আমার স্টিমিট গুরুর সাথে আড্ডায় 😉 || বন্ধুত্বের গল্প❤️

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

নমস্কার,,

স্টিমিট প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে প্রথম ধারণা পাই আজ থেকে কয়েক বছর আগে আমার ভার্সিটির রুমমেট তর্পনের কাছ থেকে। বলে রাখি, ভার্সিটি লাইফের পুরো সময় জুড়ে আমরা একই রুমে পাশাপাশি বেডে ঘুমিয়েছি। আমি একটু ঘোরাঘুরি আর আড্ডা দিতেই বেশি পছন্দ করতাম। গান-বাজনা এসব নিয়েই মেতে থাকতাম বেশি। অন্যদিকে তর্পণ ছিল খেলাধুলা প্রিয় একটা ছেলে। মুভি নিয়েও পরে থাকতো বেশ। একটা সময় দেখি তর্পণ ল্যাপটপে বসে কি কি যেন কাজ করছে। বিভিন্ন ধরনের লেখালেখি করছে। আমি ওর পাশে গিয়ে কাজগুলো দেখতাম মাঝে মধ্যে। সত্যি বলতে আমার বিন্দু মাত্র ইন্টারেস্ট ছিল না এসবের প্রতি। তর্পনের মুখ থেকেই ওই সময় প্রথম এই প্লাটফর্ম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাই।

IMG_20221107_014418.jpg
Location

প্রথমদিকে আমাকে অনেকবার করে বলতো আমি যেহেতু মাঝেমধ্যে লেখালেখি করি তাই এ প্লাটফর্মে হয়তো ভালো করতে পারব আমি। আমি আসলে গায়েই লাগাতাম না তখন। একটা সময় ওর কথা মতো আমিও একটা আইডি খুলি এবং কিছুদিন কাজ করতে না করতেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। সত্যি বলতে ওই সময়টাতে স্টিমিট প্ল্যাটফর্ম এতটা গোছানো ছিল না। আর এখান থেকে যে সত্যিই এতটা ইনকাম করা সম্ভব এই কনসেপ্টটা একদমই বিশ্বাস করতাম না। উল্টো আমি এবং আমার আরেক রুমমেট অতুল মিলে তর্পনের সাথে মজা নিতাম বেশি করে।

IMG-20221106-WA0058.jpg
Location

করোনার শুরুতে যখন প্রথম লকডাউন শুরু হয়, তখন তো বাড়িতে বসে। তর্পন আমাকে ফোন দিয়ে আবার স্টিমিট নিয়ে বলে। আর একটা সময় বললো সে এখন বাংলাদেশের সি আর অর্থাৎ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ। আমি তখনও পাত্তা দিতাম না তর্পনের কথায়। শুধুমাত্র ওর মুখ রাখার জন্য আমি নিজে আবার নতুন করে স্টিমিটে আর একটা আইডি খুলি। আর সেই থেকেই আমার নিয়মিত কাজ করার শুরু। সত্যি বলতে আমাকে হাতে কলমে কোথায় কি করতে হবে এবং কিভাবে করতে হবে সবকিছু তর্পণ নিজেই শিখিয়েছে। আর বন্ধু সি আর হওয়ার জন্য কিছুটা সুবিধা তো পাবোই এটাই স্বাভাবিক ছিল।

ঐ সময় @steemcurator01 এবং @steemcurator02 এর বেশ ভালো একটা সাপোর্ট পেতাম। বেশ কিছুদিন ভালোই চলছিল। কিন্তু তারপর থেকে কেমন যেন ওলোট পালোট হতে শুরু করলো। ভালো সাপোর্ট আসতো না। ঐ সময় তর্পণই প্রথম আমাকে আমার বাংলা ব্লগের লিংক টা দেয়। আমাকে বলে এখানে কাজ করতে। প্রথমে আমি কাজ করতাম না। পরে আরেকদিন যখন তর্পণ আমাকে ঐ একই লিংক দিল, তখন মনে হলো আমার বাংলা ব্লগ টা একটু ঘুরে দেখি। আর সেই থেকেই এই পরিবারের সাথে যুক্ত আমি।

IMG-20221106-WA0056.jpg
Location

কিছু ব্যক্তিগত কারণে তর্পণ আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছে। কিন্তু আমার সব ধরনের সহযোগিতা এখনো ঐ একটা ছেলেই করছে। এক কথায় যদি বলি তাহলে এ প্লাটফর্মে আমার অনেক বড় একটা শক্তি হল তর্পণ।

কয়দিন হলো ঢাকা এসেছে তর্পণ। ওর মামার বাসায় উঠেছে। তো গতকাল সন্ধ্যায় আমরা রবীন্দ্র সরোবরে এক সাথে দেখা করি। বেশ দীর্ঘ সময় পর তর্পনের সাথে আমার এবার দেখা। অনেক দিন পর এক্স রুম মেটের সাথে দেখা হলে কেমন সময় কাটতে পারে এটা মনে হয় না আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন আছে। ওখানে আমার আরেক বন্ধু তানজিমও এসেছিল। তিন জন মিলে আড্ডা আর গল্পের ঝুড়ি খুলে বসেছিলাম যেন।

