা করলাম আরো কিছু কাজও আছে যখন সব তাহলে একবারেই সেরে আসি বাড়ি থেকে। হবিগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি উত্তর বঙ্গের বাস নেই। তার জন্য যেতে হবে শায়েস্তাগঞ্জ।

IMG20220601190545.jpg
Location
IMG20220601191932.jpg
Location

তো সন্ধ্যের একটু আগে সিএনজি তে করে শায়েস্তাগঞ্জে চলে গেলাম। আগের দিন রাতে এনা বাসে উঠে কেমন ফিল করছিলাম সেটা আমি আগের পোস্টে লিখেছি। তাই এবার আর এনার দিকে গেলাম না। শ্যামলী পরিবহনে সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটের টিকিট কেটে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ভাড়া নিল ৮০০ টাকা।

IMG20220601195925.jpg
Location

নির্ধারিত সময়ের দশ মিনিট পরেই বাস চলে আসলো। আমিও বাসে উঠে আমার যাত্রা শুরু করলাম। সারা দিন অনেক হাঁটাহাঁটি হয়েছিল তাই খুব ক্লান্ত ছিল শরীর টা। ফোন হাতে নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করতেই ঘুমিয়ে যাচ্ছিলাম বার বার। ভাবলাম একটু ঘুমিয়ে নেই। পনের মিনিট না হতেই মা ফোন দিয়ে খোজ নিল আর সাথে সাথে আমার ঘুম শেষ। ফোন টা আবার নিলাম হাতে কিন্তু নেট একদম চলছিল না। মাথা গরম হয়ে যাচ্ছিল বার বার।

IMG20220601215319.jpg
Location
IMG20220601215453.jpg
Location
IMG20220601215231.jpg
Location

বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিতেই পৌঁছে গেলাম আশুগঞ্জ। সময় তখন রাত ৯.৪৫ মিনিট। আমাদের বাস হোটেল বিরতি দিল 20 মিনিট। আমি নেমে একটু ফ্রেশ হয়ে কফি খেলাম একটা। জার্নি সময়ে ভারী খাবার একদম খাই না আমি। বিশেষ করে হোটেলের খাবার খুব একটা সহ্য হয় না আমার। তারপর বাস আবার চলতে শুরু করল।

IMG20220602002750.jpg
Location

IMG20220602002920.jpg
Location

IMG20220602004350.jpg
Location

IMG20220602011436.jpg

Location

এরপর শুরু হলো আমাদের ডিসকর্ড এবং টেলিগ্রামে আড্ডাবাজি। কিভাবে যে সময় চলে যাচ্ছিল বুঝতেই পারছিলাম না। সারা দিনের ক্লান্তি এক নিমিষেই যেন শেষ হয়ে গেল। ঢাকার ভেতর ঢুকতে ঢুকতে রাত বারোটা পার হয়ে গেল। মারাত্বক খিদে পেয়ে গেল। তানিয়া আপুকে বার বার খোঁচা মারছিলাম খাওয়ানোর জন্য। কিন্তু আপু তাড়াতাড়ি পালিয়ে গেলেন খাওয়ানোর ভয়ে 😅। কি আর করা। কল্যাণপুর পৌঁছার পর বাস বেশ কিছুক্ষণ দেরী করলো। আমি নেমে আবার চা খেলাম। ইচ্ছে ছিল সারা রাত ঘুমাবো না।

IMG20220602012546.jpg

পকেটে আমলকি ছিল, ঘুম পেলে ওটা দাঁতের নিচে দিয়ে এক কামড় 😅। সব ঘুম উধাও। হিহিহিহি 😊🥰🥰। রাত তিনটা বাজল যখন তখন কানে হেডফোন দিয়ে ফুল ভলিউমে কিছু পছন্দের গান শুনতে শুনতে আমার বাংলা ব্লগের পোস্ট গুলোতে কমেন্ট করতে শুরু করলাম। নেট টা তখন বিন্দাস ছিল। মাঝে মাঝে লুডু খেলছিলাম। শেষ রাতে বেশ ছক্কা পরছিল 😊

IMG20220602055024.jpg
Location
IMG20220602053717.jpg
Location
IMG20220602062713.jpg
Location

অনেক দিন পর ভোর হতে দেখলাম গতকাল। রাতের কালো আধার টা একটু একটু সরে যাচ্ছিল। সূর্য টা অনেক দূর থেকে উকি দিয়ে বের হচ্ছিল। হালকা কুয়াশা ছিল। দারুন ছিল এক কথায়। ভোর ৫.৩০ মিনিটের দিকে হোটেল পেন্টাগনে আবার বাস ব্রেক দিল। হাত মুখ ধুয়ে আশে পাশের পরিবেশ টা দেখলাম আরেকটা বার। চোখ টা একটু ঝাপসা লাগছিল ঘুম না পাড়ার জন্য। তবে ভালো লাগছিল সকাল টা। এভাবেই সকাল ৬.৪৫ মিনিটে দীর্ঘ ১১ ঘন্টার জার্নি শেষ করে বাড়ি ঢুকলাম। আপনাদের সবার আশীর্বাদ সাথে ছিল। তাই কোন ঝামেলা পোহাতে হয় নি রাস্তায়।

সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। কাল নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব অবশ্যই।

Sort:  
 2 years ago 

মনে হচ্ছে আপনি বাসে উঠেন নি কোন টুরস এনজয় করছেন। এরকম সময় কাটলো তো বাসে যেতেও ভালো লাগবে। বাসা থেকে আবার ডিস্কোর্ডে আড্ডাও দিচ্ছেন। তাছাড়া চা-কফি সবকিছু তো আছেই। এরকম জার্নির মুহূর্ত খুব ভালোই লাগে। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আমি

 2 years ago (edited)

হ্যাঁ আপু সব কিছু মিলিয়ে বেশ ভালো একটা টুর ছিল আমার জন্য। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ভাই পুরো জার্নিটা বেশ চমৎকারভাবে এনজয় করে কাটিয়েছেন। আমি আপনার পুরো পোস্টটি পড়েছি আসলে একটা বিষয় লক্ষ করছি এইটাই ডিস্কোড টেলিগ্রাম এগুলো একটা সময় কিন্তু অনেক কাজে লাগে, কারন আপনি যখন বোরিং ফিল করছিলেন তখন কিন্তু এগুলোর মধ্যে সবার সাথে যখন আড্ডা দিচ্ছিলেন তখন খুব দ্রুত সময়টা কেটে যাচ্ছিল এবং মনটা ফুরফুরে হয়ে উঠলো। ভালই লাগলো আপনার পুরো জানিটা। সবশেষ কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই 11 ঘন্টার জার্নি শেষে বাড়িতে পৌঁছে গেলেন বিষয়টি খুবই ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই সবার সাথে আড্ডায় মেতে থাকলে সময় কি করে কেটে যায় একদম বোঝা যায় না। আমার বাংলা ব্লগ, ভালবাসার আরেক নাম। অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

যাক ফাইনালি ভালোভাবে বাড়িতে ফিরতে পারলেন দাদা। আমিও ট্রেন দিয়ে সারারাতের জন্য জার্নি করে থাকি। জার্নির ফাকেঁ এক কাপ কফি খেলে শরীর যেন চাঙ্গা হয়ে উঠে। সবমিলিয়ে ভালো ট্যুর ছিল দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

ট্রেনের জার্নি তো অনেক আরামের ভাই। আমাদের এদিকে অতটা ভালো না ট্রেন যোগাযোগ। তবে রেল লাইন এর কাজ চলছে। অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

স্বপ্ন ফিরছে বাড়ি আপনার। দেখে খুবই ভালো লাগলো।অনেকদিন পর এভাবে বাড়ি ফিরতে লাগলে সত্যিই মন টা ভালো হয়ে যায়।আপনি যাত্রাকালের সব বিবরণ খুব ভালোভাবেই দিয়েছেন। সাথে আমলকির ছবিটা খুব সুন্দর হয়েছে ভাই

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করছি। আশীর্বাদ রাখবেন 🙏🙏

 2 years ago 

আসলে ভাই আপনি একদম ঠিক বলেছেন আমিও জার্নি করি তাহলে কোন ভারী খাবার খাই না। হয়তো চা-কফি এগুলো খেয়ে থাকি। আর আপনার বাড়ি যাওয়ার গল্প পড়ে মনে হচ্ছিল আপনি কোন ট্যুর ভ্ৰমণ করছিলেন। এতো বড় জার্নি আমি আসলে কখনো করিনি এতক্ষণ বাসে বসে থাকতে কিন্তু খুবই বোরিং লাগে। তবে আপনি খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন ভাল লাগল আর কোন ঝামেলা ছাড়াই বাড়ি পৌঁছতে পেরেছেন এটা শুনে আরো ভালো লাগলো। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

ভারী খাবার খেলেই শরীরে কেমন একটা লাগে। তাই চা কফি এসব নিয়েই থাকি ভাই 😊। আর লম্বা জার্নি করে করে অভ্যেস হয়ে গেছে অনেকটা। এখন তাই বেশ এনজয় করি 😊। অনেক ভালো থাকবেন ভাই।

 2 years ago 

খাবার কথা বলতেই পালিয়ে গেল, এমন কেন আপনার @tania0554 আপু😉। এত দীর্ঘ ভ্রমণ আসলে একা একা করতে খারাপ লাগে। সঙ্গে কোন বন্ধু থাকলে আনন্দময় হয়ে ওঠে এমন ভ্রমণ। যাক অবশেষে নির্বিঘ্নে ফিরতে পেরেছেন এটাই বড় কথা। ধন্যবাদ

 2 years ago 

আপু আসলে লুকোচুরি খেলতে বেশি ভালোবাসে ভাই 🤪। আমার বাংলা ব্লগ এখন সব চেয়ে বড় বন্ধু আমাদের ❤️❤️❤️। অনেক ভালো থাকবেন ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 69033.32
ETH 3748.46
USDT 1.00
SBD 3.67