IMG-20221106-WA0029.jpg
Location

আসলে এই মানুষ গুলো জীবনে আছে বলেই নতুন কিছু করতে ইচ্ছে করে। কাল্পনিক স্বপ্নকেও বাস্তবে ধরতে ইচ্ছে করে। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ এই বন্ধু গুলোর প্রতি। ওরা শুধু আমার বন্ধুই নয়, আমার মেন্টর থেকে শুরু করে সব কিছু। ভালো থাকুক এই সম্পর্ক গুলো, এই প্রার্থনা ঈশ্বরের কাছে সব সময় করি।

Sort:  
 2 years ago 

বন্ধুত্ব হাজার থাকে, বন্ধুর মত বন্ধু কয়জন পায়। আপনি আসলে সৌভাগ্যবান যে আপনি তর্পণদার মত ভাল একজন বন্ধু পেয়েছেন। আপনার ষ্টিমেট জগতের গল্প বেশ ভালো লেগেছে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

আসলেই আমার মনে হয় বন্ধু ভাগ্যটা সত্যিই খুব ভালো। আজ তর্পণ এর জন্যই এত ভালো একটা পরিবার পেয়েছি। ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

বন্ধুর আভাব নেই, তবে প্রকৃত বন্ধু ক`জন পাওয়া যায়।আপনি সত্যি অনেক ভাগ্যবান তর্পণের মতো একজন ভালো বন্ধু পেয়েছেন। সে আপনাকে উৎসাহ না দিলে হয়তো বা আপনি বাংলা ব্লগে আসতেন। সে আজ এখানে নেই তারপর আপনাকে সাপোর্ট করে। আপনার স্টিমেট গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগল। অনেক দিন পর তর্পণের সাথে ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মূহুর্ত গুলো আমাদের মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু সময় নিয়ে আমার লেখাটা পড়ে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। এভাবেই পাশে থাকবেন সবসময়। শুভেচ্ছা রইলো।

 2 years ago 

তর্পন ভাই আপনার বন্ধু এবং আপনি তার মাধ্যমে এ বিষয় জানতে পেরেছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। সত্যি বলতে তর্পন ভাইয়ের সাথে আমার ওমান থাকা কালীন কথা হতো এবং কিছুদিন আগেও তার সাথে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে। তবে তিনি এখন কাজ বন্ধ রেখেছেন সেটি আমাকে জানান। যাই হোক পুরো গল্পটা পড়ে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

তাই নাকি তর্পণ এর সাথে আপনারও পরিচয় ছিল! আমি আজকেই প্রথম জানলাম এটা। বেশ ভালো লাগলো ভাই। অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

জি ভাই অনেক কথা হতো উনার সাথে এবং বিশেষ করে অনেক আগে স্টিম বাংলাদেশ কমিউনিটিতে আমি একটি কনটেস্ট দিয়েছিলাম সে কনটেস্টের উইনার তর্পণ ভাইকে সেট করতে বলেছিলাম আমি।

 2 years ago 

ভাগ্যিস ভার্সিটির রুমমেট তর্পনের কাছ থেকে স্টিমিট সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন তা না হলে আমরা এত ভালো একটি ভাই কোথায় পেতাম। এটা ঠিক বলেছেন প্রথমদিকে স্টিমিটের অবস্থা খুবই শোচনীয় ছিল তখন ধৈর্য হারাই হতে হতো। সি আর বন্ধুর বদলাতে অত বড় বড় সাপোর্ট গুলো পেয়েছেন কম কথা। শেষ পর্যন্ত আমার বাংলা ব্লগে এসেছেন এটাই বড় কথা এবং খুব ভালো লাগলো আপনার স্টিমিটে আসার গল্পটা পড়ে। আসলেই এই মানুষগুলো আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্ব বহন করে।

 2 years ago 

হিহিহিহি,, এত মিষ্টি করে কেউ কখনো বলে নি আপু 😊😊। খুব ভালো লাগলো আপনার কাছ থেকে কথা গুলো শুনে।
শুরুতে খুবই খারাপ অবস্থা ছিল, আমি তো পালায় গিয়েছিলাম। তর্পণ লেগে ছিল বলেই বেশ উন্নতি করতে পেরেছে। আজ ওর জন্যই আমি এত সুন্দর একটা পরিবার পেয়েছি। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আপনি, তর্পণ এবং তাঞ্জিম বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন দেখছি। সত্যিই আমার বংলা ব্লগ আমাদের পাশে যে ভাবে দাঁড়াচ্ছে, আমরা এই অবদান ভুলব না। আপনার বন্ধুকে বলুন সমস্যা মিটিয়ে নতুন করে আবার শুরু করুক।

 2 years ago 

আসলে ওর এখন টার্গেট অন্যদিকে। তাই আর এখানে সময় দিচ্ছে না। আমিও হয়তো আর অল্প সময়ের মধ্যেই নিজেকে গুটিয়ে নেব এখান থেকে।

 2 years ago 

তর্পন নামটি দেখে পুরনো দিনের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল ভাইয়া। আসলে প্রথম যখন স্টিমিটে কাজ শুরু করি তখন বেশ কঠিন ছিল। তবে আপনার বন্ধু অর্থাৎ তর্পন ভাইয়ের কমিউনিটিতে বেশ কিছুদিন কাজ করেছিলাম। আমার তো এখনো মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা। উনাকে মেনশন দিতাম। তখন এত কিছু বুঝতাম না। ভাবতাম মেনশন দিলে হয়তো সাপোর্ট পাওয়া যাবে। সত্যি সেই বোকা বোকা বিশ্বাসগুলো মনে হলে এখন বড় অবাক লাগে। যাই হোক সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই শিখেছি। কিন্তু চিরচেনা সেই নামগুলো এখনও অন্তরে রয়ে গেছে। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।

 2 years ago 

হিহিহিহি,,, এমন কত কান্ড তো আমিও করেছি আপু 😅। একটা ভোটের জন্য আহা কি আহাজারি 😊। তবে বন্ধু আমার বস পাবলিক। যখন কাজ করতো তখন একদম পুরো মন দিয়ে কাজ করতো। ভালো লাগলো আপু আপনার অনুভূতি গুলো জানতে পেরে। শুভেচ্ছা রইলো।

 2 years ago 

আপনি তর্পন ভাইয়ের কাছ থেকে স্টিমিট প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জেনেছেন এটা শুনে ভালই লাগলো। আসলে আমি যখন প্রথম প্রথম অন্যান্য কমিউনিটিতে কাজ করতাম তখন ওনাকে সি আর হিসেবে দেখেছি। আজকে আপনার সাথে ওনাকে দেখতে পেরে ভীষণ ভালো লাগলো। যদিও আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম উনি এখন ব্যক্তিগত কাজে, কাজ বন্ধ রেখেছেন। এরকম বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের বিষয়। আবারও দুজনে দেখা করেছেন এবং খুব সুন্দর একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন দেখে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আমার বন্ধু তো গভীর জলের মাছ আপু 😉,, কখন কোন প্ল্যান নিয়ে এগোই ঠিক নেই। হিহিহিহি। তবে আমরা খুব ভালো বন্ধু সেই ভার্সিটি লাইফ থেকেই। খুব খুশি হলাম আপনার মন্তব্য পেয়ে আপু। ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

আমার এখনো মনে আছে তর্পণ দাদার কথা, নিউ কমার্স কমিউনিটিতে তিনি আমাদের অনেক হেল্প করত, বাংলাদেশী হিসেবে সবসময় আমাদের কে সাপোর্ট করার চেষ্টা করত। কখনো তাকে দেখার সুযোগ হয়নি আজকে আপনার ছবির মাধ্যমে দাদাকে দেখলাম। এরকম একটা বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।

 2 years ago 

হ্যাঁ বন্ধু আমার অনেক খাটা খাটনি করতো বাংলাদেশীদের সহযোগিতা করার জন্য। যাক আজকের পোস্টের মাধ্যমে তাহলে তর্পণ কে চেনা হয়ে গেল 😊। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে।

 2 years ago 

আমার বাংলা ব্লগ এমনই একটি ব্লগ যে এখানে কাজ করতে শুরু করলে মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে যেতে হয় । এজন্য প্রথম প্রথম আপনি স্টিমিট কাজ করে মজা পাননি। কিন্তু এই ব্লগে জয়েন করার পর ঠিকই মজা খুঁজে পেয়েছেন। আসলে এই ব্লগটি অন্যান্য ব্লগগুলো থেকে অনেক আলাদা। অনেকদিন পর আপনার স্টিমিট গুরুর সঙ্গে দেখা করে ভালো সময় কাটিয়েছেন বোঝাই যাচ্ছে। তর্পণ ভাইয়া কেন এখন কাজ বন্ধ রেখেছে? ওনার নামটি খুব সুন্দর।

 2 years ago 

সত্যি বলতে এখন আমরা সবাই ক্যারিয়ার টা একটু অন্যদিকে মুভ করার চেষ্টায় আছি আপু। তর্পণ ও তাই। কোন একটা কিছুতে সেটেল হয়ে তারপর আবার কাম ব্যাক করবে । দোয়া করবেন আপু আমাদের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 68542.93
ETH 2454.71
USDT 1.00
SBD 2.54